সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

মোমেন ফাউন্ডেশনের নামে সিলেটে গ্রাস হচ্ছে টিলা ভূমি

সিলেট এয়ারপোর্ট রোডের বড়শালা মৌজার আহমদ হাউজিং এলাকা টিলা কেটে দেদারছে তৈরি হচ্ছে স্থাপনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নামে প্রতিষ্ঠিত মোমেন ফাউন্ডেশনের নাম ভাঙিয়ে এ সব স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই কাজ করছেন হেলেন আহমদ। যিনি সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব পালন করছেন। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করছেন সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা।

অবশ্য যার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ সেই হেলেন আহমদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলছেন, এ সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু কেন ষড়যন্ত্র করছে জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

যেভাবে টিলা রূপান্তর হচ্ছে সমতলে

সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড়শালা এলাকায় টিলার উপর মনোরম পরিবেশে একটি আবাসিক স্থাপনা। জানা গেল স্থাপনাটি এয়ারপোর্ট পুলিশের স্পেশাল ব্যাঞ্চের স্টাফ কোয়ার্টার। তারই ডানপাশে চোখ পড়তেই দেখা গেল নিচু অংশে একটি স্থাপনার নির্মাণ কাজ করছে একদল শ্রমিক। স্থাপনার চতুর্পাশে রাখা রয়েছে মাটির স্তুপ। টিলা শ্রেণির ভূমি কেটে প্রায় ৫ ফুট গভীর থেকে মাটি কেটে সমতলে তৈরি হচ্ছে এই স্থাপনার কাজ। কিসের স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে জানতে চাইলে ঠিকাদার মুজিবুর রহমান (মুজিব ঠিকাদার) জানান, এখানে মোমেন ফাউন্ডেশনের নির্মাণের কাজ চলছে। একমাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এর আশ-পাশ অংশেও টিলা কেটে তৈরি হচ্ছে আবাসিক প্লট। কেউ সেখানে বাসা তৈরি করে গড়েছেন বসতি, কোনো কোনো প্লটে চলছে বাসা-বাড়ি নির্মাণ কাজ। আবার টিলা স্থানের কোনো অংশ কেটে করা হচ্ছে সমতল। ফলে টিলাভূমি হারিয়েছে তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য। একই সঙ্গে টিলাভূমিকে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে পরিবেশকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। এরমধ্য দিয়ে ভূমি খেকো চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টিলা ভূমিকে ভিটা শ্রেণিতে রূপান্তরের এই অনিয়মকে বৈধ করে দিয়েছেন খোদ জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার। সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান হেলেন আহমদের সঙ্গে একাত্ব হয়ে এই অনিয়ম করেছেন। টিলা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রাপ্ত বাড়ি ও ভিটে শ্রেণির ৮৬ শতক ভূমির ২০ শতক দানপত্র দলিলে রেকর্ড করা হয় মোমেন ফাউন্ডেশনের নামে। যার দলিল নং ৫৮০১/২০২১।

এই দলিলেই সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান টিলা শ্রেণির ভূমিকে ভিটে ও বাড়ি শ্রেণি হিসেবে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন। একইসঙ্গে আরও ৩ একর ৬০ শতক ভুয়া নামজারির মাধ্যমে রেকর্ড করে নেন হেলেন আহমদ। যার ভুয়া নামজারি খতিয়ান নং ৭০৯। জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসারের এই অনৈতিক কাজের সুযোগ নেন হেলেন আহমদের ব্যবসায়িক পার্টনার মিসবাউল ইসলাম। তিনি বিনা আবেদনেই টিলা শ্রেণির ভূমিকে বাড়ি ও ভিটে শ্রেণিতে ৪টি দাগে রূপান্তরের মাধ্যমে ১ একর ৮০ শতক ভূমি নিজ নামে রেকর্ড করতে সক্ষম হন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর শ্রেণি পরিবর্তন করতে হেলেন আহমদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আলমপুরে জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসে শুনানিতে হেলেন আহমদসহ মোমেন ফাউন্ডেশনের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী শফিউল আলম জুয়েল অংশগ্রহণ করেন। শুনানি শেষে মাত্র তিন দিনের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই সদর সহকারী স্যাটেলমেন্ট অফিসার হুমায়ুন কবির ৫ সেপ্টেম্বর তাদের অনুকূলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি পরবর্তী জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার ওবায়দুর রহমান ১০১০/২০২১ নং ভুয়া বিবিধ মামলার বলে দরখাস্তকারীর অনুকূলে টিলা শ্রেণিকে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণিতে রেকর্ড করার আদেশ প্রদান করেন।

সিলেটের বিমানবন্দর সড়কের বড়শালায় ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে মোমেন ফাউন্ডেশনের। হেলেন আহমদের এই বেআইনি কার্যক্রমকে স্বীকৃত দিতে গিয়ে বিভিন্ন মালিকানায় থাকা এসএ ১১ নং খতিয়ানের ৩০৫০ নং দাগের ৬০ একর ৫ শতক টিলা ভূমির আংশিক কাগজপত্র হয়ে গেছে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণিভুক্ত। টিলা শ্রেণি পরিবর্তনের ভুয়া বিবিধ মামলার আদেশ বলে ডি.পি ১৪৯৯ ও ১৫৭৮ নং খতিয়ান হতে হাল ৫৮০৯,৫৮১০,৫৮১১ ও ৬৪০১ নং দাগের ভূমি কর্তন করে ডি.পি ১৪৭৫ নং খতিয়ানে হেলেন আহমদের ব্যবসায়িক পার্টনার ও আইনজীবী মিছবাহুল ইসলামও টিলা শ্রেণির ভূমি আবেদন ও মামলাবিহীন নিজ নামে রেকর্ড করার সুযোগ লাভ করেন।

প্রাপ্ত কাগজপত্র অনুযায়ী বড়শালা মৌজার এসএ ১১ নং খতিয়ানের ৩০৫০ নং দাগের মোট জমির পরিমাণ ৬০ একর পাঁচ শতক। যাহা টিলা শ্রেণি হিসেবে বিগত ১৯৫৬ সনের এসএ জরিপে জতরপুর নিবাসী যোগেন্দ্র মোহন দাসের নামে রেকর্ড রয়েছে। বর্তমান মাঠ জরিপেও একই দাগের সাকুল্য ভূমি টিলা শ্রেণি হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিদের নামে রেকর্ড হয়। আর সাবেক ৩০৫০ হাল দাগ নং ৬৪০৬ নং দাগের ৮৬ শতক ভূমি থেকে হেলেন আহমদ ২০ শতক ভূমি দানপত্রের মাধ্যমে মোমেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা মোমেনের নামে সম্পাদন করে দেন।

সদর উপজেলার ৪৪ নং জে,এল ভুক্ত বড়শালা মৌজার সকল স্তরের রেকর্ড প্রণয়ন কার্যক্রম ২০১৭ সালে সমাপ্ত হয়েছে । অথচ মুদ্রণ সমাপ্ত রেকর্ডে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট হেলেন আহমদ সিলেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের ১৯৮৮-৮৯ সনের ৩৮১ নং ভুয়া নামজারি বলে ৭০৯ নং খতিয়ান দাখিল করে বর্তমান রেকর্ড সংশোধনের জন্য একটি আবেদন জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বরাবর দাখিল করেন।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে সদর সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার হুমায়ূন কবির-২ সরজমিনে তদন্ত না করে জোনাল অফিসে বসেই ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দশ দিনের ব্যবধানে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাকুল্য ভূমি টিলা শ্রেণি হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিদের নামে রেকর্ড থাকলেও হুমায়ূন কবিরের একতরফা তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে মাত্র আট দিনের ব্যবধানে মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে নিজের মনগড়া, কাল্পনিক, ভুয়া ও ধারাবিহীন ১০১০/২০২১ নং বিবিধ মামলা সৃষ্টি করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারি নীতিমালায় এ ধরনের কোনো আইন নেই। অথচ ভুয়া মামলায় স্যাটেলমেন্ট অফিসার আদেশ দিয়ে টিলা শ্রেণি পরিবর্তন করে ভিটা ও বাড়ি শ্রেণিতে রূপান্তর করেন। ওই মৌজার মুদ্রণ খতিয়ানের ভুল-ত্রুটি যাচাই-বাছাই করার জন্য একজন সার্ভেয়ারসহ সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার ভুল-ত্রুটি পরীক্ষা করতে গেলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হয়ে আসে। বেআইনি কার্যক্রমের বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী কথাও বলেন বড়কর্তার সঙ্গে। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়। এতে দমে থাকেননি জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান। তিনি অবৈধ পন্থায় রেকর্ডকৃত ১৪৭৫ নং ডি.পি খতিয়ানটি সংশোধন না করেই তড়িঘড়ি করে মুদ্রণ খতিয়ান বিক্রির ব্যবস্থা করে মৌজাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হস্তান্তরের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে গেজেট প্রকাশের জন্য প্রস্তাব প্রেরণও করেন ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, একটি অনিয়ম ঢাকা দিতে গিয়ে জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার ওবায়দুর রহমান বর্তমান মাঠ জরিপে প্রস্তুতকৃত ডি.পি ৪৪,১৩৫৪.১৪৯৯, ১৫৭৮, ১৭৪২, ২৭৫৫, ২৭৬০, ২৭৭৫, ২৭৮৮, ২৭৮৯, ২৭৯৪, ২৮০৫ ও ২৮৪৬ নং খতিয়ানের মালিকদের অজান্তেই তাদের খতিয়ানের টিলা শ্রেণির পরিবর্তে ভিটা ও বাড়ি শ্রেণিতে টেম্পারিং করে পরিবর্তন করেন।

আইনে যা আছে

২০১০ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা হয়েছে, চা-বাগান, পাহাড় বা টিলার ক্ষতি হতে পারে এমন স্থানে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। ১৯৯৫ সালের সংশোধিত পরিবেশ আইনের ১ নং ধারার ৬ খ তে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পাহাড় বা টিলা কর্তন/মোচন করা যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে কোনো পাহাড় টিলা কর্তন/মোচন করা যেতে পারে।

উল্লেখিত স্থানে প্রথম এবং দ্বিতীয়টিও লঙ্ঘিত হয়েছে। একইসঙ্গে টিলা শ্রেণির ভূমি শ্রেণি পরিবর্তনের কোনো সুযোগ না থাকলে আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে সেটিও করা হয়েছে নির্বিঘ্নে।

প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫ এর ৪২ এর ক বিধিতে বলা হয়েছে চূড়ান্ত স্তর সমাপ্ত রেকর্ডে কোনো প্রকার প্রতারণা পরিলক্ষিত না হলে উক্ত রেকর্ড পরিবর্তন ও পরিমার্জন কিংবা সংশোধনের ন্যূনতম সুযোগ আইন ও বিধি অনুযায়ী ভূমি জরিপ বিভাগের নেই। এ ক্ষেত্রে এ পর্যায়ে এসে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন চরম অপরাধমূলক কাজ। এস এ রেকর্ড ও বর্তমান রেকর্ডে এবং সরজমিন তদন্তে টিলা শ্রেণির ভূমি দেখানো হলে সেই ভূমি মিথ্যে ও বানোয়াট বাড়ি ও ভিটা রকম কাল্পনিক শ্রেণি লিপিবদ্ধ করা সম্পূর্ণ অন্যায়, বিধি বহির্ভূত ও বাস্তবতা বিবর্জিত। এমনটি হয়ে থাকলে সেটি হবে অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপ যা ভূমি জরিপ বিভাগে বিরল দৃষ্টান্ত ।

পরিবেশবাদীরা যা বলছেন

পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা’র অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী টিলা কাটা নিষেধ। এ ছাড়াও টিলা কাটার বিরুদ্ধে বেলার দায়ের করা একটি রিটের রায়ে মহামান্য উচ্চ আদালত টিলা কাটা নিষিদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সুতরাং টিলা কাটা বা এর শ্রেণি পরিবর্তন করা বা দেখানোর সুযোগ নেই। আদালতের রায় উপেক্ষা করে যারা শ্রেণি পরিবর্তন করবেন বা এ কাজে সহযোগিতা করবেন কিংবা দেখভালের দায়িত্বে যারা আছেন তারাসহ সংশ্লষ্ট সকলেই আদালত অবমাননার অপরাধ করেছেন।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিমের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিলা শ্রেণির ভূমি পরিবর্তনের সাথে সিলেট ১ আসনের সাংসদের পরিবারের কারও যদি কোনো সম্পৃক্ততা থেকে থাকে তবে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ, তিনি বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কনিষ্ঠ ভাই। এই পরিবারের সদস্যদের প্রতিষ্ঠিত জনকল্যাণমুখী একটি ফাউন্ডেশন দেশের পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করলে আইনের শাসন বলে কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না।

পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক এমরান হোসেন বলেন, টিলা কাটা নিঃসন্দেহে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তবে মোমেন ফাউন্ডেশনের নামে টিলা কর্তন করে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে ওই নামে কোনো ছাড়পত্র গ্রহণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

টিলা শ্রেণির ভূমি রেজিস্ট্রির বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্ষেত্র বিশেষ সেটি হতেও পারে। তবে রেজিস্ট্রার  অফিস দখলীয় ভূমির খাজনাপত্রের কাগজপত্র যাচাই করে রেজিস্ট্রার কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। যদি এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হয়, সেটি আদালতের অবগতি কিংবা নির্দেশনা থাকতে হবে। অন্যথায় কারও বিষয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করে জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার ওবায়দুর রহমান বলেন, যেহেতু জনকল্যাণের জন্য নির্মিতব্য মোমেন ফাউন্ডেশন, সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত রিপোর্ট শেষে ১০১০/২০২১ নং বিবিধ মামলার বলে দরখাস্তকারীর অনুকূলে টিলা শ্রেণিকে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণিতে রেকর্ড করার আদেশ প্রদান করা হয়। তিনি বিষয়টিকে অনিয়ম নয় বরং নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হয়েছে বলে দাবি করেন।

এনএইচবি/আরএ/

Header Ad
Header Ad

ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনের প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে দেশজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল ও ক্লাস-পরীক্ষা কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।

আজ সোমবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে গুলশানে মার্কিন দূতাবাস এলাকায় মিছিল বের করে একদল তরুণ। মার্কিন দূতাবাসের সামনে মহাসড়কে অবস্থান নেন তাঁরা। এ সময় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মিছিলটির সামনে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।

সকাল থেকে মার্কিন দূতাবাসের সামনে অবস্থান নিয়েছেন সেনা সদস্যরা। সরেজমিনে দেখা যায়, তাঁরা এক প্রকার মানবপ্রাচীর তৈরি করে রেখেছেন। অধিকাংশ মানুষদের তল্লাশি করা হচ্ছে। কাউকেই ফুটপাতে বা রাস্তায় দাঁড়াতে দেওয়া হচ্ছে না।

বেলা ১২টার দিকে নতুন বাজারের মূল সড়কের একপাশ খুলে দেওয়া হয়। যানচলাচল স্বাভাবিক হতে থাকে। তবে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ মিছিলটি ঘিরে রয়েছে পুলিশ ও সেনা সদস্যরা। গুলশান বিভাগ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত আছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহফুজ আলম বলেন, ‘ফিলিস্তিন গাজার জয় হবেই হবে। যতদিন এই পৃথিবী থাকতে ততদিন ওই ইসলামের ভূমি ধ্বংস করা যাবে না। এখন দরকার পুরো পৃথিবীর মুসলিমদের এক হওয়া। জিহাদ ঘোষণা করা। সেটারই প্রথম ধাপ পুরো বিশ্বে এই বিক্ষোভ।
এর আগে সকাল থেকে বাড্ডায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। তারা ‘ফ্রি ফ্রি ফিলিস্তিন’, ’ ট্রাম্পের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘আমরা কারা, তোমরা কারা ফিলিস্তিন ফিলিস্তিন’ বলে স্লোগান দেন।

 

Header Ad
Header Ad

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার আইসিসিতে পাঠানোর কথা ভাবছে সরকার: প্রেস সচিব

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাতে প্রাণ যায় শত শত মানুষের। আহত হন অনেকে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তদন্তে নেমে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পায় জাতিসংঘ।

প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, হত্যায় জড়িত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।

আন্দোলন দমানোর নামে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে। ১০ জুলাইয়ের পর এসব আলামত নষ্টের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার।

তিনি বলেন, শুধু ডিলিট না, কথাও যেন কোন ডেটা না থাকে সেজন্যে স্থায়ীভাবে ডিলিট করার নির্দেশনাও আমরা তদন্তে পেয়েছি। সেসমস্ত জিনিস আমরা পুনরুদ্ধার করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে আদালতে প্রেরণযোগ্যের ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়টি নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর সুযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে সরকার।

তিনি আরও বলেন, এটি পাঠাতে পারলে সুবিধা হচ্ছে সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে পারবে কি নৃশংসভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা চালান হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, রোম আইনের বলে ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই আদালত। ১২৫টি রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশও এর সদস্য। জেনোসাইড, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার হয় আইসিসিতে।

Header Ad
Header Ad

ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি

বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এ নোটিশ দিয়ে সংহতি জানিয়েছে গাজার পক্ষে। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি চলছে। গত রাতেই ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এ নোটিশ দিয়ে সংহতি জানিয়েছে গাজার পক্ষে।

রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে জড়ো হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় আর কলেজগুলোর সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে একই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।

রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই ঘটনায় রাজধানীর বিজয় নগর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা, ফিলিস্তিনের নাগরিকদের উপর চালানো গণহত্যার প্রতিবাদ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবি উঠে আসে তাদের স্লোগানে। এসময় সোমবার জেনারেল স্ট্রাইকে দেশবাসীকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আজকের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই গণহত্যার প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ইসরায়েলি বর্বরতার প্রতিবাদে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ
জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার আইসিসিতে পাঠানোর কথা ভাবছে সরকার: প্রেস সচিব
ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি
যুদ্ধের মাঝে ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটলেন নেতানিয়াহু
রাজশাহীতে ট্রাক-বাসের সংঘর্ষে নিহত তিন, আহত অর্ধশত
পুরান ঢাকায় নাজিমউদ্দিন রোডে আগুন, নিহত ১
ইসরাইলি বসতিতে হামাসের মুহুর্মুহু রকেট হামলা (ভিডিও)
আমরা গাজায় আরও তীব্র হামলা চালাব: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী
নওগাঁয় আকাশ থেকে পড়ল বিরল আকৃতির শীলা, আতঙ্কিত এলাকাবাসী
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক
বিয়ের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে মারামারি, ভাঙল বিয়ে
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় ছাত্রদলের নিন্দা ও কর্মসূচি ঘোষণা
দপ্তর হারালেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব নিজাম উদ্দিন
বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক
শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প ও মার্কিন প্রশাসনকে চিঠি দেবে বাংলাদেশ: প্রেস সচিব
দর্শনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়নে এডিবির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের পরিদর্শন
ফেসবুকে নির্বাচনের কথা লিখলে সংঘবদ্ধ গালি শুরু হয়ে যাচ্ছে: ইশরাক
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব সামাল দেওয়া কঠিন হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
বিদেশি শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বুধবার