পি কে হালদারের ২৫ স্বজন-সহযোগী নজরদারিতে
প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ২৫ স্বজন-সহযোগীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসের একদম শুরুর দিকে এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল উচ্চ আদালত। তবে পি কে হালদার নিজেই বিদেশে পালিয়ে গেছেন। সম্প্রতি ভরতের পশ্চিমবঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করেছে দেশটির আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
এর পরিপেক্ষিতে পি কে হালদারের সহযোগীদের ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে– জানতে চাইলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী খুরশীদ আলম খান মঙ্গলবার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, তারা নজরদারিতে আছেন। তাদের বিষয়ে তদন্ত চলছে। তাদের বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের কেউ বাদ যাবে না।
পি কে হালদারের সহযোগীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর সিতাংশু কুমার সুর (এস কে সুর) চৌধুরী এবং নির্বাহী পরিচালক শাহ আলম। পি কে হালদারের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এই দুই জনকে সম্প্রতি তলব করেছিল কমিশন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চাইলে কমিশনের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান গত রবিবার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, পি কে হালদারের ঋণ কেলেঙ্কারির ঘটনায় এস কে সুর ও শাহ আলমকে তলব করেছিল কমিশন। এখন পি কে হালদারকে দেশে ফিরিয়ে আনতে পারলে আদালতের অনুমতি নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে। তারপর তার বক্তব্যের সঙ্গে এস কে সুর ও শাহ আলমদের দেয়া বক্তব্য মিলিয়ে দেখা যাবে।
২০২১ সালের ৫ জানুয়ারি পি কে হালদারের এই ২৫ স্বজন–সহযোগীর বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট। আদালত যে ২৫ জন ব্যক্তির বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তারা হলেন: পি কে হালদারের মা লীলাবতী হালদার, ফাস ফাইন্যান্সের হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গর্ভনর এস কে সুর চৌধুরী, পিকে হালদারের বন্ধু উজ্জ্বল কুমার নন্দী, সামি হুদা, পি কে হালদারের চাচাতো ভাই অমিতাভ অধিকারী, অবন্তিকা বড়াল, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের শামীমা, রুনাই, সাবেক সচিব ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের চেয়ারম্যান আই খান, আয়কর আইনজীবী সুকুমার মৃধা, অনিন্দিতা মৃধা, তপন দে, স্বপন কুমার মিস্ত্রি, অভিজিৎ চৌধুরী, রাজিব সোম, ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি ইরফানউদ্দিন আহমদ চৌধুরী, অঙ্গন মোহন রায়, নঙ্গ চৌ মং, নিজামুল আহসান, মানিক লাল সমাদ্দার, সোহেল শামস, পি কে হালদারকে তথ্য দিয়ে সহায়তাকারী মাহবুব মুসা, একিও সিদ্দিকী ও মোয়াজ্জেম হোসেন।
প্রসঙ্গত প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারে অভিযুক্ত প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে ২০২০ সালে দুদকের তদন্ত শুরুর পর পি কে হালদারের পালিয়ে যাওয়ার খবর আসে। তখন শোনা গিয়েছিল, তিনি কানাডায় চলে গেছেন। তবে গত শুক্রবার হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক ও ভারতীয় গণমাধ্যমে খবর আসে, পি কে হালদার ও তার সহযোগীদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে পশ্চিমবঙ্গে অভিযানে নেমেছে ভারতের কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। পরদিন আসে গ্রেপ্তারের খবর।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পি কে হালদারের বিরুদ্ধে নামে-বেনামে নানা আর্থিক প্রতিষ্ঠান খুলে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা লোপাটের অভিযোগে ইতোমধ্যে ৩৪টি মামলা হয়েছে।
এমএ/এমএমএ/