স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর প্রথম সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার

ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পর প্রথম সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এক নবজাতক জন্ম নিয়েছে।
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠার সময় অবেদনবিদের (অ্যানেসথেটিস্ট) পদই সৃষ্টি করা হয়নি। এতে অ্যানেসথেটিস্ট ছাড়া সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার সম্ভব হয়নি। ফলে এই এলাকার অন্তঃসত্ত্বা নারীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। প্রায় দুই যুগ পর ফেনীর ট্রমা সেন্টার থেকে একজন অ্যানেসথেটিস্ট দেওয়া হলে শনিবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রথমবার চালু হয় এই অস্ত্রোপচার। বিকালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে নবজাতকের জন্ম দেন এক নারী। আর এই অস্ত্রোপচারে কোনো জটিলতা দেখা দেয়নি। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন তিনি।
ওই নারীর নাম ফাহমিদা আক্তার সাথী। তিনি উপজেলার মুন্সীরহাট ইউনিয়নের কমুয়া গ্রামের মো. মোবারক হোসেনের স্ত্রী। মা ও সন্তান উভয় সুস্থ আছে।
ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রুবাইয়াত বিন করিম বলেন, দীর্ঘ দুই যুগের বেশী সময় পর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার হয়েছে। কাজটি জটিল ছিল। কারণ, অন্তঃসত্ত্বার গর্ভের সন্তানের পানি শুন্যতা ও শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছিল। মা ও সন্তান ভালো আছেন। তাদের কোনো খরচও লাগেনি।
তিনি আরও বলেন, এ কাজে সার্বিক সহযোগিতায় তার অস্ত্রোপচার করেন জুনিয়র কনসালট্যান্ট (গাইনি ও অবস্টেট্রিকস) কামরুন্নাহার। তাকে অ্যানেসথেসিয়া দেন জুনিয়র কনসালটেন্ট (এনেস্থিসিয়া) অবেদনবিদ ফয়েজ আহমেদ। এখন থেকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছোটখাটো অস্ত্রোপচারও হবে। এখন উপজেলার অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের সন্তান প্রসবের কষ্ট অনেকটা লাগব হবে।
চিকিৎসক ও অন্তঃসত্ত্বার পরিবার জানায়, আজ সকালে অন্তঃসত্ত্বা ফাহমিদা আক্তার সাথীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন পরিবারের লোকজন। দুপুর ২টার দিকে তাঁর প্রসব ব্যাথা ওঠে। পরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ফাহমিদা আক্তার একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন।
নবজাতকের বাবা মো. মোবারক হোসেন বলেন, ইউনিয়নের একজন স্বাস্থ্য সহকারী জানিয়েছে হাসপাতালে বিনামূল্যে বাচ্চা প্রসব করানো হয়। তাই স্ত্রীকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন এবং বিকালে সিজার করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে ফুলগাজী উপজেলায় ৩১ শয্যার একটি হাসপাতাল স্থাপন করা হয়। সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার চালুর জন্য কোটি টাকা ব্যয়ে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি ক্রয় করা হয়। কিন্তু অ্যানেসথেটিস্ট সংকটের কারণে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অস্ত্রোপচার চালু করা সম্ভব হয়নি। ফুলগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি জেলা শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এত দিন কোনো অবেদনবিদ যোগদান করেননি। এতে সন্তান প্রসবের সেবা থেকে বঞ্চিত ছিল উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষ।
এসআইএইচ
