কোয়ালিফায়ার-১ খেলার ভিসা পাবে কোন দুই দল
মানহীন বিদেশি ক্রিকেটারদের ভিড়ে এবারের বিপএল দারুণভাবে জমে উঠেছে। হয়ে উঠেছে জমজমাট। আবার এই জমজমাটের বিপরীত চিত্রও আছে। এবারের বিপএলকে একপেশেও বলা যায়। কারণ লিগ পর্বের খেলা শেষ হওয়ার অনেক আগেই প্লে অফের চার দল নিশ্চিত হয়ে গেছে। যা সচরাচর বিপিএলে খুব একটা হয়নি। লিগ পর্বের শেষ ম্যাচ পর্যন্ত থাকত প্লে অফে যাওয়ার লড়াই।
আগে-ভাগেই প্লে অফের চার দল নিশ্চিত হয়ে যাওয়াতে এখন এই চার দলের মাঝে শুরু হয়েছে শীর্ষে উঠার লড়াই। এই লড়াইয়ে নতুন মেরুকরণ তৈরি করেছে আবার এবারের আসরের চমক জাগানো দল সিলেট স্ট্রাইকার্স। আগের ম্যাচে তারা রংপুর রাইডর্সের কাছে হেরে গিয়ে জন্ম দিয়েছে নতুন মেরুকরণের। সুযোগ চলে চার দলেরই। অথচ সেই ম্যাচ জিতলে সিলেটের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ার-১ খেলা নিশ্চিত হতো। তখন কোয়ালিফায়ার-১ খেলার জন্য বাকি তিন দলের মাঝে লড়াই হতো।
সিলেটের হাতে একটি ম্যাচ থাকলেও বাকি তিন দলের হাতেই আছে দুইটি করে ম্যাচ। তিন দলের পয়েন্টও সমান ১৪ করে। তিন দলেরই সমান সুযোগ আছে কোয়ালিফায়ার-১ খেলার। কিন্তু কোন দল পাবে তার ‘ভিসা’। এখানে আছে নানা সমীকরণ।
সমীকরণ এমন যে দুই দলের পয়েন্ট হতে পারে ১৮,আবার তিন দলেরও পয়েন্ট হতে পারে ১৮। আবার চার দলের পয়েন্ট সমান থাকতে পারে ১৬ করে। শুধু এই সমীকরণই নয়, শুধুমাত্র ১৮ পয়েন্ট থাকতে পারে একটি দলেরও। আবার ১৪ পয়েন্টই থাকতে পারে যেমন একটি দলের, তেমনি দুইটি দলেরও।
প্লে অফে সবার জন্য শীর্ষে উঠার লড়াই। আর সিলেটের জন্য শীর্ষে থাকার লড়াই। কারণ আসরের শুরু থেকেই তারা শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে। এই শীর্ষ স্থান ধরে রাখার জন্য সিলেটের হাতে একটি ম্যাচ। ১১ ম্যাচে তাদের পয়েন্ট ১৬। সিলেটের শেষ ম্যাচের প্রতিপক্ষ খুলনা টাইগার্স। খেলা হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। এই ম্যাচ জিতলেই সিলেটের শীর্ষে থেকে কোয়ালিফায়ার-১ খেলা নিশ্চিত হবে। হেরে গেলে ঝুলে যাবে। কারণ কুমিল্লা ভিক্টেরিয়ানস ও ফরচুন বরিশাল খেলবে আবার নিজেদের মাঝে আগামীকাল (মঙ্গলবার)। এখানে যে দল জিতবে তার কোয়ালিফায়ার-১ খেলার সম্ভাবনার দুয়ার খুলে যাবে।
এখানে কুমিল্লা আছে কঠিন পরীক্ষায়। কারণ তাদের অপর ম্যাচের প্রতিপক্ষ প্লে অফেরই আরেক দল রংপুর রাইডার্স। খেলা হবে ১০ ফেব্রুয়ারি। কুমিল্লা যদি দুই ম্যাচই জিতে তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ১৮। সিলেট জিতলে তাদেরও পয়েন্ট ১৮। বাকি দুই দলের আর ১৮ পয়েন্ট পাবার সুযোগ থাকবে না।
কুমিল্লা এক ম্যাচ জিতলে পয়েন্ট হবে ১৬। সিলেট হারলেও পয়েন্ট হবে ১৬। আবার বরিশাল যদি কুমিল্লার বিপক্ষে জিতে খুলনার কাছে অপর ম্যাচে হেরে যায় তাহলে তাদেরও পয়েন্ট হবে ১৬। রংপুরেরও পয়েন্ট হবে ১৬ যদি তারা কুমিল্লার কাছে হেরে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে অপর ম্যাচে জয়ী হয়। কাজেই এই সমীকরণে দেখা যাচ্ছে চার দলেরই পয়েন্ট ১৬ করে হবার সম্ভাবনা আছে। সে ক্ষেত্রে নেট রান রেটে স্থান নির্ধারণ করা হবে।
সমীকরণ আরেকটি আছে। সিলেট হেরে গেলে। আবার কুমিল্লা যদি তাদের দুই ম্যাচ জিতে তাহলে তারাই একমাত্র ১৮ পয়েন্ট পেয়ে শীর্ষে উঠে যাবে। একইভাবে বরিশাল ও রংপুরও তাদের দুই ম্যাচ জিতলে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে যাবে। তখন কুমিল্লার আর সুযোগ থাকবে না। কারণ বরিশাল ও রংপুরের কাছে হেরে তারা চারে চলে যাবে। এই দুই দল নিজ নিজ পরের ম্যাচেও জয়ী হলে আবার সিলেট তাদের ম্যাচ জিতলে তিন দলের পয়েন্টই সমান ১৮ করে হবে। তখন নেট রান রেট হবে এক, দুই তিন নির্ধারণ। আর যদি সিলেট হেরে যায় আর ববিশাল ও রংপুর নিজ নিজ দুই ম্যাচ জয়ী হয়ে তখন তারাই উঠে যাবে শীর্ষে।
সমীকরণ আছে আরও একটি। বরিশাল, কুমিল্লা ও রংপুর যেকোনো দল যদি তাদের দুইটি ম্যাচেই হেরে যায়, তাহলে তাদের পয়েন্ট ১৪ করে থাকবে। খেলবে এলিমেনেটর রাউন্ড। যেমন বরিশাল যদি কুমিল্লা ও খুলনার কাছে এবং রংপুর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের কাছে হেরে যায়। তাহলে তাদের পয়েন্ট হবে ১৪ করে। আবার কুমিল্লা যদি তাদের দুই ম্যাচে হার মানে, তাহলে ১৪ পয়েন্ট থাকবে শুধু তাদেরই। কারণ তাদের বিপক্ষে তখন একটি করে ম্যাচ জিতে ১৬ পয়েন্ট করে হয়ে যাবে বরিশাল ও রংপুরের।
এমপি/এসএন