ক্লাব ক্রিকেটেও জায়গা হারালেন সৌম্য
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জাতীয় দলকে অনেক দিন সার্ভিস দেবেন-এ রকম অমিত সম্ভাবনা নিয়ে জাতীয় দলে প্রবেশ করেছিলেন সৌম্য সরকার। সেই সম্ভাবনার ছাপও তিনি রেখেছিলেন নিজের ব্যাটিং কারিশমা দিয়ে। কিন্তু নিজের সেই শৌর্য্য ধরে রাখতে পারেননি। ফলাফল জাতীয় দল থেকে বাদ। ব্যর্থতার অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাওয়া সৌম্য সরকার এবার ক্লাব ক্রিকেটেও নিজের জায়গা হারিয়েছেন। মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) আবাহনীর বিপক্ষে নিজ ক্লাব মোহামেডানের সেরা একাদশে তিনি জায়গা করে নিতে পারেননি। এর ফলে নিজেকে ফিরে পাওয়ার আপতত শেষ স্থানটুকুও হারালেন এই ক্রিকেটার।
সৌম্যের মাঝে সম্ভাবনার বীজ দেখতে পেয়ে তাকে অনেক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বাজে ফর্মের সঙ্গে লড়াই করতে থাকার পরও তাকে তিন ফরম্যাটের কোনো না কোনো ফরম্যাটে সুযোগ দিয়ে নির্বাচকরা তাকে ফর্মে ফেরার সুযোগ করে দিয়েছেন। কিন্তু সৌম্য তা কাজে লাগাতে পারেননি। টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে ব্যর্থ থাকার পরও সৌম্য সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দলে ছিলেন এবং প্রাথমিক পর্বে ১টি ও মূল পর্বে ৩টি ম্যাচ খেলেছিলেন। ফলাফল সেই একই। ব্যাটে রান নেই। এরপর সেখান থেকেও তিনি বাদ পড়েন। আর ফিরে আসতে পারেননি।
সৌম্য টেস্ট ক্রিকেট সর্বশেষ খেলেছিলেন ২০২১ সালে ফেব্রুয়ারিতে মিরপুরে উইন্ডিজের বিপক্ষে। ০ ও ১৩ রান করেছিলেন। ওয়ানডে খেলেছন ২০২১ সালের মার্চে। নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে তাদের মাটিতে। তিন ম্যাচে রান করেছিলেন ০,৩২, ১। এর আগে বছরের শুরুতে উইন্ডিজের বিপক্ষে শেষ ম্যাচ খেলেও রান করতে পারেননি। ৭ রান করে আউট হয়েছিলেন। এরপর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রাথমিকপর্বে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে একটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়ে সেখানেও ব্যর্থ হয়েছিলন ৫ রান করে। তারপরও মূল পর্বে ৩ ম্যাচ খেলে রান করেনছিলেন ১৭,০,৩ রান। এরপর আর তাকে জাতীয় দলে ডাকা হয়নি। তখন তার একমাত্র অবলম্বন হয়ে উঠে ঘরোয়া আসর। বিপিএলে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের হয়েও ভালো করতে পারেননি। এরপর তার শেষ ভরসা হয়ে থাকে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ।
প্রিমিয়ার লিগে তার ক্লাব ছিল মোহামেডান। যেখানে সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, তাসকিনের সঙ্গে তিনিও ছিলেন। তাকে মোহামেডান ক্লাব দলে নিয়েছিল গত মৌসুম শেষ হওয়ার পরপরই মুশফিক-মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে। জাতীয় দলে খেলার কারণে মুশফিক, তাসকিন, মাহমুদউল্লাহ শুরুতে দলে ছিলেন। ওয়ানডে সিরিজ শেষ হওয়ার পর মাহমুদউল্লাহ ফিরে এসে লিগে খেলতে থাকেন। সৌম্যও লিগের শুরু থেকে খেলছিলেন। কিন্তু ব্যাটে তার রান নেই। ৬ ম্যাচ খেলে একটি মাত্র ফিফটি। খেলাঘরের বিপক্ষে অপরাজিত ৫৯ রান। বাকি ৫ ম্যাচে তিনি করেন ১, ৭, ১, ২৩, ৩। এর ফলে আবাহনীর বিপক্ষে তাকে আর সেরা একাদশে রাখার সাহস করেনি ক্লাব। যদিও বল হাতে তিনি ৭ উইকেট পেয়েছিলেন। প্রাইম ব্যাংকের বিপক্ষে ৫৪ রানে ৪ এবং শাইনপুকুরের বিপক্ষে ৫২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। কিন্তু বল হাতে তার এই নৈপুন্য ক্লাবের আস্থা যোগাতে পারেনি। কারণ তিনি মূলত ব্যাটসম্যান। তার কাছে থেকে রানই প্রত্যাশা সবার আগে। বল হাতে উইকেট পাওয়াটা বোনাস। কিন্তু বোনাসে মন ভরেনি। তাই সেখান থেকেও বাদ। আবার কবে ফিরবেন সেরা একাদশে তার কোনো সঠিক জবাব এ মহুর্তে নেই?
এমপি/এসআইএইচ