সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

প্রশ্নবিদ্ধ সাংবাদিকতা: উত্তরণের পথ (২)

স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন

ঢাকাপ্রকাশ

অক্ষরের পাশে অক্ষর বসানো সমাচার দর্পণ থেকে আজকের ঝকঝকে চার রঙে ছাপা প্রতিদিনের অজস্র সংবাদপত্র। সাদা-কালো যুগ পেরিয়ে স্যাটেলাইটের হাত ধরে দেশ-মহাদেশের সীমানা পেরিয়ে যায় টেলিভিশন। এককালের ছুটে চলা প্রান্তিক সাংবাদিকতা থেকে আজকের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগ। সঙ্গে যোগ হয়েছে প্রযুক্তির নানা মাত্রা।

এত কথা যে সংবাদমাধ্যম নিয়ে, বর্তমানে তার গতিপথ কোন দিকে? মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে শুরু করে নতুন শতকের প্রথম দুই দশক পেরিয়ে আজ কোন জায়গায় আমাদের সাংবাদিকতা? তার মানই বা কী?

প্রশ্ন অনেক, উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছি আমরা। ঠিক সে কারণেই ঢাকা প্রকাশের পক্ষ থেকে মুখোমুখি হওয়া গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের।

বর্তমান সাংবাদিকতার নানা সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ থাকছে দ্বিতীয় পর্ব।

গণমাধ্যম জনগণের মাধ্যম। জনগণের সঙ্গে সরকারের সেতুবন্ধন। এর মাধ্যমে সমাজের সঠিক অবস্থান এবং জনগণ কী চায়–সেটি যেমন সরকার জানতে পারে, ঠিক তেমনি জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে তার মতামতও প্রকাশ করতে পারে।

দায়িত্বশীল ও সৎ সাংবাদিকতার অন্যতম প্রধান ভিত্তি বস্তুনিষ্ঠতা। গণমাধ্যমে যদি বস্তুনিষ্ঠতা না থাকে, তাহলে গণমাধ্যমের আর কোনো অর্থ থাকে না। তবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারার অপব্যবহার, গণমাধ্যম মালিকদের চাপ এবং সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার অভাবসহ নানা সমস্যার কারণে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে পেশাদারিত্ব ও দায়িত্বশীলতা। সেই সঙ্গে রয়েছে সাংবাদিকদের বিভক্তি ও নিষ্ক্রিয়তা।

স্বাধীন সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বেশকিছু ধারাকেই সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা মনে করছেন সাংবাদিক, গণমাধ্যম বিষেশজ্ঞ ও গবেষকেরা।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘একজন সাংবাদিক সৎ থেকে সাংবাদিকতা করলে তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা হওয়ার কথা নয়। অথচ আমরা দেখি, অনেক সাংবাদিক এ আইনের ভুক্তভোগী হচ্ছেন। এটি আমরা দেখতে চাই না। বাংলাদেশের সংবিধানে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন যেন কোনো বাধা না হয়, সেদিকে সরকারের নজর দেওয়া দরকার।’

ডিজিটাল নিরাপত্তার অপব্যবহারের বিষয়ে সাহিত্যিক ও অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন জায়গায় ওঁৎ পেতে থাকা দুর্নীতিবাজ ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে সংবাদ করলে, তাদের কিছুই হয় না। কিন্তু যারা এটা প্রকাশ করছেন তাদের নিগৃহীত হতে হয়। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’

তিনি বলেন, “ইংরেজিতে একটি কথা আছে, ‘শুটিং দ্য মেসেঞ্জার’। বার্তাবাহককে মেরে ফেললে তো বার্তার কোনো হেরফের হচ্ছে না। আসলে বার্তাটাকে দেখতে হবে।”

তবে সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্রে কিছুটা প্রতিবন্ধকতা থাকা উচিৎ বলেও মনে করেন এ গবেষক ও সাহিত্যিক।

তিনি বলেন, ‘মুক্ত সাংবাদিকতা কখনো ছিল না। সেটা হবে বলে আশা করাও ভুল। তবে সাংবাদিকদের কিছু প্রতিবন্ধকতাও থাকা উচিৎ। তাদের কিছুটা প্রতিবন্ধকতা না থাকলে, তারা প্রতিবাদি হন না। জনগণের কণ্ঠকে ধারণ করেন না।’

বর্তমানে ভিন্নমত প্রচার-প্রকাশও কঠিন আবার কোনো অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যথাযথ বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ না করেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডিবিসি নিউজের সম্পাদক ও গণমাধ্যম গবেষক জায়েদুল আহসান পিন্টু।

তিনি বলেন, এ আইনের কিছু কিছু ধারায় প্রশাসনকে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যেমন–বিনা ওয়ারেন্ট অ্যারেস্ট করবে, জাজমেন্ট দেওয়ার আগেই কন্টেন্ট সরিয়ে দেবে, কথা বলতে গেলেই কথার ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে ধরে নিয়ে যেতে পারে। কোন কথার কী ব্যাখ্যা করবে, তার সিদ্ধান্ত দেবে একজন পুলিশ ইনস্পেক্টর!’

‘কোনটা শ্লীল, কোনটা অশ্লীল, কোনটা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করবে, কোনটা তৈরি করবে না–এসবের সংজ্ঞা নির্ধারণ না করেই এ আইন পাস করে ফেলল। যারা প্রকৃত অপরাধী বা অভিযুক্ত হতে পারে, তাদের চেয়ে নিরাপরাধ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে। এ আশঙ্কা আমাদের ২০১৮ সালেও ছিল, এখনো পরিপূর্ণভাবে রয়ে গেছে‘–যোগ করেন ডিবিসি সম্পাদক।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের যেসব ধারা স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থি বলে মনে হচ্ছে সেগুলো বাতিল বা সংশোধনের জন্য সাংবাদিকরা কী ভূমিকা পালন করেছেন–এমন প্রশ্নের জবাবে এ গণমাধ্যম গবেষক ও জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক বলেন, ‘আমারাও রাজনৈতিকভাবে বিভাজিত। সে জায়গাটায় আমরা এক হতে পারছি না। ২০১৮ সালে একই দিনে সংসদে সড়ক পরিবহন আইন পাস হলে, দেশের স্টেকহোল্ডাররা সবাই সমর্থন দিলেন। কিন্তু শ্রমকি-মালিকরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আইনটি রুখে দিলেন। কিন্তু আমরা পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের উচিৎ ছিল প্রফেশনাল চিন্তা করে এ আইনের কোন কোন ধারার অপব্যবহার হতে পারে বা হচ্ছে, যেগুলোর সংশোধন দরকার, সে বিষয়ে সবাই এক হয়ে সরকারের সঙ্গে বসা।’

সাংবাদিকরা নির্যাতনের শিকার হলে প্রতিবাদের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে ভিন্নতা। এ ছাড়া সাংবাদিকদের মধ্যেও ছোট প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধিরা নির্যাতনের শিকার হলে খুব জোরাল প্রতিবাদ দেখা যায়নি।

এ বিষয়ে জায়েদুল আহসান পিন্টু বলেন, ‘এটি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা। এটা হওয়া উচিৎ ছিল না। আমরা যদি প্রফেশনালি (পেশাগত) ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে এগুলো ডিল করতাম, প্রতিবাদটা একই রকম হতো। এটি সাংবাদিকতার একটি বিচ্যুতি।’

এসব সমস্যার সমাধানের ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বকে উন্নত করার পরামর্শ দেন তিনি। সাংবাদিক নেতাদের শুধু রুটি-রুজি নয়, সাংবাদিকতার মান উন্নয়ন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই তাদের ভূমিকা রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এ গণমাধ্যম গবেষক।

শুধু ডিজিটাল নিরাপত্তা নয়, সরকারের বিভিন্ন বাহিনী থেকেও চাপ আসে বলে জানান জায়েদুল আহসান পিন্টু। তিনি বলেন, ‘এক সময় সরকারের পক্ষ থেকে অনুরোধ আসত, এখন আদেশ হিসেবে আসে। সরাসরি বলে না এটা করবেন না, কিন্তু এমন পরিবেশ তৈরি করা হয়, যাতে আপনি নিজেই এটা করতে চাইবেন না।’

এ গণমাধ্যম গবেষক বলেন, ‘আইন, বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়ে চাপ সৃষ্টি করা হয়। এ ছাড়া মিডিয়ার মালিকেরা সরকারের লোক। পত্রিকার লোকগুলো সরকারের লোক নাহলেও সরকারের সঙ্গে একটা আন্ডাস্ট্যান্ডিংয়ের মধ্যে দিয়ে চলতে হয়। যারা চলে না তাদের ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টি হয়। তবে এর মধ্যে দিয়েও সাংবাদিকরা তার কাজ বের করে নিচ্ছেন। আমি যে কথাগুলো বললাম, সে পরিবেশ যদি থাকত, তাহলে হয়তো ১০০ ভাগ মুক্ত গণমাধ্যম হতো। সেটার জন্য আরো লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে।’

সাংবাদিকদের আইনি সুরক্ষা দিতে না পারলে স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্ভব নয়। এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ডিজিটাল প্রযুক্তির সুযোগ নিয়ে অনেকে নানা ধরনের অপপ্রচার করছে। এসব থেকে মুক্তি পেতে হলে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন রয়েছে। তবে এ আইনের কারণে স্বাধীন সাংবাদিকতা যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে।

এক্ষেত্রে সাংবাদিক সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন সাংবাদিকতার এ অধ্যাপক।

তিনি বলেন, ‘এ আইনের আওতায় কোনো সাংবাদিকের নামে যদি অভিযোগ ওঠে, তাহলে তা সঠিক কি না, সেটি দেখার জন্য সাংবাদিকদের সংগঠনগুলোকে দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে। যেমন–সাংবাদিক ইউনিয়ন, প্রেস কাউন্সিল, রিপোর্টারস ইউনিটি। দায়িত্বশীল সংগঠন থেকে প্রতিবেদন পাওয়ার পর সেই সাংবাদিককে অভিযোগ থেকে রেহাই দেওয়া বা আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’

সাংবাদিকদের সুরক্ষার বিষয়ে লেখক, গবেষক ও সাংবাদিক আফসান চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অধিকাংশ মিডিয়া মালিকদের স্বার্থ রক্ষার কাজ করে। এমন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে, যাতে প্রতিষ্ঠান নিজেই চলতে পারে। এ ছাড়া সাংবাদিকদের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে। মালিকসহ গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট সবার জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন করতে হবে এবং গণমাধ্যমকর্মীদের মাধ্যমেই মনিটর করতে হবে। নিজস্ব ব্যবসায়িক মডেলসহ বিশেষায়িত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে হবে।

দায়িত্বশীল ও সৎ সাংবাদিকতার প্রয়োজনীয়তা প্রসঙ্গে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, ‘উন্নত দেশ চাইলে, উন্নত সাংবাদিতকতা থাকতে হবে। উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা চাইলে মুক্তচিন্তার ক্ষেত্র উন্মুক্ত করতে হবে। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের সাংবাদিকতা যে পর্যায়ে যাওয়া উচিৎ ছিল, সেখানে পৌঁছাতে পারেনি।’

এসএন/এসএ/

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু