কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে ৫০ শয্যার হাসপাতালে নেই ৩১ শয্যার লোকবলও
চর রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের নতুন ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়েছে আট বছর আগে। নানা সরঞ্জামও আনা হয়েছে। ৫০ শয্যার কার্যক্রমও শুরু করা হয়েছে। কিন্তু চলছে ৩১ শয্যার জনবল দিয়ে। তবে ৩১ শয্যার জন্য যে লোকবল প্রয়োজন, সেটিও নেই এ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে।
এমন অবস্থা কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের। স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে একমাত্র এক্স-রে যন্ত্রটি দীর্ঘদিন ধরে বিকল হয়ে আছে টেকনিশিয়ানের অভাবে। অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে একটি, সেটির সেবাও ঠিকভাবে পাচ্ছে না সেবাগ্রহীতারা।
সেবাগ্রহীতা কুলসুম বেওয়া, হনুফা বেগম ও সুখ বানু বলেন, হাসপাতালে এসে তেমন সেবা পান না। দূর-দূরান্ত থেকে এসেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। ওষুধ থাকে না। ডাক্তার দেখার পর ওষুধ লিখে দিলে টাকার অভাবে সেই ওষুধগুলোও কিনতে পারেন না তাঁরা।
স্থানীয় হারুন রশীদ, হাবিবুর রহমান, আব্দুস সালামসহ অনেকে জানান, হাসপাতালটিতে জ্বর, ঠান্ডা-কাশি, ডায়েরিয়া ছাড়া তেমন অন্য কোনো রোগের সেবা পাওয়া যায় না। তবে জনবল সংকটকে দায়ি করেন তারা।
উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের তথ্য মতে, জুনিয়র কনসালটেন্ট ৫জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স ৩জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ১জন, ক্যাশিয়ার ১জন, পরিসংখ্যানবিদ ১জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৩জন, সহকারী নার্স ১জন, কম্পাউন্ডার ১জন, স্বাস্থ্য সহকারী ২জন, হারবাল সহকারী ১জন, কাম-কম্পিউটার অপারেটর ৩জন, নিরাপত্তা প্রহরী ২জন, আয়া ১জন, বাবুর্চি ১জন, মালি ১জন, অফিস সহায়ক ১জন, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ১জন, ওয়ার্ড বয় ১জনসহ মোট ৩০টি পদই শূন্য রয়েছে।
এ গেলো ৩১ শয্যার কথা। ৩১ শয্যাতেই ৩০টি পদই শূন্য। আবার এই ৩১ শয্যার ৩০টি শূন্য পদ নিয়েই চলছে ৫০ শয্যার হাসপাতাল।
স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা বলছেন, এতোগুলো পদ শূন্য ও মেডিকেল অফিসার, সার্জারীসহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদও শূন্য রয়েছে। এ কারণে কাঙ্ক্ষিত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না তাঁদের।
কথা হয় রাজিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সারওয়ার জাহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, জনবল সংকটের কারণে রোগীদের সেবা প্রদান অত্যন্ত কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এছাড়া এ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে অপারেশন থিয়েটার থাকলেও নেই অপারেশনের যন্ত্রপাতি। পদ বিদ্যমান থাকলেও আজ পর্যন্ত কোনো কনসালট্যান্টের পদায়ন হয়নি। টেকনিশিয়ানের অভাবে আমাদের এক্সরে মেশিনও পড়ে আছে।
তিনি আরও বলেন, এ স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সটি ৫০ শয্যার হলেও জনবলের অনুমোদন ৩১ শয্যার। ৩১ শয্যা হিসেবে জনবলের ঘাটতি প্রায় ৩৫ শতাংশ। এর ফলে কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে আমদের প্রতিনিয়তই হিমশিম খেতে হচ্ছে।