সিলেটের ১৮২ রানের লড়াকু পুঁজি
বিপিএলের ফাইনালে যাওয়ার তীব্র বাসনা থেকে সিলেট স্ট্রাইকার্স কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে আগের ম্যাচের ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতা ভুলে লড়াই করার মতো পুঁজি গড়েছে। রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে তারা করেছে ১৮২ রান।
আগের ম্যাচের ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা মনে রেখে সিলেটের ব্যাটাররা এদিন শুরু থেকেই ছিলেন সাবধানী। আগের ম্যাচে কুমিল্লার বিপক্ষে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে উইকেট হারিয়েছিল ৩টি। আজ তাদের ১৮২ রানের পুঁজিতে ছিল কম-বেশি সবারই অবদান। সর্বোচ্চ ৪০ রান আসে ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান আসে মাশরাফি বিন মর্তুজার ব্যাট থেকে ২৮। এ ছাড়া তৌহিদ হৃদয় ২৫, থিসারা পেরেরা ২১, জর্জ লিন্ডে অপরাজিত ২১, রায়ান বার্ল ১৫ রান করেন। এদের স্ট্রাইক রেট ছিল ১০০-২০০ এর উপরে।
উদ্বোধনী জুটিতে পরিবর্তন এনে আবার শান্ত-তৌহিদে ফিরে যায় সিলেট। দুইজন মিলে ৭ বাউন্ডারিতে আদায় করে নেন ৪৪ রান। রান আসে যথাক্রমে ২, ৭, ৫, ১২, ৯ ও ৯। শান্ত ২১ বলে ৫ চারে ৩০ ও তৌহিদ ১৫ বলে ২ চারে ১৪ রান করেন। এসময় শেখ মেহেদি হাসানের ওভারেই দুই ব্যাটার রান সংগ্রহ করতে হিমশিম খায়। মেহেদি ২ ওভারে ২ ও ৫ রান দেন।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে আসে ৪৪ রান। সিলেটের ভীত মোটামুটি মজবুত। এরপর রান বাড়ানোর তাড়া ছিল দুই ওপেনারের। কিন্তু এই মেহেদির জন্যই তারা বাধাগ্রস্ত হন। টানা বোলিং করেন তিনি। তার তৃতীয় ওভারে রান আসে ৪। চতুর্থ ও শেষ ওভারেও তিনি প্রথম ৩ বলে ২ রান দেন। চতুর্থ বলে শান্তর হাতে প্রথম ছয় হজম করে পরের বলে তাকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেন। শান্তকে আউট করতে রিভিউ নিতে হয় রংপুরকে। রিভিউর সিদ্ধান্তে শান্ত সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখাতে দেখাতে তিনি মাঠ ছাড়েন ৩০ বলে ১ ছক্কা ও ৫ চারে ৪০ রান করে। জুটিতে রান আসে ৬৫।
পরের ওভারে তৌহিদও ফিরে যান হাসান মাহমুদের বল বুঝতে না পেরে মিড অফে ডুয়াইন ব্রাভোর হাতে ক্যাচ দিয়ে। তিনি ২৫ বলে একটি করে চার-ছয় মেরে ২৫ রান করেন। ১০ ওভার শেষে সিলেটের সংগ্রহ ২ উইকেটে ৭৯ ছিল তিনে নামা মাশরাফি ৩ বলে একটি করে চার ও ছয় মেরে ১১ রান করলে।
কুমিল্লার বিপক্ষেও দলের মহাবিপদের সময় চারে নেমে মাশরাফি ১৭ বলে ২টি করে চার-ছয় মেরে ২৬ রান করেছিলেন। আজ নামেন দলের ভালো অবস্থানে রানের গতি আরও বাড়াতে। তিনি সেই কাজটি খুবই ভালোভাবে করে যান ১৬ বলে ১ ছক্কা আর ৩ চারে ২৮ রান করে। ১১ থেকে ১৫ ওভারে তারা ২ উইকেট হারিয়ে ১০, ৮, ৪, ১৯ ও ১৩ করে ৫৪ রান যোগ করেন। এটি সম্ভব হয়েছে জাকির ১৩ বলে ১৬ রান করে শানাকার বলে স্যাম বিলিংসের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার পর রায়ান বার্ল এসে ৬ বলে ১ ছক্কা ২ চারে ১৫ রানে করে সেই শানাকার বলেই বিলিংসের হাতে ধরা পড়লে।
১৫ ওভার শেষে সিলেটের রান ছিল ৪ উইকেটে ১৩৪। শেষ ৫ ওভারকে কাজে লাগিয়ে তাদের আরও রান বাড়ানোর সময় ১৬তম ওভারের প্রথম বলেই মাশরাফি আউট হয়ে যান ব্রাভোর অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বলকে সীমানা পার করতে গিয়ে নিকোলাস পুরানের হাতে ধরা পড়ে। এই ওভারে রান আসে ৭। পরের ওভারে মুশফিক ৬ বলে ৬ রান করে হাসান মাহমুদের বলে বিলিংসের তৃতীয় ক্যাচে পরিণত হলে সিলেটের বড় সংগ্রহ থমকে দাঁড়ায়। তারপরও সেই ওভারে রান আসে ১২ জর্জ লিন্ডে এসে ছক্কা মারলে। কিন্তু ব্রাভোর করা ১৭তম ওভারে ৭ ও হাসান মাহমুদের করা ১৮তম ওভারে ৫ রান আসলে সিলেটের সেই গতি থেমে যায়।
শেষ ওভারে জর্জ লিন্ডে ২ ছক্কায় ১৭ রান সংগ্রহ করলে দলীয় সংগ্রহ ১৮০ পার হয়। জর্জ লিন্ডে ১০ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ২১ রান করে অপরাজিত থাকেন। শেষ ওভারে কঠিন এক রান নিতে গিয়ে ১৫ বলে ১ ছক্কায় ২১ রান করে রানআউট হন।
হাসান মাহমুদ ৩৪ ও শানাকা ৪৫ রানে নেন ২টি করে উইকেট। শেখ মেহেদি হাসান ২৫ ও ডুয়াইন ব্রাভো ৩১ রানে নেন ১টি করে উইকেট।
এমপি/এসজি