বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অবশেষে সে আমার প্রেমিকা

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শেষ করে চড়ে বসলাম কুষ্টিয়া-ঝিনাইদাহগামী একটা বাসে। আমার সাথে আমার বন্ধু শুফম আছে। সে নিয়মিত বাসের জানালার পাশে বসে। তাই বাধ্য হয়ে বাসের ভিতরের সিটে বসতে হল আমার। দু'জনের-ই মন খারাপ। এত টাকা খরচ করে কোচিং করলাম, অথচ পরীক্ষায় ভালো করতে পাড়লাম না। আমি নিশ্চিত আমরা চান্স পাচ্ছি না।
বাসের মধ্যেই আমার বন্ধু আবার বই নিয়ে পড়তে বসলো। কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে, যে করেই হোক চান্স পেতে হবে। আমিও বই নিয়ে পড়তে বসলাম। কী পড়বো! সব তো মুখস্থ। কিন্তু কনফিউশনের জন্য রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ভালো করতে পারি নি। বই রেখে এদিক ওদিক তাকাচ্ছিলাম। পড়তে মন বসছে না। হঠাৎ আমার পাশে অপজিট সিটে বসা মেয়েটির চোখ চোখ পরে গেলো আমার। সাথে সাথে চোখ ফিরিয়ে নিয়ে সামনের দিকে তাকালাম আমি। কিন্তু অন্য দিকে কিছু সময় পরে আমার মন আমাকে বলছে, মুতালেব আবার তাকা। আমি আবার তাকালাম। আবার মেয়েটির চোখ চোখ পরে গেলো। আমি আবারো চোখ ফিরিয়ে নিলাম। নিজে নিজেই লজ্জায় লাল হয়ে গেলাম। বুকের মধ্যে দরফর দরফর করতে লাগলো। হাটবিট বেড়ে গেলো। আমি ভয়ে ভয়ে আবার তাকালাম। দেখি মেয়েটি অন্য দিকে চেয়ে আছে। আমার দিকে সে অনেক সময় পর একবার তাকালো। এবার মেয়েটি নিজেই মুখ ফিরিয়ে নিল। আমি ওর দিয়ে একপলকে চেয়ে আছি। চোখ অন্য কোন দিকে ঘুরিয়ে নিচ্ছি না। মেয়েটি মাঝে মাঝেই আমার দিকে তাকাচ্ছে এবং চক্ষুলজ্জায় সে বার বার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কিন্তু আমাকে হতাশ করছে না। আমাদের বাস যখন ঈশ্বরদীর পাকশী লালন শাহ ব্রিজের উপর তখন মেয়েটি আমার দিকে অনেক সময় ধরে চেয়ে আছে। সবাই চেয়ে আছে পদ্মার দিকে, হাডিং ব্রিজের দিকে। শুধু আমি চেয়ে আছি ঐ মেয়েটির দিকে আর মেয়েটি চেয়ে আছে আমার দিকে। হঠাৎ ওর ডানে বসে থাকা বৃদ্ধ মানুষটি কেমনে যেন বুঝে গেলো আমাদের মধ্যে কিছু একটা চলছে। বৃদ্ধ মানুষটি সিট পরিবর্তন করলো। বৃদ্ধ মেয়েটিকে উঠিয়ে জানালার দিকে বসিয়ে দিয়ে, সে মেয়েটির সিটে বসে আমার দিয়ে চেয়ে রইলো। আমি যখনই ঐ দিকে তাকাই তখনই দেখি বৃদ্ধ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। এ কী মুশকিলে পড়ে গেলাম। অবশেষে বাধ্য হয়ে আমি আমার বন্ধু শুফমকে বললাম, "দেখতো বন্ধু, বৃদ্ধ আমার দিকে তাকিয়ে আছে কী না।" বন্ধু বললো, হমম। আমি যতবার বললাম বন্ধু ততবার বললো, হমম চেয়ে আছে তোর দিকে। আমি আর ভয়ে তাকালাম না।


