যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা ভেস্তে গেলে তার বাহিনী ফের ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
যুদ্ধবিরতি শুরুর কয়েক ঘণ্টা আগে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, এই যুদ্ধবিরতি ‘স্বল্প সময়ের’ এবং ইসরায়েল গাজায় ফের হামলার অধিকার রাখে, তাতে পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থনও থাকবে।
ভাষণে ইসরায়েলি এ প্রধানমন্ত্রী হামাস নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে মারাসহ গেল ১৫ মাসের যুদ্ধে তার বাহিনীর ‘সফলতার গুণগানও’ করেন।
“আমরা মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিয়েছি। হামাস এখন সম্পূর্ণ একা,” বলেন তিনি।
শনিবারের এ ভাষণের আগে নেতানিয়াহু চুক্তির শর্তের ব্যাপারে শক্ত অবস্থান নিয়ে বলেছিলেন, হামাস কোন কোন জিম্মিকে ছাড়বে তার তালিকা না পেলে ইসরায়েল চুক্তি বাস্তবায়ন করবে না।
“চুক্তির লংঘন বরদাস্ত করবে না ইসরায়েল,” বলেছিলেন তিনি।
প্রথম ধাপে হামাস যে ৩৩ জিম্মিকে মুক্তি দেবে তার একটি তালিকা এরই মধ্যে ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো ছাপিয়েছে, তবে তালিকাটি সঠিক কিনা তেল আবিবের পক্ষ থেকে তা নিশ্চিত করা হয়নি।
রোববার কোন তিন জিম্মি মুক্তি পাবে ইসরায়েলি কর্মকর্তারা এখন তার অপেক্ষায় আছে বলে জানিয়েছে। এদিন স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টায় গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার কথা।
প্রথম ধাপে ইসরায়েলও এক হাজার ৮৯০ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা। এর পাশাপাশি তাদেরকে গাজা থেকে বাহিনী প্রত্যাহারও শুরু করতে হবে।
রোববার কোন এলাকা দিয়ে হামাস তিন জিম্মিকে মুক্তি দেবে তা নিশ্চিত না হওয়ায় ইসরায়েল উত্তর, মধ্য ও দক্ষিণ গাজার সীমান্তে তিনটি অভ্যর্থনা কেন্দ্র বানানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা।
প্রথম দিন হামাস যাদের ছেড়ে দেবে তারা সবাই নারী বলে গোষ্ঠীটির ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ফ্রান্সভিত্তিক একটি বার্তা সংস্থা।
এদিকে যুদ্ধবিরতি শুরুর ক্ষণগননার মধ্যেও গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর বিমান হামলা অব্যাহত আছে। বুধবার চুক্তির ঘোষণা আসার পর এ পর্যন্ত হামলায় ১২০ জনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাসের কর্মকর্তারা।
শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তেল আবিবে জড়ো হয়ে হাজারো মানুষ চুক্তির প্রথম ধাপে থাকা সব শর্ত ঠিকঠাক মেনে আরও জিম্মির মুক্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
“আমরা হয়তো আরও ২০০ সেনা ও ১০ জনেরও বেশি জিম্মিকে বাঁচাতে পারতাম। সরকার সময়মতো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি, তারা ট্রাম্পের জন্য অপেক্ষা করেছে,” বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিস ফোরামের সদস্য গ্যাল এলকেলাই।
শনিবার তেল আবিবের কাছে এক রেস্তোরাঁয় ছুরি হামলায় একাধিক লোক আহত হয়েছে বলেও জানিয়েছে ইসরায়েলের পুলিশ।
বেসামরিক এক নাগরিকের গুলিতে হামলাকারী ঘটনাস্থলে নিহতও হয়েছে; সন্দেহভাজন ওই হামলাকারী দখলকৃত পশ্চিম তীরের তুলকারাম দিয়ে ‘অবৈধভাবে’ তেল আবিবে প্রবেশ করেছিল, জানিয়েছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম।