পোর্ট এলিজাবেথ টেস্ট
প্রথমদিন লড়াইয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ
প্রথম সেশনে এক উইকেট, দ্বিতীয় সেশনে দুই উইকেট, তৃতীয় সেশনে আর চার উইকেট হয়নি, হয়েছে দুই উইকেট। তাই পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টের প্রথম দিন বাংলাদেশ নিজেদের করে নিতে পারেনি। তাই বলে দক্ষিণ আফ্রিকারও হতে দেয়নি। ৫ উইকেটে ২৭৮ রানে দক্ষিণ আফ্রিকাকে আটকে রেখে লড়াইয়ে ফিরেছে বাংলাদেশ। ভেরেইনে ১০ ও মুল্ডার ০ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন ব্যাট করতে নামবেন।
প্রথম টেস্টে আম্পায়ারিং বেশ ভুগিয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। আউটের বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত আম্পায়াররা না দিলে অধিনায়ক মুমিনুল রিভিউ নিয়ে তা পক্ষে এনেছিলেন। এর সঙ্গে ছিল অধিনায়ক রিভিউ নেবেন, কি নেবেন এ রকম দোদুল্যমনতা। শেষ পর্যন্ত রিভিউ নেওয়াতে নিশ্চিত উইকেট পাওয়া থেকে বঞ্চিত হতে হয়েছিল বাংলাদেশ দলকে। ডারবান টেস্টের পর পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টেও আম্পায়ারদের ভুল সিদ্ধান্ত অব্যাহত রয়েছে। ম্যাচের তৃতীয় ওভারেই খালেদের বলে এরউইর পরিষ্কার এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। মুমিনুল রিভিউ নেবেন, কি নেবেন না- এই রকম দোদুল্যমনতায় শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হওয়াতে পরে আর রিভিউ নেওয়া সম্ভব হয়নি। হকআইয়ে দেখা যায় বল গিয়ে তার স্ট্যাম্পে আঘাত হানত। ফলে নিশ্চিত আউট হওয়ার থেকে বেঁচে যান এরউই। তখন তার রান ছিল মাত্র ৪, আর দলের ৯। সেই এরউইকে পরে খালেদই আউট করেন। তবে অনেক পরে, যখন দলের রান ৫০ পার হয়ে ৫২, আর তার রান ২৪। অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে জমা পড়ে। শুধু এখানেই নয়। আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত ভুল প্রমাণ করেছে বাংলাদেশ দল দক্ষিণ আফ্রিকার তৃতীয় উইকেট নিয়ে। কিগান পিটারসেনকে এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলেছিলেন তাইজুল। কিন্তু তারে আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার। অগত্যা রিভিউ নিতে হয় মুমিনুলকে। সেখানে মিলে সফলতা।
পোর্ট এলিজাবেথে টস জিতে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং বেছে নেয়। বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্টেরও টস জিতলে সে রকম চিন্তা-ভাবনা ছিল। উইকেট যে ব্যাটিং বান্ধব তা স্বাগতিকদের রান সংগ্রহের গতির দিকে দৃষ্টি ফেরালেই বুঝা যায়। লাঞ্চের আগে দুই ঘণ্টায় রান সংগৃহীত হয়েছে ১০৭ রান। উইকেট থেকে বোলাররা তেমন কোনো ফায়দা নিতে পারেননি প্রথম দুই ঘণ্টায়। ব্যাটসম্যানদের বিভ্রান্ত করতে মুমিনুল খালেদের সঙ্গে মিরাজকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করেন। যদিও মিরাজকে প্রথম ওভার পরই আক্রমণ থেকে সরিয়ে নেন। এরপর এবাদত ও খালেদ মিলে চেষ্টা করে ব্যর্থ হওয়ার পর মিরাজের সঙ্গে তাইজুলকেও আক্রমণে নিয়ে আসেন। তবে লাঞ্চের শেষ দুই ওভার আগে মুমিনুল দুই প্রান্ত থেকে এক সঙ্গে স্পিন আক্রমণ করাননি। এক প্রান্তে পেসার থাকলে, অপরপ্রান্তে স্পিনার ছিল আক্রমণে। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে ৮৬ বছর পর স্পিনার দিয়ে এক প্রান্ত থেকে বোলিং আক্রমণ শুরু করতে দেখা গেল। এর আগে ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার লেগ স্পিনার বিল ও’রাইলি করেছিলেন দ্বিতীয় ওভার। ম্যাচে প্রথম ওভারটি করেছিলেন পেসার আর্নি ম্যাককরমিক।
প্রথম দিন স্বাগতিকদের যে কজন ব্যাটসম্যান উইকেটে এসেছেন, সবাই কম-বেশি রান পেয়েছেন।ফিফটি করেছেন তিনজন। সর্বোচ্চ ৭০ রান করেন অধিনায়ক এলগার। বাভুমা ৬৭, পিটার সন ৬৪ রান করেন। এ ছাড়া রিকেলটন ৪২, এরউই ২৪ রান করেন।
তাইজুল ৭৭ রানে ৩টি, খালেদ ৫৯ রানে ২টি উইকেট নেন।
এমপি/আরএ/