সম্ভাবনার নতুন দুয়ার পদ্মা সেতু-৬
প্রতিদিন চলবে ২৪ হাজার গাড়ি, টোল আসবে সাড়ে ৪ কোটি টাকা!
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২০২২ সালে পদ্মা সেতু দিয়ে ২৪ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করবে। আর বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) একটি প্রাক্কলনে বলা হয়েছে, একই বছরে প্রতিদিন ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা টোল আদায় হবে পদ্মা সেতু থেকে।
এডিবি’র সমীক্ষা অনুসারে, ২০২২ সালে প্রতিদিন যে ২৪ হাজার যানবাহন চলবে তার মধ্যে রয়েছে ৮ হাজার ২৩৮টি বাস, ১০ হাজার ২৪৪টি ট্রাক এবং ৫ হাজারের বেশি মাইক্রোবাস ও ব্যক্তিগত গাড়ি।
সমীক্ষা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রতি বছর যানবাহনের সংখ্যা ৭-৮ শতাংশ হারে বাড়বে। সেক্ষেত্রে ২০৫০ সাল নাগাদ সেতুটি দিয়ে প্রতিদিন ৬৭ হাজার বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলবে।
বিবিএ’র প্রাক্কলন অনুযায়ী, প্রতিদিন ৪ কোটি ৪৫ লাখ টাকা হিসেবে প্রতি মাসে ১৩৩ কোটি ৬৬ লাখ এবং প্রতি বছরে ১ হাজার ৬০৩ কোটি টাকা টোল আদায় হবে। ফেরির টোল থেকে দেড়গুণ বেশি ধরে এই প্রাক্কলন করেছিল বিবিএ। পরবর্তীতে সেটি ধরেই টোলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, যারা ফেরি পারাপার ধরে কথা বলছেন তারা ঠিক বলছেন না। ফেরি পারাপারে অনেক ঝুঁক্কি, ঝামেলার কারণে অনেকেই এ পথে যেতে চান না। সেতু চালু হলে সেক্ষেত্রে যানবাহনের সংখ্যাও বাড়বে।
সম্প্রতি পদ্মা সেতুর টোলের হার নির্ধারণ করে জারি করা প্রজ্ঞাপনে দেখা যাচ্ছে, মোটরসাইকেলের জন্য টোল দিতে হবে ১০০ টাকা এবং প্রাইভেট কার ও জিপের জন্য ৭৫০ টাকা। মাঝারি বাসের জন্য ২ হাজার টাকা, বড় বাসের জন্য ২ হাজার ৪০০ টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে। এছাড়া মিনিবাসকে দিতে হবে ১ হাজার ৪০০ টাকা এবং মাইক্রোবাসকে দিতে হবে ১ হাজার ৩০০ টাকা।
৫ টন পর্যন্ত ট্রাকের জন্য টোল নির্ধারণ করা হয়েছে ১ হাজার ৬০০ টাকা, ৫ থেকে ৮ টনের ট্রাকের জন্য ২ হাজার ১০০ টাকা, ৮ থেকে ১১ টনের ট্রাকের জন্য ২ হাজার ৮০০ টাকা, বড় ট্রাকের জন্য (থ্রি এক্সেল পর্যন্ত) ৫ হাজার ৫০০ টাকা এবং টেইলারের জন্য ৬ হাজার টাকা টোল নির্ধারণ করা হয়েছে।
যদিও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্পোরেশনও (বিআইডব্লিউটিসি) একটি প্রাক্কলন করেছে। এই প্রাক্কলনে দেখা যাচ্ছে, ২০২২ সালে সেতু দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হবে দুই হাজারের মতো গাড়ি। এসব গাড়ি থেকে টোল আদায় হবে সর্বোচ্চ ২৯ লাখ টাকা।
বিবিএ এবং বিআইডব্লিউটিসি’র প্রাক্কলনের যে পার্থক্য সেই সম্পর্কে বিবি‘র একজন কর্মকর্তা বলেন, বিআইডব্লিউটিসির প্রাক্কলনে শুধু মাওয়া-জাজিরা রুট দিয়ে ফেরি পারাপার হওয়া যানবাহনের সংখ্যা দিয়ে করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে ফেরি পারাপারের ঝুঁক্কির কারণে অনেক যানবাহন পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া এবং বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে চলাচল করছে।
তাই পদ্মা সেতু চালু হলে এই রুট দিয়ে পারাপার করা যানবাহনের সংখ্যা বাড়বে উল্লেখ করে ওই কর্মকর্তা বলেন, অনেক গাড়ি দুই-তিনবারও চলাচল করতে পারবে। তাই এক্ষেত্রে সেতু পাড়ি দেওয়া যানবাহনের সংখ্যাও বাড়বে।
আরইউ/ এপি/এসআইএইচ