সিলেটের ব্যাটিং বিপর্যয়
টানা ৯ জয়ে প্লে অফ খেলতে আসা অপ্রতিরোধ্য কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের সামনে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে সিলেট স্ট্রাইকারসের ব্যাটিং লাইন। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ১৭.১ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়েছে।
কুমিল্লার নতুন বিদেশিরা যেখানে বল হাতে দলকে সাফল্য এনে দিয়েছেন, সেখানে সিলেটের নতুনরা ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ। কুমিল্লার হয়ে আন্দ্রে রাসেল ২২ রানে ২টি এবং সুনিল নারিন ৮ ও মঈন আলী ২০ রানে নেন ১টি করে উইকেট। ৩ জনে মিলে ৯.১ ওভার বোলিং করে রান দেন ৫০। সিলেটের হয়ে তাদের ৪ বিদেশি শফিকউল্লহ গাফারি (৫), রায়ান বার্ল (০), জর্জ লিন্ডে (১৩) ও ইসুরু উদানার (০) সম্মিলিত সংগ্রহ ছিল মাত্র ১৭। আর এখানেই মূলত সিলেট ব্যাকফুটে চলে যায়।
সিলেটের ব্যাটিং বিপর্যয় শুরু হয় ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারই।নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়ের সফল উদ্বোধনী জুটিতে আনা হয় পরিবর্তন। তৌহিদকে ওয়ান ডাউনে নামিয়ে নাজমুলের সঙ্গে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে পাঠানো হয় নতুন সংগ্রহ আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দলের শফিকউল্লাহ গাফারিকে (৫)। এই খেলোয়াড়কে নিয়েয়ে আসার ব্যাপারে সিলেট দলের পক্ষ থেকে আগে কিছুই জানানো হয়নি। যে আশা নিয়ে তাকে নিয়ে আসা হয়েছিল, সেই আশা তিনি পূর্ণ করতে পারেননি আন্দ্রে রাসেলের শিকার হয়ে। নিজের ৩ নম্বার স্হানে ফিরে গিয়ে তৌহিদও (০) ব্যর্থ হন সেই ওভারেই রান আউট হয়ে।
দলের চাপ বাড়িয়ে দিয়ে পরের ওভারে জাকিরও (২) ফিরে যান মঈন আলীর শিকার হয়ে। ৩ ওভারে ৩ উইকেটে সিলেটের রান ১৬। ভয়াবহ চাপে। এই চাপ থেকে দলকে উদ্ধার করার মিশনে নামেন তরুন নাজমুল আর সবাইকে চমকে দিয়ে পাঁচে নেমে অধিনায়ক মাশরাফি। প্রয়োজন ছিল বোলারদের চাপ থেকে মুক্ত হওয়া। পাল্টা আঘাত হানা। সেই কাজটি করেন নাজমুল রাসেলের করা পরের ওভারে ২ চার আর ১ ছক্কায় ১৫ রান নিয়ে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মাশরাফিও আক্রমণ চালান মোস্তাফিজের ওভারে। ২ চারে ৯ রান আসলে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে বিপর্যয়ের মাঝেও সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকটে ৪৩।
ব্যাটিং পাওয়ার প্লে শেষেও মাশরাফি আক্রমণ চালান।বেছে নেন তানভীরকে। ১ ছক্কায় আসে ১১ রান।
যে উদ্দেশ্য নিয়ে মাশরাফি নেমেছিলেন, সেখানে তিনি মোটামুটি সফল হন। ১৭ বলে ২টি করে চার ছয় মেরে ২৬ রান করে আন্দ্রে রাসেলের বলে তানভীরের হাতে ধরা পড়েন। নাজমুলের সঙ্গে জুটিতে ৫৬ রান আসে ৬.১ ওভারে। দলের রান ৯.১ ওভারে ৭২। বিপর্যয় কাটিয়ে মোটামুটি ভালো অবস্থানে। কিন্তু সেই অবস্থানে আবার মুহূর্তেই ঘোরতর অন্ধকার নেমে আসে তানভীরের জোড়া আঘাতে পরপর দুই বলে নাজমুল ও রায়ান বার্ল আউট হলে। নাজমুল ২৯ বলে ১ ছক্কা ৪ চারে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন। রায়ান কোনো রান করতে পারেননি। সিলেটের রান যেখানে ছিল ৩ উইকেটে ৭২, সেখানে পরিণত হয় ৬ উইকেটে ৭৮। ৯ বলে ৬ রানে নেই ৩ উইকেট।
শুরুর বিপর্যয় সিলেট নাজমুল-মাশরাফির ভেলায় চড়ে পার হয়েছিল। পরের বিপর্যয়মকাটিয়ে উঠতে হাল ধরেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও নতুন খেলতে আসা জর্জ লিন্ডে। দুই জনে সপ্তম উইকেট জুটিতে ৪.৫ ওভারে ৩৯ রান যোগ করেন। মুশফিক ২২ বলে ৪ চারে ২৯ রান করে মুকিদুলের শিকার হন। এরপর আবার বিপর্যয় দেখা দেয় সিলেটের। যে বিপর্যয়ে শেষ ৩ উইকেট পড়ে ৬ বলে ১ রানে। ১৪ বলে ১টি করে চার ছয় মেরে ১৩ রান করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সুনিল নারিনের শিকার হয়ে আউট হন জর্জ লিন্ডে।
আন্দ্রে রাসেল ২২, মোস্তাফিজ ২৫ ও তানভীর ৩০ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
এমপি/এমএমএ/