সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ | ২৪ চৈত্র ১৪৩১
Dhaka Prokash

পাসপোর্ট অফিসে অনিয়মই এখন নিয়ম

রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় ফলের ব্যবসা করেন সিরাজ মিয়া, গ্রামের বাড়ি রংপুর বিভাগের নীলফামারী জেলার খোকশাবাড়ি ইউনিয়নে সেখানে স্ত্রী-কন্যা ও বাবা-মা নিয়ে পাঁচ সদস্যের পরিবার তার। কিন্তু ইদানিং বাবা হায়দার আলী বুকে ও কোমরে ব্যথা অনুভব করেন। বাবার চিকিৎসা করাতে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তারের শরণাপন্ন হলে ডাক্তার জানান, দেশে চিকিৎসা করানো এক প্রকার অসম্ভব। হায়দার আলীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ভারতের চেন্নাইয়ে নিয়ে চিকিৎসা করার পরামর্শ দেন ডাক্তার। এতে চিন্তার ভাঁজ পড়ে সিরাজ মিয়ার কপালে। বাবাকে উন্নত চিকিৎসা করাতে গ্রামের কিছু জমি বিক্রি করতে হয় সিরাজ মিয়াকে।

খুব দ্রুতই বাবাকে নিয়ে ভারতে যেতে হবে। তবে বাবা-ছেলের কারও নেই পাসপোর্ট। পাসপোর্ট করাতে গতকাল বুধবার (১৮ মে) এপ্রিল আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে ধর্না দেন সিরাজ মিয়া। প্রয়োজনীয় কাগজ নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও আসছে না ডাক। সিরিয়ালে আগে থাকলেও আগেভাগেই মিলছে না সেবা।

এদিকে লাইনের ফাঁকে দেন-দরবার হচ্ছে। দালালদের টাকা দিলেই মিলবে সেবা। টাকা দিলেই লাইন থেকে দালাল, দালাল থেকে আনসার আর আনসার থেকে কর্মকর্তার হাত ঘুরে মুহূর্তেই মিলছে সেবা। এগুলো হলো ফল ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়ার ভোগান্তি ও পাসপোর্ট অফিসের দালাল এবং কর্মকর্তাদের সংঘবদ্ধ ঘুষ চক্রের চিত্র।

পাসপোর্ট অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দালালদের হাতে জিম্মি প্রক্রিয়া, সার্ভার জটিলতা, কর্মকর্তাদের অসদাচরণ, অতিরিক্ত অর্থের বিনিময়ে সেবা প্রদানসহ নানা রকমের অনিয়মের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে দেশের বেশির ভাগ পাসপোর্ট অফিস। বিভিন্ন অভিযোগ নিয়ে কর্মকর্তাদের কাছে গেলে তারা শুধু সংশ্লিষ্ট অফিসার ডিজির কথা বলে পার পেয়ে যান। এবং কথায় কথায় কর্মকর্তারা তার নাম ব্যবহার করেন।

ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন শত শত আবেদনকারী পাসপোর্ট করতে এসে পড়ে যান গোলক ধাঁধায়। অফিসের বাইরে ওঁৎ পেতে থাকা প্রতারক ও দালাল চক্রের খপ্পর এড়াতে অফিসের যে কারও কাছে পাসপোর্ট করার তথ্য জানতে গেলেও মেলে না সুরাহা। তারা পরামর্শ দেয় নির্ধারিত দালালদের দিয়ে পাসপোর্ট করার অথবা কোনো তথ্যই না দিয়ে এড়িয়ে যান। কর্মকর্তাদের পরোক্ষ ইন্ধনে নিয়োগ দেওয়া এসব দালাল ছাড়া গ্রাহক নিজ উদ্যোগে লাইনে দাঁড়িয়ে আবেদনপত্র জমা দেওয়ার চেষ্টা করলে তার আবেদনে নানাবিধ সমস্যা আর ভুল দেখিয়ে দিনের পর দিন ফেরত দেওয়া হয়। আবার যারা দেরি করে হলেও পাসপোর্ট হাতে পাচ্ছেন তাদের পাসপোর্টের তথ্যে রয়েছে নানা অসঙ্গতি। সেটা সংশোধনে আরেক দীর্ঘ প্রক্রিয়ার জালে জড়িয়ে যাচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা।

অপরদিকে, দালাললের কাছ থেকে সেবা নিতে গেলেই গুনতে হয় মোটা অংকের টাকা। এসব টাকার একটি বড় অংশের ভাগ নেন কিছু অসাধু কর্মকর্তা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পাসপোর্ট অফিসে ফরম পূরণ থেকে শুরু করে পাসপোর্ট ডেলিভারি পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ঘুষ দিতে হচ্ছে। সব কাজ শেষ হওয়ার পরও পাসপোর্ট হাতে পেতেও গুনতে হয় আটশ থেকে হাজার টাকা। এদিকে সেবাপ্রত্যাশীদের সারি দীর্ঘ হলেও বাইরে থেকে দালালদের মাধ্যমে নেওয়া হয় টোকেন। এসব টোকেন আবার আনসারদের মাধ্যমে চলে যায় কর্মকর্তাদের কাছে। তারা আবার নির্ধারিত ফি নিয়ে মুহূর্তেই দিয়ে দেন সমাধান।

একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে ফলাফল ভালো হওয়ার সুবাদে স্কলারশিপে কানাডায় যাওয়ার সুযোগ পান তিনি। প্রস্তুতিও চলে সব কিছুর। আবেদন করেন পাসপোর্ট করার। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পাসপোর্ট হাতে না পাওয়ায় কানাডায় যাওয়ার স্বপ্ন শেষ হওয়ার পথে তার।

পাসপোর্ট অফিসের সামনে আরেক ভুক্তভোগী দুবাই কর্মরত মামুনের সঙ্গে ঢাকা প্রকাশের এই প্রতিবেদকের কথা হয়। এ সময় মামুন বলেন, পাসপোর্ট নবায়নের জন্য কয়েকদিন এখানে আসছি কিন্তু কাজ হচ্ছে না। যতবারই যাই, বলে প্রসেসিং চলছে, কালকে আসেন, কালকে এলে বলে সার্ভারে সমস্যা, অপেক্ষা করেন। দিন তারিখ কিছুই বলে না। এমন অভিযোগ শুধু তাদের নয় অসংখ্য মানুষ বিভিন্নভাবে রাতের সময় পাসপোর্ট না পাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, দালালদের দিয়ে পাসপোর্ট আবেদন করালে তুলনামূলক ভোগান্তি কম। পুলিশ ভেরিফিকেশন, জন্মনিবন্ধন সনদ আর সত্যায়িত করার সিল সবই আছে দালালের কাছে। দরকার শুধু টাকা। নিজে না গিয়েও পকেটভর্তি টাকা দিলেই হয় পাসপোর্ট প্রস্তুত। কিন্তু নিয়মানুসারে আবেদন করে মাসের পর মাস অপেক্ষা করেও পাওয়া যায় না পাসপোর্ট।

এদিকে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল, বাংলাদেশের (টিআইবি) এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, নতুন পাসপোর্টেও আবেদনকারীদের তিন চতুর্থাংশকেই পুলিশ ভেরিফিকেশনের সময় অনিয়ম ও হয়রানির শিকার হয়ে ঘুষ বা নিয়মবহির্ভূত টাকা দিতে হয়। টাকা না দিলেই পুলিশ ভেরিফিকেশন নিয়েও শুরু হয় গড়িমসি। অথচ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি (সিটিজেন চার্টার) অনুযায়ী, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ইস্যু করতে ১৫ কর্মদিবস এবং জরুরি ফি এবং পুলিশ প্রতিবেদন প্রাপ্তি সাপেক্ষে সাত কর্ম দিবসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা।

অপরদিকে, ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় বিতরণের ধরণ অনুযায়ী সাধারণ ১৫ কর্ম দিবসের মধ্যে, জরুরি সাত কর্ম দিবসের মধ্যে এবং অতীব জরুরি দুই কর্ম দিবসের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। এছাড়াও ভিসা ইস্যুর ক্ষেত্রে শ্রেণিভেদে এবং অনুকূল তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে তিন কর্মদিবস থেকে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে সেবা নিশ্চিত করার কথা। এ ক্ষেত্রে আইন থাকলেও তার প্রয়োগ দেখা যায় না।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দেশের ৬৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে প্রতি মাসে গড়ে দুই লাখ ২৬ হাজারের বেশি পাসপোর্টের আবেদন জমা হয়। এর মধ্যে ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ জমা হয় দালালের মাধ্যমে। তাদের জমা করা আবেদন প্রতি পাসপোর্ট কর্মকর্তারা ঘুষ নেন নির্ধারিত রেট এক হাজার টাকা করে। সে হিসাবে পাসপোর্ট আবেদন থেকে প্রতি মাসে ঘুষ আদায় হয় ১১ কোটি ৩২ লাখ টাকার বেশি। বিশাল অঙ্কের এ ঘুষের টাকা থেকে ১০ শতাংশ হারে অর্থাৎ এক কোটি সোয়া ১৩ লাখ টাকার মতো পাঠানো হয় ঢাকায় পাসপোর্টের প্রধান কার্যালয়ে।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে আসা নথিপত্রে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার বিভাগের কর্মকর্তা মো. সাচ্চু মিয়া, পাসপোর্ট অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক রফিকুল ইসলামসহ ৬৯টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণসহ বিভিন্ন অনিয়মের বিবরণ রয়েছে।

পাসপোর্ট আবেদনকারী (সেবা গ্রহীতা) পরিচয় দিয়ে একাধিক দালাদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, সরকারি ফি থেকে বেশি যা নেই সেই টাকা থেকে খুব অল্প কিছু থাকে আমাদের। বেশির ভাগই চলে যায় পাসপোর্ট অফিসের লোকজন ও আনসার সদস্যের কাছে।

পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই কাজ করে দেওয়া যায় বলেও জানান তারা। আইন অনুযায়ী, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট ইস্যু করতে সাধারণভাবে পাসপোর্ট প্রাপ্তির জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ তিন হাজার ৪৫০ টাকা। অপরদিকে, জরুরি ভিত্তিতে পাসপোর্ট প্রাপ্তির জন্য ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ফিস ছয় হাজার ৯০০ টাকা।

শুধু ই চালান এবং সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে জমাকৃত এসব ফি গ্রহণযোগ্য হওয়ার কথা থাকলেও দালালরা হাতে হাতেই গ্রহণ করছেন টাকা। দালালের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধান পেতে হলে একজন গ্রাহককে গুনতে হয় অন্তত ৯ হাজার টাকা। দর-কষাকষিতে ক্ষেত্রবিশেষ টাকার অংক আট হাজারে নামতে পারে।

তবে সেই সংখ্যাটা তুলনামূলক কম। ফলে দেখা যায়, দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে একজন গ্রাহকের অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে পাঁচ হাজার ৫৫০ টাকা। এই টাকা প্রায় পাঁচটি পক্ষ পায়। কে কত টাকা পাবেন, তা আগে থেকে নির্দিষ্ট করা। ফলে ভাগাভাগি নিয়ে পক্ষগুলোর মধ্যে কোনো ধরনের সংঘাত বা অন্তঃকলহ দেখা যায় না।

ভুক্তভোগীদের এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা ও ইমিগ্রেশন) সেলিনা বানু বলেন, বাইরে দালাল চক্র কি করে তা আমাদের জানা নেই। আমরা তো দালাল নিয়োগ করি না। কে কত নিচ্ছে বা দিচ্ছে তার দায় আমাদের নয়। এ সবের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আছে, তারাই পদক্ষেপ নেবে। আমাদের কাছে পৃথক কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ এলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সার্ভার জটিলতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিস্টেম আপগ্রেড করতে হলে সাময়িক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়, যার কারণে এসব সমস্যা তৈরি হয়। দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সার্ভার আমাদের সার্ভারের চেয়েও অনেক বেশি সমস্যা আছে। অনেক সময় দেখা যায় এনআইডির সার্ভার স্লো থাকায় আমরাই ভেরিফিকেশন করতে পারি না। সার্ভার যেহেতু টেকনিক্যাল বিষয় সেহেতু মাঝে মাঝে সমস্যা হতেই পারে। তবে সার্ভার আরও উন্নত করতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পাসপোর্ট অধিদপ্তরের ডিজির (সহকারি) মেজর মো. মোরশেদ বলেন, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা কাজ করি তবে বাইরের বিষয়টি আমরা দেখি না। বাইরের বিষয়ে অন্যরা দেখে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে কথা বলতে হলে বিল্ডিং এর ডিরেক্টর আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে কথা বলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিরেক্টর পাসপোর্ট অফিসের ডিরেক্টর (৬০২) মামুন আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, পাসপোর্ট অফিসের বাইরে সমস্যাগুলো আমরা দেখি না, এখানে পৃথকভাবে আমরা কাজ করি। এ বিষয়ে কথা বলতে হলে অ্যাডমিনের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, বাইরে অনিয়ম হয় বলছেন, ভুক্তভোগী কোনো ব্যক্তি আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ করেনি এর জন্য আমরা এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারছিনা।

কেএম/আরএ/

Header Ad
Header Ad

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার আইসিসিতে পাঠানোর কথা ভাবছে সরকার: প্রেস সচিব

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে নির্বিচারে গুলি চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাতে প্রাণ যায় শত শত মানুষের। আহত হন অনেকে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর তদন্তে নেমে মানবতাবিরোধী অপরাধের প্রমাণ পায় জাতিসংঘ।

প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, হত্যায় জড়িত ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।

আন্দোলন দমানোর নামে হত্যার নির্দেশ দেয়া হয়েছিলো মোবাইলসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে। ১০ জুলাইয়ের পর এসব আলামত নষ্টের অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহার।

তিনি বলেন, শুধু ডিলিট না, কথাও যেন কোন ডেটা না থাকে সেজন্যে স্থায়ীভাবে ডিলিট করার নির্দেশনাও আমরা তদন্তে পেয়েছি। সেসমস্ত জিনিস আমরা পুনরুদ্ধার করে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড মেনে আদালতে প্রেরণযোগ্যের ব্যবস্থা করেছি।

এদিকে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের বিচারের বিষয়টি নেদারল্যান্ডসের হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানোর সুযোগ আছে কিনা খতিয়ে দেখছে সরকার।

তিনি আরও বলেন, এটি পাঠাতে পারলে সুবিধা হচ্ছে সারা বিশ্বের মানুষ দেখতে পারবে কি নৃশংসভাবে বাংলাদেশে গণহত্যা চালান হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

উল্লেখ্য, রোম আইনের বলে ২০০২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় এই আদালত। ১২৫টি রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশও এর সদস্য। জেনোসাইড, যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িতদের বিচার হয় আইসিসিতে।

Header Ad
Header Ad

ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি

বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এ নোটিশ দিয়ে সংহতি জানিয়েছে গাজার পক্ষে। ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি চলছে। গত রাতেই ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দেয় শিক্ষার্থীরা। বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও এ নোটিশ দিয়ে সংহতি জানিয়েছে গাজার পক্ষে।

রাজধানীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর সামনে জড়ো হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় আর কলেজগুলোর সামনে বিক্ষোভ মিছিল করবে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এছাড়াও গাজায় হামলা বন্ধের দাবিতে একই কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে ছাত্রদল, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, ছাত্র শিবিরসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন।

রোববার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই ঘটনায় রাজধানীর বিজয় নগর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ। ইসরাইলি আগ্রাসনের নিন্দা, ফিলিস্তিনের নাগরিকদের উপর চালানো গণহত্যার প্রতিবাদ ও স্বাধীন ফিলিস্তিনের দাবি উঠে আসে তাদের স্লোগানে। এসময় সোমবার জেনারেল স্ট্রাইকে দেশবাসীকে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।

গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর নৃশংস হামলার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের বিশ্বব্যাপী ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আজকের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এই গণহত্যার প্রতিবাদে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছে কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও।

Header Ad
Header Ad

যুদ্ধের মাঝে ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটলেন নেতানিয়াহু

ছবি: সংগৃহীত

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে নিরলস হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। বর্বর ও নির্বিচার এই হামলার মধ্যেও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ভূখণ্ডটির স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। গত কয়েক মাসের মধ্যে গাজা থেকে ইসরায়েলে সবচেয়ে বড় হামলা চালিয়েছে তারা।

একইসঙ্গে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্বজুড়ে দেওয়া হয়েছে সাধারণ ধর্মঘটের ডাক। এমন অবস্থায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটে গেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।

সোমবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের সাথে দেখা করার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রোববার হাঙ্গেরি থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটে গেছেন বলে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে।

ইসরায়েলি দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথের মতে, নেতানিয়াহু সোমবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সাথে আলোচনা করবেন। এতে বলা হয়েছে, “গাজায় চলমান যুদ্ধ এবং হামাসের পক্ষ থেকে ইসরায়েলি বাহিনী পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং যুদ্ধের অবসানের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে উইটকফের উপস্থিতি ‘ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির ইস্যু নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে’।”

সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, নেতানিয়াহু এবং ট্রাম্প ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি এবং সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এছাড়া ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সাথেও দেখা করবেন। বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড মূলত ট্রাম্পের শুল্ক নীতির তত্ত্বাবধান করেন। গত বুধবার উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য ঘাটতির কারণে অন্যান্য দেশের সাথে ইসরায়েলের ওপর ১৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বসতে চলেছেন নেতানিয়াহু।

পৃথক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, রোববার রাতে ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। আগামী দুই দিন ধরে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে তাড়াহুড়ো করে নির্ধারিত বৈঠক করবেন।

বৈঠকগুলোতে মূলত গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ এবং জিম্মিদের বিষয়ে আলোচনা করা হবে, যাদের মধ্যে ৫৯ জন এখনও গাজায় বন্দি রয়েছেন। সেইসাথে ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতি নিয়েও আলোচনার কথা রয়েছে। সফরের কথা ঘোষণা করার ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে নেতানিয়াহু রোববার বুদাপেস্ট থেকে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

এদিকে নেতানিয়াহুর এই সফর মঙ্গলবার পর্যন্ত স্থায়ী হওয়ার কথা থাকলেও ইসরায়েলি সম্প্রচারমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, এই সফরের সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে। গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু, ট্রাম্প এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় কথোপকথনের পর এই সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছিল বলে জানা গেছে।
টাইমস অব ইসরায়েল বলছে, স্ত্রী সারাকে নিয়ে ওয়াশিংটনে পৌঁছানোর পরেইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বিমানবন্দর থেকে কাফেলা নিয়ে ব্লেয়ার হাউসের দিকে যান। সেখানে বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিকের সাথে তার দেখা করার কথা ছিল।

আনাতোলু বলছে, ইসরায়েলের প্রধান মিত্র দেশ যুক্তরাষ্ট্রে নেতানিয়াহুর সফর এমন এক সময় এলো যখন তেল আবিব গাজা উপত্যকায় মারাত্মক আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৩ সালের অক্টোবর থেকে নির্বিচার হামলায় অবরুদ্ধ এই উপত্যকায় প্রায় ৫০ হাজার ৭০০ মানুষ নিহত হয়েছেন।

গত সপ্তাহান্তে নেতানিয়াহু গাজায় আক্রমণ আরও বাড়ানোর ঘোষণা দেন। ফিলিস্তিনি এই ছিটমহল থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদের বিষয়ে ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টাও চলছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

জুলাই হত্যাকাণ্ডের বিচার আইসিসিতে পাঠানোর কথা ভাবছে সরকার: প্রেস সচিব
ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে ‘নো ওয়ার্ক নো ক্লাস’ কর্মসূচি
যুদ্ধের মাঝে ট্রাম্পের সাথে বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রে ছুটলেন নেতানিয়াহু
রাজশাহীতে ট্রাক-বাসের সংঘর্ষে নিহত তিন, আহত অর্ধশত
পুরান ঢাকায় নাজিমউদ্দিন রোডে আগুন, নিহত ১
ইসরাইলি বসতিতে হামাসের মুহুর্মুহু রকেট হামলা (ভিডিও)
আমরা গাজায় আরও তীব্র হামলা চালাব: ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী
নওগাঁয় আকাশ থেকে পড়ল বিরল আকৃতির শীলা, আতঙ্কিত এলাকাবাসী
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির ডাক
বিয়ের গেটে পার্টি স্প্রে দেওয়া নিয়ে মারামারি, ভাঙল বিয়ে
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় ছাত্রদলের নিন্দা ও কর্মসূচি ঘোষণা
দপ্তর হারালেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব নিজাম উদ্দিন
বাংলাদেশে ব্যবসা করার অনুমোদন পেল স্টারলিংক
শুল্ক নিয়ে ট্রাম্প ও মার্কিন প্রশাসনকে চিঠি দেবে বাংলাদেশ: প্রেস সচিব
দর্শনায় পূর্ণাঙ্গ স্থলবন্দর বাস্তবায়নে এডিবির উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদলের পরিদর্শন
ফেসবুকে নির্বাচনের কথা লিখলে সংঘবদ্ধ গালি শুরু হয়ে যাচ্ছে: ইশরাক
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদ: ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ডাক
যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কের প্রভাব সামাল দেওয়া কঠিন হবে না: অর্থ উপদেষ্টা
বিদেশি শীর্ষ বিনিয়োগকারীদের নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বুধবার
এসএসএফের সাবেক ডিজি ও তার স্ত্রীর ফ্ল্যাট-জমি জব্দ, ৩৪ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