কুড়িগ্রাম হাসপাতালে অর্ধশতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগী

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে শীতের তীব্রতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। শয্যা সংকটে ওয়ার্ডের মেঝেতে বিছানা করে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। গত তিন দিনে ৪৫ থেকে ৫০ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকালে কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. পুলক কুমার এ তথ্য জানিয়েছেন।
হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গেলে কর্তব্যরত নার্স জানান, গত কয়েকদিন ধরে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এসব রোগীর মধ্যে শিশুই বেশি। বারো বেডের এই ডায়রিয়া ওয়ার্ডে গত সোমবার (৩ জানুয়ারি) ২২ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়।
দায়িত্বরত নার্স লাবনী বেগম জানান, শীতের তীব্রতা বাড়ায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. পুলক কুমার জানান, শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি।
কুড়িগ্রাম হাসপাতালের শিশু বিভাগে চিকিৎসক ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আল আমিন মাসুদ বলেন, শীত এলেই কুড়িগ্রামে শিশুরা ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়। এখন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। রোটা ভাইরাস ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়াচ্ছে। এ অবস্থায় শিশুদের বাইরের খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। পাশাপাশি শিশুদের যেন ঠান্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এছাড়া সঠিক পদ্ধতিতে আধা লিটার পানিতে পুরো স্যালাইন গুলিয়ে সঠিক নিয়মে শিশুদের খাওয়াতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন এই চিকিৎসক।
জানুয়ারির শুরুতেই এ জেলায় শীতের তীব্রতা বেড়ে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। এতে করে ছিন্নমূল মানুষের ভোগান্তি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, তিনদিন থেকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে ওঠানামা করছে। বুধবার (০৫ জানুয়ারি) সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবার (০৬ জানুয়ারি) সকাল ৯ টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীত মোকাবিলায় জেলার শীতার্ত মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা। এছাড়াও বেসরকারি পর্যায়েও শীতবস্ত্র বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখা জানায়, শীত মোকাবেলায় জেলার ৯ উপজেলায় ও তিন পৌরসভায় ৩৫ হাজার ৭শ কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও নিম্নবৃত্তদের শীতবস্ত্র ক্রয়ের জন্য উপজেলার চাহিদাভেদে ৮ থেকে ১৪ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
/এএন
