শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

বিশেষ প্রতিবেদন

বিদেশে সফল ঘরে অবহেলিত ওয়ানডে ক্রিকেট

টেস্ট ক্রিকেটের বনেধি পরিবারের সদস্য হতে হলে লঙ্গার ভার্সন ম্যাচকে অগ্রাধিকার দেয়  হয়। যদিও টেস্ট পরিবারের সদস্য হওয়ার আগে চার দিনের প্রথম শ্রেণির ম্যাচে শুরু করেছিল বিসিবি। কিন্তু সে সময় ঘরোয়া  ক্রিকেটের  মূল আকষর্ণই ছিল প্রিমিয়ার বিভাগ ক্রিকেট লিগ।  শুধু এই  আসরই নয়, প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের ক্লাবগুলোকে নিয়ে দামাল-সামার ক্রিকেট, শহীদ স্মৃতি  ক্রিকেট  আসরও বসতো। মৌসুম শুরু হতো দামাল-সামার স্মৃতি আসর দিয়ে। শেষ হতো শহীদ স্মৃতি আসর দিয়ে।  সবই এখন স্মৃতির পাতায় ঠাই নিয়েছে। আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে পথ চলা শুরু করার পর সেই ওয়ানডে আসরগুলোই অপাংক্তেয় হয়ে গেছে! যে প্রাণের স্পন্দন ছিল প্রিমিয়ার বিভাগ  ক্রিকেট লিগ, তা  হারিয়েছে গুরুত্ব। শীতের ক্রিকেট গিয়ে জায়গা পেয়েছে ভরা বর্ষায়! বৃষ্টির কারণে অনেক  ম্যাচই ভেস্তে যায়। আবার লিগ শুরু হলেও জাতীয় দলের খেলা থাকলে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা থাকেন অনুপস্থিত । সব মিলিয়ে বলা যায় ঘরোয়া ক্রিকেটে ওয়ানডে  আসর যেন সৎসন্তান! যে সবেধন নিলমনি প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ তা  বিসিবি শুধু আয়োজনই  করে থাকে।  ক্লাবগুলো নিজেদের টাকা খরচ করে বিশাল বাজেটে এক একটি দল গঠন করে। বিসিবি থেকে তারা যে আর্থিক সুবিধা পেয়ে থাকে, তা এক এক মৌসুমের  মোট খরচের ১০ ওভাগের এক ভাগও হয় না ! অথচ  আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের তুলনায় বাংলাদেশের সাফল্য বেশি এই ওয়ানডে ক্রিকেটেই। আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে যাত্রাও শুরু সবার আগে সেই ১৯৮৬ সালে।

তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে  বিসিবি বেশ গুরুত্ব দিয়েই ঘরোয়া আসর আয়োজন করে থাকে বিপিএল । মৌসুমের সেরা সময়টা বেছে নেয়া হয় বিপিএলের জন্য। শীতের সময় কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে অত্যন্ত জাকজমকভাবেই  এই আসর আয়োজন করা  হয়ে থাকে।  এ সময় জাতীয় দলেরও কোন খেলা থাকে না। কিন্তু আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ এই ফরম্যাটেই সবচেয় বেশি ব্যর্থ। মাত্রই শেষ হওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যর্থতার ক্ষত এখনও কোটি কোটি দেশবাসীর অন্তর পুড়ছে। ২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া এই আসরের  সব কটিতেই অংশ নিয়ে জয় পেয়েছে মাত্র একটিতে। তাও সেই শুরুর আসরে ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ উইকেটে। দ্বি-পাক্ষিক সিরিজেও  নেই আশাব্যঞ্জক ফলাফল।  টুর্নামেন্ট ও দ্বি-পাক্ষিক সিরিজ মিলিয়ে হারের তালিকায় নাম আছে আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড, এমনকি নেদারল্যান্ডস, হংকংয়ের মতো দলের কাছেও। এখন পর্যন্ত ১২৩টি ম্যাচ খেলে জয় পেয়েছে ৪৩টি। যার সিংহভাগ জয় এসেছে অপেক্ষাকৃত দূর্বল নেপাল, কেনিয়া, ওমান, সংযুক্ত আরব আমিরাত,নেদারল্যান্ডস, পাপুয়া নিউগিনি, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া, আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। টেস্ট পরিবারের নবীন সদস্য আফগানিস্তানের কাছেও বাংলাদেশের হারের পাল্লা বেশি। জয় পায়নি  ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা এমনকি স্কটল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষেও। স্কটল্যান্ডে কাছে দুই ম্যাচ খেলে দুইটিতেই হার মেনেছে। অস্ট্রেলিয়ার আর  নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একাধিক জয় থাকলেও তা এসেছে  এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ঘরের মাঠে  হোম কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে  স্লো উইকেট বানিয়ে!

টেস্ট ক্রিকেটের অবস্থা আরো নাজুক।  ১২৫ টেস্ট খেলে জয় আছে মাত্র ১৫টিতে। যার অর্ধেকেরও বেশি জয় আবার   খর্ব শক্তিতে পরিণত হওয়া জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৮টি। ৪টি জয় আছে আরেক খর্ব শক্তি দল ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। বাকি তিন জয় এসেছে ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া-শ্রীল্কার বিপক্ষে। প্রথম দুই দেশের বিপক্ষে জয় এসেছিল ঘরের মাঠে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়টি  ছিল বেশ স্মরণীয়।শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশের শততম টেস্টে। অথচ এই টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ যাতে ভালো করতে পারে  সে জন্য এনসিএলের পর বিসিএলও  শুরু করা হয়। কিন্তু এনসিএল পরিণত হয়েছে ‘পিকনিক’ আসরে। এখানে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের খেলতে দেখা যায় কালে-ভাদ্রে। জাতীয় দলের খেলা না থাকলেও তারা এই আসর  খেলতে অনীহা প্রকাশ  করে থাকেন। বিসিবির পক্ষ থেকেও সেভাবে কোন দৃঢ় পদক্ষেপ নেয় হয় না। বিসিএল  ফ্রাঞ্চাইজি আসর হওয়াতে  এখানে অবশ্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকে মোটামুটি।  কিন্ত ‍ চার দলের আসরে ম্যাচের সংখ্যা  থাকে খুবই  কম!

ওয়ানডে আসর  আয়োজনের ক্ষেত্রে বিসিবি  কম গুরুত্ব দিলেও তারপর  সেখানেই হয়ে থাকে জমজমাট লড়াই। একটা সময় আবাহনী-মোহামেডান-বিমানের লড়াই ছিল, এখন সেখানে আবাহনী- প্রাইম ব্যাংক-প্রাইম দোলেশ্বর-লিজেন্ডস অব  রূপগঞ্জ, গাজী ট্যাংক ক্রিকের্টাস,ওল্ড ডিওএইচএস, গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স শামিল হয় শিরোপার লড়াইয়ে। মাঠের লড়াইয়ে থাকে টানটান উত্তেজনা। উত্তেজনার পারদ ছড়িয়ে পড়ে ক্রিকেটারদের মাঝেও। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করতে গিয়ে সাকিব-তামিমের মতো ক্রিকেটারদের এক থেকে একাধিক ম্যাচ পর্যন্ত সাজাও পেতে হয়েছে।  তারপরও এই আসরের  প্রতি বিসিবি এতোই উদাসীন যে শীতের ক্রিকেট বর্ষায় নিয়ে যাওয়ার  পরও এবার সেই আসর হয়েছে ২০ ওভারে। যদিও  বিসিবির তরফ থেকে ব্যাখ্যা   দেয়া হয়েছে করোনার কারণে।

আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত ওয়ান  ডে ম্যাচ খেলেছে  ৩৮৮টি।  ১৩৬ জয়ের মাঝে জয় আছে টেস্ট খেলুড়ে সবগুলো দেশের বিপক্ষে।  সবচেয়ে বেশি জয় আছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৫০টি। এরপর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৮টি,  নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ১০টি। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ স্কটল্যান্ডে, হংকংয়ে   মতো দলের কাছে হারলেও ওয়ানডেতে  কখনোই হারেনি। টি-টোয়েন্টতে আফগানিস্তানের সাথে পেরে না উঠলেও ওয়ানেডেতে ঠিকই নাকানি-চুবানি খাইয়ে ছাড়ে।

আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের যতো মনমুগ্ধকর জয়, তা এই  ওয়ানডে ম্যাচকে ঘিরেই। ১৯৯৯ সালে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে গিয়েই পাকিস্তানকে হারিয়ে চমক সৃষ্টি  করেছিল। ইংল্যান্ডের  নর্দাম্পটনে পাওয়া জয়ে রাতের আঁধারে দেশবাসী নেমে এসেছিলেন রাস্তায়।  তা ছিল এক অভূতপূর্ব  দৃশ্য। ২০০৫ সালে কার্ডিফেও অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর পর সৃষ্টি হয়েছিল  আনন্দঘন পরিবেশ। ঠিক সে রকম না হলেও ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্বে ভারত আর  সুপার সিক্সে দক্ষিণ আফ্রিকার  বিপক্ষে পাওয়া জয়েও  দেশবাসীকে আনন্দ করার উপলক্ষে এনে দিয়েছিল।  এমনি করে আরও অনেক উপলক্ষ আছে ওয়ানডে ক্রিকেটকে ঘিরেই। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ যে ছয়টি ফাইনাল আসর খেলেছে তার চারটিই ছিল একদিনের  আসরে। একমাত্র শিরোপাও এসেছে এই আসর  থেকে। আবার আইসিসিরি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ২০১৭ সালের আসরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো সেমিফাইনালও খেলেছিল। ২০১৫ সালের অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসরে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো খেলেছিল কোয়ার্টার ফাইনাল। তাই অনেকেরই অভিমত এখানে যদি বিসিবি আরও বেশি গুরুত্ব দিতো, তা’হলে আর্ন্তজাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের  এখানে সাফল্য আরও বেশি হতে পারতো।

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের কাঠামো এখনো দূর্বল। ওয়ানডে ক্রিকেটও এর বাইরে নয়। প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ যে হচ্ছে, সেটাতো ক্লাবগুলোর অবদান। বিসিবি শুধু আয়োজন করে থাকে। তারপর সেখানে এক একবার এক এক নিয়ম করা  হয়। আগের মতো গুরুত্বও হারিয়েছে। টি-টোয়েন্টি ও টেস্টের তুলনায় ওয়ান ডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য বেশি হলেও সেটাকে খুব বড় করে দেখার উপায় নেই। ঘরোয়া ক্রিকেটে  নজর দেয়া হলে ওয়ানডে ক্রিকেটও গুরুত্ব পাবে। তারপরও একমাত্র প্রিমিয়ার বিভাগ লিগ খেলে  আর্ন্তজাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশ যতোটুকু সাফল্য পেয়েছে,সে কথা বিবেচনা করে বিসিবির উচিত হবে  ঘরোয়া ক্রিকেটে  এখানে আরও   বেশি নজর দেয়া।’

জাতীয়  দলের সাবেক ক্রিকেটার জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু বলেন, ‘ওয়ানডে ক্রিকেটে যে সাফল্য তা কিন্তু মাশরাফি-সাকিব-মুশফিক-তামিম-মাহমুদউল্লাহসহ আরও কয়েকজন  ক্রিকেটারের কারণে।  এরা কিন্তু  ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেই উঠে এসেছেন। তাদের কনসেপটে কিংবা  শক্তি  তাই ওয়ানডে  ক্রিকেটেই বেশি। তাই এখানে অন্য দুই ফরম্যাটের তুলনায় বাংলাদেশের সাফল্য বেশি। শুধু ক্লাব ক্রিকেটেই নয়, জেলা পর্যায় থেকে যারা উঠে আসছেন তারাও কিন্তু ওয়ানডে ক্রিকেট খেলেই। অন্য দুই ফরম্যাটের তুলনায় ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সাফল্য বিবেচনা করে বিসিবির ঘরোয়া  ক্রিকেটের ওয়ানডে টুর্নামেন্টের দিকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া উচিত।  

 বিসিবির পরিচালক ও মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস এটিকে বিসিবির মোটেই ‍ উদাসীনসা বলে মনে করেন না। মূলত জাতীয় দলের  ব্যস্ততার কারণেই আলাদা করে আর কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান। তিনি  বলেন,‘ টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার আগে আমাদের আর্ন্তজাতিক ম্যাচ খেলা হতো খুবই কম। যে কারণে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ ছাড়াও আরো একাধিক টুর্ণামেন্ট  হতো। এখন ইচ্ছে থাকলেও আয়োজন করা সম্ভব হয় না। এটা আমাদের উদাসীনতা নয়, বাস্তবতা। যেমন এবার পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ শেষ হওয়ার পরদিনই দল চলে যাবে নিউজিল্যান্ড। আগামী বছর থাকবে টানা খেলার মাঝে। ঢাকার বাইরে জেলা পর্যায়ে কিন্তু  ওয়ানডে  খেলাই হয়। সেখানে আমাদের নজরদারী থাকে।’

এমপি// জেডএকে

Header Ad
Header Ad

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন ভূঞাপুর ছাড়াও আশপাশের গোপালপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার অসংখ্য মানুষ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটি বর্তমানে নিজেই এক অসুস্থ প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে।

বছরের পর বছর ধরে চলে আসা নানা অব্যবস্থাপনা, জনবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ—সব মিলিয়ে এই সরকারি হাসপাতালটি এখন রোগীদের ভোগান্তির আরেক নাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভিতর ও বাইরের পরিবেশ একেবারেই নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা রোগী ও তাদের স্বজনদের দীর্ঘ সময় ধরে সইতে হচ্ছে। বিশেষ করে টয়লেটের অবস্থা ভয়াবহ; অধিকাংশ টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য এবং পরিচ্ছন্নতার কোনো ব্যবস্থাই নেই। পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড উভয়ের রোগীরা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতাল কার্যত অন্ধকারে ডুবে যায়। হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও তা চালু করা হয় না এবং সেটিও বহু পুরনো। হাতে গোনা কয়েকটি চার্জিং বাল্ব থাকলেও সেগুলোর অনেকগুলোর আলো টিকেই না, কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে যায়। শিশু ওয়ার্ডের (ডায়রিয়া) মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চার্জিং বাল্ব পর্যন্ত নেই। ফলে রাতের বেলায় এক ভয়ংকর ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আলো না থাকায় নার্সদের মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে সেবা দিতে দেখা গেছে।

চরম গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা। শিশু ওয়ার্ডে থাকা আটটি ফ্যানের মধ্যে তিনটি সম্পূর্ণ নষ্ট, আর যেগুলো সচল রয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় সেগুলোও চলে না। ফলে শিশু রোগীরা ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে, তাদের স্বজনরা হাতপাখা বা চার্জার ফ্যান নিয়ে চেষ্টা করছেন কিছুটা স্বস্তি দিতে।

হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখা যায়, মেঝেতে ময়লার দাগ, দেয়ালে থুতু, কফ ও পানের পিকের ছিটা। শয্যা ও ওষুধ রাখার ট্রেগুলোতেও দেখা গেছে মরিচা ও জমে থাকা ময়লা। এসব স্থানে মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে অবলীলায়, যা পুরো হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে আরও প্রকট করে তুলেছে।

এমন পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী, যিনি হাসপাতালের বারান্দায় ফ্যানহীন পরিবেশে ভর্তি রয়েছেন। অভিযোগ করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ার পরও কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি। টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগিতা নিয়েও তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিন মাসের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোজিনা বেগম বলেন, টয়লেটের অবস্থার কারণে তিনি পানি ও খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন, যেন টয়লেট ব্যবহার না করতে হয়। টয়লেটে ঢোকা তো দূরের কথা, পাশে দাঁড়ানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে।

গোপালপুর উপজেলার বড়শিলা গ্রামের রোগীর স্বজন সাজেদা বেগম বলেন, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীর স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কোনো অভিযোগ করার সুযোগ নেই, আর কেউ কিছু বললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

স্থানীয়দের দাবি, ২০২২ সালে ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) হিসেবে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের এই বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নার্স জানান, ডা. সোবহান কর্তৃত্ববাদী মনোভাব পোষণ করেন। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগকারীরা বদলি বা হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

তবে আরএমও ডা. খাদেমুল ইসলাম বলেন, “সমস্যা যে নেই, সেটা বলছি না। তবুও আমরা সীমিত জনবল ও সামর্থ্যে কাজ করে যাচ্ছি। শতভাগ কাজ সম্ভব হয় না।”

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান বলেন, “জেনারেটর থাকলেও সেটি চালাতে সরকারি বরাদ্দ নেই। মাঝেমধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালানো হয়। ক্লিনার মাত্র একজন, মাঝে মাঝে বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে পরিষ্কার করাতে হয়। আর ফ্যান বা লাইট যেকোনো সময় নষ্ট হতে পারে, যখন জানা যায়, তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” বীর মুক্তিযোদ্ধার বারান্দায় চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কেভিনের ব্যবস্থা রয়েছে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সার্বিকভাবে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা যে ভয়াবহ নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তা এই চিত্রগুলো স্পষ্ট করে দেয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ নজরদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে, এই হাসপাতাল রোগীদের সুস্থতার জায়গা হয়ে না থেকে এক ভয়াবহ দুর্ভোগের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।

 

Header Ad
Header Ad

প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি

ছবি: সংগৃহীত

ওপার বাংলার জনপ্রিয় নির্মাতা সৃজিত মুখার্জিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। গুরুতর সমস্যা নিয়ে শুক্রবার মধ্যরাতে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে। পরে চিকিৎসকরা তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের জন্য আইসিইউতে নিয়ে যান।

পরিচালকের ঘনিষ্ঠ সুত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, গতকাল রাতে হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় সৃজিতের। সেই সঙ্গে বুকে হালকা ব্যথাও অনুভব করছিলেন পরিচালক। এরপর রাত সাড়ে ১২ টার দিকে দ্রুত হাসপাতালে নেয়া হয় তাকে।

সেখানে রাতেই বেশ কিছু টেস্ট করানো হয়। শনিবার টেস্টের রিপোর্ট পাওয়ার কথা রয়েছে। আর তা দেখে চিকিৎসকেরা সিদ্ধান্ত নেবেন কতদিন পরিচালককে হাসপাতালে থাকতে হবে।

আরও পড়ুন: অন্তরঙ্গ দৃশ্যের আগে প্রেমিক ও পরিবারের অনুমতি নিয়েছিলেন কৌশানি। তবে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, সৃজিতের শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।

সদ্যই লিমকা বুক অফ রেকর্ডসের তালিকায় স্থান দখল করেছে সৃজিতের ‘অতি উত্তম’। ইনস্টাগ্রামে গর্বের কথা শেয়ার করেছেন তিনি। তাছাড়া এই নির্মাতার নতুন সিনেমা ‘কিলবিল সোসাইটি’ মুক্তি পেয়েছে গত ১১ এপ্রিল।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আটক
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের
১৮৭ জনকে নিয়োগ দেবে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর