বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ২২ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash

সরকারি নিয়মনীতি পাত্তা দেন না ডা. মুজিবুর!

রূপা আক্তার নামে এক মহিলা নিজের নবজাতক শিশুকে নিয়ে মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে যান ডা. মুজিবুর রহমাানের কাছে। কিন্তু গেটে কর্তব্যরত নিরাপত্তাকর্মী মো. সাঈদ তাকে বলেন, ‘মুজিবুর রহমান স্যার তো হসপিটাল থেকে বের হয়ে গেছেন। আগামীকাল সকাল দশটার পর আসেন, তাহলে স্যারকে পাবেন। (এই ঘটনাটি গত সোমবার (৮ আগস্ট) দুপুর ১টা ১০মিনিটের)।

এ কথা শুনে রূপা যখন চলে যাচ্ছিলেন সাঈদ তখন রূপার স্বামী রহিম মিয়াকে কানে কানে বলেন, জরুরিভাবে দেখাতে চান তাহলে নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁও চলে যান, সেখানে স্যার আছেন। মুজিবুর রহমানের মোবাইল নাম্বার রহিমকে দিয়ে সাঈদ বলেন, সেখানে গিয়ে আমার কথা বলবেন। স্যার ভালোভাবে আপনার শিশুকে দেখে দিবেন।

তাসলিমা বেগম নামের আরেক মহিলা তার শিশু কন্যাকে এসেছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ মুজিবুর রহমান সাহেবকে দেখাতে এসেছি। দুদিন ধরে আসছি, কিন্তু তাকে পাইনি। তিনি সময় মতো হাসপাতালে থাকছেন না। অনেকে বলছেন, তার সঙ্গে দেখা করতে হলে নারায়ণগঞ্জ অথবা যাত্রাবাড়ীতে যেতে হবে।’

রূপা বা তাছলিমার মতো আরও অনেকে তাদের শিশু সন্তানদের নিয়ে মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে আসলেও ডা. মুজিবুর রহমানের দেখা পান না।

বরং মুজিবুর রহমান যেসব হাসপাতালে বসেন সেখানে রোগীদের পাঠিয়ে দেন তার লোকজন। বিনিময়ে তারা কমিশন পান।

মূলত এই হাসপাতালের গার্ডসহ আরও অনেকেই হলেন-ডা. মুজিবুর রহমানের কমিশন দালাল। এই দালালেরা ডা. মুজিবুর রহমানকে বিভিন্ন রোগী ধরে দেন এবং তা থেকে নিয়মিত কমিশন নেন।

ডা. মো. মুজিবুর রহমান মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক এবং নবজাতক (এনআইসিইউ) বিভাগের প্রধান। কিন্তু তিনি সরকারি নিয়মনীতির পাত্তাই দেন না।

কিন্তু শিশু বিভাগের মতো জরুরি একটি বিভাগের প্রধান হলেও তাকে কখনই হাসপাতালে পাওয়া যায় না। বলা যায়, তিনি হাসপাতালে থাকেন না। সকালে এসে হাজিরা দিয়েই তিনি বের হয়ে যান তার নিজের প্রতিষ্ঠিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। সেগুলোতে বসেই তিনি রোগী দেখেন। আর মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট থেকে তার নিজস্ব লোকজন রোগীদের বিভিন্নভাবে বুঝিয়ে পাঠিয়ে দেন মুজিবুর রহমানের নিজের প্রতিষ্ঠানে।

তার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করেন ওই হাসপাতালের ড্রাইভার নজরুল ইসলামের ছেলে মো. ইমরান। ডাক্তার মুজিবুর রহমানের কাছে বিষয়ে ইমরানকে জিজ্ঞেস করলে তিনি কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তবে সম্প্রতি ডা. মজিবুর রহমানের যাত্রাবাড়ী ডেল্টা হেলথ কেয়ার, মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট, সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতাল ও যাত্রাবাড়ী ডায়গনস্টিক সেন্টার হাসপাতাল লিমিটেডে খোঁজ খবর নিয়ে তার বিরুদ্ধে উঠা বেশ কিছু অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

কে এই ডা. মুজিবুর রহমান

ডা. মো. মুজিবুর রহমান মাতুয়াইলে শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি শিশু, কিশোর ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ হিসেবে সেই ইউনিটের ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করছেন। মুজিবুর রহমান সরকারি একজন কর্মকর্তা। কিন্তু সরকারি চাকরি করেও তিনি নিজেই গড়ে তুলেছেন একাধিক ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক।

সরজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা. মুজিবুর যাত্রাবাড়ীর ডেল্টা হেলথ কেয়ার হাসপাতালের একজন প্রভাবশালী পরিচালক। সেখানে প্রতিদিন নিয়মিত রোগী দেখেন। নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়ায় সোনারগাঁ কমপ্লেক্সের ইশা খাঁ হসপিটালেও নিয়মিত রোগী দেখেন।

নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার সাইনবোর্ড এলাকায় নিজের স্ত্রী মাহবুবা সুলতানা আসমাকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক করে বাংলাদেশ নবজাতক হাসপাতাল নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন মুজিবুর রহমান। সেই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান তিনি নিজে।

এ ছাড়া, ধোলাইপাড় গীত সংগীত সিনেমা হলের উল্টো দিকে নিউ ডেল্টা কেয়ার নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠানেও নিয়মিত বসেন ডা. মুজিবুর রহমান।

জানা গেছে, নিজের সরকারি প্রতিষ্ঠানে রোগী দেখা এবং অন্যান্য কাজ ফেলে মুজিবুর রহমান নিয়মিত তার ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানগুলোতে সময় দেন। যার ফলে তিনি কখনই মাতুয়াইল শিশু স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে রোগীদের সময় দেন না। সেখানে তিনি হাজিরা দিয়ে কখনো সঙ্গে সঙ্গে বের হয়ে যান। আবার কখনো থেকে দুই ঘণ্টা থেকে চলে যানে নিজের প্রতিষ্ঠানে।

অভিযোগ উঠেছে, মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে রোগী দেখে আর্থিকভাবে খুব একটা লাভবান হওয়া যায় না। এই কারণে তিনি সেখানে খুব একটা রোগী দেখেন না। বরং এখানে যেসব রোগী তারি কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন তাদেরকে নিজের প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন দালালদের মাধ্যমে।

মো. আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি বলেন, সরকারি ডাক্তার হয়ে তিনি বেশিরভাগ সময় প্রাইভেট ক্লিনিক এ সময় দেন। তাহলে এসব ডাক্তারদের সরকারি চাকরি নেওয়ার দরকার কী?

নজরুল ইসলাম, নিলুফা বেগম, জয়নাল মিয়া, ও আব্দুস সাত্তারসহ আরও অনেকের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয় মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে। তাদের প্রায় প্রত্যেকেরই অভিযোগ, সময়মত হসপিটালে না পেয়ে অনেক মানুষ ডা. মুজিবুর রহমানের পার্সোনাল মেডিকেলে গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমাদের পার্সোনাল চিকিৎসা নেওয়ার মতো টাকা পয়সা নাই, এজন্য আমরা সরকারি হাসপাতালে বসেই চিকিৎসা নিচ্ছি।

মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিউটের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক বলেন, একজন চিকিৎসক কীভাবে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকতে পারেন তা কোনোভাবেই মিলাতে পারি না।

তিনি বলেন, ডা. মজিবুর রহমান আমার সিনিয়র, তার বিষয়ে আসলে মন্তব্য করা ঠিক হবে না। তবে, এটা অবশ্যই রহস্যজনক, একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও তিনি কীভাবে এতগুলো প্রতিষ্ঠানের মালিক!

ওই চিকিৎসকের অভিযোগ, ডা. মুজিবুর রহমান মাতুয়াইল শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে তেমন একটা সময় দেন না। সকাল দশটার সময় এসে কিছুক্ষণ পরই বের হয়ে পড়েন। যেখানে থাকার কথা বিকাল ৫টা পর্যন্ত। তিনি নিজের হাসপাতালেই বেশি সময় দেন। অনেক সময় দেখা গেছে, তিনি সরকারি হাসপাতাল থাকলেও তার লোকজন রোগীদের পাঠিয়ে দেন তার হাসপাতালের চেম্বারে। শুধু তাই নয়, তাদের কাছ থেকে তিনি অতিরিক্ত টাকাও নিচ্ছেন।

যা বললেন ডা. মুজিবুর

শিশু মাতৃ স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট হাসপাতালে সময় না দিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালে রোগী দেখছেন, চিকিৎসার নামে বেশি টাকা নিচ্ছেন-এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. মুজিবুর রহমান বলেন, আমি হাসপাতালে যথেষ্ট সময় দিয়ে থাকি। যতটুকু প্রয়োজন ততটুকু দিয়ে আমার অন্যান্য জায়গায় সময় দিতে হয়। কেউ যদি আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ দেয় তাহলে সেটা ভিত্তিহীন।

নিজের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি একজন চিকিৎসক মানুষকে সেবা দিয়ে থাকি। সরকারি হাসপাতালে রোগীদেরও পর্যাপ্ত সময় দিয়ে থাকি। আমার বিরুদ্ধে কোনো অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ নেই। তবে আমি কারো মাথায় বাড়ি দিয়ে টাকা পয়সা রোজগার করছি না।

নিজের এবং অন্যান্যদের সহযোগিতায় ডায়নাগোস্টিক সেন্টার, ক্লিনিক বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান গড়েছি এসব একদিনে হয়নি। এসবে অনিয়মের কিছু দেখছি না। এর সঙ্গে আরও অনেকেই জড়িত রয়েছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে এই চিকিৎসক বলেন, আমারটা অনিয়মের মধ্যে পড়ে। যারা কোটি কোটি টাকা চুরি করে সেটা অনিয়মের মধ্যে পড়ে না? অন্য মানুষ যখন বাসার মধ্যে হাজার হাজার কোটি টাকা রেখে দেয় তখন তো কেউ অনিয়ম বলে না ? ব্যাংক থেকে অনেকে ঋণ নিয়ে কয়েক কোটি টাকা মেরে দেয় সেটাকে অনিয়ম বলে না? আমি সামান্য কাজ করছি মানুষকে চিকিৎসা দিচ্ছি এখানেই অনিয়মটা মানুষের চোখে পড়ল।’

এনএইচবি/এমএমএ/

 

Header Ad
Header Ad

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা কী করলাম বা করলাম না- ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সেটি দিয়ে আমাদের বিচার করবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে জনপ্রশাসন ও বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ড. ইউনূস বলেন, দেশের রাজনৈতিক দল ও অংশীজনদের ঐকমত্যে পৌঁছানোর জন্য এসব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হবে এবং এর ভিত্তিতেই সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হবে। তিনি আরও বলেন, "এটি জাতির জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ সংবাদ। আমি জাতির পক্ষ থেকে কমিশনের দুই চেয়ারম্যানসহ সকল সদস্যকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।"

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, "এই দুটি প্রতিবেদন দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলবে। আপনি দরিদ্র, মধ্যবিত্ত বা ধনী যেই হোন না কেন, এই সংস্কারের প্রভাব থেকে কেউই বাদ যাবেন না।"

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, "কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে নাগরিকরা তাদের প্রকৃত অধিকার ফিরে পাবেন। আমরা যেন সত্যিকারের নাগরিক হিসেবে মর্যাদা পাই, সেটিই আমাদের প্রত্যাশা।"

সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন জনগণ, রাজনৈতিক দল ও সিভিল সোসাইটি অর্গানাইজেশনের হাতে তুলে দেওয়া হবে বলে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, "যাতে সবাই মনে করতে পারে, এখানে প্রকৃত সত্য বলা হয়েছে, ভুক্তভোগীদের বাস্তব চিত্র উঠে এসেছে। আমাদের তো পণ্ডিত হতে হবে না এটি বোঝার জন্য, কারণ প্রতিদিনই আমরা নানা অবিচারের শিকার হই।"

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, "সংস্কার কমিশনের কাজ শুধু বাংলাদেশের জন্য নয়, এটি বিশ্বব্যাপী গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে। বিশ্বের দরবারে এটি তুলে ধরতে হলে এর ইংরেজি অনুবাদ করা প্রয়োজন।"

কমিশনের সদস্যদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, "আপনাদের প্রজ্ঞা, অভিজ্ঞতা ও গবেষণার সংমিশ্রণে এই প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে।"

তিনি আরও বলেন, "আমরা কী করলাম বা করলাম না, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের সেই কাজের জন্যই বিচার করবে। তারা প্রশ্ন করতে পারে, আপনারা তো পেয়েছিলেন, তাহলে বাস্তবায়ন করেননি কেন? কারণ, সবকিছু তো বইয়ের পাতায় লেখা আছে। এই কাজ জাতির জন্য এক মূল্যবান স্মারক হয়ে থাকবে।"

Header Ad
Header Ad

হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান

সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগে দেশের সবকিছু ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। বিএনপি নেতাকর্মীসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করে স্বৈরাচার ভারতে পালিয়ে গেছে। যে কোন মূল্যে পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারের বিচার করতে হবে। এই প্রশ্ন গণতান্ত্রিক সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে 'আমরা বিএনপি পরিবারের উদ্যোগে ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলায় জুলাই আগস্ট বিপ্লবে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারকে আর্থিক অনুদান এবং ‌র‌্যাবের গুলিতে নিহত যুবদল নেতা মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর উপহার উপলক্ষ্যে সোনাগাজী সরকারি ছাবের পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত সমাবেশে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্কারের কথা বলে যে সময়ক্ষেপণ করছে এবং সংস্কার কাজ দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর করছে, তা কোনো ষড়যন্ত্রের অংশ কি-না সে ব্যাপরে সবাই সজাগ থাকতে হবে।

এ সময় তিনি বলেন, পতিত স্বৈরাচার বিগত ১৭ বছর মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল । সে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে লড়াই করে বুকের তাজা রক্ত বিলিয়ে দিয়েছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ, বিগত ১৭ বছরের লড়াই এবং ২৪এর জুলাই আগস্টের বিপ্লবের চেতনায় আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে সবাইকে সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। এখন দেশে যে সংস্কারের আলোচনা চলছে সেই সংস্কার প্রস্তাব বিগত আড়াই বছর পূ্র্বে আমরাই দিয়েছিলাম। স্বৈরাচার আমাদের সংস্কার প্রস্তাব আমলে নেয়নি। আর সেই বিশ্বাস থেকেই আমরা জাতির সামনে ৩১ দফা উপস্থাপন করেছি। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে। দেশের কল্যাণে কাজ করতে চায়।

দ্রুত জাতীয় নির্বাচনের তাগিদ দিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জনগণের ভোটে নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে এবং শহীদদের স্বপ্নের দেশ বিনির্মাণ হবে।

বিএনপি দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করতে প্রস্তুত উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিএনপি সব সময়ই দেশ ও জনগণের কল্যাণ নিয়ে ভাবে। এর বড় কারণ হলো- দেশের জনগণ বিএনপির উপর আস্থা রাখতে চায়। কীভাবে রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠবে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজে আসবে নেতাকর্মীদের সে বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমিটির আহবায়ক আতিকুর রহমান রুমনের সভাপতিত্বে ও ফেনী পৌর বিএনপি'র সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও আমরা বিএনপি পরিবার কেন্দ্রীয় কমটির সদস্য সচিব মোকছেদুল মোমিন মিথুনের যৌথ পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভেকেট রুহুল কবির রেজভী, বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নাল আবেদীন ফারুক,জয়নাল আবেদীন ভিপি জয়নাল, যুগ্ম-মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, কোষাধ্যক্ষ এম রশিদুজ্জামান মিল্লাত, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ হারুন, সহ প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহানা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য বেলাল আহমেদ, অ্যাডভোকেট শাহানা আক্তার শানু, আবদুল লতিফ জনি, জালাল আহমদ মজুমদার, মামুনুর রশিদ মামুন, মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জজ কোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন খান, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার, যুগ্ম আহবায়ক গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক জামাল উদ্দিন সেন্টু, সদস্য সচিব সৈয়দ আলম ভূঞা, শহীদ ছাত্রদল নেতা কাওছার উদ্দিনের পিতা ফিরোজ আলম, শহীদ মেহাম্মদ মাসুদের কন্যা মুনতাহা বিনতে মাসুদ ও শহীদ জাফর আহমদের কন্যা জাহানারা বেগম প্রমুখ।

এসময় ২০১৬ সালের ২৫ জুন র‌্যাবের গুলিতে নিহত মোহাম্মদ মাসুদের পরিবারকে ঘর এবং ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরে চব্বিশের ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে নিহত ৪৫ শহীদ পরিবারসহ আহতদের প্রায় ২৫ লাখ টাকার মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়।

Header Ad
Header Ad

মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁর বদলগাছীতে মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় এক ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কুপিয়েছে স্থানীয় আ'লীগের কর্মিরা। মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধায় উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের কটকবাড়ি এলাকায় তাকে কুপিয়ে আহত করা হয়। আহত অবস্থায় তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আহত সিহাব নওগাঁ নামাজগড় গাউসুল আজম কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ও উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য ও একই এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বদলগাছী সদর এলাকার রাসেল ও সাথী নামে দুই যুবক-যুবতী গতকাল বিকালে নওগাঁ থেকে মার্কেট করে ফেরার পথে কটকবাড়ী এলাকায় মোটরসাইকেল থামিয়ে নদীর ধারে ঘোরাঘুরি করছিল। সন্দেহ হলে ঐ এলাকার আওয়ামী লীগের কর্মি প্লাবন,অনিক,আশিক, রাকিব,ইয়াজুলসহ ১০-১৫ জন কর্মি তাদের আটক করে মারধর করে। পরে তাদের নদীর ধারে নির্জন এলাকায় নিয়ে গিয়ে দশ হাজার টাকা মুক্তিপন দাবি করে। বিষয়টি জানাজানি হলে ছাত্রদল কর্মী সিহাব সহ গ্রামবাসি ঐ ছেলে মেয়েকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে আওয়ামী লীগের কর্মি কয়েকজন অতর্কিতভাবে তাঁর ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে ধারালো কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে সিহাব কে রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে স্বজনেরা সেখানে গিয়ে সিহাব কে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তিনি চিকিৎসাধীন।

বদলগাছি উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নাহিদ রানা ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘হামলাকারীরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নেতা কর্মি। মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় তার ওপরে হামলা করেছে।’

বদলগাছী উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সুমন হোসেন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ের কর্মী সিহাব। ন্যাক্কারজনক এ হামলার ঘটনায় দোষীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।’

তবে অভিযোগ ওঠা যুবকদের সাথে যোগাযোগ করা না গেলেও তাদের মধ্যে রিয়াজুল নামের এক অভিভাবক দায়সারা জবাব দেন। তিনি বলেন, ওই দুই যুবক-যুবতী অনৈতিক কার্যকলাপ করার জন্য এসেছিল। তাদের সন্দেহ হলে এলাকার ছেলেরা ধরে বিচার করতে চেয়েছিল। সিহাব এখানে এসে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করলে একটু হাতাহাতি হয়েছে বলে শুনেছি।

এ প্রসঙ্গে বুধবার (৫ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহজাহান আলী ঢাকাপ্রকাশকে বলেন , ‘ছাত্রদল কর্মী চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে নওগাঁ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এখনো অভিযোগ হাতে আসেনি। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

আমরা কী করলাম, সেটি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বিচার করবে : প্রধান উপদেষ্টা
হাসিনার বিচারের স্বার্থে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে: তারেক রহমান
মুক্তিপনের প্রতিবাদ করায় ছাত্রদল নেতাকে কুড়াল দিয়ে কোপালেন আ'লীগের কর্মিরা
খুব দ্রুতই জবি ছাত্রদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠিত হবে: ছাত্রদল সভাপতি
বগুড়ায় ৫০ টাকা অফারে টি-শার্ট কিনতে গিয়ে হুলস্থুল কান্ড, নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী
নওগাঁ সীমান্তে বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যার অভিযোগে আদালতে মামলা, তদন্তের নির্দেশ
চুয়াডাঙ্গায় সার কাণ্ডে বিএনপি ও যুবদলের ৫ নেতা বহিষ্কার
আজ বন্ধুর সাথে গোসল করার দিন
২ আলাদা বিভাগসহ দেশকে ৪ প্রদেশে ভাগ করার সুপারিশ
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টা মামলায় হাইকোর্টের রায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৯ আসামিসহ সবাই খালাস
হাসিনার লাইভ প্রচারের আগেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজ উধাও
হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের ওপর বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা
বিচারবিভাগ ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন হস্তান্তর
গাজীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সবজিবাহী পিকআপ খাদে, চালকসহ নিহত ৩
নতুন রাজনৈতিক দল গঠনে জনগনের মতামত চাইলো হাসনাত  
এই ফটো তোলোস কেন? আদালত চত্বরে শাহজাহান ওমর  
মনে হচ্ছে বিবিসি বাংলা গণহত্যাকারী শেখ হাসিনার ভক্ত : প্রেস সচিব  
পটুয়াখালীতে বাংলাভিশনের সাংবাদিককে কুপিয়ে জখম  
উত্তরবঙ্গে অনির্দিষ্টকালের জন্য তেল বিক্রি বন্ধ