হার দিয়েই শেষ বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথম বিশ্বকাপ মিশন
যে ব্যাটিংয়ের আলো ছড়ানো নৈপুন্যে শুরু হয়েছিল বাংলাদেশের মেয়েদের প্রথম বিশ্বকাপ। প্রথম ৪ ম্যাচে কেড়ে নিয়েছিল সর্বা নজর। তুলে নিয়েছিল একটি জয়। জয়ের কাছকাছি গিয়েছিল দুইটিতে। শেষ তিন ম্যাচে সেই ব্যাটিং ব্যর্থতার জালে আটকা পড়ে শেষ হয়েছে আসর। শেষ ম্যাচ হেরেছে ইংল্যান্ডের কাছে ১০০ রানের বিশাল ব্যবধানে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড ৬ উইকেটে করে ২৩৪ রান। এবারের আসরে বাংলাদেশের বিপক্ষে কোনো দলের এটিই সর্বোচ্চ রান। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশের মেয়েরা ৪৮ ওভারে ১৩৪ রানে অলআউট হয়। ৭ ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে একমাত্র জয় পেয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ পয়েন্ট টেবিলে সেই পাকিস্তানের উপরেই অবস্থান করছে সাতে থেকে। ২ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান সবার নিচে।
গত দুই ম্যাচে উইন্ডিজ ও ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের মেয়েরা ব্যাট হাতে ছিলেন নিদারুন ব্যর্থ। ভারতের ৭ উইকেটে ২২৯ রানের জবাব দিতে নেমে মাত্র ১১৯ রানে অলআউট হয়েছিল। হেরেছিল ১১০ রানে। এর আগে উইন্ডিজকে মাত্র ১৪০ রানে আটকে রেখেও ম্যাচ জিততে পারেনি। অলআউট হয়েছিল ১৩৬ রানে। এবার ইংল্যান্ড টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৩৪ রান করার পরই এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের হার। কারণ আসরে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান এই ২৩৪-ই আছে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেট হারিয়ে। কিন্তু শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে এই রান তাড়া করা কঠিনই। আবার যেখানে শেষ দুই ম্যাচে ছিল ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতা। তাইতো দেখা যায় ওয়েলিংটনে শুরু থেকে বাংলাদেশের মন্থর সূচনা। এমনই সূচনা যে কখনো জয়ের জন্য তাড়া দেখা যায়নি। ব্যাটিং দেখে মনে হয়েছে জেতা সম্ভবই নয়, অলআউট না হয়ে যতটা সম্ভব রান বাড়িয়ে হারের ব্যবধান কমিয়ে আনা যায়। তাইতো দেখা যায় ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে রান বিনা উইকেটে ২৩। ইনিংসের অর্ধেক ২৫ ওভার শেষে রান ২ উইকেটে ৬৩। এরপর আর বাংলাদেশের ইনিংস নিয়ে বলার কিছু থাকে না। গোটা ইনিংসে বাউন্ডারি ছিল মাত্র ১২টি। ডট বল ছিল অবিশ্বাস্য ২৮৮ বলের মাঝে ২১০টি।
শারমিন ও শামীমার উদ্বোধনী জুটিতে রান আসে ১৭.৫ ওভারে রান আসে ৪৩। ২ ওপেনার বিদায় হন দলীয় ৫ রানের ব্যবধানে। দুই জনেই ২৩ রান করে আউট হন। বলের ব্যবহার ছিল রানের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। শামীমা ৬৪, শারমিন ৫০ বল খেলেন। এই ধারা অব্যাহত ছিল পরবর্তী ব্যাটসম্যানদের মাঝেও। ফারজানা ১১ রান করতে বল খেলেন ৩২টি, নিগার সুলতানার ২২ রান আসে ৩৭ বলে। ইনিংসের সর্বোচ্চ রান আসা লতা মন্ডল ৩০ রান করেন ৪৫ বল খেলে। কিন্তু তারপরও শেষ রক্ষা হয়নি। সেই ব্যাটিং ব্যর্থতার জালেই আটকা পড়ে অলআউট হয় ১৩৪ রানে। তখনো ওভার বাকি ২টি। শেষ ৫ উইকেটে পড়ে মাত্র ৩৩ রানে। ইংল্যান্ডের সুফি ইকেলসটন ১৫ ও চার্লি ডিয়ান ৩১ রানে নেন ৩টি করে উইকেট। ২টি উইকেট নেন ডেভিস।
ওয়েলিংটনে এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ডের রানের চাকা আটকে রাখতে পারেননি বাংলাদেশেররা বোলার যদিও ২৬ রানে ২ উইকেট তুলে নিয়ে ইংল্যান্ডকে বেশ চাপেই ফেলে দিয়েছিলেন জাহানারা ও সালমা। কিন্তু তা ছিল ক্ষণিকের। ওপেনার তাম্মি বিউমান্ট (৪৩) ও নাট স্কিভার (৪০) ৬০ রানের জুটি গড়ে সেই অবস্থা সামাল দেয়ার পর সুফিয়া ডানক্লির ৬৭, জোনসের ৩১, ক্যাথেরিনের অপরাজিত ২৪, সুফি ইকেলসটনের অপরাজিত ১৭ রানে দলের ভীত মজবুত হয় ৬ উইকেটে ২৩৪ রানের সংগ্রহে। সালমা ৪৬ রানে নেন ২ উইকেট। ১টি করে উইকেট নেন জাহানার, রিতু মনি ও ফাহিমা খাতুন।
এমপি/এসএ/