সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

এখনো পর্যটকবান্ধব হয়ে ওঠেনি সেন্টমার্টিন, উটকো ঝামেলা রোহিঙ্গা

বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন যেটি দারুচিনির দ্বীপ নামেও পরিচিত। টেকনাফ থেকে সমুদ্র পথে তিন ঘণ্টার জাহাজ যাত্রার পরই দেখা মিলে সেন্টমার্টিনের। প্রতিবছর হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক নীল সমুদ্রের জলে ভাসতে আর সেন্টমার্টিনের আলো বাতাসের মধ্যে নিজেকে হারিয়ে দিতে ভিড় করেন সেন্টমার্টিনে।

কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। পর্যটকদের কাছে অসম্ভব প্রিয় সেন্টমার্টিনে রয়েছে নানামুখী সংকট। এই দ্বীপটি এখনো পর্যটকবান্ধব হয়ে উঠেনি। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাবে পর্যটকবান্ধব করে তোলা যায়নি দারুচিনির দ্বীপকে। নাানা সংকটে থাকা সেন্টমার্টিনে এখন আরেক বড় সমস্যা হচ্ছে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। তাদের দৌরাত্ম্যে অতিষ্ঠ দেশি-বিদেশি পর্যটকরা। পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্টমার্টিনের ঘাটে ভিড়তেই রোহিঙ্গা কিশোররা এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ে লাগেজ টানার জন্য। এতে পর্যটকরা একরকম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন। সম্প্রতি ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘ব্লু ইকোনমি অ্যান্ড ব্লু ট্যুরিজম’ বিষয়ে কর্মশালায় অংশ নিতে সেন্টমার্টিন গিয়ে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান বলেন, জাহাজে বাচ্চারা যে উৎপাত করে তারা আমাদের না। টেকনাফেরও না। তারা রোহিঙ্গাদের বাচ্চা। তাদের টেকনাফেই জাহাজে ওঠা বন্ধ করতে হবে। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসনকেও বলেছি। তারা বাচ্চাদের আসা বন্ধ করলে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ হবে। সেন্টমার্টিনে পর্যটকরা নিরাপদ ও ঝূঁকিমুক্তভাবে আসতে পারবেন।

তিনি বলেন, পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট না করে সেন্টমার্টিন দ্বীপের চারিদিকে ওয়াকওয়ে করলে ভালো হয়। পর্যটকরা ভালোভাবে হাঁটতে পারবেন। পুরো দ্বীপ ঘুরে দিনেই চলে যেতে পারবেন। জেটির পল্টুনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এটা একবার মেরামেত করা হয়েছে। তারপরও এটা ঝুঁকিপুর্ণ।

মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপের পরিবেশ আগের চেয়ে উন্নত হয়েছে। তারপরও বিভিন্ন জায়গায় ময়লা দেখা যায়। পর্যটকরা না বুঝেই হয়ত প্লাস্টিকের ময়লা ফেলে দেন। আমি নিজেই ময়লা কুড়াই। দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় যদি ঝুড়ি (বিন) দেওয়া হয় তাহলে প্লাস্টিকের ময়লা সেখানে ফেলা হবে। সবাইকে সচেতন হতে হবে। কারণ, এখানকার মানুষ খুবই অশিক্ষিত। এখানকার ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে পারছে না। প্রাইমারি স্কুলের দরকার। তাহলে শিক্ষার হার বাড়বে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ রিসোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও ব্লু সী ইস্টার্ন রিসোর্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রশিদ আহমেদ বলেন, দ্বীপের চারপাশে বাঁধ নির্মাণ করা হলে সেন্টমার্টিন রক্ষা পাবে। এলাকাবাসীও উপকৃত হবে। তিনি বলেন, অনেক সমস্যা আছে। তারপরও আমরা ভালো করে পর্যটকদের সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি।

এইচ আর গ্রুপের চেয়ারম্যান ও সীনবাদ ইকো-রিসোর্ট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হাবিবুর রহমান বলেন, প্রবল ইচ্ছা থাকার কারণেই এখানে রিসোর্ট করা সম্ভব হয়েছে। কারণ ইনানী বিচে প্রথম একটা জায়গা কিনি। এরপর মনে হলো ট্যুরিজমের উপর কাজ করা যায়। তাই ২০১০ সালে সেন্টমার্টিনে এই রিসোর্টের জায়গা কেনার সিদ্ধান্ত নিই। এই জায়গা কেনার সময় আমার হাতে ৫ লাখ টাকা ছিল। এই জায়গা কেনার সময় সেন্টমার্টিনে আসার সময় প্রত্যেকটা ঢেউ মাথার উপর দিয়ে যায়। এটা একটা অস্বাভাবিক ব্যাপার ছিল। আমি পর্যটককে ভালো বাসি। তাই কাঠ-বাঁশ দিয়ে ইকো রিসোর্ট করার সিদ্ধান্ত নিই।

তিনি বলেন, বিদেশি পর্যটকরা এ ধরনের ইকো রিসোর্ট পছন্দ করে। তাই সরকারের সহযোগিতা পেলে আমরা অবশ্যই বিদেশি পর্যটকদেরও আনতে পারব। এখানে রাস্তা দরকার। বিশেষ করে জেটির মতো ওয়াকওয়ে। এতে পরিবেশের ক্ষতি হবে না। পুরো দ্বীপটা পাথরের। তাই একটা গাছও কাটা হবে না। কারণ এখানকার গাছ কাটা মানে এই দ্বীপকে কাটা। দ্বীপবাসীকে রেখেই এর উন্নয়ন করতে হবে। এতে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে। অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভমিকা পালন করবে। সাবরাং থেকে জাহাজ চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে দিনে দিনে পর্যটকরা এই দ্বীপ ঘুরে চলে যেতে পারবেন।

হাবিবুর রহমান বলেন, কী পরিমাণ বাধার সম্মুখীন হয়েছি তা ভাষায় প্রকাশ যাবে না। সব কিছু করার পরও উদ্বোধন করতে দেওয়া হয়নি। তাই শেষ পর্যন্ত উপরে কথা বলে পরিবেশ অধিদপ্তরের ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে বলি যদি ক্ষতি করে থাকি তাহলে এটা করব না। সমস্যা কোথায়? তখন তিনি বললেন কোনো ক্ষতি হবে না। তারপরই উদ্বোধন করা হয়েছে। রাস্তাঘাটও ভালো না।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড এর উপ-পরিচালক (উপ সচিব) রাহনুমা সালাম খান বলেন, পাথর ও সমুদ্র দেখতেই পর্যটকরা সেন্টমার্টিনে আসে। কারণ এখানকার প্রধান আর্কষণ পাথর, সঙ্গে সমুদ্র ভ্রমণ। সব জিনিসের দাম বেশি হলেও তারা আসে এখানে। অথচ এখানকার পরিবেশ খুবই নোংরা। এমন জায়গা নেই যে চিপসের প্যাকেট পড়ে নেই। অথচ পর্যটকদের একমাত্র চাওয়া হচ্ছে চমৎকার পরিবেশ ও উন্নত সেবা।

এই উপসচিব বলেন, দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্যই সরকার কিছু করার উদ্যোগ নিয়েছে। সেন্টমার্টিনে ঘুরার পর সময় কাটাতে পর্যটকদের রিলাক্স দরকার। এ জন্য কিছু করা দরকার। সেজন্য বিনিয়োগকারীদের সাপোর্ট দেওয়া দরকার। সরকার শুধু নীতিগত সাপোর্ট দেবে। গ্রীন গার্মেন্টস করা সম্ভব হলে সমুদ্রের ক্ষতি কমিয়ে নিতে গ্রিন ট্যুরিজম দরকার। সমুদ্রের নিচে বিরাট সম্পদ রয়েছে। যা আমাদের অনেকের কাছে অজানা। ব্যাংকক, মালদ্বীপ শুধু ট্যুরিজমের উপর ভিত্তি করে এগিয়ে গেছে। তাই আমাদেরও সময় এসেছে বিনিয়োগ করার। সমুদ্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত স্পোর্টসের ব্যবস্থা করলেও অনেক আয় হবে। কারণ, এখানে পর্যটকরা বিনোদনের জন্য আসে। এ জন্য এই দ্বীপের ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ট্যুরিজম একটা বড় সেক্টর। ব্লু ট্যুরিজম আকর্ষণীয় করতে পারলেই সরকারের বহু আয় হবে। ২০১৮ সালে ট্যুরিজম বোর্ড গঠনের পর রাজস্ব আয় থেকে ক্ষুদ্র বাজেটে সাধ্যমতো কাজ করার চেষ্টা করছে। করোনার আগে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মাস্টার প্লানের। কিন্তু এক্সপার্ট না থাকায় তা হয়নি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কাজ শুরু করা হবে। বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করার জন্য শাহপরীর দ্বীপসহ সারা দেশের জন্য ১০টি ডিপিপি করা হয়েছে। যাতে পর্যটকরা স্বাচ্ছন্দ্যে ভ্রমণ করতে পারেন।

বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা শিমুল ভূঁইয়া বিপ্লব বলেন, ব্লু-ইকোনমি বা সমুদ্র-অর্থনীতি টেকসই করতে হলে কোরাল বাঁচাতে হবে। আমরা ৬০ মিটার গভীরে যেতে পারি না। এ জন্য বড় বড় টুনা মাছ ধরতে পারি না। কিন্তু জাপান, নেপালের সক্ষমতা থাকার কারণে তারা ওই সব বড় বড় মাছ ধরতে পারছে। আয় করছে। অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। পৃথিবীর ৮০ শতাংশ মালামাল বহন করা হয় জাহাজে। কিন্তু বড় বড় জাহাজও আমাদের নেই। তাই আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, থাইল্যান্ড, ভুটানের চেয়ে এই দ্বীপে আসতে পর্যটকদের খরচ বেশি হয়। ঝামেলারও শেষ নেই। কারণ এটি অপরিকল্পিত দ্বীপ। যে যেখানে পারছে ময়লা ফেলছে। ট্যুরিজম হতে হবে পরিকল্পতি। সাইবেরীয় পাখি এদেশে আসছে। জাহাজে তাদের খাদ্য দেওয়া হচ্ছে। যা ঠিক না। এই ময়লা সমুদ্রে ছড়িয়ে পড়ছে। এই ময়লা কোরালের উপর পড়ে। খাদ্য তৈরি করতে না পারায় কোরাল মারা যায়। অন্য জায়গায় চলে যায়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমুদ্রের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় বিভিন্ন ধরনের সাইক্লোন হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে কোস্টাল এরিয়া। তাই বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট করা হয়েছে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী বাজেট না থাকায় গবেষণা করা যাচ্ছে না। উপরের সম্পদ সীমিত হয়ে আসছে। তাই সমুদ্র সম্পদের দিকে নজর দিতে হবে। বিশ্বে তিন কোটি মানুষ সামুদ্রিক খাবার খায়। যা আমদের কাছে কল্পনা মনে হচ্ছে। সমুদ্রের সম্পদ আহরণে অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এটি অতিক্রম করতে পারলে আমরা এগিয়ে যাব। জিডিপিতে অবদান রাখতে পারব। সমুদ্র নিয়ে আরও গবেষণা করা হলে চাঙ্গা হবে দেশের অর্থনীতি।

সেন্টমার্টিন জেটিঘাটের ট্রলার চালক আমির হোসেন বলেন, দাদা রোহিঙ্গা হলেও বাবা সেন্টমার্টিনের। আগে আমরা এ জায়গা জিঞ্জিরা নামে শুনতাম। কারণ, প্রচুর নারকেল হতো। তবে ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে এটাকে সেন্টমার্টিন নামে শুনছি।

তিনি বলেন, পর্যটকরা আসলে আনন্দ লাগে। ৩ থেকে ৪ মাস ব্যবসা হয়। তারপর ট্রলার চললেও আয় কমে যায়। কারণ পর্যটকরা আসতে পারেন না। মাছ ধরলেও আয় হয় না।

প্রবাল নয় ‘পাথুরে দ্বীপ’

টেকনাফের সর্ব দক্ষিণে সেন্টমার্টিন বা নারিকেল জিঞ্জিরা বা দারুচিনি দ্বীপ বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। কিন্তু এই তথ্যটি আসলে সঠিক নয়। বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মতে, সেন্টমার্টিন হচ্ছে সাগরের নিচে ডুবে থাকা পাহাড়ের চূড়া ও গায়ের উপর লেগে থাকা প্রবালের সঙ্গে বালি ও পলি জমে গড়ে ওঠা একটি দ্বীপ। ইংরেজিতে এটাকে বলা হয় কোরাল অ্যাসোসিয়েটেড রকি আইল্যান্ড। মূলত এটা হচ্ছে রকি দ্বীপ। সমুদ্রের নিচে কোরাল বিভিন্ন রংয়ের হয়। এর মাছও বিভিন্ন রংয়ের। ১৯৭৬ সালে একজন কানাডিয়ান গবেষক এই দ্বীপ নিয়ে গবেষণা করে এটাকে প্রবাল দ্বীপ বলে আখ্যা দেন।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে একটি বিদেশি জার্নালে প্রমাণ করা হয়েছে যে, সেন্টমার্টিন প্রবাল দ্বীপ নয় বরং সাগরের নিচে ডুবে থাকা পাহাড়ের উপর ও গায়ে জমে থাকা প্রবাল, বালি এবং পলি দিয়ে গড়ে ওঠা একটি দ্বীপ। বিদেশি ওই গবেষক এটাকে চ্যালেঞ্জ করেননি বরং নতুন তথ্যকে সমর্থন করেছন। কারণ প্রবালের উপর বালি, পলি জমে যে দ্বীপ তৈরি হয় সেটা হচ্ছে প্রবাল দ্বীপ। যার নিচে ডুবন্ত কোনো পাহাড় থাকে না। আগে প্রচুর হ্যাজালা (প্রবাল) থাকত। কিন্তু পরিবেশ নষ্ট হওয়ায় প্রবাল মরে যাচ্ছে। মাছও কমে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের (মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিট) সচিব মো. খুরশেদ আলম বলেন, গত ৫ দশকের বেশি সময়ে সমুদ্র সীমা জয়ের পর বাংলাদেশের আয়তন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেলেও ২৪ ট্রিলিয়ন ডলারের সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের একার পক্ষে এ সম্পদ আহরণ করা সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, বিশ্বের সবচেয়ে বড় শিপব্রেকিং শিল্প বাংলাদেশে এবং এ খাত থেকে বর্জ্য শুধু নদী বা সমুদ্র দূষণ করছে না, ক্যান্সার ভয়াবহ রকমে বেড়ে গেছে। সমুদ্র সম্পদ ব্যবহার করে থাইল্যান্ড বছরে ৯ বিলিয়ন, ইন্দোনেশিয়া ১২ বিলিয়ন ডলার আয় করলেও এখাতে বাংলাদেশের আয় খুবই কম মাত্র সাড়ে ৪শ মিলিয়ন ডলার।

এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বলেন, প্রতি বছরে টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটকদের যাতায়াতের সময় বেঁধে দেয় সরকার। বিশেষ করে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা করার পর এমভি পারিজাত ও এমভি রাজহংস, কেয়ারিসহ আর কয়েকটি জাহাজ যাতায়াত করে। এ সময় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জাহাজ কর্তৃপক্ষকে কিছু শর্ত দিয়ে থাকে।

শর্তগুলোর মধ্যে হচ্ছে- ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রী নেওয়া যাবে না। জাহাজে পর্যাপ্ত ঝুঁড়ি রাখতে হবে, যাতে চিপস বা কোনো পলিথিন ও প্লাস্টিক সাগরে না ফেলে। প্রতিটি জাহাজে এ বিষয়ে সতর্কতামূলক প্লেকার্ড দিতে হবে। সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্লাস্টিক বর্জ্য জাহাজে করে এপারে নিয়ে আসতে সাহায্য করতে হবে। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য যাতে ধ্বংস না হয় এ বিষয়ে সচেতন করতে জাহাজে প্রচারণা চালাতে হবে। যার ব্যত্যয় ঘটলে অনুমতি বাতিল করা হবে। কিন্তু বাস্তবে এসব কিছুই দেখা যায়নি জাহাজে।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু