সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

কেলেঙ্কারি করলেই পদোন্নতি কূটনীতিকদের!

নারী কেলেঙ্কারি, যৌন হয়রানি, মাদক, মানব পাচার, প্রতারণাসহ নানান অভিযোগ বিদেশি মিশনে কর্মরত বাংলাদেশি কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে। কিছুদিন পর পর গুরুতর এসব অভিযোগ উঠলেও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কোনো নজির নেই। বরং যারা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে তাদের প্রায় প্রত্যেকেই দ্রুতগতিতে পদোন্নতি ও পদায়ন পেয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটনার পর ঘটনা ঘটলেও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিদেশি মিশনে কর্মরত কূটনীতিকরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

সর্বশেষ ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় বাংলাদেশের উপ-রাষ্ট্রদূত কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে নিজের বাসায় মারিজুয়ানা রাখার অভিযোগে সেই দেশের সরকারের অনুরোধে তাকে প্রত্যাহার করে ঢাকায় ফেরত আনা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, কূটনীতিক হয়ে নাইজেরিয়ান নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে একই বাসায় থাকতেন আনারকলি। মারিজুয়ানা পাওয়ার পর কূটনীতিক হিসেবে আনারকলি দায়মুক্তি পেলেও তার নাইজেরিয়ান বন্ধু ইন্দোনেশিয়ার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন।

জানা যায়, লস এঞ্জেলসে বাংলাদেশের ডেপুটি কনসাল জেনারেলের দায়িত্বে থাকাকালে ২০১৭ সালেও কাজী আনারকলির বিরুদ্ধে গৃহকর্মী নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায় যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘটনার তদন্ত না করে এবং তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে তাকে লস এঞ্জেলস থেকে জাকার্তায় পোস্টিং দেয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তখন যদি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হতো তাহলে এবার এমন ঘটনা ঘটত না। ব্যবস্থা না নেওয়ায় তার কারণে দ্বিতীয়বার লজ্জায় পড়ল বাংলাদেশ।

২০১৩ সালে চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশ মিশনের কনসাল জেনারেল শাহনাজ গাজীর সঙ্গে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক ব্যক্তির ‘বিশেষ সম্পর্কে’র অভিযোগ উঠেছিল। ওই সময় এ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হলে শাহনাজ গাজীকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। বর্তমানে তিনি তুরষ্কের আঙ্কারার বাংলাদেশ মিশনের উপপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

শাহনাজ গাজী

ভারতের আসামে একজন ভারতীয় নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে তদানীন্তন সহকারী হাইকমিশনার কাজী মুনতাসির মোর্শেদের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ২০১৮ সালের ওই ঘটনার পর মোর্শেদকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনা হয়। কিন্তু ধর্ষণের মতো গুরুতর অভিযোগের পরও তাকে পদোন্নতিও দেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

জানা যায়, ঘটনার শিকার তরুণী দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের তৎকালীন হাইকমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন মোর্শেদের বিরুদ্ধে। অভিযোগের একটি অনুলিপি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও পাঠান ওই তরুণী। অভিযোগের সঙ্গে তিনি চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশটও সংযুক্ত করে দেন।

আসামের গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই তরুণী অভিযোগে বলেন, পরিচয়ের পর থেকে কথাবার্তা হতো। এক পর্যায়ে ২০ জানুয়ারি তাকে দূতবাসে ডেকে পাঠান মোর্শেদ এবং সেখানে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতে বাধ্য করেন এ কূটনীতিক।

আরেক কূটনীতিক মোহাম্মদ নুরে আলমের বিরুদ্ধেও নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ রয়েছে। ঘটনা ২০১৫ সালের। নুরে আলম তখন টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসে কর্মরত। দূতাবাসের এক নারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। তৎকালীন পররাষ্ট্রসচিব শহীদুল হকের কাছে লিখিত অভিযোগও দেওয়া হয়েছিল।

কিন্তু সেই সময় অভিযোগের তদন্ত তো দূরের কথা, উল্টো ওই নারী কর্মীর বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এমনকি ওই নারী কর্মীকে পাগল বানানোর এবং তাকে চাকরিচ্যুত করার চেষ্টা করা হয়। তাতে ব্যর্থ হয়ে ওই নারী কর্মীকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।

মোহাম্মদ নুরে আলম

ওই ঘটনার পর নুরে আলমের বিরুদ্ধে তদন্ত ও শাস্তি তো হয়ইনি, বরং তাকে পদোন্নতি দিয়ে ২০১৯ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক বানানো হয়। নুরে আলম বর্তমানে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে কনসাল জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

চলতি বছরে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসে প্রথম সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে সানিউল কাদেরের বিরুদ্ধেও নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। তার সঙ্গে কলকাতার আলিশা মাহমুদ নামের এক নারীর ভিডিও চ্যাট ও হোয়াটসঅ্যাপ আলাপের স্ক্রিনশট ফাঁস হওয়ার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাকে দেশে ফিরিয়ে আনে।

তবে সানিউল পররাষ্ট্র ক্যাডারের কর্মকর্তা না হওয়ায় তাকে শাস্তির মুখে পড়তে হয়েছে। বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তাকে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তিনি বর্তমানে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছেন এবং তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।

যৌন কেলেঙ্কারি যেন পিছুই ছাড়ছে না বাংলাদেশি কূটনীতিকদের। ২০১১ সালের জুনে টোকিওতে নিযুক্ত বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত একেএম মুজিবুর রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়ানোর অভিযোগে। টোকিওর বাংলাদেশ দূতাবাসে চাকরি করা একজন জাপানি নারীকে যৌন হয়রানির দায়ে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

কিয়াকো তাকাহাসি নামের ওই জাপানি নারী বাংলাদেশ দূতাবাসে সোশ্যাল সেক্রেটারি পদে চাকরি করতেন। অভিযোগপত্রে তাকাহাসি লিখেছেন, দূতাবাসের চাকরিতে যোগদানের পর থেকেই রাষ্ট্রদূত তার সঙ্গে অযাচিত আচরণ করেন। এমনকি চাকরির ইন্টারভিউয়ের দিনও তাকে আপত্তিকর প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করেন।

তাকাহাসি অভিযোগ করেন, ইন্টারভিউতেই রাষ্ট্রদূত তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি তাকাহাসিকে চুমু খেতে পারবেন কি না। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো অভিযোগপত্রে তাকাহাসি বলেন, দূতাবাসে প্রথম যোগ দেওয়ার দিন আমাকে রাষ্ট্রদূত নিজের কক্ষে ডেকে নেন এবং আমাকে জড়িয়ে ধরে আপত্তিকর অবস্থায় যেতে চান।

সানিউল কাদের

বিদেশি নারীর এমন অভিযোগের পরও মুজিবুর রহমানের শাস্তি হয়নি। বরং পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাকে ইরানের রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করা হয়। কিন্তু ইরান থেকেও তাকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় ‘নৈতিক অবক্ষয় ও আর্থিক অনিয়মের’ অভিযোগে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা রিয়াদ হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পর্ক স্থাপন ও প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন। ওই তরুণীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়েছিল ফেসবুকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক নিমচন্দ্র ভৌমিককে ২০০৯ সালে নেপালে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দেয় সরকার। দায়িত্ব পালনকালে তার বিরুদ্ধে ভারতের পতাকা নিয়ে গাড়িতে ভ্রমণ, নারী কেলেঙ্কারি, ভিসা দিতে হয়রানি, শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপ দিতে ঘুষ, এমনকি নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে নাক গলানোর মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠে। এসব ঘটনা ২০১১ সালের।

