বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

এখনো পর্যটকবান্ধব হয়ে ওঠেনি সেন্টমার্টিন, উটকো ঝামেলা রোহিঙ্গা

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যেটি দারুচিনির দ্বীপ নামেও পরিচিত। টেকনাফ থেকে সমুদ্র পথে তিন ঘণ্টার জাহাজ যাত্রার পরই দেখা মিলে সেন্টমার্টিনের। প্রতিবছর হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক নীল সমুদ্রের জলে ভাসতে আর সেন্টমার্টিনের আলো বাতাসের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে দিতে ভিড় করেন সেন্টমার্টিনে।

কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। পর্যটকদের কাছে অসম্ভব প্রিয় সেন্টমার্টিনে রয়েছে নানামুখী সংকট। এই দ্বীপটি এখনো পর্যটকবান্ধব হয়ে উঠেনি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাবে পর্যটকবান্ধব করে তোলা যায়নি দারুচিনির দ্বীপকে। নাানা সংকটে থাকা সেন্টমার্টিনে এখন আরেক বড় সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। তাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের ঘাটে ভিড়তেই রোহিঙ্গা কিশোররা এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে লাগেজ টানার জন্য। এতে পর্যটকরা একরকম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। সম্প্রতি ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘ব্লু ইকোনমি অ্যান্ড ব্লু ট্যুরিজম’ বিষয়ে কর্মশালায় অংশ নিতে সেন্টমার্টিন গিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান বলেন, জাহাজে বাচ্চারা যে উৎপাত করে তারা আমাদের না। টেকনাফেরও না। তারা রোহিঙ্গাদের বাচ্চা। তাদের টেকনাফেই জাহাজে ওঠা বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনকেও বলেছি। তারা বাচ্চাদের আসা বন্ধ করলে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ হবে। সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা নিরাপদ ও ঝূঁকিমুক্তভাবে আসতে পারবেন।

তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট না করে সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারিদিকে ওয়াকওয়ে করলে ভালো হয়। পর্যটকরা ভালোভাবে হাঁটতে পারবেন। পুরো দ্বীপ ঘুরে দিনেই চলে যেতে পারবেন। জেটির পল্টুনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এটা একবার মেরামেত করা হয়েছে। তারপরও এটা ঝুঁকিপুর্ণ।

মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপের পরিবেশ আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তারপরও বিভিন্ন জায়গায় ময়লা দেখা যায়। পর্যটকরা না বুঝেই হয়ত প্লাস্টিকের ময়লা ফেলে দেন। আমি নিজেই ময়লা কুড়াই। দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় যদি ঝুড়ি (বিন) দেওয়া হয় তাহলে প্লাস্টিকের ময়লা সেখানে ফেলা হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। কারণ, এখানকার মানুষ খুবই অশিক্ষিত। এখানকার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারছে না। প্রাইমারি স্কুলের দরকার। তাহলে শিক্ষার হার বাড়বে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ রিসোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ব্লু সী ইস্টার্ন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রশিদ আহমেদ বলেন, দ্বীপের চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করা হলে সেন্টমার্টিন রক্ষা পাবে। এলাকাবাসীও উপকৃত হবে। তিনি বলেন, অনেক সমস্যা আছে। তারপরও আমরা ভালো করে পর্যটকদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

এইচ আর গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সীনবাদ ইকো-রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রবল ইচ্ছা থাকার কারণেই এখানে রিসোর্ট করা সম্ভব হয়েছে। কারণ ইনানী বিচে প্রথম একটা জায়গা কিনি। এরপর মনে হলো ট্যুরিজমের উপর কাজ করা যায়। তাই ২০১০ সালে সেন্টমার্টিনে এই রিসোর্টের জায়গা কেনার সিদ্ধান্ত নিই। এই জায়গা কেনার সময় আমার হাতে ৫ লাখ টাকা ছিল। এই জায়গা কেনার সময় সেন্টমার্টিনে আসার সময় প্রত্যেকটা ঢেউ মাথার উপর দিয়ে যায়। এটা একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। আমি পর্যটককে ভালো বাসি। তাই কাঠ-বাঁশ দিয়ে ইকো রিসোর্ট করার সিদ্ধান্ত নিই।

তিনি বলেন, বিদেশি পর্যটকরা এ ধরনের ইকো রিসোর্ট পছন্দ করে। তাই সরকারের সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই বিদেশি পর্যটকদেরও আনতে পারব। এখানে রাস্তা দরকার। বিশেষ করে জেটির মতো ওয়াকওয়ে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। পুরো দ্বীপটা পাথরের। তাই একটা গাছও কাটা হবে না। কারণ এখানকার গাছ কাটা মানে এই দ্বীপকে কাটা। দ্বীপবাসীকে রেখেই এর উন্নয়ন করতে হবে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করবে। সাবরাং থেকে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে দিনে দিনে পর্যটকরা এই দ্বীপ ঘুরে চলে যেতে পারবেন।

হাবিবুর রহমান বলেন, কী পরিমাণ বাধার সম্মুখীন হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ যাবে না। সব কিছু করার পরও উদ্বোধন করতে দেওয়া হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত উপরে কথা বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে বলি যদি ক্ষতি করে থাকি তাহলে এটা করব না। সমস্যা কোথায়? তখন তিনি বললেন কোনো ক্ষতি হবে না। তারপরই উদ্বোধন করা হয়েছে। রাস্তাঘাটও ভালো না।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর উপ-পরিচালক (উপ সচিব) রাহনুমা সালাম খান বলেন, পাথর ও সমুদ্র দেখতেই পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে আসে। কারণ এখানকার প্রধান আর্কষণ পাথর, সঙ্গে সমুদ্র ভ্রমণ। সব জিনিসের দাম বেশি হলেও তারা আসে এখানে। অথচ এখানকার পরিবেশ খুবই নোংরা। এমন জায়গা নেই যে চিপসের প্যাকেট পড়ে নেই। অথচ পর্যটকদের একমাত্র চাওয়া হচ্ছে চমৎকার পরিবেশ ও উন্নত সেবা।

এই উপসচিব বলেন, দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্যই সরকার কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেন্টমার্টিনে ঘুরার পর সময় কাটাতে পর্যটকদের রিলাক্স দরকার। এ জন্য কিছু করা দরকার। সেজন্য বিনিয়োগকারীদের সাপোর্ট দেওয়া দরকার। সরকার শুধু নীতিগত সাপোর্ট দেবে। গ্রীন গার্মেন্টস করা সম্ভব হলে সমুদ্রের ক্ষতি কমিয়ে নিতে গ্রিন ট্যুরিজম দরকার। সমুদ্রের নিচে বিরাট সম্পদ রয়েছে। যা আমাদের অনেকের কাছে অজানা। ব্যাংকক, মালদ্বীপ শুধু ট্যুরিজমের উপর ভিত্তি করে এগিয়ে গেছে। তাই আমাদেরও সময় এসেছে বিনিয়োগ করার। সমুদ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্পোর্টসের ব্যবস্থা করলেও অনেক আয় হবে। কারণ, এখানে পর্যটকরা বিনোদনের জন্য আসে। এ জন্য এই দ্বীপের ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ট্যুরিজম একটা বড় সেক্টর। ব্লু ট্যুরিজম আকর্ষণীয় করতে পারলেই সরকারের বহু আয় হবে। ২০১৮ সালে ট্যুরিজম বোর্ড গঠনের পর রাজস্ব আয় থেকে ক্ষুদ্র বাজেটে সাধ্যমতো কাজ করার চেষ্টা করছে। করোনার আগে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মাস্টার প্লানের। কিন্তু এক্সপার্ট না থাকায় তা হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু করা হবে। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য শাহপরীর দ্বীপসহ সারা দেশের জন্য ১০টি ডিপিপি করা হয়েছে। যাতে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিমুল ভূঁইয়া বিপ্লব বলেন, ব্লু-ইকোনমি বা সমুদ্র-অর্থনীতি টেকসই করতে হলে কোরাল বাঁচাতে হবে। আমরা ৬০ মিটার গভীরে যেতে পারি না। এ জন্য বড় বড় টুনা মাছ ধরতে পারি না। কিন্তু জাপান, নেপালের সক্ষমতা থাকার কারণে তারা ওই সব বড় বড় মাছ ধরতে পারছে। আয় করছে। অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। পৃথিবীর ৮০ শতাংশ মালামাল বহন করা হয় জাহাজে। কিন্তু বড় বড় জাহাজও আমাদের নেই। তাই আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ড, ভুটানের চেয়ে এই দ্বীপে আসতে পর্যটকদের খরচ বেশি হয়। ঝামেলারও শেষ নেই। কারণ এটি অপরিকল্পিত দ্বীপ। যে যেখানে পারছে ময়লা ফেলছে। ট্যুরিজম হতে হবে পরিকল্পতি। সাইবেরীয় পাখি এদেশে আসছে। জাহাজে তাদের খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। যা ঠিক না। এই ময়লা সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ময়লা কোরালের উপর পড়ে। খাদ্য তৈরি করতে না পারায় কোরাল মারা যায়। অন্য জায়গায় চলে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের সাইক্লোন হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে কোস্টাল এরিয়া। তাই বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী বাজেট না থাকায় গবেষণা করা যাচ্ছে না। উপরের সম্পদ সীমিত হয়ে আসছে। তাই সমুদ্র সম্পদের দিকে নজর দিতে হবে। বিশ্বে তিন কোটি মানুষ সামুদ্রিক খাবার খায়। যা আমদের কাছে কল্পনা মনে হচ্ছে। সমুদ্রের সম্পদ আহরণে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এটি অতিক্রম করতে পারলে আমরা এগিয়ে যাব। জিডিপিতে অবদান রাখতে পারব। সমুদ্র নিয়ে আরও গবেষণা করা হলে চাঙ্গা হবে দেশের অর্থনীতি।

সেন্টমার্টিন জেটিঘাটের ট্রলার চালক আমির হোসেন বলেন, দাদা রোহিঙ্গা হলেও বাবা সেন্টমার্টিনের। আগে আমরা এ জায়গা জিঞ্জিরা নামে শুনতাম। কারণ, প্রচুর নারকেল হতো। তবে ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে এটাকে সেন্টমার্টিন নামে শুনছি।

তিনি বলেন, পর্যটকরা আসলে আনন্দ লাগে। ৩ থেকে ৪ মাস ব্যবসা হয়। তারপর ট্রলার চললেও আয় কমে যায়। কারণ পর্যটকরা আসতে পারেন না। মাছ ধরলেও আয় হয় না।

প্রবাল নয় ‘পাথুরে দ্বীপ’

টেকনাফের সর্ব দক্ষিণে সেন্টমার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরা বা দারুচিনি দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। কিন্তু এই তথ্যটি আসলে সঠিক নয়। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতে, সেন্টমার্টিন হচ্ছে সাগরের নিচে ডুবে থাকা পাহাড়ের চূড়া ও গায়ের উপর লেগে থাকা প্রবালের সঙ্গে বালি ও পলি জমে গড়ে ওঠা একটি দ্বীপ। ইংরেজিতে এটাকে বলা হয় কোরাল অ্যাসোসিয়েটেড রকি আইল্যান্ড। মূলত এটা হচ্ছে রকি দ্বীপ। সমুদ্রের নিচে কোরাল বিভিন্ন রংয়ের হয়। এর মাছও বিভিন্ন রংয়ের। ১৯৭৬ সালে একজন কানাডিয়ান গবেষক এই দ্বীপ নিয়ে গবেষণা করে এটাকে প্রবাল দ্বীপ বলে আখ্যা দেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিদেশি জার্নালে প্রমাণ করা হয়েছে যে, সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপ নয় বরং সাগরের নিচে ডুবে থাকা পাহাড়ের উপর ও গায়ে জমে থাকা প্রবাল, বালি এবং পলি দিয়ে গড়ে ওঠা একটি দ্বীপ। বিদেশি ওই গবেষক এটাকে চ্যালেঞ্জ করেননি বরং নতুন তথ্যকে সমর্থন করেছন। কারণ প্রবালের উপর বালি, পলি জমে যে দ্বীপ তৈরি হয় সেটা হচ্ছে প্রবাল দ্বীপ। যার নিচে ডুবন্ত কোনো পাহাড় থাকে না। আগে প্রচুর হ্যাজালা (প্রবাল) থাকত। কিন্তু পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় প্রবাল মরে যাচ্ছে। মাছও কমে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) সচিব মো. খুরশেদ আলম বলেন, গত ৫ দশকের বেশি সময়ে সমুদ্র সীমা জয়ের পর বাংলাদেশের আয়তন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলেও ২৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের একার পক্ষে এ সম্পদ আহরণ করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিপব্রেকিং শিল্প বাংলাদেশে এবং এ খাত থেকে বর্জ্য শুধু নদী বা সমুদ্র দূষণ করছে না, ক্যান্সার ভয়াবহ রকমে বেড়ে গেছে। সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করে থাইল্যান্ড বছরে ৯ বিলিয়ন, ইন্দোনেশিয়া ১২ বিলিয়ন ডলার আয় করলেও এখাতে বাংলাদেশের আয় খুবই কম মাত্র সাড়ে ৪শ মিলিয়ন ডলার।

এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বলেন, প্রতি বছরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াতের সময় বেঁধে দেয় সরকার। বিশেষ করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা করার পর এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস, কেয়ারিসহ আর কয়েকটি জাহাজ যাতায়াত করে। এ সময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জাহাজ কর্তৃপক্ষকে কিছু শর্ত দিয়ে থাকে।

শর্তগুলোর মধ্যে হচ্ছে- ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। জাহাজে পর্যাপ্ত ঝুঁড়ি রাখতে হবে, যাতে চিপস বা কোনো পলিথিন ও প্লাস্টিক সাগরে না ফেলে। প্রতিটি জাহাজে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক প্লেকার্ড দিতে হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য জাহাজে করে এপারে নিয়ে আসতে সাহায্য করতে হবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য যাতে ধ্বংস না হয় এ বিষয়ে সচেতন করতে জাহাজে প্রচারণা চালাতে হবে। যার ব্যত্যয় ঘটলে অনুমতি বাতিল করা হবে। কিন্তু বাস্তবে এসব কিছুই দেখা যায়নি জাহাজে।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া