শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৭ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা: উত্তরণের পথ (২)

স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ঢাকাপ্রকাশ

অক্ষরের পাশে অক্ষর বসানো সমাচার দর্পণ থেকে আজকের ঝকঝকে চার রঙে ছাপা প্রতিদিনের অজস্র সংবাদপত্র। সাদা-কালো যুগ পেরিয়ে স্যাটেলাইটের হাত ধরে দেশ-মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে যায় টেলিভিশন। এককালের ছুটে চলা প্রান্তিক সাংবাদিকতা থেকে আজকের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ। সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রযুক্তির নানা মাত্রা।

এত কথা যে সংবাদমাধ্যম নিয়ে, বর্তমানে তার গতিপথ কোন দিকে? মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে নতুন শতকের প্রথম দুই দশক পেরিয়ে আজ কোন জায়গায় আমাদের সাংবাদিকতা? তার মানই বা কী?

প্রশ্ন অনেক, উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি আমরা। ঠিক সে কারণেই ঢাকা প্রকাশের পক্ষ থেকে মুখোমুখি হওয়া গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের।

বর্তমান সাংবাদিকতার নানা সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব।

গণমাধ্যম জনগণের মাধ্যম। জনগণের সঙ্গে সরকারের সেতুবন্ধন। এর মাধ্যমে সমাজের সঠিক অবস্থান এবং জনগণ কী চায়–সেটি যেমন সরকার জানতে পারে, ঠিক তেমনি জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে তার মতামতও প্রকাশ করতে পারে।

দায়িত্বশীল ও সৎ সাংবাদিকতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি বস্তুনিষ্ঠতা। গণমাধ্যমে যদি বস্তুনিষ্ঠতা না থাকে, তাহলে গণমাধ্যমের আর কোনো অর্থ থাকে না। তবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারার অপব্যবহার, গণমাধ্যম মালিকদের চাপ এবং সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাবসহ নানা সমস্যার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতা। সেই সঙ্গে রয়েছে সাংবাদিকদের বিভক্তি ও নিষ্ক্রিয়তা।

স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশকিছু ধারাকেই সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা মনে করছেন সাংবাদিক, গণমাধ্যম বিষেশজ্ঞ ও গবেষকেরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘একজন সাংবাদিক সৎ থেকে সাংবাদিকতা করলে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা হওয়ার কথা নয়। অথচ আমরা দেখি, অনেক সাংবাদিক এ আইনের ভুক্তভোগী হচ্ছেন। এটি আমরা দেখতে চাই না। বাংলাদেশের সংবিধানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যেন কোনো বাধা না হয়, সেদিকে সরকারের নজর দেওয়া দরকার।’

ডিজিটাল নিরাপত্তার অপব্যবহারের বিষয়ে সাহিত্যিক ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন জায়গায় ওঁৎ পেতে থাকা দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ করলে, তাদের কিছুই হয় না। কিন্তু যারা এটা প্রকাশ করছেন তাদের নিগৃহীত হতে হয়। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, “ইংরেজিতে একটি কথা আছে, ‘শুটিং দ্য মেসেঞ্জার’। বার্তাবাহককে মেরে ফেললে তো বার্তার কোনো হেরফের হচ্ছে না। আসলে বার্তাটাকে দেখতে হবে।”

তবে সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা থাকা উচিৎ বলেও মনে করেন এ গবেষক ও সাহিত্যিক।

তিনি বলেন, ‘মুক্ত সাংবাদিকতা কখনো ছিল না। সেটা হবে বলে আশা করাও ভুল। তবে সাংবাদিকদের কিছু প্রতিবন্ধকতাও থাকা উচিৎ। তাদের কিছুটা প্রতিবন্ধকতা না থাকলে, তারা প্রতিবাদি হন না। জনগণের কণ্ঠকে ধারণ করেন না।’

বর্তমানে ভিন্নমত প্রচার-প্রকাশও কঠিন আবার কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যথাযথ বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ না করেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক ও গণমাধ্যম গবেষক জায়েদুল আহসান পিন্টু।

তিনি বলেন, এ আইনের কিছু কিছু ধারায় প্রশাসনকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যেমন–বিনা ওয়ারেন্ট অ্যারেস্ট করবে, জাজমেন্ট দেওয়ার আগেই কন্টেন্ট সরিয়ে দেবে, কথা বলতে গেলেই কথার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ধরে নিয়ে যেতে পারে। কোন কথার কী ব্যাখ্যা করবে, তার সিদ্ধান্ত দেবে একজন পুলিশ ইনস্পেক্টর!’

‘কোনটা শ্লীল, কোনটা অশ্লীল, কোনটা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করবে, কোনটা তৈরি করবে না–এসবের সংজ্ঞা নির্ধারণ না করেই এ আইন পাস করে ফেলল। যারা প্রকৃত অপরাধী বা অভিযুক্ত হতে পারে, তাদের চেয়ে নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এ আশঙ্কা আমাদের ২০১৮ সালেও ছিল, এখনো পরিপূর্ণভাবে রয়ে গেছে‘–যোগ করেন ডিবিসি সম্পাদক।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসব ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি বলে মনে হচ্ছে সেগুলো বাতিল বা সংশোধনের জন্য সাংবাদিকরা কী ভূমিকা পালন করেছেন–এমন প্রশ্নের জবাবে এ গণমাধ্যম গবেষক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, ‘আমারাও রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত। সে জায়গাটায় আমরা এক হতে পারছি না। ২০১৮ সালে একই দিনে সংসদে সড়ক পরিবহন আইন পাস হলে, দেশের স্টেকহোল্ডাররা সবাই সমর্থন দিলেন। কিন্তু শ্রমকি-মালিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আইনটি রুখে দিলেন। কিন্তু আমরা পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উচিৎ ছিল প্রফেশনাল চিন্তা করে এ আইনের কোন কোন ধারার অপব্যবহার হতে পারে বা হচ্ছে, যেগুলোর সংশোধন দরকার, সে বিষয়ে সবাই এক হয়ে সরকারের সঙ্গে বসা।’

সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হলে প্রতিবাদের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে ভিন্নতা। এ ছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যেও ছোট প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধিরা নির্যাতনের শিকার হলে খুব জোরাল প্রতিবাদ দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘এটি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা। এটা হওয়া উচিৎ ছিল না। আমরা যদি প্রফেশনালি (পেশাগত) ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগুলো ডিল করতাম, প্রতিবাদটা একই রকম হতো। এটি সাংবাদিকতার একটি বিচ্যুতি।’

এসব সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বকে উন্নত করার পরামর্শ দেন তিনি। সাংবাদিক নেতাদের শুধু রুটি-রুজি নয়, সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই তাদের ভূমিকা রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এ গণমাধ্যম গবেষক।

শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা নয়, সরকারের বিভিন্ন বাহিনী থেকেও চাপ আসে বলে জানান জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, ‘এক সময় সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ আসত, এখন আদেশ হিসেবে আসে। সরাসরি বলে না এটা করবেন না, কিন্তু এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়, যাতে আপনি নিজেই এটা করতে চাইবেন না।’

এ গণমাধ্যম গবেষক বলেন, ‘আইন, বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়। এ ছাড়া মিডিয়ার মালিকেরা সরকারের লোক। পত্রিকার লোকগুলো সরকারের লোক নাহলেও সরকারের সঙ্গে একটা আন্ডাস্ট্যান্ডিংয়ের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। যারা চলে না তাদের ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি হয়। তবে এর মধ্যে দিয়েও সাংবাদিকরা তার কাজ বের করে নিচ্ছেন। আমি যে কথাগুলো বললাম, সে পরিবেশ যদি থাকত, তাহলে হয়তো ১০০ ভাগ মুক্ত গণমাধ্যম হতো। সেটার জন্য আরো লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে।’

সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দিতে না পারলে স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির সুযোগ নিয়ে অনেকে নানা ধরনের অপপ্রচার করছে। এসব থেকে মুক্তি পেতে হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এ আইনের কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন সাংবাদিকতার এ অধ্যাপক।

তিনি বলেন, ‘এ আইনের আওতায় কোনো সাংবাদিকের নামে যদি অভিযোগ ওঠে, তাহলে তা সঠিক কি না, সেটি দেখার জন্য সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। যেমন–সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেস কাউন্সিল, রিপোর্টারস ইউনিটি। দায়িত্বশীল সংগঠন থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেই সাংবাদিককে অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া বা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’

সাংবাদিকদের সুরক্ষার বিষয়ে লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়া মালিকদের স্বার্থ রক্ষার কাজ করে। এমন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠান নিজেই চলতে পারে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। মালিকসহ গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সবার জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন করতে হবে এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমেই মনিটর করতে হবে। নিজস্ব ব্যবসায়িক মডেলসহ বিশেষায়িত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

দায়িত্বশীল ও সৎ সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নত দেশ চাইলে, উন্নত সাংবাদিতকতা থাকতে হবে। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা চাইলে মুক্তচিন্তার ক্ষেত্র উন্মুক্ত করতে হবে। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা যে পর্যায়ে যাওয়া উচিৎ ছিল, সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।’

এসএন/এসএ/

Header Ad
Header Ad

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ। ছবি: সংগৃহীত

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত মাহমুদুল হাসান মুন্না হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে ৫ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মোস্তাফিজার রহমান তার ১৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে রংপুর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক দেবী রানী রায় আসামির পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

এ বিষয়ে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদ ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। আজ শুক্রবার রিমান্ড আবেদনের জন্য তাকে আদালতে তোলা হয়।

এর আগে, বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে রংপুর নগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিস-সংলগ্ন একটি বাসা থেকে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উল্লেখ্য, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ লালমনিরহাট-২ (কালিগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ২০১৫ সালে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও ২০১৯ সালে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। সবশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও তিনি সংসদ সদস্য হন।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করে প্রজ্ঞাপণ জারির দাবিতে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) টানা তৃতীয় দিনের মতো আমরণ অনশনে বসেছেন কলেজটির একদল শিক্ষার্থী। অবশ্য এরই মধ্যে তারা কলেজের সামনের সড়কের অবরোধ তুলে নিয়েছেন। এতে করে মহাখালী থেকে গুলশান লিংক রোডের যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

তবে কলেজের মূল ফটকের সামনে অবস্থান করছেন তারা। আজকের জুমার নামাজ সেখানেই আদায় করার ঘোষণা দিয়েছেন তারা। শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) কলেজটির শিক্ষার্থীদের সংগঠন তিতুমীর ঐক্যের পক্ষ থেকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, আমাদের অনশন কর্মসূচি শুরুর ২৪ ঘণ্টা পর শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে একজন প্রতিনিধি এসেছিলেন। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু কারো মুখের কথা আমরা বিশ্বাস করতে চাইনা। যতক্ষণ পর্যন্ত তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বীকৃতি দেওয়া না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব। রাতে সড়ক অবরোধ ছাড়লেও ফের অবরোধ করা হবে। রাতে রাজধানীতে কাঁচামালবাহী বিভিন্ন সবজির গাড়ি প্রবেশ করে। তাই তারা সড়ক ছেড়ে দিয়েছিলাম। যেন জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না হয়।

তারা বলেন, অনশনরত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে তিতুমীর কলেজের ৭ জন শিক্ষার্থী সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বাংলা বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রানা আহমেদ ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

তিতুমীর ঐক্যের দপ্তর সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেলে থেকে অনশন শুরু হয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অনশন চলবে। আমরা ৭ দফা দাবি জানিয়েছি। সেগুলো হচ্ছে —

১. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ করতে হবে।

২. তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গঠন করে ২০২৪-২০২৫ সেশনের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

৩. শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ নতুবা অনতিবিলম্বে শতভাগ শিক্ষার্থীর আবাসিক খরচ বহন করতে হবে।

৪. ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ন্যূনতম দুইটি বিষয় ‘আইন’ এবং ‘জার্নালিজম’ বিষয় সংযোজন করতে হবে।

৫. অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য যোগ্যতাসম্পন্ন পিএইচডিধারী শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে।

৬. শিক্ষার গুণগতমান শতভাগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে আসন সংখ্যা সীমিত করতে হবে।

৭. আন্তর্জাতিক মানের গবেষণাগার বিনির্মাণের লক্ষ্যে জমি ও আর্থিক বরাদ্দ নিশ্চিতকরণ করতে হবে।

এর আগে, গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব নুরুজ্জামান অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। তিনি তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। তবে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

Header Ad
Header Ad

টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ

ছবি: সংগৃহীত

টাঙ্গাইলের সদরে ফুলচান (২০) নামে এক রডমিস্ত্রীকে গলাকেটে করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৮ টার দিকে সদর উপজেলার দাইন্যা ইউনিয়নের বসাকপাড়া রোড ছোট বিন্নাফৈর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ফুলচান ওই এলাকার স্বন্দেশ মিয়ার ছেলে। দাইন্যা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সাবেক চেয়ারম্যান লাভলু মিয়া লাবু জানান, রাত ৮টার দিকে স্থানীয় তার বাড়ির পাশে লোকজন রাস্তার উপর ফুলচানের গলাকাটা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

তিনি আরও জানান, তার ধারণা রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮ টার মধ্যে দুর্বৃত্তরা তাকে জবাই করে মরদেহটি ফেলে রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তানবীর আহমেদ জানান, স্থানীয়দের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। যারাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকুক না কেন তাদের চিহিৃত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান ৫ দিনের রিমান্ডে
বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিতে আজও অনশনে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা
টাঙ্গাইলে নিজ বাড়ির পাশে পড়ে ছিল যুবকের গলাকাটা মরদেহ
গাজায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৪২ ফিলিস্তিনির লাশ উদ্ধার
ছাত্রদল নেতার সমন্বয়ক পরিচয়ে প্রকল্প গ্রহণ, বাস্তবায়নে অনিয়মের চাঞ্চল্যকর অভিযোগ
ছাত্রদের চাপে সাবেক মন্ত্রী নুরুজ্জামানের হাতে হাতকড়া, ডিম নিক্ষেপ
ওভাল ক্রিকেট টিমের ৪৯ শতাংশ শেয়ার কিনল আম্বানি পরিবার
সামরিক প্রধান মোহাম্মদ দেইফের মৃত্যু নিশ্চিত করল হামাস
প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম