ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং, আশ্রয়নে অর্ধলক্ষ মানুষ
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে মাঝারি থেকে ভারি বর্ষনের সাথে সাথে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে বাড়ছে বাতাসের গতি। এতে আতঙ্কে রয়েছে বাগেরহাটের কয়েকটি উপজেলার মানুষ। সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধা পর্যন্ত জেলার মোংলা, শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলার অর্ধলক্ষাধিক মানুষ আশ্রয়ন কেন্দ্রে পৌঁছেছে। কেউ কেউ গৃহপালিত পশু ও মূল্যবান মালামাল নিয়েও আশ্রয়কেন্দ্রে এসেছেন।
সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসন ও রেড ক্রিসেন্টের স্বেচ্ছাসেবকরা মানুষকে আশ্রয়ন কেন্দ্রে যেতে সহযোগিতা করছে। এর আগে গতকাল রবিবার রাত থেকে সতর্কতামূলক মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন ও কোস্টগার্ড।
সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আজাদ কবির জানান, সোববার বিকালে প্রচন্ড বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রতিনিয়ত বাতাসের গতি বাড়ছে। সুন্দরবনে এখন বাতাসের অনেক গতি দেখা যাচ্ছে।
উপকূলীয় শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, বাতাসের গতি ক্রমেই বেড়ে চলেছে। সিডর ও আইলাসহ প্রাকৃতিক দূর্যোগের সাথে যুদ্ধ করা এই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। তাই অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করছে।
জেলা কন্ট্রোল রুম সুত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধা সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ৫০ হাজার ৭০০ মানুষ এবং ৪ হাজার ৭০০ টি পশু আশ্রয়ন কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। ৩৪৪ টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লক্ষাধিক মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
এছাড়াও ২৯৮ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষের জন্য শুকনা খাবার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। দূর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ১০টি কন্ট্রোল রুম, প্রয়োজনীয় সংখ্যক মেডিকেল টিম ও স্বেচ্ছাসবক প্রস্তুত রয়েছে বলে জেলা প্রশাসক জানান।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো বাতাস বয়ে যেতে পারে, সেই সঙ্গে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছাসে প্লাবিত হতে পারে।
এএজেড