সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

ফৌজদারি মামলায় ১৪ বছরে চাকরি হারিয়েছেন ২২৭ পুলিশ সদস্য

খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, ছিনতাই, ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ আছে পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে। এমনকি ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশ সদস্যরা সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার অভিযোগও আছে। পুলিশ হয়ে পুলিশ সদস্যকে উঠিয়ে নেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এসব ঘটনায় পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলাও হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত গত প্রায় ১৪ বছরে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়া ও ফৌজদারি মামলায় ২২৭ জন পুলিশকে চাকরি হারাতে হয়েছে। চাকুরি হারানোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হেচ্ছ কনস্টেবল, উপ-পরিদর্শক ( ‪সাব-ইন্সপেক্টর) এবং ওসি।

পুলিশ সদরদপ্তর বলছে, কোনো পুলিশ সদস্য বা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে যদি সদর দপ্তরে অভিযোগ আসে তাহলে সেগুলো আমলে নিয়ে কাজ করে বাংলাদেশ পুলিশ। পুলিশের নামে ফৌজদারি মামলায় প্রায় প্রতিবছর অনেকেই চাকরি হারাচ্ছেন।

পুলিশ সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, ২০০৯ সালে ফৌজদারি অপরাধের কারণে চাকরি হারিয়েছেন পুলিশের ৩ জন, ২০১০ সালে ৪ জন, ২০১১ সালে ৩, ২০১২ সালে একজন নারী সদস্যসহ ৬ জন, ২০১৩ সালে ৪ জন, ২০১৪ সালে দুইজন নারী সদস্যসহ ১৩ জন, ২০১৫ সালে ১১ জন, ২০১৬ সালে একজন নারী সদস্যসহ ৩ জন, ২০১৭ সালে দুই জন নারীসহ ৮ জন, ২০১৮ সালে ১১ জন, ২০১৯ সালে ৩৭ জন, ২০২০ সালে ২৭ জন, ২০২১ সালে ৫৮ জন, ২০২২ সালে ৩২ এবং চলতি ২০২৩ সালের ২০ মার্চ পযর্ন্ত ৭ জন ফৌজদারি অপরাধ ও বিভিন্ন কারণে চাকরিচ্যুত হয়েছেন।

জানা যায়, ফৌজদারি দণ্ডবিধির আওতায় অপরাধ করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে আইন প্রয়োগকারী সব সংস্থার। তবে কিছু জটিলতাও রয়েছে।

এদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র বলছে, পুলিশ কনস্টেবল, উপ-পরিদর্শক ও ওসিদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তর হয়তো চাকুরি থেকে অবসরে পাঠাতে পারে বা শাস্তির ব্যবস্থা করতে পারে। তবে এর ওপরের কর্মকর্তারা বিসিএস ক্যাডার হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে অবসরের ব্যবস্থা নিতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নিতে হয়। এক্ষেত্রে পুলিশ সদর দপ্তর ওসিদের উপরে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন মনে করলে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠাতে পারে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পুলিশ সদর দপ্তরের সুপারিশের ভিত্তিতে তদন্ত করে এবং যাচাই-বাছাই করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়।

সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন ফৌজদারি অভিযোগে যেসব পুলিশর বিরুদ্ধে রায় হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে টেকনাফের ওসি প্রদীপ কুমার রায়ের ফাঁসির রায়ের ঘটনাটি।

এক সময় দুর্দান্ত দাপুটে দাপিয়ে বেড়াতেন টেকনাফের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রদীপ কুমার দাশ। তার বয়েই তটস্থ থাকতো পুরো টেকনাফবাসী। কখন কাকে ক্রসফায়ারের শিকার হতে হয় সেই ভয়ে টেকনাফবাসীর ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছিল। বহু পরিবার তার ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছিল।

শেষ পর্যন্ত তিনি ফেঁসে যান সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়। ২০২০ সালের ৩১ জুলাই টেকনাফের মেরিন ড্রাইভের শামলাপুর চেকপোস্টে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন মেজর সিনহা। দেশ জুড়ে এ ঘটনা তোলপাড় সৃষ্টি করে। এ ঘটনায় ওসি প্রদীপের নাম উঠে আসে।

ঘটনার পর তৎকালীন সেনাপ্রধান ও পুলিশের মহাপরিদর্শক একসঙ্গে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

সব তদন্তে ওসি প্রদীপের নাম উঠে আসে। প্রথমে তাকে বরখাস্ত করা হয়। পরে গ্রেপ্তার হন। হত্যা মামলা দায়ের হয়। ওই মামলা দায়েরের পর টেকনাফের আরও বহু পরিবার প্রদীপের বিরুদ্ধে থানায় ও আদালতে হত্যা মামলা দায়ের করে।

সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজারের আদালত ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মেজর হত্যা মামলায় ওসি প্রদীপের ফাসির রায় দেন।

এই রায় ঘোষণার দিন ২শতাধিক পরিবার আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হয়েছিলেন। ওসি প্রদীপের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার প্রদীপ কুমার দাশের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে কক্সবাজারে মানববন্ধন করেন।

২০১৬ সালের ৫ জুন ভোরে চট্টগ্রাম শহরের জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয় মাহমুদা খানম মিতুকে। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার ঢাকায় অবস্থান করছিলেন। চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। মামলায় তিনি উল্লেখ করেন, তার জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমের জন্য স্ত্রী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু হয়ে থাকতে পারেন মামলায় এমনটা অভিযোগ করা হয়। পরে জানা যায় পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার নিজেই তার স্ত্রীকে খুন করেছে।

ওই মামলার দুই আসামি রাশেদ ও নবী পুলিশি হেফাজতে থাকাবস্তায় ২০১৬ সালের ৫ জুলাই চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মহাসড়কের ঠাণ্ডাছড়ি নামক এলাকায় বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। এই বন্দুকযুদ্ধ সম্পর্কে গণমাধ্যম সন্দেহ প্রকাশ করে। গোয়েন্দারা এর সঙ্গে এসপি বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা পায় এবং তারা বাবুলকে অভিযুক্ত করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। পরে বের হয়ে আসে মিতু হত্যার বাবুলের সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি। বর্তমানে বাবুল আক্তার কারাগারে আছেন । তার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আদালতে চার্জশিট দাখিল হয়েছে।

এ রকম বহু অপরাধের সঙ্গে পুলিশের সম্পৃক্ততার অভিযোগ উঠে আসছে বিভিন্ন সময়ে। তবে, পুলিশের বিরুদ্ধে যত ধরনের অপরাধ ও হয়রানির অভিযোগ আসে, তা নিয়ে বেশিরভাগ সময়ই মামলা করতে চান না ভুক্তভোগীরা। কেউ মামলা করতে চাইলে মামলা না নেওয়া এবং মামলা হলে তদন্তে অবহেলা ও প্রভাব বিস্তারেরও অভিযোগ উঠে। এ কারণে অনেকেই ঝুঁকি নিতে চায় না।

অবশ্য, পুলিশের এমন অপরাধের ঘটনায় অপরাধ বিশ্লেষকেরা বলছেন, অনেক সময় রাজনৈতিক স্বার্থে পুলিশসহ বিশেষায়িত বিভিন্ন বাহিনীকে ব্যবহার করার কারণে পুলিশের সদস্যরা নিজেরাই ফৌজদারি অপরাধে জড়িয়ে পড়ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক তৌহিদুল হক বলেন, খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, ছিনতাই, ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়, মিথ্যা মামলায় সাধারণ মানুষকে ফাঁসানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ পুলিশের বিরুদ্ধে নতুন নয়। ফৌজদারি এমন অপরাধের কারণে বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা চাকরিও হারাচ্ছেন। তবে এমন অপরাধ থেমে নেই, বর্তমানে বেড়েছে অনেক গুণ। মূলত দায়িত্বে অবহেলা, অর্থনৈতিক লাভ এবং সামাজিক প্রতিপত্তির চাহিদা থেকেই প্রধানত অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়েছেন তারা। এসব অপরাধ নিয়ন্ত্রণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা রাখলে বা সাধারণ মানুষের অভিযোগ গুলো আমলে নিয়ে পুলিশ বিচার করলে এসব অপরাধ অনেকটা কমে আসবে।

এ বিষয়ে সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেছেন, পুলিশের দুর্নীতি, অনিয়ম ও বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধ এবং বাহিনীতে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনতে আমি অনেক কাজ করেছি। তারপরও পুলিশ একটি বড় সংস্থা যার কারণে কিছু ঘটনা ঘটে। তাদের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ জমা হয়, তারা বিভিন্ন ফোজদারি অপরাধের সঙ্গে যুক্ত হয়। পুলিশের মধ্যে তথ্য প্রমাণের প্রেক্ষিতে এসব অপরাধের বিচার করে পুলিশ যার কারণে অনেকে চাকুরি হারায়।

পুলিশের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, কোনো থানা বা পুলিশ ফাঁড়িতে যখন অপরাধের অভিযোগ ওঠে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সে অভিযোগ যাচাই করে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। সেই কাজটি যথাযথভাবে হয় না। এ কারণে অনেক সময়ই সেটি অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের একটি বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাৎক্ষণিক সেটি করা গেলে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমে আসবে। তবে সেজন্য পুলিশ বাহিনীতে যোগ্য লোকের নিয়োগ পাওয়া এবং কর্মীদের তদারকি ঠিকমত করার দিকে নজর দিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি মিডিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পরামর্শ দেন।

জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া) মো. মনজুর রহমান বলেন, পুলিশের যেকোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা তদন্ত করা হয় এবং সেটা সংশ্লিষ্ট ইউনিটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তারা বিষয়টি খতিয়ে দেখে শাস্তির সুপারিশ করে। সেই সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া থেকে শুরু করে ফৌজদারি মামলাও করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত হলে পুলিশের সব পর্যায়ের সদস্যের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু