বিজয়কে জাতীয় দলে নেওয়ার পথ বাতলে দিলেন মাশরাফি
একটা সময় ছিল ঘরোয়া ক্রিকেট মানেই প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগ। জমজমাট লড়াই। টানটান উত্তেজনা। এই আসরে খেলেই ক্রিকেটারা জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন বুনন করতেন। কিন্তু ২০০০ সালে বাংলাদেশ টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার পর ধীরে ধীরে এই আসরের গুরুত্ব কমতে থাকে। শীতের ক্রিকেট চলে যায় গ্রীষ্মে।
প্রিমিয়ার ক্রিকেটের জায়গা দখল করে নেয় বিপিএল। আবার জাতীয় দলের ব্যস্ততার কারণে তারকা ক্রিকেটারদেরও খেলা হয়ে উঠে না সব সময়। তারপরও প্রিমিয়ার ক্রিকেটই এখনো ঘরোয়া ক্রিকেটের সেরা আসর। আজ শেষ হয়েছে এবারের মৌসুম ব্যাটে বলের লড়াইয়ে সেরা হয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। এক ম্যাচ হাতে রেখেই তারা প্রথমবারের মতো শিরোপা ঘরে তুলে নেয়। রানার্সআপ হয় লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
এবারের আসরে অবশ্য লিগ শিরোপার চেয়েও বেশি নজর কেড়েছে এনামুল হক বিজয়ের ব্যাটিং। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়া এই ব্যাটসম্যান এবার রান সাগরে ভেসেছেন। বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে এক মৌসুমে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে হাজার রান করার মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। সেটি তিনি করেছিলেন গত ম্যাচেই। আজও তার ব্যাটে হেসেছে। মাত্র ৪ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে পারেননি। লিগ শেষে তার নামের পাশে শোভা পাচ্ছে ১১৩৮ রান। তিন সেঞ্চুরির পাশে ৯ হাফ সেঞ্চুরি। এমন ফর্ম যার, তারতো জাতীয় দলেই মানায়? কিন্তু তারপরও নিশ্চিত নয় এনামুল হক বিজয়ের জাতীয় দলে ফেরা? কারণ স্থান সংকুলান। বিজয় ওপেনার। সেখানে কাউকে বাদ দেওয়ার মতো নয়। তা জানার পরও তার পক্ষে বৈঠা ধরেছেন ওয়ান ডে দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। তিনি জানান বিজয়কে এখনই জাতীয় দলে ডাকা উচিত। সঙ্গে তিনি নুরুল হাসান সোহানের নামও উল্লেখ করেছেন। সোহান জাতীয় দলে খেললেও নিয়মিত নয়।
দুই জনকে নিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘দেখেন পুরো একটা লিগ থেকে আপনি ১০-১২ জনকে আনতে পারেন। তবে জাতীয় দলকে ফোকাস করলে এক বা দুইজনকে টার্গেট করতে হয়। সেটা যদি করেন, আমি মনে করি বিজয়। আগেরদিনও বলেছি, আজকেও বলছি সে অসাধারণ ব্যাটিং করেছে। দাপট দেখিয়ে ব্যাটিং করেছে। বিজয়কে আমি মনে করি এখনই বিবেচনা করার সময়। ক্রিকেটে একটা বিষয় আছে বয়স। এখন বিজয়-সোহানরা যে বয়সে আছে, ক্রিকেটে ২৮ থেকে ৩২-৩৪ এর একটা প্যাচ থাকে। এখন কিন্তু ওরা ওই বয়সে রয়েছে। তাই এখানে শুধু এক্সপেরিয়েন্স আছে, সিনিয়র খেলোয়াড়দের কথা চিন্তা না করে যদি কিছু ওদের কিছু ম্যাচে সুযোগ দেওয়া যায়, আমার মনে হয় ওরা ভালো করবে। কারণ ওই যে বললাম, একটা বয়সের পর ঐ স্পিরিট আর ওদের ভেতরে থাকবে না, যখন সুযোগ না পাবে।’
বিজয় সর্ম্পকে তিনি আলাদা করে আরও বলেন, ‘একজন মানুষ যদি ১১শ রান করে সুযোগ না পায়, তাহলে তার আর প্রমাণ করার জায়গা থাকে না। তাই এই সুযোগটা পাওয়া উচিত ।’
বিজয়কে জাতীয় দলে নেওয়ার পথও বাতলে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘লিটন-তামিমকে তো আপনি সরাতে পারবেন না। তারা রিসেন্টলি পারফর্ম করে এসেছে। তাই বিজয়কে যদি আনেনও, ফার্স্ট এলিভেনে জায়গা কিন্তু নাই। টেস্টে জানি না কে ওপেন করবে, তবু জয় কিন্তু একশ করে আসছে। এখানে তামিম খেলবে। সো এখানেও কিন্তু কঠিন। তাই টি-টোয়েন্টি আমি উল্লেখ করেছি কারণ এই ফরম্যাটে এখনই বিজয়কে সেট করার সুযোগ আছে। এটা আমার মতামত। এমন না অন্যকেও মেনে নিতে হবে।’
এমপি/এমএমএ/