প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির ‘এ’ দলের চার দিনের সিরিজ
জাতীয় দলের পাইপ লাইনে খেলোয়াড় ঘাটতি। ইনজুরির কারণে এশিয়া কাপের দল গড়তে হিমসিম খেতে হয়েছে নির্বাচকদের। উপায় না পেয়ে নির্বাচকরা ফিরে গেছেন সাব্বির রহমানের কাছে। যিনি জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার পর এখনো নিজেকে ফিরে পাননি। তাকে এবং তার মতো অনেক ক্রিকেটারকে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ টাইগার্স টিমে। পাঠানো হয়েছে ‘এ দলের হয়ে উইন্ডিজ সফরে। কিন্তু দুইটি চারদিনের ম্যাচেই বৃষ্টি এসে বেশ ভালোই বাগড়া দিয়েছে। দুইটি ম্যাচই ড্র হয়েছে।
প্রথম ম্যাচে খেলা হয়েছে ১৫৮.৫ ওভার। শেষ দুই দিন একটি বলও মাঠে গড়াতে পারেনি। বাংলাদেশ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে ১৬৭ রানে অলআউট হয়ে যায়। অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন করেন ৫০ রান। জবাবে স্বাগতিকরা পাঁচ উইকেটে ২৬৩ রান করতে পেরেছিল।
দ্বিতীয় চার দিনের ম্যাচেও ছিল বৃষ্টির উৎপাত। তবে খেলা হয়েছে তুলনামুলক বেশি। বৃষ্টিতে পুরো একটি দিন ভেসে যায়নি।খেলা হয়েছে ২৩৯.৫ ওভার। বাংলাদেশ ১২৬.৪ ওভার খেলে ৯ উইকেটে ৩০০ রান করে ইনিংস ঘোসণা করার পর উইন্ডিজ পাঁচ উইকেটে করে ২৭৭ রান। এই ম্যাচে সাইফ হাসানের ব্যাট থেকে আসে ঝকঝকে ১৪৬ রানের ইনিংস।
দুইটি ম্যাচই ছিল বাংলাদেশ দলের জন্য অম্লমধুর। কোচ মিজানুর রহমান বাবুলের কথায় ফুটে উঠেছে সে রকমই অভিব্যক্তি। এক ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘আমি হ্যাপি। যতটুকু উন্নতির প্রয়োজন ছিল তারা তা করতে পেরেছে। তারা সুন্দর কাম ব্যাক করতে পেরেছে। লঙ্গার ভার্সেনের দুইটা ম্যাচে আমি খু্িশ। যদি সম্পূর্ণ কমপ্লিট হতো, যদি ইন্টারপ না হতো, আমার মনে হয় যদি প্রথম ম্যাচে আমরা রেজারল্ট খারাপও ওভার করতে পেরেছি, সেটা আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে এসে করতে পারতাম। আমরা এখানে এসেছি উন্নতি করার জন্য দেশের বাইরে কীভাবে ভালো ক্রিকেট খেলা যায়। বাইরে ভালো ব্যাটিং করা, ভালো বোলিং করা এগুলো মূল শিক্ষার বিষয়। এগুলো আমরা এখানে করার চেষ্টা করছি। আর ছেলেরাও উত্তরোত্তর উন্নতি করছে।’
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ মাত্র ১৬৭ রানে অলআউট হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে ৯ উইকেটে ৩০০ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। সাইফ হাসান সেঞ্চুরি করেন। খেলেন ১৪৬ রানের ইনিংস। এভাবে দ্রুত ফিরে আসা নিয়ে কোচ বলেন, ‘এটা সত্যি আমরা যে রকম মন মানসিকতা নিয়ে এখানে এসেছিলাম বা আমাদের যে রকম প্রস্তুতি