নৌকাডুবি: বোদেশ্বরী মন্দিরেও শোকের ছায়া
নৌকা ডুবির ঘটনায় পঞ্চগড় বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ঐতিহাসিক বোদেশ্বরী মন্দিরেও বইছে শোকাবহ পরিবেশ। মহালয়ার দিনে এমন ঘটনা নাড়া দিয়েছে সবাইকে। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তরাও প্রার্থনা করছেন নৌডুবিতে নিহতদের জন্য।
ধর্মীয় সত্য যুগের সৃষ্টি সনাতন ধর্মাম্বলীদের ঐতিহাসিক বোদেশ্বরী মন্দিরে দিনভর পূজা আর্চনায় ব্যস্ত পুরহিতরা। পবিত্র এ ভূমিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা ভক্তদের আশা আকাঙ্ক্ষা পূরণে মন্দিরে পূজায় মগ্ন হন।
জানা গেছে, নিয়মিত পূজা অর্চনার পাশাপাশি প্রতি বছর দুর্গাপূজা শুরুর ষষ্ঠ দিনে দেশ-বিদেশ থেকে হাজার হাজার পূজারি আসেন মন্দির প্রাঙ্গণে। বহু বছর ধরে আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে এখানে মহালয়ার দিনে তারা একত্রিত হতেন। অথচ এমন একদিনে (২৪ সেপ্টেম্বর) করতোয়া নদীতে নৌ ডুবির ঘটনায় একসঙ্গে এত মৃত্যুর ঘটনায় ব্যথিত সবাই।
মন্দির কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, মোঘোল আমলে সায়েস্তা খানের কাছে পরাজিত হয়ে ভারতের কুজবিহার রাজার বংশধর প্রাণ নারায়ণ ১৬৬৩ খ্রিষ্টাব্দে এই মন্দিরে আশ্রয় নেন। পরে ১৬৬৭-৬৮ সালে স্থাপিত মন্দিরটি সংস্কারের পর নামকরণ করা হয় বোদেশ্বরী মন্দির হিসেবে।
অপরুপ নির্দশন এ মন্দিরে এসে দেশ, জাতি, পিতা, মাতা ও নিজের মঙ্গল কামনার পাশাপাশি মহালয়ার দিনে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিহতদের স্মরণে প্রার্থনা করছেন বলে জানান ভক্তরা।
মন্দিরের ঐতিহ্য তুলে ধরে সেদিনের ঘটনায় বিস্মিত বলে ঢাকাপ্রকাশ-কে জানান বকুল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, প্রতি বছরেই মহালয়া উপলক্ষে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ভক্তরা পূজা-অচর্না করতে আসেন। গত রবিবারও হাজার হাজার ভক্ত পূজা করতে আসে। কিন্তু আউলিয়া ঘাটে নৌকা দিয়ে নদী পার হয়ার সময় অর্ধশতাধিক মানুষ পানিতে ডুবে যায়। যারা মারা গেছে তাদের জন্য পূজা প্রার্থনা করা হচ্ছে।
পৃথিবীর ৫১টি মন্দিরের মধ্যে বোদেশ্বরী একটি জানিয়ে ভক্তদের মঙ্গল কামনা করেন বোদেশ্বরী মন্দির কমিটির সভাপতি নীতিশ বক্সী।
তিনি বলেন, করোতোয়া নদী আউলিয়া ঘাটে প্রায় অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি নৌকা পানির গভীর তলদেশে ডুবে যায়। এতে ৬৯ জন প্রাণ হারান। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। মৃতদের অন্ত্যোষ্টিক্রিয়া সম্পূর্ণ করার জন্য বোদেশ্বরী মন্দিরের পক্ষে কিছু অর্থ সহায়তা করা হবে বলে জানান তিনি।
এসএন