রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ছাত্রলীগের জয়-লেখক কতটা সফল?

বহু প্রত্যাশা নিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই পদে জয়-লেখককে দায়িত্ব দেওয়া হলেও খুব একটা সুফল পায়নি সংগঠনটি। নেতা-কর্মীরা বলছেন, শুরুতে তাদের নিয়ে ভাল প্রত্যাশা থাকলেও পরবর্তী সময়ে তাদের কর্মকাণ্ডে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের অনেক নেতাই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

দায়িত্ব পাওয়ার পর জয়-লেখক তাদের কর্মকাণ্ডে কতটুকু জয়ী হয়েছেন তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন! শেষ সময়ে এসেও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা জয় ও লেখকের। নেতা-কর্মীরা বলছেন, ভালো কাজের পাশাপাশি প্রেস রিলিজ নির্ভর কমিটি দিয়ে তারা বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন। অভিযোগ উঠেছে আর্থিক লেনদেনেরও।

আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের জাতীয় সম্মেলন। এর মধ্যে সম্মেলনকে ঘিরে পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। এ দৌড়-ঝাঁপের সময়েও শেষ মুহূর্তে এসে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি দিয়েই চলছেন তারা। ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ঢাকাপ্রকাশ জানার চেষ্টা করেছে জয়-লেখক কতটা সফলতা অর্জন করেছেন কিংবা ব্যর্থতাই বা কতটুকু।

জানা যায়, ২০১৮ সালের ১১ ও ১২ মে ছাত্রলীগের সর্বশেষ ২৯তম জাতীয় সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ পদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব পান শোভন-রাব্বানী। এর দুই মাস পর ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদ গঠিত হয়েছিল। দুই বছর মেয়াদী ওই কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের মেয়াদ শেষ হবার কথা ছিল ২০২১ সালের ৩১ জুলাই। এক বছরের মাথায় চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সংগঠনের শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং বিতর্কমুক্ত করতে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এক নম্বর সহসভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে সভাপতি ও এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে দুই শীর্ষ নেতাকে ‘ভারমুক্ত’ করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, ঠিক তখন থেকেই নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন জয়-লেখক। এই অভিযোগ খোদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় অনেক নেতার।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের দ্বিতীয় ভাগের ১৫ ধারার (ঙ)-তে বলা আছে, প্রতি দুই মাসে অন্তত একবার কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা বসবে। অন্য সব নিম্নতম শাখায় নির্বাহী সংসদের সভা বসবে প্রতি মাসে অন্তত একবার। এ হিসেবে জয়-লেখক কমিটির তিন বছরে দুই মাস পরপর ১৮টি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভা হওয়ার কথা, সেখানে হয়েছে মাত্র একটি।

গঠনতন্ত্রের দ্বিতীয় ভাগের ১১ ধারার (খ)-তে বলা আছে, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের কার্যকাল দুই বছর। এ সময়ের মধ্যে সম্মেলনের আয়োজন করতে হবে। অন্যথায় নির্বাহী সংসদের কার্যকারিতা লোপ পাবে। এটিও পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন জয়-লেখক। এ নিয়ে নানান সময়ে কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছেন তারা।

ব্যর্থতা নিয়েই সমাপ্তি ঘটতে যাচ্ছে জয়-লেখক অধ্যায়ের!

সম্মেলনের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন, শেষ সময়ে এসেও কোনো রকম যাচাই-বাছাই ছাড়া ঘোষণা করা হচ্ছে বিভিন্ন শাখা কমিটি। তবে বিভিন্ন সূত্র বলছে, আওয়ামী লীগ থেকে নিষেধ করা হয়েছে সম্মেলনের আগে ছাত্রলীগের কোনো শাখা কমিটি না দেওয়ার জন্য। এমনটাই জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। সেই নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে নতুন নতুন কমিটি দিয়েই চলছেন এ শীর্ষ দুই নেতা। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের এসব সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বিভিন্ন জেলায় চলছে বিক্ষোভ ও অগ্নিসংযোগ।

নেতা-কর্মীদের প্রত্যাশা আগামী ৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে। যাদের হাত ধরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের চিরচেনা ঐতিহ্য ফিরে আসবে। প্রত্যাশা পূরণে কাজ করে যাবেন নতুন নেতৃত্ব।

সম্মেলন ছাড়াই কমিটি

গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের জেলা ইউনিট ১১১টি। যদিও তাদের সময়ের মধ্যে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় বাড়লে ১১৯টি ইউনিট কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে মাত্র ৩৮টি কমিটি দিতে পেরেছেন তারা। বাকি রয়েছে ৮১টি কমিটি। গঠনতন্ত্রে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও হাতে গোনা কয়েকটি ছাড়া প্রত্যেকটি কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে প্রেস রিলিজের মাধ্যমে। এর মধ্যেও রয়েছে বিতর্ক। নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, কারও সঙ্গে কোনো পরামর্শ ছাড়া তার নিজ খুশি মতো কমিটি ঘোষণা করেন।

এদিকে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদ ২৫১টি। তবে ২৮তম কাউন্সিলে সোহাগ-জাকির কমিটির সময় থেকে সেটি বাড়িয়ে করা হয় ৩০১টি। শোভন-রাব্বানীর সময়ে হওয়া কমিটির এসব পদের প্রায় শতাধিক নেতা চাকরি, ব্যবসা কিংবা বিয়ে করায় সেই পদগুলো খালি হয়। সেটি পূরণ হয় গত আগস্টে। তবে বিতর্কিত ও ঘনিষ্ঠজনদের পদায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে জয়-লেখকের বিরুদ্ধে।

আর্থিক লেন-দেনের অভিযোগ

বিভিন্ন কমিটি দেওয়ার সময় আর্থিক লেন-দেনের অভিযোগ ওঠে তাদের বিরুদ্ধে। অনেক সময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতাসহ স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন যে ‘টাকার বিনিময়ে পদ’ দেওয়া হয়েছে। এসব অভিযোগ নিয়ে য়ে গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশ হয়।

সফলতা না ব্যর্থতা, কোনটার পরিমাণ বেশি

মানবিক কার্যক্রম জোরদার করে অক্সিজেন সেবা, অসহায়দের জন্য খাদ্য সহায়তা, করোনায় মৃতদেহ দাফন, কৃষকের ধান কেটে দেওয়াসহ মানবিক কাজে এগিয়ে থাকলেও সাংগঠনিক কাজে গতি ফেরাতে পারেননি জয়-লেখক। প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন তারা।

এ ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি সোহান খান বলেন, আমাদের যে গঠনতান্ত্রিক কাঠামো, দুই বছর পার হলেও সারা বাংলাদেশে প্রেস কমিটিটে সয়লাব। যা আমাদের ব্যথিত করেছে।

তিনি আরও বলেন, জয়-লেখক নিয়ে নেত্রীর প্রত্যাশা থাকলেও, তাদের ব্যক্তিগত স্বেচ্ছাচারিতার কারণে সেই প্রত্যাশা পূরণে তারা ব্যর্থ হয়েছেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির মিটিং, দায়িত্ব বণ্টনেও বিভিন্ন অজুহাতে বিলম্ব হয়েছে।

আসন্ন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের বিষয়ে জয়-লেখকের ভূমিকা কতটুক জানতে চাইলে সোহান খান বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের মে মাসে ছাত্রলীগের সম্মেলনের কথা বললেও তারা (জয়-লেখক) কর্ণপাত করেননি। তখন তাদের কথা ছিল, নেত্রী যেদিন বলবেন সেইদিন ছাত্রলীগের সম্মেলন হবে। আসলে ছাত্রলীগের সম্মেলন কখনো নেত্রী ঘোষণা করেন না। এটা সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করেন। তবে সম্মেলন হওয়া নিয়ে নিষ্ক্রিয়তা ছিল তাদের।’

এদিকে, শেষ সময়ে এসে প্রেস-রিলিজ কমিটি নিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসেন বলে, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক সম্মেলনের দিন পর্যন্ত তারা জেলা-উপজেলা কমিটি দেওয়ার এখতিয়ার রাখে। তবে অতি সাম্প্রতি তারা যেভাবে কমিটি দিয়েছেন তা গঠনতন্ত্রের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এভাবে তাদের কমিটি গঠন করা উচিত হয়নি।

জয়-লেখকের এ কমিটির মূল্যানের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক ইন্দ্রনীল দেব শর্মা রনি বলেন, ‘আপনি কি আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বিষয়ে মূল্যায়ন করতে পারেন; না, পারেন না?.. ‘করোনা মহামারিকালীন সারা বাংলাদেশের ছাত্রলীগ যেভাবে কাজ করেছে তা অসাধারণ। তবে সামনে যারা নেতৃত্ব আসবে তাদের সঙ্গে তুলনা করলে বোঝা যাবে তারা কেমন ছিলেন, তা সময়ই বলে দেবে। তবে আমাদের আরেকটু ভালো করার সুযোগ ছিল। জীবনে তো আর সবসময় শতভাগ আউটপুট নেওয়া যায় না, তবে যথেষ্ট ভালো করছেন তারা। আরেকটু সমন্বয় করতে পারলে ভালো হতো। এ ছাড়া, দুয়েকজন যারা বিদ্রোহী বা বিরোধিতা করছে তাদেরকে এসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখা যেত, তাহলে বিষয়টি ভালো হতো।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, বিগত ৫ বছর যদি মূল্যায়ন করা হয়, সে বিবেচনায় আনলে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক গতি অনেকটাই মন্থর হয়ে গিয়েছিল। সেভাবে বিগত পাঁচ বছর ছাত্রলীগকে গতিশীল করা হয়নি। ১১৯টি ইউনিটের মধ্যে কদাচিৎ ৪/৫ টি জেলায় সম্মেলনের মাধ্যমে তারা (জয়-লেখক) কমিটি দিলেও বাকিগুলোতে সম্মেলন না করেই তারা প্রেস রিলিজের মাধ্যমে কমিটি দিয়েছেন। এ ছাড়া, স্বেচ্ছাচারীতা, সংগঠনে একনায়কতন্ত্র বজায় রাখা এগুলো নিয়ে সব সময়ই কথা উঠেছে।

‘তাহলে কি জয়-লেখকের সফলতার চেয়ে ব্যর্থতার পরিমাণে বেশিই’ বলে মনে হয় কি না জানতে চাইলে ইয়াজ আল রিয়াদ বলেন, ‘সেটি তো কিছুটা বোঝা যাচ্ছে। সাংগঠনিক কার্যক্রমে তাদের ব্যর্থতা সেটি মুখ্য বিষয়। সেই জায়গাতে ব্যর্থতার পরিমাণই বেশি।’

এদিকে, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে সাংবাদিকদের এড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টিও জয়-লেখকের নতুন না!

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি