সিলেটের বিপক্ষে রংপুরের মনোবল চাঙ্গা
সিলেটের আকাশে মেঘে ঘনঘটা। নবম বিপিএলের শুরু থেকেই দেশি-বিদেশি ক্রিকেটারদের চমৎকার সংমিশ্রণে মাশরাফির নেতৃত্বে উড়ছিল দলটি। সবাইকে টেক্কা দিয়ে আসরের শুরু থেকেই ছিল শীর্ষ স্থানে। শেষ পর্যন্ত এই আসন থেকে তাদের কেউ টলতে পারেনি। শীর্ষে থেকেই ফাইনালে যাওয়ার লড়াইয়ে কোয়ালিফায়ার-১ ম্যাচে অবতীর্ণ হয়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষে। যারা প্রথম তিন ম্যাচ হেরে পরে টানা ৯ ম্যাচ জিতে সিলেটকে ধরে ফেলে। নেট রান রেটে তাদের সিলেটের পরেই থাকতে হয়েছিল। কিন্তু এটি ছিল নিছক একটি সমীকরণ। ম্যাচে তারা সিলেটকে নাকানি-চুবানি খাইয়ে ৪ উইকেটে ম্যাচ জিতে শিরোপা ধরে রাখার শেষ মিশনে পৌঁছে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গি হতে পারে সেই সিলেটই। আবার হতে পারে রংপুর রাইডার্সও। এই দুই দল আজ নিজেদের আসন পাকা করতে মুখোমুখি হবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। খেলা শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়।
জয়-পরাজয় খেলারই অংশ। লিগ পর্বেও সিলেট উড়তে থাকা অবস্থায় টানা ৫ ম্যাচ জেতার পর হেরেছিল এই কুমিল্লার কাছেই। এরপর তারা আরও দুইবার হেরেছে। তাও আবার আজকের প্রতিপক্ষ রংপুর রাইডার্সের কাছেই। কিন্তু গত ম্যাচে কুমিল্লার কাছে হারের পর সিলেটকে খুবই নড়বড় লেগেছে। তাদের খেলা দেখে মনে হয়েছে এই দলই কী পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে থেকে প্লে অফে উঠে এসেছে!
এবারের আসরে সিলেটের ভালো করার নেপথ্যে ছিল দেশি ক্রিকেটারদের পাশাপাশি বিদেশি ক্রিকেটারদেরও নৈপুণ্য। বিশেষ করে দুই পাকিস্তানি ক্রিকেটার মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম। কিন্তু এই দুই ক্রিকেটার চলে যাওয়াতে সিলেটের যে ঘাটতি দেখা দেয় তা পূরণ করতে পারেননি নতুন করে খেলতে নামা ইসুরু উদানা, জর্জ লিন্ডে কিংবা শফিকউল্লাহ গাফারি। আবার অপর বিদেশি রায়ান বার্লও ব্যর্থ হন। এই ব্যর্থতার মিছিলে আবার যোগ হয়েছে আসরে এখন পর্যন্ত রান সংগ্রহে সবার উপরে থাকা সিলেটের সেরা দুই ব্যাটসম্যান নাজমুল হোসেন শান্ত ( ৪১২) ও তৌহিদ হৃদয় ( ৩৭৮)। মাত্র ১২৬ রানের পূঁজি নিয়ে বোলাররা মোটামুটি লড়াই করেছিল ৬ উইকেট নিয়ে।
রংপুরেরও পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা চলে গিয়েছিলেন। শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ নেওয়াজের পরিবর্তে তারা নিয়ে এসেছে সম্পুর্ন নতুন চার বিদেশি। আফগানিস্তানের মজিবুর রহমান ও শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকার সঙ্গে সেরা একাদশে জায়গা করে নিয়েছে নিকোলাস পুরান এবং ডোয়াইন ব্রাভো। এই চারজনই কম-বেশি দলের জয়ে ভূমিকা রেখেছেন।
তাই আজকের ম্যাচে রংপুর সব দিক দিয়েই এগিয়ে থেকে ফাইনালে যাওয়ার টিকিট নিশ্চিত করতে নামবে। বিদেশিদের নৈপুন্য ছাড়াও তারা আজ খেলতে নামবে জয়ের মনোবল নিয়ে। আবার লিগ পর্বে সিলেটের বিপক্ষে আছে তাদের দুইটি জয়ও।
এলিমিনেটরে রংপুরে যেখানে বরিশালের ৩ উইকেটে করা ১৭০ রানকে মামুলি বানিয়ে ম্যাচ জিতেছিল সেখানে সিলেট পড়েছিল ব্যাটিং বিপর্যয়ে।
এর আগে ২০১৭ সালে প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল রংপুর। এবার তাদের সামনে দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠার সুযোগ। বিপরীতে বিপিএলের ইতিহাসে নেই সিলেটের ফাইনাল খেলার রেকর্ড। ২০১৩ সালে দ্বিতীয় আসরে তারা দ্বিতীয় স্থানে থেকে প্লে অফে উঠেছিল। কিন্তু ফাইনালে আর যেতে পারেনি। মুশফিকুর রহিমের নেতৃত্বে প্রথম কোয়ালিফায়ারে ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের (১৯৭/৯) কাছে সিলেট রয়্যালস (১৯৩/৬) হেরেছিল ৪ রানে। পরে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে হেরেছিল চিটাগং কিংসের কাছে ৩ উইকেটে। সিলেট আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৪৯ রান করেছিল, চিটাগাং সেই রান অতিক্রম করেছিল ৭ উইকেটে ১৫০ রান করে। সেই অপূর্ণতাকে পূর্ণতা দিতে এবার সিলেট বদ্ধপরিকর। সেই আশা পূর্ণ হবে, না এখানেই থেমে যাবে?
এমপি