শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

সংবাদ বিশ্লেষণ

পাচার হওয়া অর্থের বৈধতা কাদের উৎসাহিত করবে

২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিদেশে থাকা সম্পদের দায়মুক্তির দিয়ে দেশে আনার সুযোগের ঘোষণা দিয়েছেন। এনিয়ে নানা মহলে সমালোচনা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ১৫ থেকে ৭ শতাংশ কর দিয়ে বিদেশে থাকা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি দেশে সরকারের খাতায় বৈধ আয়ের তালিকায় যুক্ত করা যাবে। সেই অর্থ দেশেও আনা যাবে। কিন্তু পাচার করা অর্থের উৎস জানতে চাওয়া হবে না। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে টাকা পাচার করা তো আইনত অপরাধ। এ সুযোগ কি অপরাধকে প্রশ্রয় দিচ্ছে? পাচার করা অর্থ যদি দেশে আনার উদ্যোগ হয় তবে পাচারকরা অর্থের উৎস কেনই বা জানানো হবে না? আর দেশে যদি ওই অর্থ আসেও সেটা কী বিনিয়োগ হবে? না, ব্যক্তির নামেই থাকবে? আরও প্রশ্ন উঠে টাকা পাচার হওয়ার পথ বন্ধ না করে পাচার হওয়া অর্থ বৈধতা দিয়ে কি ফায়দা আসবে, এটা কী অর্থপাচারকে উৎসাহিত করবে না?

অর্থমন্ত্রীর এই ঘোষণা ব্যবসায়ী মহল থেকে শুরু করে অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সুধীসমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীদের সংগঠনি এফবিসিসিআই এর সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেছেন, বিদেশে পাচার করা অর্থ দেশে আনা হলে ভালো ব্যবসায়ীরা নিরুৎসাহিত হবেন। এটা ব্যবসায়ীরা চান না। বাজেটে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান ও সুশাসনের কথা বলা হলেও পাচার করা কালো টাকা সাদা করার যে প্রস্তাব করা হয়েছে তা সমর্থনযোগ্য নয়।

ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশ (আইবিএফবি) এর প্রেসিডেন্ট হুমায়ুন রশিদ বলেছেন, ‘মাত্র ৭ শতাংশ কর প্রদান করে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকলে নিয়মিত করদাতাদের আরও নিরুৎসাহিত করা হবে। ঢালাও সুযোগ না দিয়ে এর সময় নির্দিষ্ট করে দেওয়া প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘পাচার করা টাকার উৎস নিয়ে প্রশ্ন করা হবে না-এ ধরণের এমনেষ্টি (ক্ষমা) প্রদান করা হলে অর্থনীতিতে নীতি নৈতিকতার ভারসাম্য মারাত্বকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও চুক্তিকারীদের সঙ্গে প্রতিবাদের সম্মুখীন হতে হবে।’

প্রস্তাবিত বাজেটকে সময়োপযোগী বললেও পাচারকৃত টাকা ফেরানোর উদ্যোগকে নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়।

ইনিস্টিটিউট অব চার্টার্ড একাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএবি) এর নেতারা বলছেন, সরকার যে উদ্যোগটি নিয়েছে এটি ইউনিক না বা এবারই প্রথম না। জাস্টিস এন্ড ইকিউটির জায়গা বা নৈতিকতার দিক থেকে ঠিক না।

এদিকে ১৬ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষ বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা। আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবদুস শহীদ বলেন, ‌‘অপ্রদর্শিত টাকা থেকে থাকলে তা কোনো কাজে লাগছে না। সেটা ব্যবহারের যে সুযোগ দেওয়া হয়েছে সেটা অর্থ পাচারের বিষয় নয়। অর্থ পাচারের জন্য যে আইন আছে সেটা অবশ্যই প্রয়োগ করা হবে। প্রয়োগের মাধ্যমে বিচার ব্যবস্থায় আনা যাবে। হলে টাকা কাজে লাগবে। অপ্রদর্শিত আয়কে যদি প্রকাশ বা বিনিয়োগ করা না যায় তাহলে সমৃদ্ধি সম্ভব হবে না।'

জাতীয় পার্টির মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কোনো রূপরেখা অর্থমন্ত্রী দেননি। তিনি টাকা পাচার করে তা হালাল করারা সুযোগ দিয়েছেন। ৪০ বছর যাবৎ বিভিন্ন সরকার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছেন, কিন্তু লাভ হয়েছে খুব কম। ব্যবসা করলে ২৫ শতাংশ কর দেওয়া লাগে। আর টাকা পাচার করে ৭ শতাংশ কর দিয়ে তা আবার ফিরিয়ে আনা যাবে। এতে মানুষ টাকা পাচারে উৎসাহী হবে। শুধু এটাই না, এটি দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, মানি লন্ডারিং আইন, সংবিধানের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব আইন সংশোধন করা না হলে টাকা কীভাবে আনবেন? কোনো সুযোগ নেই।

বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী ভাষ্য ছিল, সব টাকাই ঘুষ দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত কালো টাকা নয়। পদ্ধতিগত কারণেও টাকা কালো হয়। অপ্রদর্শিত অর্থ দেশে আনলে প্রশ্নবিদ্ধ হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পাচার করা অর্থ যেকোনো আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত আনা হবে। এতে কোনো ধরনের বাধা কাম্য নয়।

অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে একাত্ব হয়ে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ট্রুথ কমিশনের কার্যক্রম কোনো আইন দ্বারা বৈধ ছিল না। এবার বিদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার সিদ্ধান্ত সংসদে আইন দ্বারা প্রণীত হবে।

আইনে কী আছে:

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান ঢাকাপ্রকাশে একটি নিবন্ধে বলেছেন , অর্থপাচার রোধ আইন ২০১২ এবং সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অর্থপাচার গুরুতর অপরাধ। দেশের আইন অনুযায়ী যার শাস্তি পাচারকৃত অর্থ বাজেয়াপ্ত করা এবং তার দ্বিগুণ জরিমানা ও ১২ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড নির্ধারিত রয়েছে।

এবার বাজেটে যে সুযোগ দেয়া হয়েছে অর্থ পাচার তথা সার্বিকভাবে দুর্নীতিকে উৎসাহিত করবে, যা সংবিধান পরিপন্থী এবং প্রধানমন্ত্রীর ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’ ঘোষণার অবমাননাকর বলে মন্তব্য করেছেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।

 Anti-money laundering measures webinar - YouTube

মানিলন্ডারিং অপরাধ ও দণ্ড

৪। (১) এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, মানিলন্ডারিং একটি অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে।

(২) কোন ব্যক্তি মানিলন্ডারিং অপরাধ করিলে বা মানিলন্ডারিং অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা, সহায়তা বা ষড়যন্ত্র করিলে তিনি অন্যূন ৪ (চার) বৎসর এবং অনধিক ১২ (বার) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন এবং ইহার অতিরিক্ত অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির দ্বিগুন মূল্যের সমপরিমাণ বা ১০ (দশ) লক্ষ টাকা পর্যন্ত, যাহা অধিক, অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। 

তবে শর্ত থাকে যে, আদালত কর্তৃক ধার্যকৃত সময়সীমার মধ্যে অর্থদণ্ড পরিশোধে ব্যর্থ হইলে আদালত অপরিশোধিত অর্থদণ্ডের পরিমাণ বিবেচনায় অতিরিক্ত কারাদণ্ডে দণ্ডিত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(৩) আদালত কোন অর্থদণ্ড বা দণ্ডের অতিরিক্ত হিসাবে দণ্ডিত ব্যক্তির সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে যাহা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে মানিলন্ডারিং বা কোন সম্পৃক্ত অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত বা সংশ্লিষ্ট।

8[ (৪) কোন সত্তা এই আইনের অধীন কোন অপরাধ সংঘটন করিলে বা অপরাধ সংঘঠনের চেষ্টা, সহায়তা বা ষড়যন্ত্র করিলে ধারা ২৭ এর বিধান সাপেক্ষে, উপ-ধারা (২) এর বিধান অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে এবং অপরাধের সহিত সংশ্লিষ্ট সম্পত্তির মূল্যের অন্যূন দ্বিগুণ অথবা ২০ (বিশ) লক্ষ টাকা, যাহা অধিক হয়, অর্থদণ্ড প্রদান করা যাইবে এবং উক্ত প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধণ বাতিলযোগ্য হইবে:

তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত সত্তা আদালত কর্তৃক ধার্যকৃত সময়সীমার মধ্যে অর্থদণ্ড পরিশোধে ব্যর্থ হইলে আদালত অপরিশোধিত অর্থদণ্ডের পরিমাণ বিবেচনায় সত্তার মালিক, চেয়ারম্যান বা পরিচালক যে নামেই অভিহিত করা হউক না কেন, তাহার বিরুদ্ধে কারাদন্ডে দন্ডিত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।]

(৫) সম্পৃক্ত অপরাধে অভিযুক্ত বা দণ্ডিত হওয়া মানিলন্ডারিং এর কারণে অভিযুক্ত বা দণ্ড প্রদানের পূর্বশর্ত হইবে না।

 

আইনে আরও আছে:

 ১৭। (১) এই আইনের অধীন কোন ব্যক্তি বা সত্তা মানিলন্ডারিং অপরাধে দোষী সাব্যস্থ হইলে আদালত অপরাধের সহিত প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত দেশে বা দেশের বাহিরে অবস্থিত যে কোন সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

