সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

মোমেন ফাউন্ডেশনের নামে সিলেটে গ্রাস হচ্ছে টিলা ভূমি

সিলেট এয়ারপোর্ট রোডের বড়শালা মৌজার আহমদ হাউজিং এলাকা টিলা কেটে দেদারছে তৈরি হচ্ছে স্থাপনা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের নামে প্রতিষ্ঠিত মোমেন ফাউন্ডেশনের নাম ভাঙিয়ে এ সব স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে। আর এই কাজ করছেন হেলেন আহমদ। যিনি সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যানেরও দায়িত্ব পালন করছেন। আর তাকে এই কাজে সহযোগিতা করছেন সিলেটের জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা।

অবশ্য যার বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ সেই হেলেন আহমদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলছেন, এ সব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। তিনি দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে। কিন্তু কেন ষড়যন্ত্র করছে জানতে চাইলে তিনি ফোনের লাইন কেটে দেন।

যেভাবে টিলা রূপান্তর হচ্ছে সমতলে

সরেজমিন ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বড়শালা এলাকায় টিলার উপর মনোরম পরিবেশে একটি আবাসিক স্থাপনা। জানা গেল স্থাপনাটি এয়ারপোর্ট পুলিশের স্পেশাল ব্যাঞ্চের স্টাফ কোয়ার্টার। তারই ডানপাশে চোখ পড়তেই দেখা গেল নিচু অংশে একটি স্থাপনার নির্মাণ কাজ করছে একদল শ্রমিক। স্থাপনার চতুর্পাশে রাখা রয়েছে মাটির স্তুপ। টিলা শ্রেণির ভূমি কেটে প্রায় ৫ ফুট গভীর থেকে মাটি কেটে সমতলে তৈরি হচ্ছে এই স্থাপনার কাজ। কিসের স্থাপনা নির্মাণ হচ্ছে জানতে চাইলে ঠিকাদার মুজিবুর রহমান (মুজিব ঠিকাদার) জানান, এখানে মোমেন ফাউন্ডেশনের নির্মাণের কাজ চলছে। একমাসের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করা হবে।

এর আশ-পাশ অংশেও টিলা কেটে তৈরি হচ্ছে আবাসিক প্লট। কেউ সেখানে বাসা তৈরি করে গড়েছেন বসতি, কোনো কোনো প্লটে চলছে বাসা-বাড়ি নির্মাণ কাজ। আবার টিলা স্থানের কোনো অংশ কেটে করা হচ্ছে সমতল। ফলে টিলাভূমি হারিয়েছে তার নৈসর্গিক সৌন্দর্য। একই সঙ্গে টিলাভূমিকে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণি রূপান্তরের মধ্য দিয়ে পরিবেশকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলা হচ্ছে। এরমধ্য দিয়ে ভূমি খেকো চক্র হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টিলা ভূমিকে ভিটা শ্রেণিতে রূপান্তরের এই অনিয়মকে বৈধ করে দিয়েছেন খোদ জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার। সিলেট জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান হেলেন আহমদের সঙ্গে একাত্ব হয়ে এই অনিয়ম করেছেন। টিলা ভূমির শ্রেণি পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রাপ্ত বাড়ি ও ভিটে শ্রেণির ৮৬ শতক ভূমির ২০ শতক দানপত্র দলিলে রেকর্ড করা হয় মোমেন ফাউন্ডেশনের নামে। যার দলিল নং ৫৮০১/২০২১।

এই দলিলেই সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান টিলা শ্রেণির ভূমিকে ভিটে ও বাড়ি শ্রেণি হিসেবে রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেন। একইসঙ্গে আরও ৩ একর ৬০ শতক ভুয়া নামজারির মাধ্যমে রেকর্ড করে নেন হেলেন আহমদ। যার ভুয়া নামজারি খতিয়ান নং ৭০৯। জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসারের এই অনৈতিক কাজের সুযোগ নেন হেলেন আহমদের ব্যবসায়িক পার্টনার মিসবাউল ইসলাম। তিনি বিনা আবেদনেই টিলা শ্রেণির ভূমিকে বাড়ি ও ভিটে শ্রেণিতে ৪টি দাগে রূপান্তরের মাধ্যমে ১ একর ৮০ শতক ভূমি নিজ নামে রেকর্ড করতে সক্ষম হন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর শ্রেণি পরিবর্তন করতে হেলেন আহমদের আবেদনের প্রেক্ষিতে আলমপুরে জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসে শুনানিতে হেলেন আহমদসহ মোমেন ফাউন্ডেশনের পক্ষে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী শফিউল আলম জুয়েল অংশগ্রহণ করেন। শুনানি শেষে মাত্র তিন দিনের মধ্যে সরেজমিন তদন্ত ছাড়াই সদর সহকারী স্যাটেলমেন্ট অফিসার হুমায়ুন কবির ৫ সেপ্টেম্বর তাদের অনুকূলে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন প্রাপ্তি পরবর্তী জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার ওবায়দুর রহমান ১০১০/২০২১ নং ভুয়া বিবিধ মামলার বলে দরখাস্তকারীর অনুকূলে টিলা শ্রেণিকে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণিতে রেকর্ড করার আদেশ প্রদান করেন।

সিলেটের বিমানবন্দর সড়কের বড়শালায় ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে মোমেন ফাউন্ডেশনের। হেলেন আহমদের এই বেআইনি কার্যক্রমকে স্বীকৃত দিতে গিয়ে বিভিন্ন মালিকানায় থাকা এসএ ১১ নং খতিয়ানের ৩০৫০ নং দাগের ৬০ একর ৫ শতক টিলা ভূমির আংশিক কাগজপত্র হয়ে গেছে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণিভুক্ত। টিলা শ্রেণি পরিবর্তনের ভুয়া বিবিধ মামলার আদেশ বলে ডি.পি ১৪৯৯ ও ১৫৭৮ নং খতিয়ান হতে হাল ৫৮০৯,৫৮১০,৫৮১১ ও ৬৪০১ নং দাগের ভূমি কর্তন করে ডি.পি ১৪৭৫ নং খতিয়ানে হেলেন আহমদের ব্যবসায়িক পার্টনার ও আইনজীবী মিছবাহুল ইসলামও টিলা শ্রেণির ভূমি আবেদন ও মামলাবিহীন নিজ নামে রেকর্ড করার সুযোগ লাভ করেন।

প্রাপ্ত কাগজপত্র অনুযায়ী বড়শালা মৌজার এসএ ১১ নং খতিয়ানের ৩০৫০ নং দাগের মোট জমির পরিমাণ ৬০ একর পাঁচ শতক। যাহা টিলা শ্রেণি হিসেবে বিগত ১৯৫৬ সনের এসএ জরিপে জতরপুর নিবাসী যোগেন্দ্র মোহন দাসের নামে রেকর্ড রয়েছে। বর্তমান মাঠ জরিপেও একই দাগের সাকুল্য ভূমি টিলা শ্রেণি হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিদের নামে রেকর্ড হয়। আর সাবেক ৩০৫০ হাল দাগ নং ৬৪০৬ নং দাগের ৮৬ শতক ভূমি থেকে হেলেন আহমদ ২০ শতক ভূমি দানপত্রের মাধ্যমে মোমেন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সেলিনা মোমেনের নামে সম্পাদন করে দেন।

সদর উপজেলার ৪৪ নং জে,এল ভুক্ত বড়শালা মৌজার সকল স্তরের রেকর্ড প্রণয়ন কার্যক্রম ২০১৭ সালে সমাপ্ত হয়েছে । অথচ মুদ্রণ সমাপ্ত রেকর্ডে ২০২১ সালের ২৫ আগস্ট হেলেন আহমদ সিলেট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসের ১৯৮৮-৮৯ সনের ৩৮১ নং ভুয়া নামজারি বলে ৭০৯ নং খতিয়ান দাখিল করে বর্তমান রেকর্ড সংশোধনের জন্য একটি আবেদন জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বরাবর দাখিল করেন।

ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে সদর সহকারী সেটেলমেন্ট অফিসার হুমায়ূন কবির-২ সরজমিনে তদন্ত না করে জোনাল অফিসে বসেই ২০২১ সালের ৫ সেপ্টেম্বর দশ দিনের ব্যবধানে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। সাকুল্য ভূমি টিলা শ্রেণি হিসেবে বিভিন্ন ব্যক্তিদের নামে রেকর্ড থাকলেও হুমায়ূন কবিরের একতরফা তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে মাত্র আট দিনের ব্যবধানে মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান সরকারি বিধিমালা উপেক্ষা করে নিজের মনগড়া, কাল্পনিক, ভুয়া ও ধারাবিহীন ১০১০/২০২১ নং বিবিধ মামলা সৃষ্টি করেন।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সরকারি নীতিমালায় এ ধরনের কোনো আইন নেই। অথচ ভুয়া মামলায় স্যাটেলমেন্ট অফিসার আদেশ দিয়ে টিলা শ্রেণি পরিবর্তন করে ভিটা ও বাড়ি শ্রেণিতে রূপান্তর করেন। ওই মৌজার মুদ্রণ খতিয়ানের ভুল-ত্রুটি যাচাই-বাছাই করার জন্য একজন সার্ভেয়ারসহ সহকারি সেটেলমেন্ট অফিসার ভুল-ত্রুটি পরীক্ষা করতে গেলে কেঁচো খুঁড়তে সাপ বের হয়ে আসে। বেআইনি কার্যক্রমের বিষয়টি নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্মচারী কথাও বলেন বড়কর্তার সঙ্গে। কিন্তু হিতে বিপরীত হয়। এতে দমে থাকেননি জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার মুহাম্মদ ওবায়দুর রহমান। তিনি অবৈধ পন্থায় রেকর্ডকৃত ১৪৭৫ নং ডি.পি খতিয়ানটি সংশোধন না করেই তড়িঘড়ি করে মুদ্রণ খতিয়ান বিক্রির ব্যবস্থা করে মৌজাটি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হস্তান্তরের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে গেজেট প্রকাশের জন্য প্রস্তাব প্রেরণও করেন ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, একটি অনিয়ম ঢাকা দিতে গিয়ে জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার ওবায়দুর রহমান বর্তমান মাঠ জরিপে প্রস্তুতকৃত ডি.পি ৪৪,১৩৫৪.১৪৯৯, ১৫৭৮, ১৭৪২, ২৭৫৫, ২৭৬০, ২৭৭৫, ২৭৮৮, ২৭৮৯, ২৭৯৪, ২৮০৫ ও ২৮৪৬ নং খতিয়ানের মালিকদের অজান্তেই তাদের খতিয়ানের টিলা শ্রেণির পরিবর্তে ভিটা ও বাড়ি শ্রেণিতে টেম্পারিং করে পরিবর্তন করেন।

আইনে যা আছে

২০১০ সালের বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে বলা হয়েছে, চা-বাগান, পাহাড় বা টিলার ক্ষতি হতে পারে এমন স্থানে মাটি কাটা নিষিদ্ধ। ১৯৯৫ সালের সংশোধিত পরিবেশ আইনের ১ নং ধারার ৬ খ তে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সরকারি বা আধা-সরকারি বা স্বায়ত্বশাষিত প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন পাহাড় বা টিলা কর্তন/মোচন করা যাইবে না। তবে শর্ত থাকে যে, অপরিহার্য জাতীয় স্বার্থের প্রয়োজনে অধিদপ্তরের ছাড়পত্র গ্রহণক্রমে কোনো পাহাড় টিলা কর্তন/মোচন করা যেতে পারে।

উল্লেখিত স্থানে প্রথম এবং দ্বিতীয়টিও লঙ্ঘিত হয়েছে। একইসঙ্গে টিলা শ্রেণির ভূমি শ্রেণি পরিবর্তনের কোনো সুযোগ না থাকলে আইনের প্রতি তোয়াক্কা না করে সেটিও করা হয়েছে নির্বিঘ্নে।

প্রজাস্বত্ব বিধিমালা ১৯৫৫ এর ৪২ এর ক বিধিতে বলা হয়েছে চূড়ান্ত স্তর সমাপ্ত রেকর্ডে কোনো প্রকার প্রতারণা পরিলক্ষিত না হলে উক্ত রেকর্ড পরিবর্তন ও পরিমার্জন কিংবা সংশোধনের ন্যূনতম সুযোগ আইন ও বিধি অনুযায়ী ভূমি জরিপ বিভাগের নেই। এ ক্ষেত্রে এ পর্যায়ে এসে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন চরম অপরাধমূলক কাজ। এস এ রেকর্ড ও বর্তমান রেকর্ডে এবং সরজমিন তদন্তে টিলা শ্রেণির ভূমি দেখানো হলে সেই ভূমি মিথ্যে ও বানোয়াট বাড়ি ও ভিটা রকম কাল্পনিক শ্রেণি লিপিবদ্ধ করা সম্পূর্ণ অন্যায়, বিধি বহির্ভূত ও বাস্তবতা বিবর্জিত। এমনটি হয়ে থাকলে সেটি হবে অনিয়মতান্ত্রিক কার্যকলাপ যা ভূমি জরিপ বিভাগে বিরল দৃষ্টান্ত ।

পরিবেশবাদীরা যা বলছেন

পরিবেশ আইনবিদ সমিতি বেলা’র অ্যাডভোকেট শাহ শাহেদা বলেন, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ অনুযায়ী টিলা কাটা নিষেধ। এ ছাড়াও টিলা কাটার বিরুদ্ধে বেলার দায়ের করা একটি রিটের রায়ে মহামান্য উচ্চ আদালত টিলা কাটা নিষিদ্ধ করে সংরক্ষণ করতে নির্দেশনা দিয়েছেন। সুতরাং টিলা কাটা বা এর শ্রেণি পরিবর্তন করা বা দেখানোর সুযোগ নেই। আদালতের রায় উপেক্ষা করে যারা শ্রেণি পরিবর্তন করবেন বা এ কাজে সহযোগিতা করবেন কিংবা দেখভালের দায়িত্বে যারা আছেন তারাসহ সংশ্লষ্ট সকলেই আদালত অবমাননার অপরাধ করেছেন।

এই বিষয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিমের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, টিলা শ্রেণির ভূমি পরিবর্তনের সাথে সিলেট ১ আসনের সাংসদের পরিবারের কারও যদি কোনো সম্পৃক্ততা থেকে থাকে তবে তা হবে অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ, তিনি বাংলাদেশে পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কনিষ্ঠ ভাই। এই পরিবারের সদস্যদের প্রতিষ্ঠিত জনকল্যাণমুখী একটি ফাউন্ডেশন দেশের পরিবেশ আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করলে আইনের শাসন বলে কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না।

পরিবেশ অধিদপ্তর সিলেটের পরিচালক এমরান হোসেন বলেন, টিলা কাটা নিঃসন্দেহে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ রকম কোনো ঘটনা ঘটে থাকলে অভিযোগ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে। তবে মোমেন ফাউন্ডেশনের নামে টিলা কর্তন করে স্থাপনা নির্মাণ করা হলে ওই নামে কোনো ছাড়পত্র গ্রহণের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।

টিলা শ্রেণির ভূমি রেজিস্ট্রির বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান বলেন, ক্ষেত্র বিশেষ সেটি হতেও পারে। তবে রেজিস্ট্রার  অফিস দখলীয় ভূমির খাজনাপত্রের কাগজপত্র যাচাই করে রেজিস্ট্রার কার্যক্রম সম্পন্ন করেন। যদি এ ক্ষেত্রে আইনের লঙ্ঘন হয়, সেটি আদালতের অবগতি কিংবা নির্দেশনা থাকতে হবে। অন্যথায় কারও বিষয়ে মন্তব্য করা সম্ভব নয়।

শ্রেণি পরিবর্তনের বিষয়টি স্বীকার করে জোনাল স্যাটেলমেন্ট অফিসার ওবায়দুর রহমান বলেন, যেহেতু জনকল্যাণের জন্য নির্মিতব্য মোমেন ফাউন্ডেশন, সেক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ে তদন্ত রিপোর্ট শেষে ১০১০/২০২১ নং বিবিধ মামলার বলে দরখাস্তকারীর অনুকূলে টিলা শ্রেণিকে বাড়ি ও ভিটা শ্রেণিতে রেকর্ড করার আদেশ প্রদান করা হয়। তিনি বিষয়টিকে অনিয়ম নয় বরং নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন করা হয়েছে বলে দাবি করেন।

এনএইচবি/আরএ/

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে দেশে কিছু লোডশেডিং চালু রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, কিছু লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তবে লোডশেডিং যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সে চেষ্টা করা হবে। তিনি জানান, শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং কার্যকর করা হবে।

সচিবালয়ে গ্রিড বিপর্যয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে আগামী দিনে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তখন চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। তিনি আরও বলেন, যে হারে এসি স্থাপন করা হচ্ছে, সে হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। অনেকে অকারণে লাইট, ফ্যান ও এসি চালু রাখায় বিদ্যুৎচাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনায় ২৬ এপ্রিল যে গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তার তদন্তে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে বুয়েটের উপ-উপাচার্য আবদুল হাসিব চৌধুরীকে। কমিটি সাত কর্মদিবসের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ, দায়ী ব্যক্তিদের ভূমিকা ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সুপারিশ করবে।

মেট্রোরেল এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকার কারণও তদন্তে নেওয়া হয়েছে। বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হককে প্রধান করে একটি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেল বন্ধ থাকার মূল কারণ ছিল বিদ্যুৎ সংকট।

এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং এলএনজি আমদানির আর্থিক সামর্থ্যও কমে গেছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পিজিসিবি ও পিডিবি জানায়, আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট লাইনের ৪০০ কিলোভোল্টের দুটি তার কাছাকাছি আসায় শর্ট সার্কিট হয় এবং সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৫টি জেলা—খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী—প্রায় ১৫ মিনিট থেকে ৯৬ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং রাত সাড়ে আটটার পর পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।

Header Ad
Header Ad

গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের পূবাইলের হায়দরাবাদ এলাকায় একাধিক শিশু-কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মসজিদের ইমাম গণপিটুনির শিকার হয়ে পরে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫), তিনি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে এবং হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে রহিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এতে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করে, এমনকি তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতিত এক কিশোরের বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।

পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। একই রাতের (২৭ এপ্রিল) দিবাগত ৩টার দিকে রহিজ উদ্দিন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, মৃত ইমামের শরীরে গণপিটুনির চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হওয়ার ফলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

পূবাইল থানার ওসি এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, রহিজ উদ্দিন স্থানীয় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেদের নিজের থাকার কক্ষে এনে কম্পিউটার গেমস ও মোবাইল গেম খেলার সুযোগ দিতেন এবং কোমল পানীয় খাওয়াতেন। ওই পানীয় সেবনের পর অচেতন হয়ে পড়লে তিনি তাদের বলৎকার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক কলেজছাত্রের কাছ থেকে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাকে গণধোলাই দেয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি