নওগাঁয় আ.লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী ফারজানা পারভীন আটক

নওগাঁর পত্নীতলায় ইউপি নির্বাচনে তিনটি ভোটকেন্দ্রে ভোট গণনা নিয়ে পুলিশের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র ছিনতাই ও হামলার ঘটনায় ঘোষনগর ইউপির আ.লীগ বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ফারজানা পারভীনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) বিকালে করা এক মামলায় ১১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা দুই আড়াই হাজার মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রধান আসামি ফারজানা পারভীন।
পত্নীতলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শামসুল আলম শাহ বলেন, মামলায় ঘোষনগর ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ফারজানা পারভীনকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। তাকে বুধবার (০৫ জানুয়ারি) রাতেই ঘোষনগর ভোটকেন্দ্র এলাকা থেকে আটক করা হয়। বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। পুলিশের কাছ থেকে ছিনতাই হওয়া অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার এবং এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ বলা হয়েছে, বুধবার পঞ্চম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ঘোষনগর ইউপির ঘোষনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কমলাবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং নজিপুর ইউপির রঘুনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের পর প্রিসাইডিং কর্মকর্তারা ফলাফল ঘোষণা না করেই কেন্দ্র ত্যাগ করার চেষ্টা করেন। এ সময় কেন্দ্রগুলোর আশপাশে থাকা কয়েক হাজার মানুষ পুলিশ, আনসার ও ভোট গ্রহণের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের পথ রোধ করেন। এ সময় ভোটের দায়িত্বে থাকা স্ট্রাইকিং ফোর্সের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক আবদুল গণি ও পত্নীতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অন্য পুলিশ সদস্যদের নিয়ে তাদের উদ্ধার করতে যান। উত্তেজিত জনতা ঘোষনগর কেন্দ্রের কাছে পুলিশের একটি পিকআপ ও রিকুইজিশন করা একটি মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়।
এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শটগান থেকে ২৮টি গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষের সময় এক পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে ১টি শটগান ও ২০টি গুলি ছিনতাই করে দুর্বৃত্তরা। রঘুনাথপুর ভোটকেন্দ্রের কাছে কর্তব্যরত ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের উদ্ধার করতে গিয়ে পুলিশের স্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্যদের সঙ্গে স্থানীয় জনগণের সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আরও ১১১টি গুলি ছোড়ে।
নওগাঁর পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া জানান, বুধবার (০৫ জানুয়ারি) রাতে নওগাঁর পত্নীতলা উপজেলার ঘোষনগর ইউপিতে পুলিশের একটি পিকআপ ও রিকুইজিশন করা একটি মাইক্রোবাসে অগ্নিসংযোগ, অস্ত্র ছিনতাই ঘটনায় হামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া ভোটের দায়িত্বে থাকা একজন ম্যাজিস্ট্রেটের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। বেশ কিছু ব্যালট বাক্সও ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। হামলায় পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর এবং ব্যালট বাক্স ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে।
অন্যদিকে, এ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের মধ্যে চারটি ইউনিয়নে নির্বাচনী পরবর্তী সহিংসতায় ফলাফল ঘোষণা স্থগিত রয়েছে। ৭টি ইউপির ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। স্থগিত ইউনিয়নগুলো হলো, ঘোষনগর, কৃষ্ণপুর, পত্নীতলা এবং আকবরপুর ইউনিয়ন।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মাহমুদ হাছান বলেন, পত্নীতলা উপজেলার চারটি ইউপির পাঁচটি ভোটকেন্দ্রে সংঘর্ষের কারণে ওই চার ইউপির ফলাফল স্থগিত রাখা হয়েছে। ওই পাঁচটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ করা হবে। এরপর ওই চার ইউপির ফলাফল ঘোষণা হবে।
/এএন