অধ্যাপক নিমচন্দ্রের দুর্নীতি নিয়ে সেই সময় একটি প্রতিবেদন তৈরি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। নিমচন্দ্র ভৌমিকের অসংখ্য নারী কেলেঙ্কারির মধ্যে বলিউড তারকা মনীষা কৈরালার সঙ্গে দেখা করতে অকূটনৈতিকসুলভ আচরণের কথাও প্রতিবেদনে স্থান পায়।

কাঠমান্ডুতে বাংলাদেশি পাঁচ তরুণের একটি চিত্র প্রদর্শনী উদ্বোধন করেছিলেন নেপালের প্রভাবশালী কৈরালা পরিবারের সদস্য মনীষা। অনুষ্ঠান উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় মনীষার দেখা পেতে তার বাড়িতেও ধরনা দিয়েছিলেন নিমচন্দ্র।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তদন্ত করে জানতে পারে, মনীষার বাড়িতে ঢুকতে আধা ঘণ্টা ধরে ফটকে দাঁড়িয়ে দেনদরবার চালিয়েছিলেন নিমচন্দ্র। তবে ফটক খোলা হয়নি।

এদিকে কাজী আনারকলির ঘটনার পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, এই ঘটনায় সরকার খুবই বিব্রত। আমরা নিশ্চিত করতে চাই এই ঘটনার সঠিক তদন্ত হবে। দায়ী হলে ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।

ওএসডি হয়েছিলেন মাত্র ৩ জন

কূটনীতিকদের বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার অসংখ্য অভিযোগের মধ্যে মাত্র তিনটি ঘটনায় সাদামাটা ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যে ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে নানা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিব ও দুইজন যুগ্ম সচিব পদমর্যাদার মহাপরিচালককে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়।

ওএসডি হওয়ার আগে তিনজনই বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এক থেকে দেড় বছর আগে তাদের প্রত্যাহার করে ঢাকা আনা হয়। ওএসডি হওয়া কর্মকর্তারা হলেন-মারুফ জামান, হাসিব আজিজ ও আশরাফ উদ্দিন।

মারুফ জামান ভিয়েতনামে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে আনার পর কয়েকদিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এরপরই তাকে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বদলি করা হয়।

আশরাফ উদ্দিনের নামেও স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ তিনি মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হয়ে যান। তিন মাসের মধ্যেই তাকে দেশে নিয়ে আসা হয়। এরপর তিনি ন্যাশনাল ডিফেনস কলেজে এনডিসি কোর্সে ভর্তি হন।

ওএসডি হওয়া হাসিব আজিজের বিরুদ্ধেও স্ত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করে তৃতীয় বিয়ে করার অভিযোগ রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তার দ্বিতীয় স্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রীরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। সর্বশেষ হাসিব আজিজ উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। অভিযোগের পর তাকে সেখান থেকে ঢাকায় এনে দপ্তরবিহীন অবস্থায় মহাপরিচালক করে রাখা হয়।

এরপর হাসিব আজিজের দ্বিতীয় স্ত্রী ফারিম হাসিব বেবী অভিযোগ করেন, তার বিনাঅনুমতিতেই হাসিব উজবেকিস্তানে আইগুল নামের এক নারীকে বিয়ে করেন।

কূটনীতিকদের এমন অকূটনীতিসুলভ আচরণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোতে এসব নিয়ে প্রতিবেদন হয়। ফলে নির্দোষ কূটনীতিকদের দিকেও অনেকে সন্দেহের চোখে তাকান। তিনি বলেন, এসব বিষয়ে সরকারকে ‘জিরো টলারেন্স’ অবস্থানে থাকতে হবে।

এনএইচবি/এসএন

Header Ad
Header Ad

কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে দেশে কিছু লোডশেডিং চালু রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, কিছু লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তবে লোডশেডিং যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সে চেষ্টা করা হবে। তিনি জানান, শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং কার্যকর করা হবে।

