মাহমুদুল-লিটনের ব্যাটে বাংলাদেশের স্বস্তির সেশন
দিনের শুরুতেই যখন আগের দিনের নাইটওয়াচ ম্যান তাসকিন আহমেদ আউট হয়ে যান, তখন মনে হয়েছিল বাংলাদেশের সামনে অশনি সংকেত। পরে তা আর হয়নি। এর কারণ তাসকিনের উইকেটটি নিতে পারেননি আগের দিন ত্রাস ছড়ানো অফ স্পিনার সাইমন হার্মার। উইকেট পেয়েছিলেন উইলিয়ামস। হার্মারকে তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনে কোনো রকম ত্রাস ছড়ানোর সুযোগ দেননি মাহমুদুল হাসান জয় ও দারুণ ফর্মে থাকা লিটন দাস। দুই জনের ব্যাটে ভরে করে এগুচ্ছে বাংলাদেশ। লাঞ্চ বিরতির আগে পড়তে দেননি আর কোনো উইকেট। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৮৩ রান। মাহমুদুল হাসান জয় ৮০ রানে ব্যাট করছেন। সঙ্গী লিটন দাসের রান ৪১। বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে ১৮৪ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করেছিল ৩৬৭ রান।
দ্বিতীয় দিন প্রোটিয়া অফ স্পিনার হার্মার বাংলাদেশের শিবিরে ভীতি ছড়িয়ে ৪ উইকেটই তুলে নেওয়ার পর তৃতীয় দিন শঙ্কা ছিল তাকে নিয়েই। কিন্তু তাকে খুবই সাবধানতার সঙ্গে মোকাবিলা করে কোনো উইকেট নিতে দেননি মাহমুদুল ও লিটন। দ্বিতীয় দিন শতরানের আগেই ৪ উইকেটে এবং তৃতীয় দিনের শুরুতেই ১০১ রানে তাসকিনের (১) উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য হয়ে পড়ে যতোটা সম্ভব দক্ষিণ আফ্রিকার ৩৬৭ রানের ব্যবধান কমিয়ে এনে চাপ কমানো। মাহমুদুল-লিটনের ব্যাটে এখন বাংলাদেশ বেশ ভরসা পাচ্ছে। দিচ্ছে পাল্টা জবাব। ১০১ রানে জুটি বাঁধার পর তারা সেই রানকে টেনে নিয়ে গেছেন ১৮৩ পর্যন্ত। জুটিতে ৩০ ওভারে যোগ করেছেন ৮২ রান।
দিনের শুরুতে উইলিয়ামসের শর্ট বলে তাসকিন খেলতে গিয়ে গালিতে মুল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন ১ রানে। এরপর শুরু হয় মাহমুদুল-লিটনের প্রতিরোধ। যে প্রতিরোধের সামনে একে একে মাথা নুয়াতে থাকেন প্রোটিয়ার বোলাররা। পেস কিংবা স্পিন কিছুতেই দুই ব্যাটসম্যানকে ফাঁদে ফেলতে পারেনি। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে বাংলাদেশের স্মরণীয় জয়ে মাহমুদুল হাসান ৭৮ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ইনজুরির কারণে দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট করতে পারেননি। এমনকি খেলতে পারেননি ক্রাইস্টচার্চে দ্বিতীয় টেস্টও এরপর তার আবার সুযোগ আসে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজে। যেখানে তিনি নিজেকে ছাপিয়ে গেছেন আগের থেকে বেশি। স্বপ্ন দেখছেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার দেখার। আগের দিনের মতো তৃতীয় দিনও মাহমুদুল ছিলেন ধৈর্য্যর প্রতীক হয়ে। হাফ সেঞ্চুরি করেন ১৭০ বলে। বাউন্ডারি ছিল মাত্র ৫টি। এরপর ৩০ রান করতে বল খেলেন আরও ৬০টি। এ সময় ৩টি চারের সঙ্গে ১টি ছয়ও মারেন। ৮০ রানে অপরাজিত থেকে মধ্যাহ্নভোজ করতে যাওয়ার সময় বলের ব্যবহার ছিল ২৩০টি।
ডারবান টেস্টের আগে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চে তিনি খেলেছিলেন ১০২ রানের ইনিংস। মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে করেছিলেন ৮৬ রান। সেই লিটন কিন্তু এ দিন শুরুতে কিছুটা নড়বড়ে ছিলেন। জীবন পেয়েছেন একবার। একবার আউট হয়েও রিভিউ নিয়ে রক্ষা পান। সেই লিটন পরে নিজেকে সামলে নিয়ে ৪১ রান নিয়ে আবার ব্যাট করতে নামবেন। প্রথমে ১৬ রানে উইলিয়ামসের বলে স্লিপে ক্যাচ নিতে পারেননি দলপতি এলগার। ২৯ রানে হার্মারের বলে কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদনে আম্পায়ার সাড়া দেন। কিন্তু লিটন রিভিউ নেন। সেখানে দেখা যায় বল তার ব্যাটে লাগেনি, লেগেছিল প্যাডে। বেঁচে যান তিনি। এরপর আর কোনো সুযোগ দেননি। প্রথম সেশনে যে ৩০ ওভার খেলা হয়েছে, তাতে দুস্পিনার হার্মার ও মহারাজ ১১ ওভার করে ২২ ওভার বোলিং করেছেন।
এমপি/আরএ/