মোহামেডানের চাওয়া মেটালেই মুশফিক-মিরাজ শেখ জামালের
চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এক ঝাঁক তারকা ক্রিকেটারকে দলে নিয়েও মোহামেডান আশা পূরণ করতে পারেনি। আসলে তারা আশা পূরণের কাছাকাছিও যেতে পারেনি। উঠতে পারেনি সুপার লিগেও। চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য যে সব তারকা ক্রিকেটারদের দলে নিয়েছিল, তাদের একাধিক ক্রিকেটারই মোহামেডানের হয়ে একটি ম্যাচও খেলতে পারেনি। এই না খেলা ক্রিকেটারদের তালিকাটা বেশ লোভনীয়। সাকিব, মুশফিক, তাসকিন, মিরাজ ও রাহী।
সাকিব আমেরিকাতে, আর তাসকিন ইনজুরিতে থাকায় মোহমেডান সুপার লিগে উঠলেও খেলা সম্ভব হতো না। সে ক্ষেত্রে বাকিদের পাওয়া যেতো। এখন সুপার লিগে না উঠাতে এবং এই সব ক্রিকেটার লিগে কোনো ম্যাচ না খেলাতে তাদের সামনে ‘বুঝাপড়া’র মাধ্যমে অন্য ক্লাবে খেলার সম্ভাবনা আছে এবং সেই সম্ভাবনা তৈরিও হয়েছে। মুশফিক ও মিরাজকে শেখ জামাল নিজেদের করে নিতে মাঠে নেমেছে। সব ঠিক থাকলে আজেই যাবতীয় দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন হয়ে যাবে।
মুশফিককে পেতে চেয়েছিল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জও। কিন্তু জানা গেছে শেখ জামাল থেকে আর্থিক সুবিধা কিছুটা বেশি পাওয়াতে মুশফিক আর রূপগঞ্জের প্রতি আগ্রহ দেখাননি। এদিকে কোনো রকমের আনুষ্ঠানিকতা শেষ না করেই শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের পক্ষ থেকে এক ভিডিও বার্তাও এই দুই ক্রিকেটারকে সুপার লিগে তাদের হয়ে খেলতে দেখা যাবে বলে জানানো হয়েছে। সেখানে ক্লাবটির টিম ডিরক্টের শাহনিয়ার তানিম বলেন, ‘মোহামেডান যেহেতু সুপার লিগে কোয়ালিফাই করতে পারেনি। তখন আমরা দেখলাম যে মিরাজ ও মুশফিক অ্যাভিলেবল হয়েছে সুপার লিগের অন্য দলে খেলার জন্য। আমরা তাদের প্রস্তাব করেছিলাম এবং মোহামেডান সম্মতি দেওয়াতে আমরা তাদের নিতে পারতেছি। আশা করছি তারা আসাতে আমাদের শিরোপা জয় আরও সহজ হবে। তিনটা জিতলেই আমরা শিরোপা জিতে যাব। আমরা আশা করছি এবার চ্যাম্পিয়নশিপে আমরা ভালো লড়াই করতে পারব।’
কিন্তু মোহামেডানে ক্লাবেরসঙ্গে যোগাযোগ করে জানা গেছে তাদের কাছে এখনো এ ব্যাপারে লিখিত কোনো আবেদন করা হয়নি কোনো ক্লাবের পক্ষ থেকেই।
মোহামেডানের ক্রিকেট কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুজ্জামান ঢাকপ্রকাশকে বলেন, ‘আমরা যেহেতু সুপার লিগে উঠতে পারিনি আমাদের কয়েকজন ক্রিকেটার ক্লাবের হয়ে কোনো ম্যাচ খেলতে পারেনি। এখন তারা উন্মুক্ত। কোনো ক্লাব যদি এইসব ক্রিকেটারকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে, আমরা বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবো।’
সেক্ষেত্রে মোহামেডান থেকে তারা যে অগ্রিম টাকা নিয়েছে সেই টাকার কী হবে? এই প্রশ্নর জবাবে মাসুদুজ্জজামান বলেন, ‘এই সব নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না।’
এদিকে সিসিডিএমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে এক কর্মকর্তা জানান, ‘মুশফিক-মিরাজ কোনো ক্লাবে খেলতে হলে মোহামেডানের অনাপত্তি পত্র লাগবে। মোহামেডানের অনাপত্তি ছাড়া তারা অন্য ক্লাবে এ মৌসুমে খেলতে পারবে না। অনাপত্তি পত্র পাওয়ার পর তারা যে ক্লাবে খেলতে আগ্রহি আমরা সেই ক্লাবের খেলোয়াড় তালিকায় তাদের নাম লিপিবদ্ধ করে নেবো।’
শেখ জামালের ক্রিকেট কমিটির ম্যানেজার টিপু সুলতান মাহমুদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ‘আমরা দুই ক্রিকেটারের সঙ্গে কথা চুড়ান্ত করার পর আনুষ্ঠানিকতা আজই সেরে নেওয়ার চেষ্টা করব। মোহামেডানের কাছে দুই ক্রিকেটারের বিষয়ে অনাপত্তি চাইবো। এরপর সিসিডিএমে যাব। আশা করি সব কিছু হয়ে যাবে।’
মুশফিক ও মিরাজের শেখ জামালের হয়ে সুপার লিগে মাঠে নামা শুধু সময়ের ব্যাপারে মাত্র। শেখ জামাল যেমন দুই ক্রিকেটারের ব্যাপারে আগ্রহী, তেমনি মোহামেডানও ছেড়ে দিতে আগ্রহী। গত বছর মোহামেডান যখন এইসব ক্রিকেটারকে দলে নিয়েছিল তখন সাইনিং মানি হিসেবে মোটচুক্তির সর্বনিম্ন ২৫ ভাগেরও বেশি টাকা কোনো কোনো ক্রিকেটারকে পরিশোধ করেছিল। এখন এই দুই ক্রিকেটার যেহেতু মোহামেডানের হয়ে কোনো ম্যাচ খেলেননি, তাই নিয়ম মোতাবেক তাদের মোহামেডানের টাকা ফেরত দেওয়ার কথা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ঢাকা প্রকাশকে মোহামেডানের এক পরিচালক বলেন, ‘অগ্রিম টাকা কোনো সমস্যা না। আমার এই দুই ক্রিকেটারকে যে টাকা দিয়েছি তার চেয়ে বেশি দামেও বিক্রি করতে পারি। আবার আগামী মৌসুমে খেলার শর্তও দিতে পারি। তবে কোনো কিছুই থেমে থাকবে না।’
এদিকে মোহামেডানে ক্লাবে সূত্রে জানা গেছে শেখ জামালের পক্ষ থেকে দুই ক্রিকেটারের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে দুই ক্রিকেটারকে যে অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে সেই টাকা নগদে ক্লাবে পরিশোধ করতে বলা হয়েছে এবং এ বিষয়ে মোহামেডানের ক্রিকেট কমিটি চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের সঙ্গে যোগযোগ করতে বলে হয়েছে।’
এমপি/এমএমএ/