শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫ | ৬ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

চট্টগ্রাম বন্দর

শেড ভাড়া বেশি, গাড়ি খালাসে অনীহা আমদানিকারকদের

চট্টগ্রাম বন্দরে এক সময় চার শেডে গাড়ি রাখার জায়গা মিলত না। আমদানিকারকদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গাড়ি রাখার শেড-ইয়ার্ডের পরিধি বাড়ানো হয়। ২০০৭ সাল থেকে গাড়ি রাখার ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হয়। এখন শেড-ইয়ার্ডে চার হাজার ইউনিট গাড়ি রাখা যায়। ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির পর খালাসও বেশি হওয়ার কথা। কিন্তু উল্টো গাড়ি খালাস কমে গেছে। জাপান থেকে থেকে রো রো জাহাজে (গাড়ি পরিবহনের জন্য বিশেষায়িত জাহাজ) আমদানি করা বেশিরভাগ গাড়ি খালাস হচ্ছে খুলনার মোংলা বন্দরে। আমদানিকারকরা বলছেন, ফ্রি টাইমের পর চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি রাখার ভাড়া আগের চেয়ে অন্তত আটগুন বেশি। আবার একই গাড়ির জন্য ফ্রি টাইমের পর গাড়ি রাখার ভাড়া খুলনার মোংলা বন্দরে চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে অনেক কম। তাই চট্টগ্রাম বন্দরে আসা রো রো জাহাজ থেকে অল্প পরিমাণ গাড়ি খালাস করা হচ্ছে। বেশিরভাগ গাড়ি নিয়ে রো রো জাহাজ যায় মোংলা বন্দরে। আর চট্টগ্রাম বন্দরে দিনের পর দিন গাড়ি রাখার শেড ইয়ার্ডের বড় অংশ খালি থাকছে। চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ির চার হাজার ইউনিট ধারণ ক্ষমতার বিপরীতে শুক্রবার (২৫ মার্চ) গাড়ি ছিল ৭৮৩ ইউনিট। যা ধারণ ক্ষমতার চার ভাগের এক ভাগেরও কম।

আমদানিকারকরা বলছেন, শুধু গাড়ি রাখার ভাড়া বেশি হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি প্রায় ৭০ শতাংশ কমে গেছে। চট্টগ্রাম বন্দরের পরিবহন বিভাগ সূত্র জানায়, রো রো জাহাজ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ি খালাসের পর পরই ভাড়া গোনা শুরু হয় না। বন্দরে জাহাজ থেকে গাড়ি খালাসের পর ফ্রি টাইম (শেড/ইয়ার্ডে ভাড়া ছাড়া অবস্থান সময়) থাকে চারদিন। এই চারদিন ভাড়া গুনতে হয় না আমদানিকারকদের। চারদিন পর থেকে ভাড়া গোনা শুরু হয়। ভাড়া নির্ধারণ হয় গাড়ির ওজন ও সিসি ভেদে। গাড়ি রাখার ভাড়া অন্তত আটগুন বেশি দিতে হয় চট্টগ্রাম বন্দরে। মোংলা বন্দরে তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই চট্টগ্রামের আমদানিকারকরা ক্ষতির মুখে পড়েও খুলনার মোংলা বন্দরে গাড়ি খালাস করেন।

গাড়ি আমদানিকারকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চট্টগ্রাম বন্দরে যে ভাড়ায় গাড়ি ২ দিন রাখা যায় একই ভাড়ায় মোংলা বন্দরে গাড়ি ৭ থেকে ৮ দিন রাখা যায়। শুধু বাড়তি ভাড়ার কারণে চট্টগ্রামের আমদানিকারকরাও চট্টগ্রাম বন্দর এড়িয়ে চলেন। তারা মোংলা বন্দরে গাড়ি খালাস করতে বেশি আগ্রহী।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চট্টগ্রাম বন্দরে জাপানের বন্দর থেকে আসা গাড়িবাহী রো রো ভ্যাসেল ভিড়লে খালাস করা হয় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ। বাকি ৭০ শতাংশ গাড়ি নিয়ে একই জাহাজ চলে যায় মোংলা বন্দরে। গাড়ি খালাস কম হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দরে গাড়ির শেড-ইয়ার্ড বছরের প্রায় পুরো সময় থাকছে ফাঁকা। অথচ চট্টগ্রাম বন্দরে ইয়ার্ডগুলোতে প্রায় সময় বাড়তি কনটেইনার থাকে। শুধু ফাঁকা থাকে গাড়ি রাখার জন্য নির্মিত পৃথক শেড ইয়ার্ড। গেল জানুয়ারি থেকে চলতি মার্চের মাঝামাঝি পর্যন্ত প্রতিদিনের হিসাব নিয়ে দেখা যায়, ৪ হাজার ইউনিট ধারণ ক্ষমতা থাকলেও গাড়ি ছিল ৯০০ ইউনিট কিংবা এক হাজার ইউনিট। কোন সময় গাড়ির সংখ্যা ৬০০ ইউনিট কিংবা ৭০০ ইউনিটে নেমে আসে। মাসজুড়ে শেড ইয়ার্ডের বড় অংশ ফাঁকাই থাকে।

চট্টগ্রাম বন্দরের হিসাব বিভাগ থেকে পাওয়া তথ্যে দেখা যায়, ফ্রি টাইমের পর প্রথম ৭ দিনের জন্য প্রতিটি গাড়ি রাখতে মোট ভাড়া দিতে হচ্ছে ৭৯৩ টাকা। এই ভাড়ার সঙ্গে ৫০৩ টাকা নানা ধরনের চার্জ যুক্ত হয়ে ৭ দিনের ভাড়া দাঁড়ায় ১ হাজার ২৯৩ টাকা। পরবর্তী ৭ দিন একই গাড়ির জন্য নানা ধরনের চার্জ সহ ভাড়া দাঁড়ায় ২ হাজার ৪৮৩ টাকা। ১৪ দিন পরেও খালাস না নিলে প্রতিদিনের জন্য ভাড়া গোনা শুরু হয়। প্রতিদিনই প্রতিটি গাড়ির জন্য দিতে হয় ৭০০ টাকা করে। অর্থাৎ আগে প্রথম ৭ দিন মিলে ১ হাজার ২৯৩ টাকা করে ভাড়া গুনতে হতো আমদানিকারকদের। ১৪ দিন পর প্রতিদিনই গাড়ির ভাড়া গুনতে হয় ৭০০ টাকা করে। ১৪ দিন পর সপ্তাহ ভিত্তিক ভাড়ার পরিবর্তে দৈনিক ভিত্তিক ভাড়া গোনা শুরু হয়।

অপরদিকে মোংলা বন্দরে জাহাজ থেকে গাড়ি খালাসের পর প্রথম চারদিন ফ্রি টাইম। এরপর ৭ দিন প্রতিটি গাড়ি রাখার জন্য ভাড়া গুনতে হয় ৪০০ টাকা। পরের ৭ দিন ভাড়া গুনতে হয় ৭৬৭ টাকা। এরপর বন্দর থেকে গাড়ি ছাড় না করলে অর্থাৎ ১৪ দিন পার হলে প্রতিদিন ১২৯ টাকা করে চার্জ গুনতে হয় আমদানিকারকদের। যা চট্টগ্রাম বন্দরের চেয়ে অন্তত ছয় গুন কম।

গাড়ির ইয়ার্ড শেড বছরের বেশি সময় ফাঁকা থাকছে জানিয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে ফ্রি টাইমের চারদিন পর আমদানি করা গাড়ি রাখার রেন্ট বা ভাড়া বেশি। মোংলা বন্দরে রেন্ট কম। তাই বেশিরভাগ আমদানিকারক খুলনার মোংলা বন্দরে আমদানি করা গাড়ি খালাস করেন।

গাড়ি আমদানিকারকের সংগঠন বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিকলস ইম্পোটার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। সংগঠনের সাবেক সভাপতি আবদুল হক বলেন, চট্টগ্রামের আমদানিকারকদের পাশাপাশি দেশের অন্য এলাকার আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম বন্দরেই গাড়ি খালাস করতে চান। কিন্তু বড় সমস্যা ফ্রি টাইমের পর ভাড়া। চট্টগ্রাম বন্দরের গাড়ি রাখার বাড়তি ভাড়া কোন মতে ব্যবসা বান্ধব নয়। খুলনার মোংলা বন্দরে ফ্রি টাইমের পর প্রতিদিনের গাড়ি রাখার ভাড়া অনেক কম। আর চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন গাড়ি রাখার ভাড়া ফ্রি টাইমের পর ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। আমদানিকারকরা চট্টগ্রাম বন্দরেই গাড়ি খালাস করতে চান। কিন্তু বাড়তি ভাড়া এড়াতে বাধ্য হয়ে মোংলা বন্দরকে বেছে নেন। এতে শুধু আমদানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তা নয়, চট্টগ্রাম বন্দর রাজস্ব আয় কম পাচ্ছে।

 

 

Header Ad
Header Ad

বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী

ছবি: সংগৃহীত

ভারত বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ভারত দাবি করছে—বাংলাদেশ নাকি ধ্বংস হয়ে গেছে, এ দেশ আর টিকে নেই। এসব বক্তব্যের কোনো ভিত্তি নেই, এটি দেশের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ।

শনিবার দুপুরে নাটোর জেলা পরিষদ অডিটরিয়ামে জিয়া পরিষদের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। রিজভী বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদের জাতীয়তাবাদ, স্বাধীনতা ও আত্মপরিচয়ের ভিত্তি গড়ে দিয়েছেন। সেই পথেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি আজও জনগণের দল হিসেবে টিকে আছে। বিএনপি এমন একটি দল, যাকে কোনো ষড়যন্ত্র দিয়ে দমিয়ে রাখা যায় না।

ভারতকে উদ্দেশ করে রিজভী বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে বিশ্বাস করে না, তারা চায় এই দেশ ভারতের অনুগত হয়ে থাকুক। তাই তারা একটি তাবেদার রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন দেখেছে। শেখ হাসিনার মাধ্যমে তারা সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়েছে। ফ্যাসিবাদী শাসনের ছত্রছায়ায় এই সরকার গুম, খুন, দমন-পীড়নের রাজনীতি চালিয়ে গেছে। সেই শাসনব্যবস্থাকে রক্ষা করতে ভারত মদত দিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন—ভারতকে যা দিয়েছেন, তারা তা সারা জীবন মনে রাখবে। জনগণ এখন সেই কথার অর্থ বুঝতে পেরেছে। দেশের সম্পদ লুটপাট, টাকা পাচার, বিরোধীদের দমন—সবই করা হয়েছে ভারতের আশীর্বাদে। এখন ভারত তাদের সহানুভূতি দেখাচ্ছে, কারণ তারা চায় বাংলাদেশকে নিজেদের প্রভাবাধীন রাখতেই।

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন নাটোর জিয়া পরিষদের সভাপতি আহমুদুল হক চৌধুরি স্বপন এবং সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক শাহ্ মো. শফিকুল ইসলাম।

প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। আরও বক্তব্য রাখেন জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নির্বাহী মহাসচিব প্রফেসর ড. মো. এমতাজ হোসেন, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ, রাজশাহী বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সালাম বিপ্লব, নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রহিম নেওয়াজ, সদস্য সচিব মো. আসাদুজ্জামান আসাদসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

বক্তারা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ও বিদেশি প্রভাবের বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার আহ্বান জানান।

Header Ad
Header Ad

ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসেন ভূঞাপুর ছাড়াও আশপাশের গোপালপুর, ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার অসংখ্য মানুষ। তবে জনগুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটি বর্তমানে নিজেই এক অসুস্থ প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠেছে।

বছরের পর বছর ধরে চলে আসা নানা অব্যবস্থাপনা, জনবল ও যন্ত্রপাতির ঘাটতি এবং অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ—সব মিলিয়ে এই সরকারি হাসপাতালটি এখন রোগীদের ভোগান্তির আরেক নাম।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসপাতালের ভিতর ও বাইরের পরিবেশ একেবারেই নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত। নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাবে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ, যা রোগী ও তাদের স্বজনদের দীর্ঘ সময় ধরে সইতে হচ্ছে। বিশেষ করে টয়লেটের অবস্থা ভয়াবহ; অধিকাংশ টয়লেট ব্যবহারের অযোগ্য এবং পরিচ্ছন্নতার কোনো ব্যবস্থাই নেই। পুরুষ ও নারী ওয়ার্ড উভয়ের রোগীরা এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

 

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় হাসপাতাল কার্যত অন্ধকারে ডুবে যায়। হাসপাতালে একটি জেনারেটর থাকলেও তা চালু করা হয় না এবং সেটিও বহু পুরনো। হাতে গোনা কয়েকটি চার্জিং বাল্ব থাকলেও সেগুলোর অনেকগুলোর আলো টিকেই না, কিছু সময় পর বন্ধ হয়ে যায়। শিশু ওয়ার্ডের (ডায়রিয়া) মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চার্জিং বাল্ব পর্যন্ত নেই। ফলে রাতের বেলায় এক ভয়ংকর ভূতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আলো না থাকায় নার্সদের মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশলাইট ব্যবহার করে সেবা দিতে দেখা গেছে।

চরম গরমে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধ রোগীরা। শিশু ওয়ার্ডে থাকা আটটি ফ্যানের মধ্যে তিনটি সম্পূর্ণ নষ্ট, আর যেগুলো সচল রয়েছে, বিদ্যুৎ না থাকায় সেগুলোও চলে না। ফলে শিশু রোগীরা ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস করছে, তাদের স্বজনরা হাতপাখা বা চার্জার ফ্যান নিয়ে চেষ্টা করছেন কিছুটা স্বস্তি দিতে।

হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রবেশ করে দেখা যায়, মেঝেতে ময়লার দাগ, দেয়ালে থুতু, কফ ও পানের পিকের ছিটা। শয্যা ও ওষুধ রাখার ট্রেগুলোতেও দেখা গেছে মরিচা ও জমে থাকা ময়লা। এসব স্থানে মাছি ঘুরে বেড়াচ্ছে অবলীলায়, যা পুরো হাসপাতালের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশকে আরও প্রকট করে তুলেছে।

এমন পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী, যিনি হাসপাতালের বারান্দায় ফ্যানহীন পরিবেশে ভর্তি রয়েছেন। অভিযোগ করে তিনি বলেন, মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় দেওয়ার পরও কোনো বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়নি। টয়লেট ব্যবহারের অনুপযোগিতা নিয়েও তিনি তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

তিন মাসের শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোজিনা বেগম বলেন, টয়লেটের অবস্থার কারণে তিনি পানি ও খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন, যেন টয়লেট ব্যবহার না করতে হয়। টয়লেটে ঢোকা তো দূরের কথা, পাশে দাঁড়ানোও কষ্টকর হয়ে পড়েছে দুর্গন্ধ ও অপরিচ্ছন্নতার কারণে।

গোপালপুর উপজেলার বড়শিলা গ্রামের রোগীর স্বজন সাজেদা বেগম বলেন, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে রোগীর স্বজনরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। কোনো অভিযোগ করার সুযোগ নেই, আর কেউ কিছু বললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না।

স্থানীয়দের দাবি, ২০২২ সালে ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (টিএইচও) হিসেবে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের এই বেহাল অবস্থা তৈরি হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী ও নার্স জানান, ডা. সোবহান কর্তৃত্ববাদী মনোভাব পোষণ করেন। তার বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার অভিযোগ থাকলেও প্রশাসনিকভাবে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। উল্টো অভিযোগকারীরা বদলি বা হয়রানির শিকার হওয়ার আশঙ্কা করছেন।

তবে আরএমও ডা. খাদেমুল ইসলাম বলেন, “সমস্যা যে নেই, সেটা বলছি না। তবুও আমরা সীমিত জনবল ও সামর্থ্যে কাজ করে যাচ্ছি। শতভাগ কাজ সম্ভব হয় না।”

এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আব্দুস সোবহান বলেন, “জেনারেটর থাকলেও সেটি চালাতে সরকারি বরাদ্দ নেই। মাঝেমধ্যে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় চালানো হয়। ক্লিনার মাত্র একজন, মাঝে মাঝে বাইরে থেকে লোক ডেকে এনে পরিষ্কার করাতে হয়। আর ফ্যান বা লাইট যেকোনো সময় নষ্ট হতে পারে, যখন জানা যায়, তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হয়।” বীর মুক্তিযোদ্ধার বারান্দায় চিকিৎসা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কেভিনের ব্যবস্থা রয়েছে। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে, তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

সার্বিকভাবে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসাসেবা যে ভয়াবহ নাজুক অবস্থায় রয়েছে, তা এই চিত্রগুলো স্পষ্ট করে দেয়। দ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ নজরদারি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে, এই হাসপাতাল রোগীদের সুস্থতার জায়গা হয়ে না থেকে এক ভয়াবহ দুর্ভোগের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে।

Header Ad
Header Ad

জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের

জাতীয় পার্টি (জাপা) কোনো সুবিধাবাদী দল নয় বলে দাবি করেছেন দলটির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। আজ শনিবার সকালে রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে আয়োজিত বর্ধিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমাদের নামে অনেক ধরনের অপপ্রচার করা হচ্ছে। কিছু মানুষ আমাদেরকে নানাভাবে হেনস্তা করার চেষ্টা করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন মাধ্যমে বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে জানাশোনা কথাকে তারা ভুলভাবে তুলে ধরছেন। তাদের কথা হলো- আমরা সুবিধাবাদী, সুবিধাভোগী।

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, আমরা বলতে চাই জাতীয় পার্টির সিংহভাগ মানুষ সব সময় জনগণের পাশে ছিল। জনগণের স্বার্থে তারা সংগ্রাম করেছে। আগামীতেও তারা জনগণের পাশেই থাকবে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ নিয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে ভারত: রিজভী
ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালই যেন নিজেই অসুস্থ!
জাতীয় পার্টি কোনো সুবিধাবাদী দল নয়: জিএম কাদের
প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট নিয়ে আইসিইউতে পরিচালক সৃজিত মুখার্জি
জুলাই গণঅভ্যুত্থান যেন কোনোভাবেই ব্যর্থ না হয় : নাহিদ ইসলাম
আ.লীগের মিছিল ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশ
হাসিনা-কাদেরসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন
নিখোঁজের ১৪ ঘণ্টা পর সেই শিশু সেহেরিশের লাশ উদ্ধার
আগামী ঈদের আগেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কাজ করছে সরকার
লাল কাপড়ে ঢাকা হবে দেশের সব পলিটেকনিকের ফটক
৬০ বছর বয়সে বিয়ে করলেন বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ
চুয়াডাঙ্গা সীমান্তে ১২ কেজি রূপার গয়না জব্দ
ফয়জুল করীমকে বরিশালের মেয়র ঘোষণার দাবি
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে অংশ নেওয়া বাংলাদেশি যুবক নিহত
গোবিন্দগঞ্জে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আটক
বাংলাদেশি যুবককে ধরে নিয়ে বিএসএফের হাতে তুলে দিল ভারতীয়রা
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনসিপির বৈঠক শনিবার
বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে যা জানাল পাকিস্তান
গাজায় ইসরায়েলের বিমান হামলা, শিশুসহ একই পরিবারের ১৩ জন নিহত
ভারতীয় ক্রিকেটাররা আমাকে নগ্ন ছবি পাঠাত, অভিযোগ ট্রান্সজেন্ডার ক্রিকেটারের