বাসের হেল্পার ডাকতে লাগলো ভার্সিটি গেট। ভার্সিটি গেট, আপনারা নামেন।
নামার সময় কেবলি একবার মেয়েটির দিকে তাকিয়েছি। ওমনি বৃদ্ধ মানুষটি আমার দিকে তেড়ে এলো। আর বললো, "এ দিকে কী। হুম, এ দিকে কী। আবার তাকালে চোখ উপরে নিব।"
চক্ষুলজ্জায়, আমার প্রাণ যেন যায় যায় অবস্থা। ভার্সিটির গেট থেকে সরে যেন সময় পাই নি আমি। দুই বন্ধু দৌড়াতে দৌড়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝখানে চলে গেলাম। বন্ধু শুফম, আমাকে রাগাইতে লাগলো, "এ দিকে কী। হুম এ দিকে কী।" বলে।

পরের দিন পরীক্ষার হলে বসে আছি। আমার ডানে একটা সিট ফাঁকা আছে। পরীক্ষা আর মাত্র মিনিট দশেক দেরি আছে। আমাদের উত্তর পত্র দিয়ে দিছে। ঠিক ভাবে নাম রোল পূরণ করার জন্য। আমার অন্য কোন দিকে মন নেই। মনযোগ দিয়ে পূরণ করছি। হঠাৎ একটি মেয়ের কণ্ঠ পেলাম। একটু যেতে দিবেন ভাই, ঐ সিট টি আমার।
আমি মেয়েটির দিকে না তাকিয়ে পথ ক্লিয়ার করে দিলাম। মেয়েটি সিটে গিয়ে বসলো। কিন্তু আমি ততটা ভ্রুক্ষেপ করলাম না। আপন মনে বৃত্ত ভরাট করছি। টাইম হয়ে গেছে। প্রশ্নও পেলাম। প্রশ্ন পড়ে পড়ে আবারো বৃত্ত ভরাট করছি। এক ঘন্টা টাইম। আশিটা বৃত্ত। পঞ্চান্নটি দাগিয়েছি। আর পারছি না। দাগালেই ভুল হবে। সময়ও আছে আরো তের মিনিট। বাম দিকের ছেলেকে দুইটা প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলাম। ও বললো পাড়ি না। আমাকেও ঐ ছেলে পরে দুইটি প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলো। আমিও রাগে রাগে বললাম পারি না। আর মিনিট দশেক সময় আছে। অবশেষে আমার ডানে বসা মেয়েটির দিকে তাকালাম। ও মা এ কী! তুমি? বাসের সেই মেয়ে আমার ডানে বসে আছে অথচ আমি ওর দিকে এবারও তাকাই নাই। না তাকিয়ে ভালোই হয়েছে। পরীক্ষা ভালো করেছি। ওর দিকে তাকালে আল্লাহ্ জানে কী হত!
মেয়েটি খুব করুন দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকালো। আমি বুঝতে পারলাম। ওর প্রশ্ন কমন পড়ে নাই। বললাম, তোমার প্রশ্ন এবং উত্তর পত্র আমাকে দেও। আর আমার টা তুমি নেও।
মেয়েটি বললো, "যদি ধরা পরি?"
রাখো তোমার ধরা পড়া। আমি ওর টা নিয়ে, খুব দ্রুত উত্তর পত্রের বৃত্ত ভরাট করতে লেগে গেলাম। আমার মনে হল দশ মিনিটে কম করে হলেও প্রায় ত্রিশটি বৃত্ত ভরাট করে দিলাম।
উত্তরপত্র জমা দিয়ে ও মন খারাপ করে চলে যাচ্ছিল। আমি ওর পিছু পিছু এলাম। কথা বললাম। কথায় কথায় জানতে পারলাম ঐ বৃদ্ধ নাকি ওর বাবা। ওর রোল নাম্বার নিলাম। ওর মোবাইল নাম্বার চাইলাম। ও দিলো। তারপরে যখন আমি ওর Facebook ID চাইবো তখন সামনে তাকিয়ে দেখি ঐ বৃদ্ধ হরকাবানের মত আমাদের দিকে ধেয়ে আসছে। কিসের FB ID. আমি পালিয়ে সময় পাই। চোখের পলকে পালিয়ে গেলাম।
অবশেষে দশ দিন পরে রেজাল্ট পাবলিশ হল। প্রথমে আমি ওর রোল ধরে রেজাল্ট দেখতে লাগলাম। ও দেখি দশম হয়েছে। আমি ওর রেজাল্ট দেখে উকে কল দিলাম। নাম্বার টা ভুল দেখাচ্ছে। তার মানে আমি দশটা নাম্বার তুলে ছিলাম। একটা ডিজিট কম আছে।
মন খারাপ করে নিজের রেজাল্ট দেখলাম। আমি একশত সাত নাম্বারে আছি।

