আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ তিন নারীর মৃত্যু

রংপুর বিভাগে কনকনে শীতে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে গিয়ে দগ্ধ হয়েছিলেন তিন নারী। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার সন্ধ্যায় তাদের ২ জন এবং বৃহস্পতিবার ১ জন মারা গিয়েছেন।
বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের প্রধান ডা. এম এ হামিদ পলাশ।
নিহতরা হলেন, দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার বৃদ্ধা তারামনি রায় (৮৫), কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলার আশা রানী (৪৫) এবং রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার সন্তোসপুর গ্রামের শামসুন্নাহার বেগম (৫৫)।
তিনজনই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালের বার্ন ইউনিটসহ অন্য ওয়ার্ডে চিকিৎসা নিচ্ছেন ২২ জন রোগী।
হাসপাতালের বার্ন ইউনিট সূত্রে জানা যায় মারা যাওয়া তিনজনের শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এজন্য তাদের বাঁচানো যায়নি।
বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহিন শাহ জানান, শীত নিবারণে আগুন পোহাতে গিয়ে ঘটছে এমন দুর্ঘটনা। দগ্ধদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। হাসপাতালের ১৪ শয্যার বার্ন ইউনিটসহ বিভিন্ন ওয়ার্ডে দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১০ জনকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। চিকিৎসাধীন রোগীদের বেশিরভাগের শরীরের নিচের অংশ ৩০ থেকে ৬০ ভাগ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। বর্তমানে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বার্ন ইউনিটে ২২ জন দগ্ধ রোগী চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে সবশেষ গত পাঁচ দিনে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন। চিকিৎসাধীন দগ্ধ রোগীদের মধ্যে এক বৃদ্ধাসহ আরও তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার রংপুর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়াতে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা আজ দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। হিমেল বাতাস আর ঘন কুয়াশা শীতের তীব্রতাকে বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। চলতি মাসেই তিনটি শৈত্যপ্রবাহ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। রংপুরের বিভিন্ন এলাকায় সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শীতার্তদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
এ ব্যাপারে রংপুরের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাসেল মিয়া বলেন, ‘শীতের শুরুতে রংপুরে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫২ হাজার ৬০০ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া সিটি করর্পোরেশন, পৌরসভা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের জন্য বরাদ্দ পাওয়া ১ কোটি ১০ লাখ ৯৩ হাজার টাকা থেকে শীতবস্ত্র ক্রয় করে বিতরণ কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।’
জিএমএ/এএন
