প্লে অফে চার দলের নতুন বিদেশি
বিপিএল শুরু হওয়ার আগে সবার মাঝে বিরাট এক শঙ্কা কাজ করছিল মান নিয়ে। এই মান নিয়ে প্রশ্ন উঠার কারণ ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটারের অভাব। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি-টোয়েন্টি (আএলটি) ও দক্ষিণ আফ্রিকাতে এসএ টি-টোয়েন্টি নতুন দুইটি আসরে টাকার ঝনঝনানি বেশি থাকায় বিদেশি ক্রিকেটটাররা বিপিএল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন।
প্লেয়ার ড্রাফটে যেমন ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটারে ছিলেন না, তেমনি ফ্রাঞ্চাইজিগুলোও সরাসরি ভালো মানের বিদেশি ক্রিকেটারকে দলে ভেড়াতে পারেনি। সেখানে মরা গাঙে জোয়ার আনার মতো অত্যাশিতভাবে ঝাঁকে-ঝাঁকে পাকিস্তানি ক্রিকেটারার খেলে গেছেন। নামি-দামী তারকা ক্রিকেটরদের মাঝে অধিনায়ক বাবর আজম, শাহীন শাহ আফ্রিদি, শাদাব খানের মতো ক্রিকেটাররা শুধু খেলেননি। এ ছাড়া জাতীয় দলের বাকি সবাইসহ জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এবং সাবেক ক্রিকেটারেদর পদচারনায় মুখরিত ছিল বিপিএলে। বলা যায় তাদের কারণেই প্রাণ পায় বিপিএলে।
আসরে যে চারটি সেঞ্চুরি হয়েছে তার তিনটিই করেন পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানরা। এই তিনজন ছিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওসমান খান. ফরচুন বরিশোলের ইফতেখার আহমেদ ও খুলনা টাইগার্সের আজম খান। অপর সেঞ্চুরিয়ান ছিলেন উইন্ডজের কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের জনসন চার্লস। সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী ১০ ব্যাটসম্যানের ২ জন পাকিস্তানের ।কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের মোহাম্মদ রিজওয়ান ৩৫১ রান করে পাঁচে ও ফরচুন বরিশালের ইফতেখার আহেমেদ ছয়ে আছেন।
বল হাতে সোর ১০ উইকেট শিকারির ৩ জনই ছিলেন পাকিস্তানের। তারা হলেন মোহাম্মদ আমির (১৪ উইকেট), ওয়াব রিয়াজ ( ১৩ উইকেট), ইমাদ ওয়াসিম (১২ উইকেট)। নবম বিপিএলের আলো ছড়ানো এই সব পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের আর বাকি ম্যাচে দেখা যাবে না। পিসিএল খেলতে তারা সবাই পাকিস্তান চলে গেছেন। সর্বশেষ তাদের অনেতেই ১০ ফেব্রুয়ারি ম্যাচ খেলেছেন। এমন এক সময় তারা গিয়েছেন, যখন আসরের বাকি আছে শুধু প্লে অফ ও ফাইনাল খেলা।
বিপিএল ছাড়ার জন্য পিসিবি ৩ ফেব্রুয়ারি সময় সীমা বেঁধে দিয়েছিল। কিন্তু পরে বিপিএলের ফ্রাঞ্চাইজিগুলো সেই সময় ১০ ফেব্রুয়ারি নিয়ে যেতে পেরেছিল।
এবারের বিপিএলে পাকিস্তানি ক্রিকেটারদের গুরুত্ব কতটা বেশি ছিল তা বোঝা যায় পয়েন্ট টেবিলের শিখরে থাকা সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশালের দিকে তাকালে। সিলেটের মোহাম্মদ আমির ও ইদাম ওয়াসিম এবং বরিশালের ইফতেখার আহমেদ চলে গিয়েছিলেন। পরে একটিমাত্র ম্যাচ খেলার জন্য দুইটি দলই নিজ নিজ ক্রিকেটারদের ফিরিয়ে এনেছিল।
পাকিস্তানি ক্রিকেটাররা চলে যাওয়াতে প্লে অফে উঠা চারটি দলের শক্তির অনেক তারতম্য ঘটবে। চারটি দলই তাদের চলে যাওয়া ক্রিকেটারদের বিকল্প আনার চেষ্টা করেছে। সেখানে তারা কতটুকু চাহিদা পূর্ণ করতে পারবেন, তা মাঠেই বুঝা যাবে।
সিলেটের চলে গেছেন মোহাম্মদ আমির, ইমাদ ওয়াসিম ও মোহাম্মদ হারিস। তাদের পরিবর্তে আগেই নিয়ে এসেছে পাকিস্তানের দীর্ঘদেহী পেসার মোহাম্মদ ইরফান ও আফগানিস্তানের গুলবাদিন নাইবকে। দুই জনে একটি করে ম্যাচ খেলেছিলেন। কিন্তু হতাশ করেন। পরের ম্যচে তাদের বাদ দেওয়া হয় মোহাম্মদ আমির ও ইমাদ ওয়াসিম ফিরে আসাতে। প্লে অফের জন্য নতুন করে নিয়ে এসেছে জর্জ লিন্ডে ও শ্রীলঙ্কান ইসুরু উদানোকে।
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের চলে গেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, খুশদিল খুশদিল শাহ, নাসিম শাহ ও হাসান আলী। সুনিল নারিন ও আন্দ্রে রাসেলকে ইতিমধ্যে নিয়ে এসে দুইটি ম্যাচ খেলেয়েছেও। নতুন করে এসেছেন ইংল্যান্ডের অলরাউন্ডার মঈন আলী। দক্ষিণ আফ্রিকার ডু প্লেসিও আসার কথা রয়েছে।
ফরচুন বরিশfল হারিয়েছে ইফতেখার আহমেদ, মোহাম্মদ ওয়াসিম ও হায়দার আলীকে। দক্ষিণ আফ্রিকার ডোয়াইন পিটোরিয়াসকে উড়িয়ে এনে একটি ম্যাচ খেলিয়েছে। সেখানে তিনি তার যোগ্য প্রতিদান দিয়েছেন। প্লে অফের জন্য তারা নিয়ে এসেছে শ্রীলঙ্কার ভানুকা রাজাপাকসেকে।
রংপুর রাইডার্স শোয়েব মালিক ও মোহাম্মদ নেওয়াজের মতো ক্রিকেটারর সার্ভিস না পেলেও তাদের বিকল্প সংগ্রহ বেশ সেরা। আফগানিস্তানের মজিবুর রহমান ও শ্রীলঙ্কার দাসুন শানাকাকেও নিয়ে এসেছে। এ ছাড়া, নিকোলাস পুরান এবং ডোয়াইন ব্রাভোকেও তারা নিয়ে আসার চেষ্টা করছে।
এমপি/এমএমএ/