ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাব, ঝূঁকিপূর্ণ বাঁধে চিন্তিত উপকূলবাসী
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সোমবার ভোররাত থেকে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরায় টানা বৃষ্টি ও দমকা হওয়ার পাশাপাশি নদ-নদীগুলোতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া বাড়তে থাকায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন উপকূলীয় এলাকার কয়েক লাখ মানুষ।
সাতক্ষীরা উপকূলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় ৮০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ৩৫টি পয়েন্টের ২০০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিতে থাকায় ওই এলাকার জনপদগুলো ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে, স্থানীয়দের নিরাপদে স্থানে যেতে জেলা প্রশাসন ও টুরিস্ট পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হচ্ছে। জেলার আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা থেকে প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রত্যেক বছর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়, আর প্রত্যেক বছরই তারা পায় আশার বাণী!কিন্তু ভাগ্যের চাকা ঘোরে না এই উপকূলীয় এলাকার মানুষদের।
ক্ষোভ প্রকাশ করে তারা বলেন, শুধুমাত্র দুর্যোগকালীন সময়ে টনক নড়ে সংশ্লিষ্টদের। বাকি সময় তাদের দেখা মেলেনা। আমরা বেড়িবাঁধ নিয়ে সবসময় আতঙ্কে আছি! না জানি আবার কখন ঘরবাড়িসহ সব কিছু ভাসিয়ে নিয়ে যায়।
এদিকে আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগরের দৃষ্টিনন্দন এলাকায় পানি লোকালয়ে আসতে শুরু করেছে। বালি ভর্তি জিও ব্যাগ দিয়ে তা বন্ধ করা হলেও ওই এলাকার বেড়িবাঁধ গুলো জরাজীর্ণ হওয়ায় ভাঙ্গন আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয়রা।
এছাড়াও জেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশাশুনি ও শ্যামনগর মিলিয়ে ৩৫টি বাঁধের পয়েন্ট ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। ঝুঁকি মোকাবিলায় ৮৫ হাজার সিনথেটিক ব্যাগ ও ১২ হাজার জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির বলেন, আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলা থেকে ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। আশাশুনির প্রতাপনগর এলাকার এক স্থানের বাঁধ লিকেজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংস্কার করা হয়েছে।
এছাড়া প্রত্যেক ইউনিয়নে মেডিকেল টিম প্রস্তুতকরণ, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও খাওয়ার পানি মজুদ রাখা, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানোর জন্য ফায়ার সার্ভিস, অ্যাম্বুলেন্স ও স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই সাথে উপকূলের ঝূঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এএজেড