প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজে কপাল পুড়ল কৃষকদের
নীলফামারীর ডোমারে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রণোদনার গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের বীজে কপাল পুড়েছে বেশির ভাগ কৃষকের। উপজেলার ৯০ জন কৃষক চলতি মৌসুমে অধিক লাভের আশায় অন্য ফসল বাদ দিয়ে কৃষি অফিসের উৎসাহে গ্রীষ্মকালীন পেয়াঁজ চাষ করেন। কিন্তু ৫ মাস অতিবাহিত হলেও পেয়াঁজ গাছে ফল না আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন কৃষকরা। এ বিষয়ে কৃষকরা কৃষি বিভাগকে বিষয়টি অবগত করলেও কৃষি বিভাগ থেকে শুধু তাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পাঙ্গাঁমটুকপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ মটুকপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ড়ের প্রনোদনার সুবিধাভোগী পিয়াজ চাষী মনোয়ার হোসেন বলেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের কথায় আমি ২৫ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ চাষ করি। কৃষি অফিস থেকে আমাকে নাসিক-৫৩ পেয়াঁজ বীজ ও বিকাশের মাধ্যমে ২ হাজার ৮০০ টাকা প্রদান করে। আমি তাদের পরামর্শে বীজ বপনের পর থেকেই জমিতে সার, স্প্রে ও নিরানি করতে থাকি। কিছুদিনের মধ্যেই পেঁয়াজ গাছ বড় হয়ে যায়। তবে গাছ বড় হলেও হয়নি পেঁয়াজ। এ বিষয়ে আমি কৃষি অফিসকে বিষয়টি অবগত করলেও তাদের কিছু করার নেই বলে জানান।
তিনি আরও বলেন, তাদের পরামর্শে আমি জমিতে ফসলের আশায় প্রায় ১৫/১৬ হাজার টাকা অতিরিক্ত ব্যয় করি। কৃষি অফিস আমাকে বলেছে, এই বীজ আমাদের নয়, বিএডিসি দিয়েছে আমরা বিতরণ করেছি। পেয়াঁজ ঘরে তুলতে না পারায় আমার ২৫ হাজার টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে।
সদর ইউনিয়নের বড়রাউতা চিলাই দো-সিমানা এলাকার পেঁয়াজ চাষী তৌহিদুল ইসলাম জানান, আমাকে দুইবার বীজ দেওয়া হয়েছে। দুই বারই আমার কোনো ফল ধরেনি। গাছ বড় হলেও মাটির তলে কোনো ফল নেই। এর আগেরবার পেয়াঁজ চাষ করে প্রায় ৪০ হাজার টাকা আয় করলেও এবার আমার ক্ষতি হয়েছে ২০ হাজার টাকার মতো। কৃষি অফিসের কথায় পেয়াঁজ চাষ না করলে আমার এই ক্ষতিটা হতো না।
তিনি আরও বলেন,নিম্ন মানের ভারতীয় বীজ সরবরাহ করায় এমন ঘটনা ঘটেছে।
একই কথা বলেন পেয়াঁজ চাষী দুলাল হোসেন। দুলাল হোসেন বলেন, গাছ হলেও কোনো ফল আসেনি। কৃষি অফিসকে জানালে তারা বলেন-ফল না হলে আমাদের কি করার। নিম্নমানের বীজ সরবরাহ করার ফলে গাছে ফল আসেনি বলে দাবি করেন তিনি।
এই বিষয়টি জানার জন্য উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে দুই দিন গিয়েও কৃষি অফিসার না থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি। ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি এই বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারবেন না বলে জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য কর্মকর্তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কৃষি অফিসার নিজেই তথ্য কর্মকর্তা। তিনিই আপনাদের তথ্য দিবেন।
তবে কৃষি বিভাগের উচ্চমান সহকারী সেলিম আকতার জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯০ জন চাষীকে পেঁয়াজের প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