কলা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন সাঈদ
স্বল্প ব্যয়ে ভালো ফলন, পুষ্টিমান ও অধিক লাভ পাওয়ার আশায় কলা চাষে ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন মোহাম্মদ ওয়াজি উল্যাহ সাঈদ। ইতিমধ্যে ফেনীর দাগনভূঞায় এই প্রথম উন্নত জাতের কলার চাষ করে রীতিমত বেশ প্রশংসা অর্জন করেছেন তিনি। এজন্য কলা চাষাবাদে স্বাবলম্বী ও বছরে কমপক্ষে তিন লাখ টাকা আয় করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চান দাগনভূঞা উপজেলার পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ওমরাবাদ গ্রামের এই নবাগত কৃষক। প্রতিদিন অনেকেই তার বাগান থেকে কলা ও কলা গাছের চারা কিনে নিচ্ছেন। এতে আগ্রহ বাড়ছে বেকার যুবক ও চাষীদের।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিত্যক্ত খালি জায়গাকে আবাদী করার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দাগনভূঞার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মারুফের পরামর্শে গত বছর উন্নত জাতের কলার চারা সংগ্রহ করে চাষাবাদ করেন নবাগত কৃষক ওয়াজি উল্যাহ সাঈদ। ৩৩ শতাংশ জায়গার উপর প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০০টি কলা গাছ লাগান। এর পর থেকে মেহের সাগর ও রঙ্গিলা সাগর চাষাবাদ করে প্রতি মাসে প্রায় ৩০ হাজার টাকা আয় করছেন তিনি। এতে প্রতি বছর তার আয় হয় ৩ লাখ টাকার উপরে।
এমন ফলনে সন্তোষ প্রকাশ করে কলার চাষাবাদ আরোও সম্প্রসারণ করবেন বলেও জানান ওয়াজি উল্যাহ।
কলা গাছের পাশাপাশি তিনি পেঁপে, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফলমূলের গাছের চাষাবাদ করছেন। কৃষিবিদের পরামর্শে কলায় ব্যাগিং পদ্ধতি ব্যবহারে কোনো প্রকার রোগ-বালাই ও পোকা-মাকড় থেকে রক্ষা করে বাজার মূল্য পাচ্ছেন যথেষ্ট ভালো। এতে ক্রেতার চাহিদাও বেশী বলে জানান ওয়াজি উল্যাহ।
মোহাম্মদ ওয়াজি উল্যাহ সাঈদ বলেন, অন্য যেকোনো ফসলের চেয়ে অনেক বেশি লাভ হয় কলা চাষে। ফলে অন্য ফসলের পাশাপাশি এখন কলা চাষ বেশি হচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে বিভিন্ন জাতের কলা চাষ করা হয়েছে। ওইসব জাতের গাছ থেকে অল্প দিনেই ফল পাওয়া যায়। তুলনামূলকভাবে অন্যান্য ফসলের চেয়ে কলার দামও বেশি। সাধারণত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপন করলে অগ্রহায়ণ মাস থেকে কলা পাওয়া শুরু হয়।
এ বিষয়ে উপ-সহকারি কৃষি অফিসার আবদুল্লাহ আল মারুফ জানান, পরিত্যক্ত খালি জায়গায় কলার বাগান করার ব্যাপারে প্রাথমিকভাবে উৎসাহ প্রদান করি। সেই মোতাবেক বাগানী ওয়াজি উল্যাহ নিরলস পরিশ্রম করে আজ স্বাবলম্বী। দাগনভূঞা উপজেলায় এ ধরনের কলার চাষাবাদে সাড়া পড়েছে ব্যাপকভাবে। দাগনভূঞা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করা হবে নতুন উদ্যোক্তাদের।
তিনি আরো জানান, কলা চাষে লাভের পাল্লাই ভারি থাকে। গাছ লাগানো থেকে শুরু করে ১১ মাসের মধ্যে কলা কাটা বা ছড়ি নামানো যায়। এর মধ্যে কলা পাওয়া যায় ৩০০ থেকে ৩২০টি।
এ ব্যাপারে দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মহিউদ্দিন মজুমদার জানান, কলা একটি লাভজনক ফসল। স্বল্প ব্যয়ে অধিক লাভ পাওয়ায় এখন বাণিজ্যিকভাবে কলা চাষ হচ্ছে। কৃষি বিভাগের তরফ থেকে তাদের নানাভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। কোনো রোগবালাই না দেখা দেওয়ায় চলতি মৌসুমে কলার বাম্পার ফলন হতে পারে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এসআইএইচ