সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

অবশেষে সে আমার প্রেমিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শেষ করে চড়ে বসলাম কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহগামী একটা বাসে। আমার সাথে আমার বন্ধু শুফম আছে। সে নিয়মিত বাসের জানালার পাশে বসে। তাই বাধ্য হয়ে বাসের ভিতরের সিটে বসতে হল আমার। দু'জনের-ই মন খারাপ। এত টাকা খরচ করে কোচিং করলাম, অথচ পরীক্ষায় ভালো করতে পাড়লাম না। আমি নিশ্চিত আমরা চান্স পাচ্ছি না।
বাসের মধ্যেই আমার বন্ধু আবার বই নিয়ে পড়তে বসলো। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে, যে করেই হোক চান্স পেতে হবে। আমিও বই নিয়ে পড়তে বসলাম। কী পড়বো! সব তো মুখস্থ। কিন্তু কনফিউশনের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ভালো করতে পারি নি। বই রেখে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম। পড়তে মন বসছে না। হঠাৎ আমার পাশে অপজিট সিটে বসা মেয়েটির চোখ চোখ পরে গেলো আমার। সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে সামনের দিকে তাকালাম আমি। কিন্তু অন্য দিকে কিছু সময় পরে আমার মন আমাকে বলছে, মুতালেব আবার তাকা। আমি আবার তাকালাম। আবার মেয়েটির চোখ চোখ পরে গেলো। আমি আবারো চোখ ফিরিয়ে নিলাম। নিজে নিজেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। বুকের মধ্যে দরফর দরফর করতে লাগলো। হাটবিট বেড়ে গেলো। আমি ভয়ে ভয়ে আবার তাকালাম। দেখি মেয়েটি অন্য দিকে চেয়ে আছে। আমার দিকে সে অনেক সময় পর একবার তাকালো। এবার মেয়েটি নিজেই মুখ ফিরিয়ে নিল। আমি ওর দিয়ে একপলকে চেয়ে আছি। চোখ অন্য কোন দিকে ঘুরিয়ে নিচ্ছি না। মেয়েটি মাঝে মাঝেই আমার দিকে তাকাচ্ছে এবং চক্ষুলজ্জায় সে বার বার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু আমাকে হতাশ করছে না। আমাদের বাস যখন ঈশ্বরদীর পাকশী লালন শাহ ব্রিজের উপর তখন মেয়েটি আমার দিকে অনেক সময় ধরে চেয়ে আছে। সবাই চেয়ে আছে পদ্মার দিকে, হাডিং ব্রিজের দিকে। শুধু আমি চেয়ে আছি ঐ মেয়েটির দিকে আর মেয়েটি চেয়ে আছে আমার দিকে। হঠাৎ ওর ডানে বসে থাকা বৃদ্ধ মানুষটি কেমনে যেন বুঝে গেলো আমাদের মধ্যে কিছু একটা চলছে। বৃদ্ধ মানুষটি সিট পরিবর্তন করলো। বৃদ্ধ মেয়েটিকে উঠিয়ে জানালার দিকে বসিয়ে দিয়ে, সে মেয়েটির সিটে বসে আমার দিয়ে চেয়ে রইলো। আমি যখনই ঐ দিকে তাকাই তখনই দেখি বৃদ্ধ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এ কী মুশকিলে পড়ে গেলাম। অবশেষে বাধ্য হয়ে আমি আমার বন্ধু শুফমকে বললাম, "দেখতো বন্ধু, বৃদ্ধ আমার দিকে তাকিয়ে আছে কী না।" বন্ধু বললো, হমম। আমি যতবার বললাম বন্ধু ততবার বললো, হমম চেয়ে আছে তোর দিকে। আমি আর ভয়ে তাকালাম না।


বাসের হেল্পার ডাকতে লাগলো ভার্সিটি গেট। ভার্সিটি গেট, আপনারা নামেন।
নামার সময় কেবলি একবার মেয়েটির দিকে তাকিয়েছি। ওমনি বৃদ্ধ মানুষটি আমার দিকে তেড়ে এলো। আর বললো, "এ দিকে কী। হুম, এ দিকে কী। আবার তাকালে চোখ উপরে নিব।"
চক্ষুলজ্জায়, আমার প্রাণ যেন যায় যায় অবস্থা। ভার্সিটির গেট থেকে সরে যেন সময় পাই নি আমি। দুই বন্ধু দৌড়াতে দৌড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝখানে চলে গেলাম। বন্ধু শুফম, আমাকে রাগাইতে লাগলো, "এ দিকে কী। হুম এ দিকে কী।" বলে।

পরের দিন পরীক্ষার হলে বসে আছি। আমার ডানে একটা সিট ফাঁকা আছে। পরীক্ষা আর মাত্র মিনিট দশেক দেরি আছে। আমাদের উত্তর পত্র দিয়ে দিছে। ঠিক ভাবে নাম রোল পূরণ করার জন্য। আমার অন্য কোন দিকে মন নেই। মনযোগ দিয়ে পূরণ করছি। হঠাৎ একটি মেয়ের কণ্ঠ পেলাম। একটু যেতে দিবেন ভাই, ঐ সিট টি আমার।
আমি মেয়েটির দিকে না তাকিয়ে পথ ক্লিয়ার করে দিলাম। মেয়েটি সিটে গিয়ে বসলো। কিন্তু আমি ততটা ভ্রুক্ষেপ করলাম না। আপন মনে বৃত্ত ভরাট করছি। টাইম হয়ে গেছে। প্রশ্নও পেলাম। প্রশ্ন পড়ে পড়ে আবারো বৃত্ত ভরাট করছি। এক ঘন্টা টাইম। আশিটা বৃত্ত। পঞ্চান্নটি দাগিয়েছি। আর পারছি না। দাগালেই ভুল হবে। সময়ও আছে আরো তের মিনিট। বাম দিকের ছেলেকে দুইটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলাম। ও বললো পাড়ি না। আমাকেও ঐ ছেলে পরে দুইটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলো। আমিও রাগে রাগে বললাম পারি না। আর মিনিট দশেক সময় আছে। অবশেষে আমার ডানে বসা মেয়েটির দিকে তাকালাম। ও মা এ কী! তুমি? বাসের সেই মেয়ে আমার ডানে বসে আছে অথচ আমি ওর দিকে এবারও তাকাই নাই। না তাকিয়ে ভালোই হয়েছে। পরীক্ষা ভালো করেছি। ওর দিকে তাকালে আল্লাহ্ জানে কী হত!
মেয়েটি খুব করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো। আমি বুঝতে পারলাম। ওর প্রশ্ন কমন পড়ে নাই। বললাম, তোমার প্রশ্ন এবং উত্তর পত্র আমাকে দেও। আর আমার টা তুমি নেও।
মেয়েটি বললো, "যদি ধরা পরি?"
রাখো তোমার ধরা পড়া। আমি ওর টা নিয়ে, খুব দ্রুত উত্তর পত্রের বৃত্ত ভরাট করতে লেগে গেলাম। আমার মনে হল দশ মিনিটে কম করে হলেও প্রায় ত্রিশটি বৃত্ত ভরাট করে দিলাম।
উত্তরপত্র জমা দিয়ে ও মন খারাপ করে চলে যাচ্ছিল। আমি ওর পিছু পিছু এলাম। কথা বললাম। কথায় কথায় জানতে পারলাম ঐ বৃদ্ধ নাকি ওর বাবা। ওর রোল নাম্বার নিলাম। ওর মোবাইল নাম্বার চাইলাম। ও দিলো। তারপরে যখন আমি ওর Facebook ID চাইবো তখন সামনে তাকিয়ে দেখি ঐ বৃদ্ধ হরকাবানের মত আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। কিসের FB ID. আমি পালিয়ে সময় পাই। চোখের পলকে পালিয়ে গেলাম।
অবশেষে দশ দিন পরে রেজাল্ট পাবলিশ হল। প্রথমে আমি ওর রোল ধরে রেজাল্ট দেখতে লাগলাম। ও দেখি দশম হয়েছে। আমি ওর রেজাল্ট দেখে উকে কল দিলাম। নাম্বার টা ভুল দেখাচ্ছে। তার মানে আমি দশটা নাম্বার তুলে ছিলাম। একটা ডিজিট কম আছে।
মন খারাপ করে নিজের রেজাল্ট দেখলাম। আমি একশত সাত নাম্বারে আছি।

