তাপবিদুৎকেন্দ্র পুরো সক্ষমতায় গেলে সমৃদ্ধ হবে অর্থনীতি
গত বছর ২১ মার্চ পটুয়াখালীর ধানখালী গ্রামে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই আল্ট্রাসুপার ক্রিটিকাল পাওয়ার প্লান্টের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছিল পরিবেশ বান্ধব আধুনিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ইতিহাসে। ১ হাজার একর জমির উপর নির্মিত কেন্দ্রটিতে রয়েছে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুইটি ইউনিট।
গত ২০২০ সালের ১৫ মে উৎপাদনে আসে এ কেন্দ্রটি। তবে এর দ্বিতীয় ইউনিট বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন শুরু করে একই বছরের ডিসেম্বর মাসে। এরপর প্রতিদিন উৎপাদন হয় ৭০০ থেকে ১ হাজর মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। কিন্তু এতদিন পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল না সঞ্চালন লাইন তাই এখানকার উৎপাদিত বিদ্যুৎ সারাদেশে সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। মূল কেন্দ্র (পায়রা) থেকে গোপালগঞ্জ পর্যন্ত ১৫৩ কিলোমিটার সঞ্চালন লাইন তৈরি করা হয় গত ২০২০ সালে।
পরে গত ১৫ ডিসেম্বর আমিন বাজার থেকে গোপালগঞ্জের সঞ্চালন লাইন পুরোপুরি প্রস্তুত হয়। ফলে এখন চাইলেই যে কোন সময় ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পুরোটা উৎপাদন করে সঞ্চালন লাইনের মাধ্যমে সারাদেশে সরবরাহ করা যাবে। পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র পুরো সক্ষমতায় গেলে দক্ষিণাঞ্চলসহ দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার বড় অংশ পূরণ হবে বলে মনে করেন কতৃপক্ষ।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে এই তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের জন্য আশীর্বাদ বয়ে আনবে। এই কেন্দ্র থেকে সক্ষমতার পুরোটা উৎপাদন এবং সরবরাহ করা গেলে অর্থনীতি সমৃদ্ধ হবে।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক অর্থনীতি বিভাগের জ্যোতির্ময় বিশ্বাস বলেন, 'এই নতুন সঞ্চালিত বিদ্যুৎ লাইন থেকে যদি দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে আমরা এই নতুন বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারি তাহলে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধ হবে'।
পটুয়াখালী পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল হাসিব ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, 'গোপালগঞ্জ থেকে আমিনবাজার সংযোগ ছিলোনা তাই উৎপাদনের দিন হতে এখান থেকে যে জেনারেশনটা হয়েছিল সেটা ঢাকা পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিলো না। গত ১৫ ডিসেম্বর আমাদের এই লাইনটা প্রস্তুত হয়েছে। রিকোয়ারমেন্ট হলে আমরা দুইটাই ইউনিট থেকে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ দিতে প্রস্তুত।
পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রের সুপারিনটেনডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার, পটুয়াখালীর রেজওয়ান ইকবাল খান বলেন, '৩২০ মেগাওয়াট পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্রে দুইটি ইউনিট আছে। গত ২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর দুইটা ইউনিট জাতীয় গ্রিডের সাথে সংযুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। ৩২০ মেগাওয়াটের এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি যদি ফুল ক্যাপাসিটিতে চলে তাহলে প্রতিদিন প্রায় ১৩ হজার টন কয়লার প্রয়োজন হয়'। এদিকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এই কেন্দ্রে প্রয়োজনী কয়লা ইন্দোনেশিয়া থেকে সংগ্রহ করা হয়।
এএজেড