রোড টু ফাইনাল: কুমিল্লা
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জন্য বিষয়টি অবাক করার মতোই। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। আবার বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দল। ঢাকার সমান তিনবার চ্যাম্পিয়ন। প্রতিবারই দল গড়ে শিরোপা জেতার জন্য। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। অথচ সেই দল কি না যাত্রা শুরু করেছিল প্রথম তিন ম্যাচ হেরে। টানা তিন হারে তাদের প্লে অফে খেলাটাই খুব বেশি শঙ্কায় ফেলে দিয়েছিল। কিন্তু যে দল শিরোপা জেতার জন্য দল গড়ে, তারা এমন হারে ভড়কে যায়নি। ঘুরে দাঁড়ায়। এমনভাবেই ঘুরে দাঁড়ায় যে পরে তারা আর কোনো ম্যাচই হারেনি।
লিগ পর্বের বাকি ৯ ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় দল হিসেবে উঠে আসে প্লে অফে। এখানেও তারা নিজেদের জয় ধরে রাখে। প্রথম কোয়ালিফায়ারে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে কোনো রকম পাত্তাই না দিয়ে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে সবার আগে ফাইনাল নিশ্চিত করে। সিলেটকে আগে ব্যাটিং করতে পাঠিয়ে ১৭.১ ওভারে মাত্র ১২৫ রানে অলআউট করে সেই রান নিজেরা অতিক্রম করে ১৬.৪ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান করে।
কুমিল্লার প্রথম হার ছিল রংপুর রাইডার্সের কাছে ৩৪ রানে। রংপুর আগে ব্যাট করে ৫ উইকেটে ১৭৫ রান করে। সেই রানের পেছনে তাড়া করে কুমিল্লা ১৯.১ ওভারে ১৪২ রানে অলআউট হয়েছিল।
কুমিল্লার দ্বিতীয় হার ছিল সিলেট স্ট্রাইকার্সের কাছে। কুমিল্লা আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৪৯ রান করে। সিলেট সেই রান অতিক্রম করেছিল ১৭.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫০ রান করে।
কুমিল্লা তৃতীয় ম্যাচ হেরেছিল ফরচুন বরিশালের কাছে। বরিশাল আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৭৭ রান করে। কুমিল্লা জবাব দিতে নেমে করেছিল ৭ উইকেটে ১৬৫ রান।
কুমিল্লা চতুর্থ ম্যাচে এসে প্রথম জয় পায় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৬ উইকেটে হারিয়ে। চট্টগ্রামের ৮ উইকেটে করা ১৩৫ রান কুমিল্লা ৪ উইকেটে ১৩৭ রান করে প্রথম জয়ের স্বাদ পেয়েছিল।
কুমিল্লা জয়ের ধারা ধরে রাখে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে পাল্টা আঘাত করে ৫ উইকেটে হারিয়ে। সিলেটকে ৭ উইকেটে ১৩৩ রানে আটকে রেখে তারা এই জয় তুলে নিয়েছিল ১৯ ওভারে ৫ উইকেটে ১৩৪ রান করে।
কুমিল্লা তৃতীয় জয় পায় ঢাকা ডমিনেটরসকে ৩৩ রানে হারিয়ে। আগে ব্যাট করে কুমিল্লা ৪ উইকেটে ১৮৪ রান করে। জবাবে ঢাকা করেছিল ৪ উইকেটে ১৫১ রান। এই ঢাকাকে আবারও হারিয়ে কুমিল্লা পায় পঞ্চম জয়। এবার তারা জয়ী হয়েছিল ৬০ রানে। নিজেরা আগে ব্যাট করে ৬ উইকেটে ১৬৪ রান করে। জবাবে ঢাকার সংগ্রহ ছিল ৯ উইকেটে ১০৪ রান।
কুমিল্লা পঞ্চম ও ষষ্ঠ জয় পায় খুলনা টাইগার্সকে পরপর হারিয়ে। প্রথমে সিলেটে তাদের হারিয়েছিল ৪ রানে। কুমিল্লার ২ উইকেটে ১৬৫ রানের জবাবে খুলনা করতে পেরেছিল ৬ উইকেটে ১৬১ রান। এই সিলেটেই আবারা তারা জয়ী হয়েছিল ৭ উইকেটে। খুলনা ২ উইকেটে ২১০ রান করেও নিজেদের বাঁচাতে পারনি। বিপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে কুমিল্লা ১৮.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে।
কুমিল্লা ঢাকায় ফিরে এসে চট্টগ্রামকে ৬ উইকেটে হারিয়ে পায় সপ্তম জয়। চট্টগ্রাম আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৫৬ রান করে। কুমিল্লা ১৯ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে করে ১৫৭ রান।
কুমিল্লা অষ্টম জয় ছিল বরিশালকে ৫ উইকেটে হারিয়ে। বরিশালকে মাত্র ১২১ রানে অলআউট করে ১৮.৩ ওভারে ৫ উইকেটে করে ১২২ রান। এই জয়ে তারা শীর্ষ দুইয়ে থাকার লড়াইয়ে উঠে আসে। বরিশাল সেই অবস্থান হারিয়ে ফেলে।
কুমিল্লা ৭০ রানের বিশাল ব্যবধানে রংপুরকে হারিয়ে তুলে নেয় নবম জয়। কুমিল্লার ৫ উইকেটে করা ১৭৭ রানের জবাব দিতে নেমে রংপুর ১৭ ওভারে মাত্র ১০৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। কুমিল্লার টানা নবম জয় ছিল।
এমপি/এসএন