পরের সপ্তাহে, ভাইভা। আমি ভাইভা দিতে গিয়ে নোটিশ বোর্ডে সন্ধান নিলাম। দেখি ওর ভাইভা যেখানে তার আগের রুমে আমার ভাইভা বোর্ড। আমি সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে ওর সন্ধান করছি।ওদের কেবল তিন নাম্বার পর্যন্ত ডেকেছে। কিন্তু ও সিরিয়ালে দাঁড়ায় নাই। আমার কেমন যেন লাগছিল। মনে মনে ভাবছিলাম। ও যদি ভাইভা দিতে না আসে তাহলে আমিও এখানে ভর্তি হবো না। এলাকার কলেজেই অনার্স করবো। আমাদের ভাইভা বোর্ডে আমার সিরিয়াল সাত। আমার ডাক এলো। আমি ভাইভা দিয়ে বের হচ্ছি আর ওদের সিরিয়ালের দিকে তাকিয়ে আছি যে, দেখি ও আসছে কী না। তবুও দেখচ্ছি ও সিরিয়ালে দাঁড়ায় নাই। ওদের সিরিয়ালে। দশম বলে কে যেন ডাকছে। সেই সময় মনে হল কে যেন পিছন থেকে ছুটে এসে আমাকে ধাক্কা মেরে দিলো। ধাক্কা লেগে ওর কাগজপাত্রের ফাইল ছুটে গেলো। পিছন ফিরে কেবলি গালি দেবো। ওমনি দেখি, এ আর কেউ না, আমার সেই মেয়েটি। আমি তখন জোরে করে রেসপন্স করলাম। দশম আছি। এবং ওর ছুটে পড়া ফাইল উঠি দিয়ে ভাইভার রুম অবধি এগিয়ে দিলাম। ভাইভা শেষ করে ও রুম থেকে বের হল। আমাকে দেখে ও মহা খুশি। অবশেষে ওর থেকে সঠিক নাম্বার আর FB ID পেলাম।

ভাইভা শেষে, পনেরো দিন পরে আমাদের ভর্তির তারিখ নির্ধারিত হল। আমার এলো লোকপ্রশাসন। ওর এলো ইংরেজি। আমার ভীষণ মন খারাপ হল। হয় তো ও আমার সাথে সম্পর্ক রাখবে না। কারণ ওর সাবজেক্ট ভালো। কিন্তু না। ভর্তি হবার পরে দেখি, ও আমাকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। ক্লাস টাইম আর ঘুমের টাইম বাদে সব সময় ও আর আমি একসাথে। কখনো লেকের পারে। কখনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে। কখনো রবীন্দ্রনাথ বাড়ি। কখনো লালনের মাজারে। সব সময় একসাথে। একটি ভালো কাপল হিসেবে সবার সামনে মুখ পরিচিত হয়ে উঠলাম আমরা। ছয় মাস যেতে না যেতেই হঠাৎ একদিন, ও উধাও। এক'দিন, দু'দিন চলে যায় আমি ওর সন্ধান পাই না। ফোন, FB সব বন্ধ ওর। ঘটনা কী! অবশেষে ওর ডিপার্টমেন্টের বন্ধুদের নিকট খোঁজ নিলাম। তারাও বলতে পারে না। সাত দিন চলে যায়। আমার অবস্থা টাইট। আমি দিশাহারা।

অবশেষে আমার ডিপার্টমেন্টের সবাই জেনে গেলো, আমি ক্লাস করছি না। লেকের পারে বসে সারাদিন সিগারেট খাই। রাতে রুমেও ফিরি না। মাঝে মাঝে নেশাও করি। বিষয়টি শিক্ষকেরা অবধি জেনে গেলো। অবশেষে ২০ দিনের মাথায় শিক্ষকদের মারুফতে জানতে পারলাম, ওর বাবা মারা গেছে। তাই ও এখন নিজের এলাকাতে আছে। ও ক‍্যাম্পাসে কবে আসবে তা কেউ বলতে পারে না। ২৫ দিনের মাথায় ওর বাড়ির ঠিকানা যোগার করলাম; ওদের ডিপার্টমেন্টের অফিস সহকারী নিকট থেকে। ২৬ দিনের দিন রওনা হলাম ওদের বাড়িতে। ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখি কেউ নেই। আমি ওদের ঘরের বারান্দায় গিয়ে বসে রইলাম। একজন দু'জন করে অনেক লোক জড় হয়ে গেলো। ওদের মুখ থেকে শুনতে পেলাম কাসেম প্রধানের পরিচিত কোন এক নাতি আমার বন‍্যাকে বিয়ে করে বিদেশ নিয়ে গেছে আজ থেকে ছয় দিন আগে। বিষয়টি আমি কোন ভাবে মেনে নিতে পারছিলাম না। বন‍্যা বিদেশ যেতে পারে না। কারণ ওর পাসপোর্ট নেই। এত তাড়াতাড়ি এত কিছু কেমনে সম্ভব। আরো জানতে পারলাম ওদের পরিবারের অন‍্যান‍্য সদস্যরা সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক আগেই মারা গেছে। আপন বলতে এই পিতা ছাড়া আর কেউ ছিল না ওর।
পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে অবশেষে কাসেম প্রধান এসে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। কাসেম প্রধান এলাকার মোড়ল ও বিশাল রাজনৈতিক নেতা। পুলিশ আমাকে থানায় তুলে নিয়ে গেলো। তারপরের দিন আমার পিতা-মাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার বিভাগের একজন শিক্ষক খবর পেয়ে থানায় এসে অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করেন। তারপরে কতদিন পরে আমার জ্ঞান ফিরে ছিল তা আমার জানা নেই। আমার এই অজ্ঞান অবস্থা নিয়ে বিশাল একটা কাণ্ড ঘটে যায়। থানার ওসি প্রত‍্যাহার হয় এবং কাসেম প্রধান আটক হয়ে জেলে যায়। অথচ আমাকে কেউ কিন্তু ফুলের টুকাও দিছিল না।

যাইহোক, আমার পড়াশোনা গ‍্যাপ পড়ে গেল। আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে চাই ছিলাম না। অবশেষে, বাবা-মায়ের অনুরোধে এক বছর গ‍্যাপ দিয়ে আবার প্রথম বর্ষে ক্লাস শুরু করতে বাধ্য হলাম। পড়াশোনা নামে মাত্রা চলতে থাকে। সব সময় সাহিত্যচর্চায় আমি বিভোর। কবিতা আর কবিতা। আমি কবি।
অবশেষে কোন মত করে অনার্স শেষ করলাম।বড় কবি হব বলে ঢাকায় আসলাম। এখানে এসে পড়লাম আরেক বিপদে। কে কারে চেনে। কিসের কবি। কবি এখন ঘরে ঘরে। কোন পত্রিকার অফিস আমারে নিলো না। কেউ নেওয়া তো দূরের কথা। আমাকে মূল‍্যায়ন অবধি করলো না।
কী আর করার। দিন শেষে, একটা ফুটঅভার ব্রিজের উপর শুয়ে পরলাম। মাঝ রাতে চেতন পেয়ে দেখি আমার গায়ে প্রচণ্ড জ্বর। পাশ দিয়ে কে যেন যাচ্ছিল। হাত দিয়ে তার পা চেপে ধরে বললাম, আমি বাঁচতে চাই। আমাকে বাঁচান। পা টা খুব নরম মনে হচ্ছিল। কোন এক মেয়ে মানুষের পা হয় তো হবে।


তারপরে কী ঘটেছিল তা আমি বলতে পারবো না। পরের দিন চেতন পেয়ে দেখি আমি একটা হাসপাতালের বেডের উপর শুয়ে আছি। শরীর অনেকটাই সুস্থ। আমি উঠে বসতেই কোন এক নার্স এসে আমাকে বললো, আপনি শুয়ে থাকুন। বিকেলে আপনার স্ত্রী এসে নিয়ে যাবে।
আমার স্ত্রী? কে সে? নিজেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন আমার আবার বার বার বন‍্যার কথা মনে পরে যাচ্ছিল। বন‍্যার কথা ভাবতে ভাবতে আমি আবার ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার পাশে একটি মেয়ে বসে আছে। ধীরে ধীরে মেয়েটির মুখের দিকে তাকালাম। মুখের দিকে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠলাম। কে? বন‍্যা, তুমি?
- হমমম, আমি বন‍্যা।
- এত দিন কোথায় ছিলে?
- সে অনেক কথা। পড়ে বলবো। এখন চল বাড়িতে যাই।
- আমাদের বাড়ি কোথায়?
হাসপাতাল থেকে রওনা হলাম। রিকশায় উঠে ও সব বললো। রাতে আমি নাকি ওর পা চেপে ধরে বাঁচতে চেয়ে ছিলাম।
অবশেষে আমি জানতে চাইলাম ওর বিদেশ যাওয়া নিয়ে। ও কিছুই বলতে চাচ্ছিল না। আমার জোড়াজুড়িতে অবশেষে মুখ খুললো।
কাসেম প্রধান ও ওনার নাতি বিয়ের নাটক সাজিয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। সেখানে প্রায় দুই বছর ছিল। সেখান থেকে ঢাকার কোন এক হোটেল মালিক তাকে কিনে নিয়ে এসেছে। ওখানে প্রায় আড়াই বছর থাকার পরে আজ দের বছরের মত হল ও মুক্তি পেয়েছে। হোটেল মালিক রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে জেলহাজতে আছে। ওনার সব ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আপনা আপনি মুক্তি পেয়েছে ও। এখন ও স্বাধীন ভাবে বারে (মদের ক্লাবে) কাজ করে। পাশাপাশি একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করছে।
আমি সব শুনে উকে বললাম, আমাকে বিয়ে করতে পারবা?
ও আমাকে বললো, বিয়ের কী দরকার! আজীবন আমি তোমার প্রেমিকা হিসেবে থাকতে চাই। রাখবা না?
আমি কিছু না বলে ওর হাসিমাখা উজ্জ্বল মুখের দিকে ফ‍্যালফ‍্যাল করে তাকিয়ে রইলাম।

 

 ডিএসএস/ 

 

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। ছবি: সংগৃহীত

বিশেষজ্ঞদের সুপারিশের ভিত্তিতে দেশে কিছু লোডশেডিং চালু রাখার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, কিছু লোডশেডিং না দিলে ভর্তুকির পরিমাণ বেড়ে যাবে। তবে লোডশেডিং যাতে সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সে চেষ্টা করা হবে। তিনি জানান, শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং কার্যকর করা হবে।

সচিবালয়ে গ্রিড বিপর্যয় নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, বর্তমানে দেশে সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। গরমের কারণে আগামী দিনে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। তখন চাহিদা মেটাতে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন আরও বাড়ানো হবে। তিনি আরও বলেন, যে হারে এসি স্থাপন করা হচ্ছে, সে হারে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হয়নি। অনেকে অকারণে লাইট, ফ্যান ও এসি চালু রাখায় বিদ্যুৎচাহিদা বেড়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও জানান, দক্ষিণাঞ্চলের বরিশাল ও খুলনায় ২৬ এপ্রিল যে গ্রিড বিপর্যয় ঘটে, তার তদন্তে আট সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির প্রধান করা হয়েছে বুয়েটের উপ-উপাচার্য আবদুল হাসিব চৌধুরীকে। কমিটি সাত কর্মদিবসের মধ্যে গ্রিড বিপর্যয়ের কারণ, দায়ী ব্যক্তিদের ভূমিকা ও ভবিষ্যতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সুপারিশ করবে।

মেট্রোরেল এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ থাকার কারণও তদন্তে নেওয়া হয়েছে। বুয়েটের অধ্যাপক শামসুল হককে প্রধান করে একটি আলাদা কমিটি গঠন করা হয়েছে। উপদেষ্টা বলেন, মেট্রোরেল বন্ধ থাকার মূল কারণ ছিল বিদ্যুৎ সংকট।

এ সময় মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমে যাচ্ছে এবং এলএনজি আমদানির আর্থিক সামর্থ্যও কমে গেছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

পিজিসিবি ও পিডিবি জানায়, আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ সার্কিট লাইনের ৪০০ কিলোভোল্টের দুটি তার কাছাকাছি আসায় শর্ট সার্কিট হয় এবং সমস্যার সৃষ্টি হয়। এর ফলে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের ১৫টি জেলা—খুলনা, যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, ভোলা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর ও রাজবাড়ী—প্রায় ১৫ মিনিট থেকে ৯৬ মিনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল। তবে সন্ধ্যার পর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করে এবং রাত সাড়ে আটটার পর পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়।

Header Ad
Header Ad

গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য

ছবি: সংগৃহীত

গাজীপুরের পূবাইলের হায়দরাবাদ এলাকায় একাধিক শিশু-কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগে এক মসজিদের ইমাম গণপিটুনির শিকার হয়ে পরে কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত ইমামের নাম রহিজ উদ্দিন (৩৫), তিনি চাঁদপুর জেলার মতলব থানার বাদশা মিয়ার ছেলে এবং হায়দরাবাদ আখলাদুল জামে মসজিদের ইমাম ও খতিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকালে গাজীপুর মহানগরীর হায়দরাবাদ এলাকায় এক কিশোরকে বলাৎকারের অভিযোগ ওঠে রহিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এতে উত্তেজিত এলাকাবাসী তাকে গাছে বেঁধে ব্যাপক মারধর করে, এমনকি তার গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে এবং নির্যাতিত এক কিশোরের বাবার দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায়।

পরে আদালতের মাধ্যমে তাকে গাজীপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। একই রাতের (২৭ এপ্রিল) দিবাগত ৩টার দিকে রহিজ উদ্দিন কারাগারে অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, মৃত ইমামের শরীরে গণপিটুনির চিহ্ন ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, গণপিটুনিতে গুরুতর আহত হওয়ার ফলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং মৃত্যুবরণ করেন।

পূবাইল থানার ওসি এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, রহিজ উদ্দিন স্থানীয় স্কুল-কলেজপড়ুয়া ছেলেদের নিজের থাকার কক্ষে এনে কম্পিউটার গেমস ও মোবাইল গেম খেলার সুযোগ দিতেন এবং কোমল পানীয় খাওয়াতেন। ওই পানীয় সেবনের পর অচেতন হয়ে পড়লে তিনি তাদের বলৎকার করতেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এক কলেজছাত্রের কাছ থেকে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে তাকে গণধোলাই দেয়।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি