ধান চাষে এত হোঁচট সইতে পারছে না কৃষক!
একদিকে প্রায় দ্বিগুণ হারে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি কারণে হাল চাষে ব্যাপক হারে প্রভাব পড়েছে। অপরদিকে, বার বার আসছে যমুনার নদীর পানির কালো থাবা। উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল আর টানা বৃষ্টিতে বিগত তিন দফার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে নিম্নাঞ্চলের রোপা আমন ধানের বীজতলা-ধানের চারা তলিয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে করে ঋনের বোঝায় হতাশাগ্রস্থ হয়ে পড়ছে কৃষকরা।
তৃতীয় দফায় পানি বাড়লেও এতে কোন প্রভাব না পড়ায় ঘুরে দাঁড়াতে সেচ পাম্পের মাধ্যমে ফের আমন ধানের চারা রোপন শুরু করছিল কৃষকরা। চতুর্থ দফায় যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করে এবার অসংখ্য জমিতে লাগানো ধানের চারা তলিয়ে গিয়ে পচে ও নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এতে করে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন টাঙ্গাইলের কৃষকরা।
শুক্রবার (১৬ আগস্ট) বিকালে জেলার কালিহাতী উপজেলার গোহালিবাড়ী, সরাতৈল এবং ভূঞাপুর উপজেলার কয়েড়া, ফকির কেল্লা, নিকরাইল ও মাটিকাটা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও যমুনা নদীর পানি এসব এলাকাগুলোতে প্রবেশ করে। মঙ্গলবার থেকে পানি নেমে গেলেও তলিয়ে যাওয়া ধানের চারা ঘোলা পানির কারণে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ধানের চারাগুলো পানিতে ন্যুয়ে পড়েছে।
কয়েড়া গ্রামের কৃষক রাশেদ আলী জানিয়েছেন, অতি বৃষ্টি ও নদীর পানি এসে ধানের চারা তলিয়ে যাচ্ছে। এরআগে বীজতলায় তলিয়ে পচে গিয়েছিল। ফলে ধানের চারা সংকটে পড়তে হয়। দুই সপ্তাহ ১ বিঘার জন্য ২ হাজার ৫০০ টাকা ধানের চারা কিনে লাগিয়েছি। খুব সুন্দর ধান হয়েছিল। কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি ও বন্যার পানিয়ে তা তলিয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে তেমন নষ্ট হবে না। কিন্তু দীর্ঘদিন থাকলে পচে যাবে।
কৃষক জলিল বলেন, কৃষকের চারদিকেই মরণ। তেলের দাম বেশি, এতে করে হাল চাষের খরচও দ্বিগুণ। যখনি ধানের চারা জমিতে লাগাই তখনি অতিরিক্ত বৃষ্টি ও বন্যার পানি প্রবেশে নিঁচু এলাকার জমির ধানের চারা নষ্ট হয়ে যায়। বার বার এত হোঁচট-কষ্ট সইতে পারছি না। স্বপ্নগুলো চোখের সামনে পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এবারো ক্ষতির আশঙ্কা।
এ প্রসঙ্গে ভূঞাপুর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. হুমায়ূন কবীর জানান, পানি নেমে যাওয়ায় ধানের চারাগুলো সোজা হয়ে দাড়াবে এবং মাজা ভাঙা চারাগুলোতে নতুন করে কুশি গজাবে। তাই ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. আহসানুল বাসার জানান, ধানের চারা তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টির ব্যাপারে অবগত না। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তদন্ত করে প্রতিবেদন দিবেন।
এএজেড