২০২৭ সালে অস্ট্রেলিয়াতে টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ!
বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ামক সংস্থা আইসিসি। কিন্তু আসলেই তারা কতোটুকু নিয়ামক এ নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। চাইলেই একটি দেশ যে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়, সেখানে আইসিসি করার কোনো কিছুই থাকে না। ভারত না চাওয়াতে পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ বন্ধ হয়ে আছে।
আবার আইসিসিরি এফটিতে খেলা থাকার পরও কোনো দেশ ইচ্ছে করলেই খেলতে অপরাগতা প্রকাশ করছে। ২০১৬ সালে নিারপত্তার কথা বলে অস্ট্রেলিয়া দল তাদের বাংলাদেশ সফর স্থগিত করে দিলেও একই সময় অস্ট্রেলিয়ার ফুটবল দলের বিশ্বকাপ বাছাই খেলা ছিল বাংলাদেশে। তারাও না আসতে চেয়েছিল। কিন্তু ফিফার কঠোর মনোভাবের কারণে ফুটবল দলকে বাংলাদেশে এসে খেলে যেতে হয়েছিল। এই দুইটি ঘটনাতে বুঝা যায় ফিফা কতোটা শক্তিশালী, আর আইসিসি কতোটা দূর্বল।
বাংলাদেশ ২০০০ সালে টেস্ট মযার্দা পাওয়ার পর এখন পর্যন্ত একবারই অস্ট্রেলিয়া গিয়ে দ্বি পাক্ষিক টেস্ট সিরিজ খেলে এসেছে। সেটা ২০০৩ সালে। দুইটি খেলাই দিয়েছিল অপরিচিত দুই ভেন্যুতে। এরপর ছিল ২০১৬ সালের সেই টেস্ট সিরিজ। এদিকে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে এসেছে দুইবার ২০০৬ ও ২০১৭ সালে। বাংলাদেশে আবার অস্ট্রেলিয়া গিয়ে ২০০৮ সালে ওয়ানডে সিরিজ খেলে এসেছে। ২০২২ সাল পর্যন্ত এফটিতে অস্ট্রেলিয়া বাংলাদেশে আসলেও বাংলাদেশেকে আতিথেয়তা দেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তারা। সেই অস্ট্রেলিয়াতে আবার বাংলাদেশের যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে আইসিসির নতুন (২০২৩-২০২৮) এফটিতে।
রবিবার (১৭ এপ্রিল) মিরপুরে বিসিবির ক্রিকেট অপারেশনস কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেন, ‘২০২৭ সালে দুটি টেস্ট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাবে বাংলাদেশ। পরিকল্পনা আছে। এখনও চূড়ান্ত হয়নি। ২০২৬ সালে ওরা আসবে।’
এদিকে অস্ট্রেলিয়ার মতো করে না হলেও ইংল্যান্ডেও বাংলাদেশের খুব একটা দ্বি পাক্ষিক সিরিজ খেলা হয়নি। যদিও বাংলাদেশ ইংল্যান্ডে আইসিসিরি আসর খেলকে বেশ কয়েকবারই গিয়েছে। সর্বশেষ গিয়েচিল ২০১৯ সালের ওয়ানেডে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে। দ্বি পাক্ষিক সিরিজ সর্বশেষ খেলে এসেছে ২০১০ সালে। আর ইংল্যান্ডে সর্বশেষ বাংলাদেশে এসেছিল ২০১৬ সালে। এবার ইংল্যান্ডে গিয়েও টেস্ট সিরিজ খেলার চেষ্টা করছে বিসিবি।
জালাল ইউনুস বলেন, ‘ইংল্যান্ডের সঙ্গে এখনো কথা হচ্ছে। নিশ্চিত হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি ইংল্যান্ডে গিয়ে একটা সিরিজ খেলতে। আমরা আশা করছি ওদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাব।’
এর বাইরে নতুন এফটিপেতে বাংলাদেশ দল পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা সফরও করবে বাংলাদেশ। জালাল ইউনুস বলেন, ‘দক্ষিণ আফ্রিকা, পাকিস্তান সফর করার পরিকল্পনা আছে বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তো আছেই। কিছু কিছু সিরিজ মোটামুটি নিশ্চিত হয়েছে, পরে আপনারা জানতে পারবেন।’
এই সব দেশে দ্বি পাক্ষিক সিরিজ একেবারে না খেলা বা কম খেলা প্রসঙ্গে জালাল ইউনুস বলেন, ‘আমরা সব সময় চাই পূর্ণাঙ্গ সিরিজ হোক। আমরা চেষ্টা করি। কিন্তু আমাদের চাওয়ামতো অনেক কিছু মেলে না। দেখা যায়, আমরা আলাপ করলে ওরা একটা বা দুইটা ফরম্যাটের কথা বলে। সেটা আমাদের মেনে নিতে হয়। দেখা যাক আমরা আলোচনা করে আরো কিছু খেলা বাড়িয়ে নিতে পারি কি না। এটা নির্ভর করে আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ওপর। অনেক সময় দেখা যায় তাদের যেসব সূচি থাকে, আমি অস্ট্রেলিয়ার কথা বলছি। খা যায় অ্যাশেজ থাকলে তারা লম্বা সময়ের জন্য ওটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। তাই অন্য সিরিজ সংক্ষিপ্ত করে ফেলে। তখন একটা বা দুইটা ফরম্যাটে খেলার সুযোগ পাই।’
নতুন এফটিতে হয়তো অস্ট্রেলিয়া সফর হবে। হতে পারে ইংল্যান্ড সফরও। কিন্তু সার্বিকভাবে বাংলাদেশের জন্য আছে সুখবর। বেড়েছে ম্যাচের সংখ্যা। জালাল ইউনুস বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সুখবরও আছে। আলাপ আলোচনা করে যেগুলো চূড়ান্ত করেছি এর মধ্যে ৪০টির বেশি টেস্ট, ৭০ এর বেশি ওয়ানডে ও ৭৬টিরও বেশি আছে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। হতে পারে এখান থেকে কিছু বদল হতে পারে। এগুলো আইসিসি ও মহাদেশীয় ইভেন্টের বাইরে। এরপর তো আইসিসি ইভেন্ট আছেই। এরমধ্যে ত্রিদেশীয় সিরিজও খেলতে পারি।’
এমপি/এমএমএ/