অধিকাংশ সময়ই বন্ধ থাকে গাইবান্ধার কমিউনিটি ক্লিনিক
গ্রামের দরিদ্রদের জন্য দ্রুত স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে স্থাপিত হয় কমিউনিটি ক্লিনিক। কিন্তু অনেক ক্লিনিকই নিয়ম মেনে চলছে না। অধিকাংশ ক্লিনিক বেশিরভাগ সময়ে বন্ধ থাকায় স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষজন। আবার কিছু সময় ক্লিনিকগুলো খুললেও প্রয়োজনীয় ওষুধ না পেয়ে ফিরে যেতে হয় রোগীদের। ক্লিনিকগুলোর অনিয়মের মধ্যে চললেও দেখার কেউ নেই।
বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা। গাইবান্ধার সদর উপজেলার বোয়ালী কমিউনিটি ক্লিনিক গিয়ে দেখা যায়, অফিস তালাবন্ধ। স্থানীয়দের কাছ জানা যায় কোন দিন কখন খোলা হয় তা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল।
একই চিত্র চৌরঙ্গী কমিউনিটি ক্লিনিকে। দুপুর ১২টার দিকে খামার চান্দের ভিটা কমিউনিটি ক্লিনিকে গেলেও বন্ধ দেখা যায় ক্লিনিকটি। এসময় কয়েকজন রোগীকে অপেক্ষা করতেও দেখা যায়। তবে সাংবাদিক আসার তথ্য পেয়ে ১০ মিনিট পর চলে আসেন স্বাস্থ্যকর্মী। এসময় তিনি তড়িঘড়ি করে ক্লিনিকটি খুলে অপেক্ষামান রোগীদের ওষুধ দেন। তবে এ ক্লিনিকটিও যথাসময়ে খোলা হয় না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
এই গ্রামের রহিমা বেগম জানান, প্রতিদিন খোলা হয় না ক্লিনিক। নিজেদের ইচ্ছামতো খোলা হয়। কোনো দিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও স্বাস্থ্যকর্মীদের দেখা মেলে না। একারণে নারী, বয়স্ক ও শ্রমজীবীসহ সাধারণ মানুষজন এই ক্লিনিকগুলোর উপর আস্থা হারিয়েছেন।
সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের আরিফ হোসেন বলেন, বেশিরভাগ সময়ই খামার বোয়ালী ক্লিনিক বন্ধ থাকে। আর খুললেও ওষুধ মেলে না। মানুষজন ক্লিনিক থেকে সেবা পাচ্ছেন না।
সেবা ও ওষুধ নিতে এলেই দায়িত্বরত কর্মীরা জানান ওষুধ নেই। একই কথা শুনতে হয় মাসের পর মাস। আসলে এখানে কী সেবা দেওয়া হয় এটি অনেকেই জানেন না।
এদিকে, বিলম্বে আসা এক স্বাস্থ্যকর্মীকে কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি অন্তহীন অজুহাতের ফিরস্তি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, কোনো কোনো দিন পারিবারিক সমস্যার কারণে আসতে দেরি হয়।
সদর উপজেলার চৌরঙ্গী কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি হেলাল মিয়া জানান, নিয়মিত খোলা থাকে ক্লিনিক তবে, মাঝে মাঝে অফিসিয়াল কাজের কারণে বন্ধ রাখতে হয়।
এই ক্লিনিকের পাশের বাসিন্দা স্বপন মিয়া জানান, নিয়মিত খোলা হয় না এটি। একারণে মানুষ প্রয়োজনের সময় জেলা শহরের গিয়ে চিকিৎসা নিয়ে আসে।
জনগণের জন্য স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে সরকারের এই মহতি উদ্যোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। এজন্য কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর প্রতি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি দেবেন এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।
গাইবান্ধার ফুলছড়ি উপজেলা পরিবার স্বাস্থ্য কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান জানান, নিয়মিত মনিটরিং করা হয় তবে, অনেক ক্ষেত্রে কিছু কিছু কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডাররা দায়িত্ব অবেহলা করে থাকেন। সেগুলোও আমরা দেখছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।
এসএন