আবাহনীর কাছে পাত্তাই পেল না মোহামেডান
আবাহনী-মোহামেডানের খেলা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ কমেছে অনেক আগে থেকেই। এখন এই দুই দলের খেলা কবে কোথায় অনুষ্ঠিত হয় তা অনেকেই খবর রাখেন না। তা হোক ফুটবল কিংবা ক্রিকেট-হকি। মাঠের বাইরে দর্শকদের আগ্রহ কমার সঙ্গে সঙ্গে মাঠের খেলায়ও যেন তার প্রভাব পড়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দুই দলের লড়াই হয় অসম। এর কারণ মোহামেডান ফুটবল কিংবা ক্রিকেটে খুবই সাধারণ মানের দল গড়ে। কিন্তু এবার ক্রিকেটে খুবই শক্তিশালী দল গড়েছে। আবাহনীতো যথারীতি শিরোপা প্রত্যাশী দল। অনেকেরই প্রত্যাশা ছিল এবার অন্তত অনেকদিন পর দুই দলের সেই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া খেলা দেখা যাবে। কিন্তু তাদের সেই আশা গুড়েবালি। সেই আগের মতোই এক তরফা ম্যাচ। যেখানে যথারীতি আবাহনীর জয় ৬ উইকেটে। মোহামেডান লড়াই-ই করতে পারেনি। মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে মোহামেডান আগে ব্যাট করে ৪৯ ওভারে ২৫৫ রানে অলআউট হয়। জবাব দিতে নেমে আবাহনী ৪৬.২ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ২৫৬ রান করে। ৭ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে আবাহনী তৃতীয় ও ৬ পয়েন্ট নিয়ে মোহামেডান আছে আটে।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মোহামেডান অলআউট হলেও তাদের শুরুতে কিন্তু সে রকম আলামত ছিল না। এক পর্যায়ে তাদের রান ছিল ৫ উইকেটে ২৩২। কিন্তু মাত্র ২৩ রানে ১৮ বলে শেষ ৫ উইকেট হারালে তাদের সংগ্রহ আর বাড়তে পারেনি।
শুরুটা মোহামেডানের একেবারে মন্দ হয়নি। দুই ওপেনার রনি তালুকদার ও আব্দুর মজিদ ৩৭ রান এনে দেন। এ সময় ওভার ছিল ৫.৫। ১৭ বলে ১৪ রান করে মজিদ আউট হওয়ার পর মোহাম্মদ হাফিজ এসে জুটি বাঁধলে তার ধীরগতির ব্যাটিংয়ের কারণে মোহামেডানের রানের গতি কমে আসে। জুটিতে ২২ রান আসে ৭ ওভারে। রনি ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৩৪ রান করে আউট হলে হাফিজের সঙ্গে রুহেল মিয়া জুটি বেঁধে দলকে শতরানের উপরে এনে দেন। কিন্তু বলের ব্যবহার ছিল বেশি। এর কারণ ছিল হাফিজের ধীরগতির ব্যাটিং। ২৩.৫ ওভারে তারা যোগ করেন ১১৫ রান। ৮৮ বলে ফিফটি করার পর আউট হওয়ার সময় ৭০ রান করেন ১০১ বলে। তার তুলনায় রুহেল মিয়ার ব্যাটিং ছিল অনেক দ্রুত। তিনি ৬৩ বলে ফিফটি করেন। এরপরই তিনি আউট হয়ে যান ৫১ রানে। রুহেল মিয়া যখন আউট হন, তখন মোহামেডানের রান ৪ উইকেটে ১৭৬। ওভার ৩৮। পরবর্তীতে মাহমুদউল্লাহ ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি। তিনি ৩৭ বলে ৪২ রান করে রানআউট হন। আবাহনীর হয়ে তানজিম হাসান সাকিব ৩৩ রানে নেন ৩ উইকেট। ২ উইকটে নেন আফিফ হোসেন ধ্রুব।
জবাব দিতে নেমে আবাহনী শুরুতে মোহাম্মদ নাঈমের উইকেট হারালেও হনুমা ভিহারি, জাকের আলী, মোসাদ্দেক আলী সৈকতের ফিফিটিতে সহজেই জয় পায়। ১৫ রানে নাঈম আউট হওয়ার পর মুনিম শাহারিয়ার ও ভিহারি ২৪ রান করেন। মুনিম ২৫ বলে ৩১ রান করেন। মুনিম আউট হওয়ার পর হনুমা ও জাকের আলী ৯৮ রান যোগ করে দলের বড় জয়ের রাস্তা তৈরি করে দেন। জুনাম ৮০ বলে ৫৯ ও জাকের আলী ৮৯ বলে ৬০ রান করে আউট হওয়ার পর পঞ্চম উইকেট জুটিতে আফিফ হোসেন ধ্রুব ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত আর কোনো উইকেট পড়তে না দিয়ে দলকে জয়ী করে মাঠ ছাড়েন। মোসাদ্দেক মাত্র ৩৭ বলে ৪টি করে চার ও ছয় মেরে ৫২ ও আফিফ হোসেন ৩৮ বলে ২ ছক্কা ও ৪ চারে ৪৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। মোহামেডানের হয়ে ১টি করে উইকেট নেন শুভাগত হোম, মুশফিক হোসেন ও মোহাম্মদ হাফিজ।
এমপি/আরএ/