বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অজানা ভালোবাসা

আপু! কী রে ওঠ না। কেন কী হয়েছে। তুমি না বলেছিলে আমাকে শপিং করতে নিয়ে যাবে। দূর! দেখছিস না বৃষ্টি হচ্ছে। একটু একটু বৃষ্টি হচ্ছে। তাতে কী? কাছেই তো শপিং মল। চলো না আপু। তুই সরে যা, ঘুমাতে দে আমাকে। যদি আজকে না যাও তাহলে আগামীকাল আমার যাওয়া সম্ভব হবে না। কিন্তু কেন? কারণ পরশু আমার পরীক্ষা আছে।
মিথ্যা বলছিস।
মিথ্যা নয় আপু। সত্যি বলছি। তিন সত্যি।
ঠিক আছে, ঠিক আছে। যা রেডি হয়ে নে।
রাকা এবার একাদশ শ্রেণিতে পড়ে। সাদিয়া রাকার বড় বোন। সাদিয়া ভার্সিটিতে পড়ে। সবসময় খেয়াল রাখে সাদিয়া রাকার। কোনো সময় তাদের ঝগড়া হয় না। সেজন্য পরিবারে মা বাবা সবাই খুশি। তারা একসাথে সময় পার করে। তারা কত মজা করে।
তারা দুজনে রিকশা করে শপিং করতে গেল। রাকাকে অনেক কিছু কিনে দিল সাদিয়া। গায়ের পোশাক, জুতা সবই কিনে দিল। রাকা বললো আপু এবার আমার কিছু কসমেটিকস কিনতে হবে। সাদিয়া বললো ঠিক আছে। কসমেটিকস এর দোকানে গিয়ে রাকা অনেক কিছু কিনলো। চুরি, আংটি ও টিপ। সেফটি পিনের পাতাটা দেখতে দেখতেই হাত ফসকে দূরে থাকা একটা ছেলের গায়ে পড়লো। রাকা সাথে সাথে সাদিয়াকে বললো, আপু সেফটি পিনের পাতাটা ও-ই ছেলের গায়ে পড়েছে। সাদিয়া সাথে সাথে গিয়ে তাকে বললো, দুঃখিত আমার বোন বুঝতে পারে নি। প্লিজ তাকে মাফ করে দিন।
না,না ঠিক আছে। সমস্যা তো হতেই পারে। আর ও তো ছোট।
সেফটি পিনের পাতা নিয়ে এলো সাদিয়া আর
ধন্যবাদ বলে চলে গেল।
এসে রাকাকে বললো সাবধানে নাড়াচাড়া করতে পারিস না। ওতো দূরে কেন সেফটি পিন যায়।
সরি আপু। আমি বুঝতে পারি নি। সরি।
ঠিক আছে, ঠিক আছে। এবার বাসায় চল।
রাকা আর সাদিয়া রিকশা করে বাসায় আসে। রাকা নতুন সবকিছু পেয়ে কতো খুশি। বার বার মা ও বাবাকে দেখাতে লাগলো। দেখো এটা কিনেছি। ওটা কিনেছি। আর কতো কী!
পরদিন সকালে রিকশার জন্য দেরী করছিল সাদিয়া ভার্সিটিতে যাওয়ার জন্য। কিন্তু অনেকক্ষণ হলো কোনো রিকশা পাচ্ছে না। তাও সাদিয়া দেরী করতে লাগলো। তারপর একটা রিকশা আসতেই রিকশাতে তাড়াতাড়ি করে উঠতে লাগলো সাদিয়া। তখনই অপর পাশ থেকে একটা ছেলে তাড়াতাড়ি করে একই রিকশাতে উঠতে শুরু করেছে।
'কী হলো আমি আগে ডেকেছিলাম রিকশাকে?
আপনি উঠছেন কেন?
আমার খুব তাড়াতাড়ি যেতে হবে, সাদিয়া বললো।'
'আপু আমারও অনেক দেরী হয়ে গেছে। আমাকে একটু আগে যেতে দিন। তাছাড়া আমার পরীক্ষার দেরী হয়ে যাবে? ছেলেটি বললো।'
তারপর সাদিয়া ভালো করে খেয়াল করে দেখলো, এটা কালকের কসমেটিকসের দোকানের ছেলেটা না? যার গায়ে সেফটি পিন পড়েছিল। ভাবতে ভাবতেই ছেলেটি বললো আপনি কালকের ও-ই মেয়ে না? আপনার ছোট বোনকে নিয়ে শপিং করতে গিয়েছিলেন?
তারপর তারা চোখাচোখি হয়। দুজনেই হ্যা বললো। তারা দুজনেই ভাবতে লাগলো কী ব্যাপার কালকে দেখা আর আজকেও দেখা?
তারপর ছেলেটি বললো, আচ্ছা রিকশাতে আপনি যান, আমি পরে যাব নি।
কিন্তু আপনার পরীক্ষা আছে তো সাদিয়া বললো।
নাহ ঠিক আছে,আগে আপনি যান। ছেলেটি বললো।
'আসলে আপনি কিছু না মনে করলে আমরা দুজনেই কী রিকশায় উঠতে পারি? যদি আপনার সমস্যা না হয়। ছেলেটি বললো।'
সাদিয়া প্রথমে একটু ইতস্তত করতে লাগলো। তারপর ভাবলো আমারও ক্লাস আছে। তাছাড়া রিকশা পাচ্ছি না।
'আচ্ছা ঠিক আছে।' সাদিয়া বললো।
ছেলেটি বললো, আপনার ইচ্ছা। আর আমি খুব কাছেই নামবো।
ওকে ঠিক আছে। সাদিয়া বললো।
তারা দুজন রিকশায় উঠলো। একটু খানি যেতেই ছেলেটি বললো, আপনি কিসে পড়েন?
সাদিয়া বললো, ভার্সিটিতে দ্বিতীয় বর্ষ।
আপনি?
আমি মাস্টার্সে পড়ি।
ও আচ্ছা।
আপনার নাম কী? ছেলেটি বললো।
জ্বী আমার নাম সাদিয়া। আপনার?
আমার নাম দিগন্ত।
তাদের মধ্যে আরো কিছু কথা হল।
কিছুক্ষণ পর দিগন্ত তার ভার্সিটির কাছে আসলে রিকশাওয়ালাকে বললো, থামুন। আমি নামবো।
দিগন্ত নেমে গেল আর সাদিয়াকে বললো কিছু মনে করবেন না। আসলে রিকশা পাচ্ছিলাম না তো। তাই একই রিকশায় উঠতে বলেছিলাম।
না, কিছু মনে করি নি, সাদিয়া বললো।
আর হ্যা আমি ভাড়া দিলাম, আপনাকে দিতে হবে না।
সাদিয়া বললো,কেন আমি ভাড়া দিতে পারবো তো।আপনি আপনার ভাড়া দেন। তাছাড়া আমি এই টাকা কবে ফেরত দেবো?
দিগন্ত হেসে বললো। এই ঢাকা শহরে যদি কোনো দিন দেখা হয় তাহলে দিয়েন।
দিগন্ত চলে গেল। সাদিয়া অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল।
তারপর দিন দিনের মতো আর রাত রাতের মতো চলে যাচ্ছিল। নিত্যদিনের কাজকর্ম আগের মতোই চলতে লাগলো। সাদিয়া আর রাকা তাদের পরিবার নিয়ে অনেক খুশি। এমন পরিবার আর কতো জন পায়।
প্রায় দুই বছর পর সাদিয়া একটা জব খুজতে যায়। বিজ্ঞাপন দেখে খুজতে থাকে। একটা চাকরি করলে ভালো হতো। একটা বিল্ডিং এ পাঁচ তলা পর্যন্ত উঠে যাকে সামনে পেল তাকে বলতে লাগলো স্যারের রুমটা কোথায়? আমি চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে এসেছি। ও আচ্ছা, আপনি সামনের রুমে যান।
স্যারের রুমে গিয়ে কথা বললো সাদিয়া। স্যার বললো মাস্টার্স কমপ্লিট থাকতে হবে। কিন্তু সাদিয়া মাস্টার্সে পড়ে কেবল। রুম থেকে চলে আসতেই সাদিয়া দেখলো, একজন উপরের তলায় যাচ্ছে।

আপনাকে আমার চেনাজানা মনে হচ্ছে। আগে কী কখনও দেখেছি নাকি? ছেলেটি বললো।
তারপর সাদিয়ারও চেনা চেনা মনে হতে লাগলো।
আপনি সেই দুই বছর আগে কসমেটিকস এর দোকানে দেখা মেয়েটা না? ছেলেটি বললো।
হ্যা, আপনি সেই না যার গায়ে সেফটি পিন পড়েছিল। সাদিয়া বললো।
হ্যা। আমি সেই। ছেলেটি বললো।
আপনার নাম দিগন্ত বলেছেন, তাই না।
কী আজব কথা। আপনি আমার নাম মনে রেখেছেন। কিন্তু আপনার নামটা যে কী বলেছেন, আমার মনে নেই। ছেলেটি বললো।
আমি সাদিয়া।
ওহ মনে পড়েছে। তা কী বললো স্যার। দিগন্ত বললো।
বললো স্নাতকোত্তর থাকতে হবে। সাদিয়া বললো।
আর আপনি এখন কীসে পড়েন?
'মাস্টার্সে'।
ও তাহলে যখন আবার সার্কুলার দিবে তখন আসবেন। মনে কিছু নিবেন না। এটা নিয়ম। আর আপনার মাস্টার্স শেষ হতে বেশি দিন বাকী নেই।
হ্যা,সাদিয়া বললো।
সাদিয়া এখান থেকে চলে গেল। সাদিয়ার বুঝতে বাকি রইল না দিগন্ত ভালো পদে চাকরি করে। তার পোশাক দেখে তাই মনে হচ্ছিল।
তারপর বাসায় এসে রাতে রাকাকে সবকিছু বললো।
রাকা বলে, আপু ভাইটা কতো ভালো তাই না।
কেন রে রাকা?
মানুষের ব্যবহার দেখেই তো বোঝা যায় সে ভালো নাকি মন্দ।
পাকা মেয়ে ভালো মন্দ শিখে গেছো। যা ঘুমা। সাদিয়া বললো।


সপ্তাহ খানেক পর সাদিয়া একটা পার্কে বসে আছে।সাদিয়ার মন খারাপ হলে সে এখানে এসে বসে থাকে। হঠাৎ দেখতে পায় দিগন্ত তার দিকে আসছে।
দিগন্ত বললো, সাদিয়া আপনাকে দূর থেকে দেখা যাচ্ছিল। ভাবলাম এটা আপনিই হবেন। তাই এখানে আসলাম।
অফিসের কাজে আসছিলেন বুঝি? সাদিয়া বললো।
হ্যা অফিসের কাজে। আর কাজ শেষে যেতেই আপনাকে দেখলাম। তাই এখানে আসলাম। দিগন্ত বললো।
তো আপনি এখানে বসে বসে কী করছেন? কেউ আসবে নাকি?
আরে নাহ! আসার মতো কোনো মানুষ নেই আমার। সাদিয়া বললো।
পাশ দিয়ে বাদামওয়ালা বলতে লাগলো বাদাম নিবেন? বাদাম।
দিগন্ত বাদাম কিনে সাদিয়াকে দিল। বললো খান।
বাদাম কেনার কী দরকার ছিল? সাদিয়া বললো।
নাহ! এমনি কিনছি।
দিগন্ত এমন হাসির কথা বলতে লাগলো, যা শুনে সাদিয়া হাসতেই লাগলো।
রাতে দিগন্তের বুঝতে বাকি রইলো না সাদিয়া কোনো সম্পর্ক করে না। মনে মনে এসব ভাবতে লাগলো দিগন্ত।
পরদিন সকালে আবারও তাদের দেখা। একটু কথা বলতেই কারা যেন এসে তাদের ধরে গাড়িতে তোলে। মুখ কাপড় দিয়ে বেধে দেয়। তারা দুজনে চিৎকার ও করতে পারলো না। অবশেষে একটা পার্কে নিয়ে যেয়ে তাদের মুখ খুললো। প্রায় সাতজনের মতো মানুষ। দিগন্ত আর সাদিয়াকে আলাদা আলাদাভাবে হাত বেধে রেখেছে। দিগন্ত বলতে লাগলো সাদিয়াকে ছেড়ে দেন। প্লিজ ছেড়ে দেন। সাদিয়ার কোনো দোষ নেই।
কালো মোটা মতো একটা লোক বললো, সাদিয়ার কোনো দোষ নেই? তাহলে সাদিয়ার সঙ্গে তোরো রাস্তায় ও পার্কে দেখা যায় কেন?
সাদিয়া আমার বন্ধুও না। শুধু কয়েকটি দিন ওর সাথে দেখা হয়েছিল আমার। প্লিজ ওকে ছেড়ে দিন। দিগন্ত বললো।
ও-ই লোকটি বললো, ছেড়ে দিবো। হাহা.........হা
তোর সামনেই এই মেয়েটিকে কেমন করে মারি দেখ?
দিগন্ত বললো আমাকে যত মারুন। আমার আপত্তি নেই। কিন্তু সাদিয়াকে ছেড়ে দিন।
ছেড়ে দিব তোর প্রেমিকা বলে। হাহা........ হা। কালো
মোটা মতো লোকটি বললো।
সাদিয়া বললো, আপনার কারা? কেন আমাদের ধরে নিয়ে এসেছেন। কী চাই আপনাদের? কী দোষ করেছি আমরা?
তোর দোষ তুই দিগন্তের সঙ্গে মেলামেশা করিস? ও-ই লোকটি বললো।
ওর কোনো দোষ নেই। ওকে ছেড়ে দিন। দিগন্ত বলতেই থাকলো।
এখন সাদিয়া তোর দোষের কারণে তুই সাজা পাবি তা আবার দিগন্তের সামনে ও-ই লোকটি বললো?
তারপর ও-ই লোকটি বেল্ট দিয়ে সাদিয়াকে ইচ্ছামত মারতে থাকে।
সাদিয়া চিৎকার করতে থাকে। মারতে মারতে পুরো রক্তাক্ত হয়ে যায় সাদিয়া।
তবুও তাদের মন নরম হলো না।
এদিকে দিগন্ত চিৎকার করছে। সাদিয়াকে ছেড়ে দিন আপনারা। ওর কোনো দোষ নেই। দিগন্তেকে আরো দুজন এসে শক্তভাবে বেধে দেয়।
দিগন্তের সামনে সাদিয়া ছটফট করতে লাগলো। কিন্তু দিগন্ত কিছুই করতে পারলো না। নিজেকে ধিক্কার করতে লাগলো দিগন্ত।
শেষে একলোক ইট দিয়ে সজোরে মারে সাদিয়ার মাথায়। সাদিয়া সাথে সাথে অজ্ঞান হয়ে যায়। পরিস্থিতি খারাপ দেখে সবাই পালিয়ে যায় সেখান থেকে।
সবাই চলে যাওয়ার পর দিগন্ত অনেক কষ্টে নিজের হাতের দড়ি খুলে ফেলে। তাড়াতাড়ি সাদিয়ার মাথা তুলে বার বার বলতে থাকে, সাদিয়া উঠুন। প্লিজ উঠুন। আর আমাকে মাফ করে দিন। সাদিয়া উঠুন বলে কাঁদতে লাগলো দিগন্ত। আর চিৎকার করতে লাগলো কেউ একটু সাহায্য করুন। সাদিয়াকে হাসপাতালে নিতে হবে।
সাদিয়ার অবস্থা মারাত্মক খারাপ। সাদিয়া কোনো কিছুই বলতে পারলো না। তারপর কয়েকজনের সাহায্যে সাদিয়াকে হাসপাতালে নিল দিগন্ত। সাদিয়ার ফোন থেকে সাদিয়ার মা বাবাকে ফোন দিল দিগন্ত । বললো হাসপাতালে আসুন সাদিয়ার অবস্থা খুব খারাপ। ডাক্তার বলেছেন অপারেশন করাতে হবে।
সাদিয়ার মা বাবা আর বোন এসে কান্নাকাটি করতে লাগলো। দিগন্তকে গালিগালাজ করতে লাগলো।দোষারোপ করতে লাগলো। বললো, তোমার জন্য এই অবস্থা হয়েছে আমার মেয়ের। তুমি চলে যাও।
দিগন্ত কিছু বললো না। শুধু চুপ করে থাকলো।
শেষে বাধ্য হয়ে চলে গেল। আর নিরবে কাঁদতে লাগলো।
দিগন্তের বুঝতে বাকি রইলো না। তার খালু এসব কাজ করেছে। সে তো গুন্ডা টাইপের লোক। তার অনেক ক্ষমতা। দিগন্তের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে দিতে চায় খালু। কিন্তু দিগন্ত বিয়ে করবে না। এটাই মূল কারণ।
অপারেশনের পর সাদিয়ার মা বাবা সাদিয়াকে দেখতে যায়। বললো মা চিন্তা করিস না, তুই ঠিক হয়ে যাবি। কাঁদতে কাঁদতে তারা রুম থেকে বের হয়ে আসে।


আড়াল থেকে দিগন্ত সব দেখতে লাগলো। বাবা মায়ের সামনে যেয়ে বললো আমাকে একটু সাদিয়ার কাছে যেতে দিন। আপনারা যা বলবেন আমি তাই করবো। শুধুমাত্র একটি বার যেতে দিন।
সাদিয়ার বাবা দিগন্তকে থাপ্পড় মারে আর বলে তোমার জন্য আমার মেয়ের এই অবস্থা। আর ভেতরে যাওয়ার অনুমতি চাচ্ছো। গালিগালাজ করে চলে যায় সাদিয়ার বাবা।
দিগন্ত কিছু না বলে চুপ করে রইলো। পরে সাদিয়ার মা এতো জোরাজোরি দেখে যাওয়ার অনুমতি দিল।
দিগন্ত দরজা খুলতেই দেখলো সাদিয়া বেডে শুয়ে আছে। কতো টা দূর্বল সাদিয়া। মাথায় ব্যান্ডেজ করা। কথা বলতে পারছে না।
দিগন্ত সাদিয়ার হাত ধরে বললো, আমি তোমাকে এতদিন ভালোবেসে ছিলাম কী না, জানি না। তবে আজ থেকে ভালোবাসবো আমি তোমায়। অজানা ভালোবাসা তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আর কোনো কষ্ট পেতে দেব না তোমায়। তোমার সব দায়িত্ব আমার। আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না। এসব বলে সাদিয়ার হাতটা ধরে কাঁদতেই থাকলো দিগন্ত।

 

 

ডিএসএস/ 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া