নিয়েছিলাম একটা দেশ থেকে আরেকটা দেশে আসলে যে রকম সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, আমরা সে রকম সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম। অ্যাডজাস্ট করতে পারিনি উইকেটের সঙ্গে বিভিন্ন সমস্যা ছিল। পেশাদার খেলোয়াড়দের ওই সব অ্যাডজাস্ট করতে হয়। এগুলো শেখার বিষয়। এ গুলো শিখেই আমরা সিনিয়র দলে খেলব। এখানে বাউন্সটা ছিল। শুরুর দিকে আমরা অ্যাডজাস্ট করতে পারিনি।
আমাদের ন্যাচারাল খেলার মধ্যেই আমরা ছিলাম। যে কারণে আমরা ১৬৭ রান করেছি। কম ওভার খেলেছি। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের মাঝে শুধু মিঠুনই ৫০ রান করতে পেরেছিল। আমরা খেলোয়াড়দের সঙ্গে কথা বলেছিল। দুইদিন সুযোগ ছিল আমাদের। আমরা সেন্টার উইকেটে অনুশীলন করেছি। তাদেরকে ওইভাবে মুটিভেটেড করার চেষ্টা করেছি। তারাও তাদের ভুলটা বুঝতে পেরেছে কীভাবে রান করতে পারবে। কীভাবে সারভাইব করতে হবে। সেটা দ্বিতীয় ম্যাচে এসে করতে পেরেছি। খুবই ভালো ব্যাটিং করেছে ৩০০ রান করেছি আমরা। নতুন বল খেলতে যে সমস্যা ছিল, সেই নতুন বলে আমরা ভালো করতে পেরেছি।’
কয়েকজন খেলোয়াড়ের নাম উল্লেখ করে কোচ মিজানুর রহমান বাবুল বলেন, ‘সাদমান বড় স্কোর করেনি। কিন্তু নতুন বলে সে সারভাইব করেছে। জয়ও একটা ব্যাড-প্যাডের মাঝে ছিল। সেও ১৭ রান করে নতুন বল খেলে দিয়ে এসেছে। সাইফ এক্সিলেন্ট ব্যাটিং করেছে। ১৪৭ রান করেছে। ৩০০ বলের উপরে খেলেছে। অন্যান্য যে সব পার্টনারশীপ হয়েছে, এগুলো উন্নতির যে একটা ধারাবাহিকতা সেটা এখানে পরিলক্ষিত হয়েছে এবং পাশাপাশি আমরা ডিক্লেয়ারও করেছি। এটা একটা ভালো দিকও ছিল।’
বোলিং নিয়ে কোচ বলেন, ‘আমরা যখন বোলিংয়ে করতে এসেছি মৃতুঞ্জয় দুইটা উইকেট নিয়েছে। এবং ওভারঅল বোলিং যদি আমরা বলি, গতম্যাচের তুলনায় এই ম্যাচে লাইন লেন্থ মেইনটেইন করে বোলিং করেছে। আমাদের মাঝে একটা চ্যালেঞ্জ ছিল যে এই উইকেটে স্পিনারদের কম খেলানো পেসার বেশি খেলানো, আমাদের যে লেফট আর্ম স্পিনার তানভীর, তাকে আমরা এখানে নিয়ে এসেছি। ওকে আমরা এখানে খেলানোর চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যৎয়ে যদি এ রকম উইকেটে খেলানোর দরকার পড়ে। সেও তার স্কিল প্রমাণ করতে পেরেছে হয়তো সে উইকেট পায়নি। কিন্তু সে তার লাইনলেন্থ মেইনটেইন করার চেষ্টা করেছে। নাঈম প্রথম ম্যাচ এবং দ্বিতীয় ম্যাচ ভালো বোলিং করেছে। নাঈম যে আমাদের নেক্সট জেনারেশনের বোলার সেটা সে ডে বাই ডে প্রমাণ করেছে।’
চারদিনের সিরিজের পর এখন শুরু হবে তিনম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। অনুষ্ঠিত হবে ১৬, ১৮ ও ২০ আগস্ট। কোচ আশাবাদী বৃষ্টি বাধা সৃষ্টি না করলে ভালো কিছু করার।
এমপি/এমএমএ/