সচিবালয়ে গ্রিড বিপর্যয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে আগামী দিনে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তখন চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। তিনি আরও বলেন, যে হারে এসি স্থাপন করা হচ্ছে, সে হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। অনেকে অকারণে লাইট, ফ্যান ও এসি চালু রাখায় বিদ্যুৎচাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনায় ২৬ এপ্রিল যে গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তার তদন্তে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে বুয়েটের উপ-উপাচার্য আবদুল হাসিব চৌধুরীকে। কমিটি সাত কর্মদিবসের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ, দায়ী ব্যক্তিদের ভূমিকা ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সুপারিশ করবে।

মেট্রোরেল এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকার কারণও তদন্তে নেওয়া হয়েছে। বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হককে প্রধান করে একটি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেল বন্ধ থাকার মূল কারণ ছিল বিদ্যুৎ সংকট।

এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং এলএনজি আমদানির আর্থিক সামর্থ্যও কমে গেছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পিজিসিবি ও পিডিবি জানায়, আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট লাইনের ৪০০ কিলোভোল্টের দুটি তার কাছাকাছি আসায় শর্ট সার্কিট হয় এবং সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৫টি জেলা—খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী—প্রায় ১৫ মিনিট থেকে ৯৬ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং রাত সাড়ে আটটার পর পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।

Header Ad
Header Ad

গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের পূবাইলের হায়দরাবাদ এলাকায় একাধিক শিশু-কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মসজিদের ইমাম গণপিটুনির শিকার হয়ে পরে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫), তিনি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে এবং হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে রহিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এতে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করে, এমনকি তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতিত এক কিশোরের বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।

পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। একই রাতের (২৭ এপ্রিল) দিবাগত ৩টার দিকে রহিজ উদ্দিন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, মৃত ইমামের শরীরে গণপিটুনির চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হওয়ার ফলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

পূবাইল থানার ওসি এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, রহিজ উদ্দিন স্থানীয় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেদের নিজের থাকার কক্ষে এনে কম্পিউটার গেমস ও মোবাইল গেম খেলার সুযোগ দিতেন এবং কোমল পানীয় খাওয়াতেন। ওই পানীয় সেবনের পর অচেতন হয়ে পড়লে তিনি তাদের বলৎকার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক কলেজছাত্রের কাছ থেকে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাকে গণধোলাই দেয়।

Header Ad
Header Ad

ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে আদালতের রায় ও গেজেট প্রকাশের বিরুদ্ধে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ঢাকার দুই বাসিন্দা এই নোটিশ পাঠান, যাতে ইশরাকের নামে গেজেট প্রকাশ ও শপথ অনুষ্ঠান বন্ধ রাখার দাবি জানানো হয়েছে।

নোটিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ওই দুই বাসিন্দার পক্ষে আইনজীবী মো. মনিরুজ্জামান। তিনি জানান, গত ২৭ এপ্রিল (রোববার) এ নোটিশ পাঠানো হয়। তবে একই রাতে নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে সংশোধিত গেজেট প্রকাশ করে। ফলে এখন পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ কী হবে, তা নোটিশদাতাদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

এর আগে, গত ২৭ মার্চ ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ ও নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম ২০২০ সালের ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে তৎকালীন বিএনপি প্রার্থী ইশরাক হোসেনকে বৈধ মেয়র ঘোষণা করেন। ওই নির্বাচনে ফজলে নূর তাপসকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছিল।

নোটিশের পক্ষের দাবি:

- ট্রাইব্যুনাল যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া না মেনে দ্রুত রায় দিয়েছে।

- নির্বাচন কমিশন এ রায় চ্যালেঞ্জ করেনি, বরং গেজেট প্রকাশ করেছে।

- আইন উপদেষ্টার মতামতের জন্য অপেক্ষা না করে গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে।

ট্রাইব্যুনালের আদেশে কার্যকারিতা নেই, কারণ মেয়রের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এবং পদটি অধ্যাদেশের মাধ্যমে ইতোমধ্যে শূন্য ঘোষণা করা হয়েছিল।

এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, আইন সচিব, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশন সচিব, বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এবং ইশরাক হোসেন বরাবর।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন