কুড়িগ্রামে বসতবাড়িতে সংকটাপন্ন হগ বেজার
কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলায় স্থানীয় এক ব্যাক্তির বসতবাড়ির নির্মাণাধীন ঘরে একটি সংকটাপন্ন হগ বেজার প্রাণি পাওয়া গেছে। বাংলাদেশে আঞ্চলিকভাবে এ প্রাণিটি গোরখোদক নামে পরিচিত।
শুক্রবার (১২ মে) দুপুরে উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কাচারিপাড়া গ্রামের গাজিউর রহমানের বাড়িতে প্রাণিটি পাওয়া যায়।
এদিকে এলাকায় অপরিচিত প্রাণির আবির্ভাবে অনেকে কৌতুহল নিয়ে প্রাণিটি দেখতে যাচ্ছেন। শুক্রবার থেকেই গাজিউর রহমানের বাড়িতে ভিড় করছেন স্থানীয় নারী-পুরুষ ও শিশুরা। তবে কেউ প্রাণিটির পরিচয় জানাতে পারেনি।
স্থানীয় সংবাদকর্মী জিতেন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি নিজে প্রাণিটি দেখতে গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখি প্রাণিটি বারবার ঘরের ভেতরে থাকা বালু খুঁড়ছে। প্রাণিটি কোথায় থেকে কীভাবে এসেছে তা বাড়ির মালিক বলতে পারছেন না। স্থানীয়রা এর আগে এই প্রাণি কখনও দেখেননি। কেউ এটির পরিচয়ও বলতে পারছেন না।’
বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলার কাছে প্রাণিটির ছবি পাঠিয়ে এ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে জোহরা মিলা প্রাণিটির পরিচয় নিশ্চিত করে জানান, এটি হগ বেজার বা গোর খোদক। অনেকে এটিকে ঘরখুদিনি বা ঘরখোন্দকও বলে থাকেন। এটি একটি স্তন্যপায়ী প্রাণি।
জোহরা মিলা আরও জানান, ইন্টারন্যাশনাল ফর ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অব ন্যাচার (আইইউসিএন) এর লাল তালিকা অনুযায়ী এটি সংকটাপন্ন প্রাণি। বাংলাদেশে প্রথম ২০১২ সালে এটি দেখা যায়। এটি বন্যপ্রাণি (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২ এর তফসিল ১ (এক) ভুক্ত। এখন পর্যন্ত দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ৬ থেকে ৭ টি হগ বেজারের অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। ভারতের উত্তর-পূর্বে বেশ কিছু হগ বেজারের বিচরণ রয়েছে। কুড়িগ্রামের হগ বেজারটি সম্ভবত ভারত থেকে দলছুট হয়ে এসে থাকতে পারে।
এই প্রাণিবিদ বলেন, ‘হগ বেজার নিজেই মাটি খুঁড়ে নিজের বাসা তৈরি করে। এরা জীবজন্তুর পচা-গলা মৃতদেহ খেয়ে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখে। এর ফলে মৃত প্রাণির দেহ থেকে যে রোগজীবাণু ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকে তা অনেকটাই কমে গিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা হয়।
হক বেজার পাওয়ার খবরে কুড়িগ্রাম বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ রাশিদ আরিফ বলেন, এটি ভারত থেকে রাজিবপুর সীমান্তে প্রবেশ করে থাকতে পারে। আমি স্থানীয় কর্মকর্তাকে পাঠিয়ে এটি উদ্ধারের ব্যবস্থা নিচ্ছি। বন্যপ্রাণি বিভাগের সাথে যোগাযোগ করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
/এএস