পরের সপ্তাহে, ভাইভা। আমি ভাইভা দিতে গিয়ে নোটিশ বোর্ডে সন্ধান নিলাম। দেখি ওর ভাইভা যেখানে তার আগের রুমে আমার ভাইভা বোর্ড। আমি সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে ওর সন্ধান করছি।ওদের কেবল তিন নাম্বার পর্যন্ত ডেকেছে। কিন্তু ও সিরিয়ালে দাঁড়ায় নাই। আমার কেমন যেন লাগছিল। মনে মনে ভাবছিলাম। ও যদি ভাইভা দিতে না আসে তাহলে আমিও এখানে ভর্তি হবো না। এলাকার কলেজেই অনার্স করবো। আমাদের ভাইভা বোর্ডে আমার সিরিয়াল সাত। আমার ডাক এলো। আমি ভাইভা দিয়ে বের হচ্ছি আর ওদের সিরিয়ালের দিকে তাকিয়ে আছি যে, দেখি ও আসছে কী না। তবুও দেখচ্ছি ও সিরিয়ালে দাঁড়ায় নাই। ওদের সিরিয়ালে। দশম বলে কে যেন ডাকছে। সেই সময় মনে হল কে যেন পিছন থেকে ছুটে এসে আমাকে ধাক্কা মেরে দিলো। ধাক্কা লেগে ওর কাগজপাত্রের ফাইল ছুটে গেলো। পিছন ফিরে কেবলি গালি দেবো। ওমনি দেখি, এ আর কেউ না, আমার সেই মেয়েটি। আমি তখন জোরে করে রেসপন্স করলাম। দশম আছি। এবং ওর ছুটে পড়া ফাইল উঠি দিয়ে ভাইভার রুম অবধি এগিয়ে দিলাম। ভাইভা শেষ করে ও রুম থেকে বের হল। আমাকে দেখে ও মহা খুশি। অবশেষে ওর থেকে সঠিক নাম্বার আর FB ID পেলাম।

ভাইভা শেষে, পনেরো দিন পরে আমাদের ভর্তির তারিখ নির্ধারিত হল। আমার এলো লোকপ্রশাসন। ওর এলো ইংরেজি। আমার ভীষণ মন খারাপ হল। হয় তো ও আমার সাথে সম্পর্ক রাখবে না। কারণ ওর সাবজেক্ট ভালো। কিন্তু না। ভর্তি হবার পরে দেখি, ও আমাকে ছাড়া কিছুই বোঝে না। ক্লাস টাইম আর ঘুমের টাইম বাদে সব সময় ও আর আমি একসাথে। কখনো লেকের পারে। কখনো প্রশাসনিক ভবনের সামনে। কখনো রবীন্দ্রনাথ বাড়ি। কখনো লালনের মাজারে। সব সময় একসাথে। একটি ভালো কাপল হিসেবে সবার সামনে মুখ পরিচিত হয়ে উঠলাম আমরা। ছয় মাস যেতে না যেতেই হঠাৎ একদিন, ও উধাও। এক'দিন, দু'দিন চলে যায় আমি ওর সন্ধান পাই না। ফোন, FB সব বন্ধ ওর। ঘটনা কী! অবশেষে ওর ডিপার্টমেন্টের বন্ধুদের নিকট খোঁজ নিলাম। তারাও বলতে পারে না। সাত দিন চলে যায়। আমার অবস্থা টাইট। আমি দিশাহারা।

অবশেষে আমার ডিপার্টমেন্টের সবাই জেনে গেলো, আমি ক্লাস করছি না। লেকের পারে বসে সারাদিন সিগারেট খাই। রাতে রুমেও ফিরি না। মাঝে মাঝে নেশাও করি। বিষয়টি শিক্ষকেরা অবধি জেনে গেলো। অবশেষে ২০ দিনের মাথায় শিক্ষকদের মারুফতে জানতে পারলাম, ওর বাবা মারা গেছে। তাই ও এখন নিজের এলাকাতে আছে। ও ক‍্যাম্পাসে কবে আসবে তা কেউ বলতে পারে না। ২৫ দিনের মাথায় ওর বাড়ির ঠিকানা যোগার করলাম; ওদের ডিপার্টমেন্টের অফিস সহকারী নিকট থেকে। ২৬ দিনের দিন রওনা হলাম ওদের বাড়িতে। ওদের বাড়িতে গিয়ে দেখি কেউ নেই। আমি ওদের ঘরের বারান্দায় গিয়ে বসে রইলাম। একজন দু'জন করে অনেক লোক জড় হয়ে গেলো। ওদের মুখ থেকে শুনতে পেলাম কাসেম প্রধানের পরিচিত কোন এক নাতি আমার বন‍্যাকে বিয়ে করে বিদেশ নিয়ে গেছে আজ থেকে ছয় দিন আগে। বিষয়টি আমি কোন ভাবে মেনে নিতে পারছিলাম না। বন‍্যা বিদেশ যেতে পারে না। কারণ ওর পাসপোর্ট নেই। এত তাড়াতাড়ি এত কিছু কেমনে সম্ভব। আরো জানতে পারলাম ওদের পরিবারের অন‍্যান‍্য সদস্যরা সড়ক দুর্ঘটনায় অনেক আগেই মারা গেছে। আপন বলতে এই পিতা ছাড়া আর কেউ ছিল না ওর।
পরিস্থিতি অস্বাভাবিক দেখে অবশেষে কাসেম প্রধান এসে আমাকে পুলিশের হাতে তুলে দিলেন। কাসেম প্রধান এলাকার মোড়ল ও বিশাল রাজনৈতিক নেতা। পুলিশ আমাকে থানায় তুলে নিয়ে গেলো। তারপরের দিন আমার পিতা-মাতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার বিভাগের একজন শিক্ষক খবর পেয়ে থানায় এসে অজ্ঞান অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করেন। তারপরে কতদিন পরে আমার জ্ঞান ফিরে ছিল তা আমার জানা নেই। আমার এই অজ্ঞান অবস্থা নিয়ে বিশাল একটা কাণ্ড ঘটে যায়। থানার ওসি প্রত‍্যাহার হয় এবং কাসেম প্রধান আটক হয়ে জেলে যায়। অথচ আমাকে কেউ কিন্তু ফুলের টুকাও দিছিল না।

যাইহোক, আমার পড়াশোনা গ‍্যাপ পড়ে গেল। আমি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে যেতে চাই ছিলাম না। অবশেষে, বাবা-মায়ের অনুরোধে এক বছর গ‍্যাপ দিয়ে আবার প্রথম বর্ষে ক্লাস শুরু করতে বাধ্য হলাম। পড়াশোনা নামে মাত্রা চলতে থাকে। সব সময় সাহিত্যচর্চায় আমি বিভোর। কবিতা আর কবিতা। আমি কবি।
অবশেষে কোন মত করে অনার্স শেষ করলাম।বড় কবি হব বলে ঢাকায় আসলাম। এখানে এসে পড়লাম আরেক বিপদে। কে কারে চেনে। কিসের কবি। কবি এখন ঘরে ঘরে। কোন পত্রিকার অফিস আমারে নিলো না। কেউ নেওয়া তো দূরের কথা। আমাকে মূল‍্যায়ন অবধি করলো না।
কী আর করার। দিন শেষে, একটা ফুটঅভার ব্রিজের উপর শুয়ে পরলাম। মাঝ রাতে চেতন পেয়ে দেখি আমার গায়ে প্রচণ্ড জ্বর। পাশ দিয়ে কে যেন যাচ্ছিল। হাত দিয়ে তার পা চেপে ধরে বললাম, আমি বাঁচতে চাই। আমাকে বাঁচান। পা টা খুব নরম মনে হচ্ছিল। কোন এক মেয়ে মানুষের পা হয় তো হবে।


তারপরে কী ঘটেছিল তা আমি বলতে পারবো না। পরের দিন চেতন পেয়ে দেখি আমি একটা হাসপাতালের বেডের উপর শুয়ে আছি। শরীর অনেকটাই সুস্থ। আমি উঠে বসতেই কোন এক নার্স এসে আমাকে বললো, আপনি শুয়ে থাকুন। বিকেলে আপনার স্ত্রী এসে নিয়ে যাবে।
আমার স্ত্রী? কে সে? নিজেই নিজেকে জিজ্ঞাসা করলাম। তখন আমার আবার বার বার বন‍্যার কথা মনে পরে যাচ্ছিল। বন‍্যার কথা ভাবতে ভাবতে আমি আবার ঘুমিয়ে গেলাম। ঘুম থেকে জেগে দেখি আমার পাশে একটি মেয়ে বসে আছে। ধীরে ধীরে মেয়েটির মুখের দিকে তাকালাম। মুখের দিকে তাকিয়ে লাফিয়ে উঠলাম। কে? বন‍্যা, তুমি?
- হমমম, আমি বন‍্যা।
- এত দিন কোথায় ছিলে?
- সে অনেক কথা। পড়ে বলবো। এখন চল বাড়িতে যাই।
- আমাদের বাড়ি কোথায়?
হাসপাতাল থেকে রওনা হলাম। রিকশায় উঠে ও সব বললো। রাতে আমি নাকি ওর পা চেপে ধরে বাঁচতে চেয়ে ছিলাম।
অবশেষে আমি জানতে চাইলাম ওর বিদেশ যাওয়া নিয়ে। ও কিছুই বলতে চাচ্ছিল না। আমার জোড়াজুড়িতে অবশেষে মুখ খুললো।
কাসেম প্রধান ও ওনার নাতি বিয়ের নাটক সাজিয়ে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়। সেখানে প্রায় দুই বছর ছিল। সেখান থেকে ঢাকার কোন এক হোটেল মালিক তাকে কিনে নিয়ে এসেছে। ওখানে প্রায় আড়াই বছর থাকার পরে আজ দের বছরের মত হল ও মুক্তি পেয়েছে। হোটেল মালিক রাজনৈতিক রোষানলে পড়ে জেলহাজতে আছে। ওনার সব ব‍্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আপনা আপনি মুক্তি পেয়েছে ও। এখন ও স্বাধীন ভাবে বারে (মদের ক্লাবে) কাজ করে। পাশাপাশি একটা প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করছে।
আমি সব শুনে উকে বললাম, আমাকে বিয়ে করতে পারবা?
ও আমাকে বললো, বিয়ের কী দরকার! আজীবন আমি তোমার প্রেমিকা হিসেবে থাকতে চাই। রাখবা না?
আমি কিছু না বলে ওর হাসিমাখা উজ্জ্বল মুখের দিকে ফ‍্যালফ‍্যাল করে তাকিয়ে রইলাম।

 

 ডিএসএস/ 

 

 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া