(২) উপ-ধারা (১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন এই আইনের অধীন মানিলন্ডারিং অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট কোন অনুসন্ধান ও তদন্ত বা বিচার কার্যক্রম চলাকালীন সংশ্লিষ্ট আদালত প্রয়োজনবোধে দেশে বা দেশের বাহিরে অবস্থিত যে কোন সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

 

(৩) এই আইনের অধীন মানিলন্ডারিং অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্থ কোন ব্যক্তি পলাতক থাকিলে বা অভিযোগ দাখিলের পর মৃত্যুবরণ করিলে আদালত উক্ত ব্যক্তির অপরাধের সহিত সম্পৃক্ত সম্পত্তিও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করিবার আদেশ প্রদান করিতে পারিবে।

 পাচারকৃত অর্থের পরিমান কত?

বাংলাদেশ থেকে বছরে গড়ে পাচার হচ্ছে ৬৪ হাজার কোটি টাকা। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। প্রতি বছর দেশের এসব টাকা পাচার হয়ে চলে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড, সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ডসহ ১০টি দেশে।

আমদানি-রফতানিসহ আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে কারসাজি আর হুন্ডির আড়ালে অর্থপাচার করছে পাচারকারী সিন্ডিকেট। এমনটাই বলছে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ পাচার মনিটরিং সংস্থা- বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিআইএফইউর সাম্প্রতিক প্রতিবেদন।

সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২০, ৫ বছরে পাচারকারীরা ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে। যার মধ্যে শুধু ২০১৫ সালে ১ বছরেই দেশ থেকে পাচার হয়ে যায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। পাচারকৃত টাকার পরিমাণ বিবেচনায় দক্ষিণ এশিয়ায় পাচারকারী দেশ হিসেবে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ।

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ বেড়েই চলেছে।

এদিকে বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের নাগরিকদের জমা করা টাকার পরিমাণ এক বছরের ব্যবধানে প্রায় তিন হাজার কোটি টাকা বেড়েছে সুইজারল্যান্ডের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২১ সালে সুইটজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে বাংলাদেশিদের গচ্ছিত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঁ, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় আট হাজার দু'শ ৭৫ কোটি টাকা। এর আগের বছর, অর্থাৎ ২০২০ সালে, এই অর্থের পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার তিনশ ৪৭ কোটি টাকা। সুইস ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে কয়েক বছরের যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে তাতে এই বৃদ্ধি এক বছরের ব্যবধানে সর্বোচ্চ। এই হিসেব অনুযায়ী, এক বছরেই সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের জমা করা অর্থের পরিমাণ দু'হাজার নয়শ ২৮ কোটি টাকা বেড়েছে।

এই যখন পরিস্থিতি তখন যে পথে টাকা পাচার হচ্ছে সেপথগুলো বন্ধের ব্যবস্থা না করে পাচার হওয়া অর্থের বৈধতা প্রদান কতটুকু যৌক্তিক তাই প্রশ্ন করছেন বিশিষ্ট মহল।

আরও প্রশ্ন আছে। পাচারকৃত অর্থ দেশে আনার মাধ্যম কি হবে? যারা অর্থ পাচার করেছেন তাদের নাম কেউ জানতে পারবে না কেন? জানলে ক্ষতি কী? পাচার করা টাকা দেশে এনে কি করা হবে সেবিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই অর্থমন্ত্রীর উদ্যোগে। এই অর্থ কি বিনিয়োগ করা হবে না আবার অন্য কোনো দেশে স্থানান্তর করা হবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর আছে ২০২১ সালে কিছু অর্থপাচারকারীর নাম আসার খবর ছিল গণমাধ্যমে। কিন্তু ওই পাচারকারীদের বিরুদ্ধে বিদ্যমান আইনে কি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।

পাচারকৃত অর্থ বৈধ করার সুযোগ প্রদান বিগত বছরগুলোর মতই কালো টাকা সাদা করার বেআইনি ও অন্যায় সুযোগের ধারাবাহিকতা মাত্র, যা স্থানিক থেকে বৈশ্বিক করা হলো—এমন মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।

আরও পড়ুন: পাচারকৃত অর্থ দেশে আনার সুযোগ বিদ্যমান আইনে সাংঘর্ষিক

ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, বিদেশে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ দেশের অর্থনীতির মূলধারায় সংযুক্তির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রার প্রবাহ ও আয়কর রাজস্ব বৃদ্ধির প্রত্যাশা করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের অতীত অভিজ্ঞতা বলে, বারবার সুযোগ দিয়েও দেশের অর্থনীতিতে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ প্রত্যাশিত ফল বয়ে আনেনি, সরকারও আকাঙ্ক্ষিত রাজস্ব পায়নি। তাই নতুন এই বিশেষ বিধানের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হবে তা না বললেও চলে। কারণ যারা অর্থ পাচার করেছেন তারা এধরনের প্রণোদনায় উৎসাহিত হয়ে পাচারকৃত অর্থ ফেরত নিয়ে আসবে, এরকম দিবাস্বপ্নের কোনো ভিত্তি নেই। বিশেষ করে, যেখানে পাচারকৃত দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের দেশের পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি ব্যতিরেকে এই অর্থ বা সম্পদ ফিরিয়ে আনা অসম্ভব। বরং এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ ও অর্থপাচারকারীরাই শুধু স্বস্তি বোধ করবেন, পুলকিত হবেন। অর্থপাচারকে এভাবে লাইসেন্স দেওয়া হলে দেশে দুর্নীতি ও অর্থপাচার আরও বিস্তৃতি ও গভীরতা লাভ করবে।

তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, বিভিন্ন দেশে এ ধরণের সুযোগ দেওয়া হয়। আমরা সেই সুযোগটা দিচ্ছি। এই সুযোগে যদি সুফল না আসে তাহলে এ সুযোগ রাখব কেন? বাজেটে একটা সুযোগ দেওয়া হয়েছে, এর থেকে সুফল পেতে পারি এই সম্ভবনাকে সামনে রেখেই করা হয়েছে।

 

 

 

Header Ad

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করে কুশল বিনিময় করেছেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের এ কুশল বিনিময় হয়।

সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া পৌঁছালে উপস্থিত সবাই তাকে স্বাগত জানান। অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৩ সমন্বয়ক ও সরকারের উপদেষ্টা তার পাশে এসে দাঁড়ান এবং শারীরিক খোঁজখবর নেন। এ সময় খালেদা জিয়া তাদের অভিনন্দন জানান এবং দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পরামর্শ দেন।

এ সময় এই ৩ উপদেষ্টা বিএনপি চেয়ারপারসনের কাছে দোয়া চান এবং সরকারের সংস্কার কাজে তার সর্বাত্মক সহযোগিতা চান।

এদিকে সেনাকুঞ্জে গেলে খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী খালেদা জিয়া এখানে এসেছেন। একযুগ তিনি আসার সুযোগ পাননি। আমরা গর্বিত এই সুযোগ দিতে পেরে। দীর্ঘদিনের অসুস্থতা সত্ত্বেও বিশেষ দিনে সবার সঙ্গে শরিক হওয়ার জন্য আপনাকে আবারও ধন্যবাদ। আপনার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি।

Header Ad

দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম

ছবি: সংগৃহীত

আবারও স্বর্ণের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। এবার ভরিতে ১ হাজার ৯৯৪ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আজকেও ছিল এক লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে বাজুস। শুক্রবার (২২ নভেম্বর) থেকেই নতুন এ দাম কার্যকর হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের (পিওর গোল্ড) মূল্য বেড়েছে। ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।

নতুন দাম অনুযায়ী, প্রতি ভরি ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম পড়বে ১ লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩৩ হাজার ৯৮ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৬ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯৩ হাজার ৬৭৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাজুস আরও জানায়, স্বর্ণের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে আবশ্যিকভাবে সরকার-নির্ধারিত ৫ শতাংশ ভ্যাট ও বাজুস-নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরি ৬ শতাংশ যুক্ত করতে হবে। তবে গয়নার ডিজাইন ও মানভেদে মজুরির তারতম্য হতে পারে।

স্বর্ণের দাম কমানো হলেও দেশের বাজারে অপরিবর্তিত রয়েছে রুপার দাম। দেশে ২২ ক্যারেটের এক ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫৭৮ টাকায়। এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ৪৪৯ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ২ হাজার ১১১ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি রুপা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫৮৬ টাকায়।

এর আগে, সবশেষ গত ১৯ নভেম্বর দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম সমন্বয় করেছিল বাজুস। সে সময় টানা চার দফা কমার পর ভরিতে ২ হাজার ৯৪০ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ লাখ ৩৭ হাজার ৪৪৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল সংগঠনটি।

এ ছাড়া ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ৩১ হাজার ১৯৭ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ লাখ ১২ হাজার ৪৫৩ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম ৯২ হাজার ২৮৬ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যা কার্যকর হয়েছে গত ২০ নভেম্বর থেকে।

এ নিয়ে চলতি বছরে এখন পর্যন্ত দেশের বাজারে ৫১ বার স্বর্ণের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। যেখানে ৩০ বার দাম বাড়ানো হয়েছে, আর কমানো হয়েছে ২১ বার।

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত