শুক্রবার, ৩ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৯ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

অবশেষে পাওয়া (দ্য কনক্লুসিভ উইনস অফ লাভ)

অপুর চতুর্থ বর্ষের প্রথম ক্লাস আজ শুরু । আকাশে মেঘের ছড়াছড়ি, যেকোন সময় নেমে আসবে বৃষ্টির ফোয়ারা । তড়িঘড়ি করে ভার্সিটি এর লাল দোতলা বাসে উঠে পড়ল অপু । বাসে উঠতেই শুরু হয়ে গেল অবিরাম ধারায় বৃষ্টি । বৃষ্টির তালেতালে বাস এসে থামল একেবারেই ভার্সিটি এর মেইন গেইটের সামনে । সেখানেই বৃষ্টিসিক্ত নীল রঙয়ের ছাতা মাথায় দাড়িয়ে আছে সহজ-সরল প্রকৃতির চেহারার একটি মেয়ে । এতোটা মায়া জড়িয়ে আছে ওই চেহারায় যে, দেখেই অপুর ভেতরে কেমন একটা অনুভূতির সৃষ্টি হয়েছে সেটা বলে বোঝানো যাবে না । অপু দেরি না করে কাগজ বের করে লেখেছে “রিমঝিম বৃষ্টি, সহজ-সরল প্রকৃতির চেহারা সাথে সুস্পষ্ট বিরক্তির ছাপ সবকিছু মিলিয়ে অসাধারণ লাগছে আপনাকে” আর ফেলে দিয়েছে ওই অপরিচিতার সামনে । মেয়েটি কাগজটিকে তার সামনে পড়তে দেখে তুলে নিয়ে কিছুক্ষন ভাবুক মনে তাকিয়ে থেকে রেখে দিল ব্যাগের ভেতরে ।

 

প্রথম দেখাতেই অপু মেয়েটিকে ভালবেসে ফেলেছে কিনা জানে না, তবে ও ওই অপরিচিতার সাথে কথা বলবে । আর তাই প্রতিনিয়ত খুঁজে চলেছে ভার্সিটি এর প্রত্যেক প্রান্তে প্রান্তে । এভাবেই নিজের অজান্তে অপরিচিতার খোঁজে কেটে গেছে অনেক দিন । হঠাৎই একদিন আকাশের বুক চিরে নেমে এসেছে বৃষ্টির ধারা । সবুজের সমারোহে ঘেরা বৃষ্টিস্নাত বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন ঈর্ষনীয় সৌন্দার্যে সেজেছে । মাঠে বেধে যাওয়া পানির উপরে দেখা যাচ্ছে দূর্বাঘাসের শাখা-প্রশাখাগুলো আনন্দচিত্তে ঝিরিঝিরি বাতাসে নৃত্তে মেতে আছে । দুপাশে ফুলগাছের সারি আর মাঝে পিচঢালা রাস্তা নিয়েছে এক অপরূপ । সবকিছু কেমন যেন বৃষ্টি পেয়ে আনন্দ প্রকাশে বিন্দুমাত্র কৃপণতা করছে না । এমনই সময়ে ক্লাস শেষ করে বের হয়েছে অপু । প্রতিদিনের মতই রক্তিম চোখে খুঁজে চলেছে সেই অপরিচিতাকে । দূরত্ব যাইহোক অপুর দৃষ্টি সহসাই চলে যায় বৃষ্টিতে গাড় হওয়া লাল বাসের নিচে । আর সেখানেই প্রথম দেখায় মনের আকোকে আশ্রিত সেই সহজ সরল প্রকৃতির চেহারার কাউকে দেখা যাচ্ছে । নিজের অজান্তেই কেন যেন আজ বুকের মাঝে ধুক- ধুকানি শুরু করেছে । প্রতিনিয়ত যাকে খুজেছে, দিনশেষে তাকে খুঁজে না পেলও এমন হয়নি । যতটা ওর দিকে আগাচ্ছে ধুক-ধুকানি যেন ততটা বেড়েই চলেছে । যে সুযোগ আজ অপু পেয়েছে সেটাকে ও হাতছাড়া করবে না । যেভাবেই হোক কথা বলতেই হবে । বুকে অনেকটা সাহস নিয়ে অপু এগিয়ে গেল ওর দিকে---

অপুঃ এইযে আপু-----

অপরিচিতাঃ জ্বি আমাকে বলছেন----!!!!

অপলক দৃষ্টিতে অপু তাকিয়ে আছে আর ভাবছে গাম্ভীর্যবিহীন সহজ-সরল চেহারার কোন মানুষ এতোটা মনোমুগ্ধকর হতে পারে !!!

অপুঃ হ্যাঁ, যদি কিছু মনে না করেন তাহলে আপনার সাথে একটু কথা বলা যাবে ?

অপরিচিতাঃ জ্বি বলুন ।

অপুঃ আসলে আমি আপনাকে অনেক দিন ধরেই খুঁজে চলেছি একটা কথা বলার জন্য ।

অপরিচিতাঃ কি কথা?

অপুঃ আপনি ঐশী নামে কাউকে চেনেন?

অপরিচিতাঃ না, কেন বলেন তো??

অপুঃ না ... আমি ঐশী নামে একজনকে চিনতাম যার সাথে আপনার চেহারার অনেক মিল । (যদিও অপু ঐশী নামে কাউকে চিনত না) ।

অপুর কথাগুলো শুনে ওর আর বুঝতে বাকি রইল না যে, এই সেই মানুষটা যে তাকে গেইট এর সামনে থাকা অবস্থায় কাগজে লেখে দিয়েছিল কিছু একটা ।

অপরিচিতাঃ আপনি অপু তাই না?

অপুঃ হ্যাঁ । আপনি কি করে জানেন ?

অপরিচিতাঃ একজন মানুষ প্রতিদিন কোন একজনের প্রোফাইল ঘাটাঘাটি করবে আর সে জানবে না……!!!!

অপুঃ আপনার চেহারা অনেক সরল আর সরলের ভেতর দিয়ে কতটা সৌন্দার্য ফুটে ওঠে সেটা বলে বোঝাতে পারব না।

অপরিচিতাঃ আমাকে ডেকে কথা বলে আবার লজ্জা দিচ্ছেন কেমন হয়ে যাচ্ছে না ...? আর একথা তো একবার লিখেই দিয়েছেন ।

অপুঃ আচ্ছা আপনি অপরিচিতা মিথিলা কেন ?

অপরিচিতাঃ সবকিছু একদিনে না জানলে হবে না ?

 অপরিচিতার মুখে যে লজ্জার অক্রমে আনন্দের ফোয়ারা ছুটছিল সেটা আর অপুর বুঝতে বাকি রইল না । বাস ছেড়ে দেওয়ার সময় হয়ে গেছে । মিথিলা চলে গেল । জানা হল না ওর আসল নাম । অপুর মনে আজ আনন্দের জোয়ার বইছে । এতদিন যার খোঁজ করে আসছে আজ তার সাথে দেখা হয়েছে এবং কথাও হয়েছে ।

 দিন পেরিয়ে সন্ধ্যা নেমে এসেছে । আজ আর ভয় কিসের । নোটিফিকেশন বক্স এর দিকে চাতকের মত চেয়ে আছে অপু। অপরিচিতা শুধু রেকুয়েস্ট অ্যাকছেপ্টই করে নি, লেখে দিয়েছে কি করছিলেন ...?

অপুঃ অপেক্ষা । আচ্ছা অপরিচিতা মিথিলা কেন বললেন নাতো-----

অপরিচিতাঃ ইচ্ছা হয়েছিল তাই নাম দিয়েছিলাম । আর নাম জেনেও কি হবে---সবাই কেন এক নামেই মানুষকে চিনবে—আপনি অন্য নামে চিনুন না---

অপুঃ তাহলে আপনাকে আমি অমি বলি---

অপরিচিতাঃ অমি কেন ?

অপুঃ অপরিচিতা মিথিলা থেকে অমি ।

অপরিচিতাঃ আপনি তো দেখি মানুষের খুব সুন্দর নামও দিতে পারেন ।

অপুঃ কিছু মনে না করলে আপনাকে একটা কথা বলি ?

অমিঃ কি কথা ?

অপুঃ আমরা কি কাল দেখা করতে পারি ?

অমিঃ আপনি আমাকে আপনি করে না বলে তুমি করে বললে আমি খুশি হব । কোথায় দেখা হবে আমাদের ?

অপুঃ গন্ধরাজ বাগানের পাশে যেখানে অদৃশ্যে থেকে ওরা কিছু পাওয়ার আশা ছাড়াই সুবাস বিলিয়ে যায় ।

 পরদিন অপু আটটি নতুন ফোঁটা বকুল ফুল নিয়ে অমির সাথে দেখা করেছে ।

অমিঃ আপনি তো সুন্দর লেখালেখি করেন ।

অপুঃ পড়েছ তুমি ?

আমিঃ হুম ।

আপুঃ অনেক ধন্যবাদ । আচ্ছা অমি, কেউ যদি তোমার সৌন্দর্য তোমার কাছে থেকে অবলোকন করে তোমাকে তার লেখনির উপকরণ করতে চাই তাহলে তাকে সেই অধিকার দেবে ?

অমিঃ ভেবে দেখতে হবে ।

 মাঝে মাঝে দেখা আর ফেইসবুকে কথা এভাবেই চলে যাচ্ছে অপু-অমির দিন ।

কিছুদিন পর হঠাৎই অমি লেখেছে----

শুনেছি যারা লেখালিখি করে তারা নাকি অনেক সুরেলাও হয় । আমি কি বলতে চাইছি আপনি অবশ্যই বুঝেছেন । কারণ আমি জানি আপনি অনেক মেধাবী একজন মানুষ ।

গান শুনতে চাইছো তাইনা ?

একি আপনি তো দেখি আমার মনকেও পড়তে শুরু করেছেন ।

পুরোটা সময় যে মস্তিস্কের সবটুকু জায়গা দখল করে থাকে তার কথা শুনলেও তো অনেক কিছু বোঝা যায় ।

নিজে নিজে সবাই গান গায় । অপুও গেয়েছে কিন্তু কাউকে কোনদিন শুনাইনি ।

অপুঃ সুরের ভুবনে আমি এখনও নবীন পথচারী । সুতরাং তোমার মনের মত করে যদি আমি গান না শুনাতে পারি তাহলে অবশ্যই আমাকে ক্ষমা করে দিতে হবে । বল কি গান শুনবে ?

অমিঃ আপনার ইচ্ছা তবে বিশেষ কিছু হলে ভাল, যেটা সবার থেকে আলাদা, কারণ আমি চাই আপনার সবকিছু সবার থেকে আলাদা হোক ।

অমির ইচ্ছা পুরন করতেই অপু আজ গান শুরু করেছে ।

 

দূর থেকে দেখা …

দূর থেকে দেখা

পানি বিহীন ওই সমুদ্র---

আমি ভরেছি আমার ভালবাসায়

শুধু যে তোমার জন্য

আমি ভরেছি আমার ভালবাসায়

শুধু যে তোমার জন্য

আহা-হা-হা-হা-হা

আমি ভালবাসি তোমায়

আমি ভালবাসি তোমায় ---------------------------

 এ সুর আর কথার গান অমি আগে কখনও শোনে নি । ওর বুঝতে বাকি রইল না যে অপু অমির জন্যই এই গান রচনা করে নিজেই সুর করেছে ।

অমিঃ এক কথায় অসাধারণ ।

অপুঃ তোমাকে ঘিরেই তো আমার সব কিছু । আর তোমার জন্য এই গানটি ছোট্ট একটা উপহার । অমি-অপু হয়তো একদিন থাকবে না এই পৃথিবীতে, কিন্তু অমিকে নিয়ে অপুর রচনা করা গানটি আজীবন থেকে যাবে এইবিশ্বসংসারে 

অমিঃ অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে । আপনার মত একজন মানুষ পেয়ে আমি সত্যিই আনন্দিত ।

আজ অনেক খুশি অমি । তাইতো কিছুক্ষণ পরে সাজুগুজু করে অনেকগুলো ছবি তুলে পাঠিয়ে দিয়েছে অপুর কাছে । অপু লিখে দিয়েছে আজ আমি আকাশকে বলে দিব ও যেন প্রদীপ না জ্বেলে, বাতাসকে বলে দিব ও যেন নয়ন না খোলে । আমার পাখি আজ যে অপরূপ সৌন্দার্যে সেজেছে তাতে লজ্জা ওকে ছেয়ে ধরতে পারে ।

 ঈদের ছুটি হয়েছে,অমি অনেক আগেই বাড়িতে চলে গেছে । ঈদের কয়েকদিন আগে অপু বাড়ি পৌঁছেছে । বাড়িতেও আজ মেঘের ঘনঘটা । বৃষ্টি এসে গেছে । বৃষ্টিতে সিক্ত হচ্ছে উষ্ণ মাটির বুক । বৃষ্টি পেয়ে আনন্দচিত্তে কদম তার সুবাস ছড়িয়ে দিচ্ছে আর দেখতেও অসাধারণ লাগছে । অপু যে ওর রঙ্গিন পৃথিবীর চারিপাশে গাছগাছালির ভেতর ছোট্ট একটা ঘর বাধবে আর সেই ঘরের উত্তরের জানালার পাশে রোপন করবে সারিসারি কদমের গাছ । বর্ষায় সিক্ত কদমের সৌন্দার্য অমি পাশে থাকলে নিশ্চয় হাজারগুন বেড়ে যাবে । এরকম ভাবতে ভাবতে আর অমিকে অনুভব করতে করতেই নতুন এক সপ্নজগতে বিচরন করতে থাকে অপু ।

 যেই অনুভূতির নাম ভালবাসা সেটা কখনও বলে বোঝানো সম্ভব না । এ যে এক অদৃশ্য শক্তির মায়াজালে বাধা পড়েছে অপু যার জন্য সম্পূর্ণ অপরিচিতা থেকে অমি এমনই একজনে রূপান্তরিত হয়েছে যে অমি এখন অপুর রঙ্গিন পৃথিবীর অবিচ্ছেদ্য অংশ । অপরিচিতা থেকে অমিই এখন অপুর জীবনের ধ্যান-জ্ঞান, সবকিছু । সব চিন্তা চেতনা অমিকে ঘিরেই ।

 

এভাবে ভালই চলছিল অমি-অপুর রসায়ন । ওরা যেন একটা রঙ্গীন জগত তৈরী করে ফেলেছে যেই রাজ্যের একমাত্র রাজা অপু আর একমাত্র রাণী অমি । আশেপাশের সবকিছুকে ছাড়িয়ে ওদের মায়ার বন্ধনে মাধুর্য যেন দিনদিন বেড়েই চলছিল ।

 

চতুর্থ বর্ষের প্রায় শেষ প্রান্তে চলে এসেছে অপু। নামের পাশে জমা হয়েছে থিসিস এবং কয়েকটা প্রোজেক্ট । দিনে ক্যাম্পাস, সন্ধা থেকে রাত্রি অবধি টিউশনি আর বাসায় ফিরে সবকিছুর চাপ অপুর কাছে দিন যেন এখন ২৪ থেকে ৪৮ ঘন্টার হলে ভাল হয় । ব্যস্ত অপু এখন আর আগের মত ওতটা সময় অমিকে দিতে পারছে না । দিনে দু-একবার কথা আর মাঝে মাঝে ফেইসবুকে এস. এম. এস. । এভাবেই দিন পার হচ্ছে ওদের । দিনে-দিনে অমি বুঝতে পারছে অপু আর আগের মত ওর সাথে কথা বলছে না । অনেকটা একাকিই দিন পার করছে ও । অমি এখন তার পাশের মানুষগুলোকে দেখছে । যারা ভালবাসার মানুষটি, যার সাথে ঘর বেধে আজীবন কাটিয়ে দেবে তারা কতটা রঙ্গীন সময় পার করছে । অমি কথা বলবে অপুর সাথে, এরকম তার আর ভাল লাগছে না । দিনশেষে ক্লান্ত অপুর কাছে অমির কল এসেছে । অপুও অমির আবেগকে বুঝতে না পেরে উল্টাপাল্টা কথা বলেছে । অমি রাগে-অভিমানে কল কেটে দিয়েছে । অপুকে একটা কথা খুবই আলোড়িত করছে সেটা হল, যাকে আমি এতো ভালবাসি সে কেন আমার পরিস্থিতি বুঝার চেষ্টা না করে আমাকে অবিশ্বাস করে অন্য মানুষের সাথে তুলনা করবে ।

 

বিন্দুমাত্র অনবশিষ্ঠ্য বিশ্বাসে যদি একদিন পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে তাহলে বিশ্বাস বিহীন ভালবাসা সে তো এক ক্ষণস্থায়ী মরীচিকা ছাড়া আর কিছুই না । কষ্টের তীব্রতা এতোটা বেড়েছে যে ও আজ পোস্ট করেছে “যোগ্যতার তুলনায় অর্জিত সম্পদকে বিবেচনা না করে মানুষ নিজেকে উৎসর্গ করলেও অহংকারকে বেধে রাখে আজীবন” । অভিমানী অমি তার আভিমানকে এতটাই বাড়িয়েছে যে অপুর দেওয়া কলের অপেক্ষা করেছে কিন্তু অপুকে কল দেইনি । এভাবেই কেটে গেছে কয়েকটা দিন । প্রকৃতির কি নিয়ম এর মাঝে অমির বাড়ি থেকে কল এসেছে তারা অমির জন্য ছেলে দেখেছে । অমি তার অভিমানকে এতোটা প্রসিদ্ধ করেছে যে কোন কিছু না ভেবেই হ্যাঁ বলে দিয়েছে । কষ্টের তীব্রতা এতোটা বেড়েছে যে অপু আর সহ্য করতে না পেরে অমিকে কল দিয়েছে । কল রিসিভ হতেই ও পাশ থেকে শোনা যাচ্ছে "আমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে, আপনি আমাকে কল না দিলে আমি অনেক খুশি হব" । অভিমান থেকে এখন রাগটা মনে হয় আরও বেড়ে গেছে অপুর । ও শুধু বলেছে আবেগের বশীভূত হয়ে এখন তুমি যেটা করবে সেটা ভুল আর এখনের একটা ভুল হতে পারে সারা জীবনের কান্না । যা করবে অবশ্যই ভেবে করবে । ভালো থেকো । আর হ্যাঁ আমি তোমার জন্য অপেক্ষা নয় প্রতিক্ষা করব ।

 

এভাবেই কেটে যাচ্ছে প্রেমহীন, আপন হওয়া অপরিচিতা অমি বিহীন অপুর জীবন ।

যেই মায়াবী হাসিতে সকলে মুগ্ধ হয়ে যেত, সেই হাসিই অপুর মুখে আর দেখা যায় না । ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্তগুলো যেন বিষাদে রূপান্তরিত হয়েছে । এমন কিছু আনন্দঘন মুহূর্ত যেগুলো জীবনে একবারের বেশি আসবে না জেনেও, সেগুলোর মাঝে বিন্দু পরিমান সুখ খুঁজে পায় না অপু । পাখি হয়ে উড়তে চেয়েছিল যেই পৃথিবীতে সেই পৃথিবীই আজ অপুর কাছে কারাগার বিবেচিত হচ্ছে । এ যেন প্রদীপ জ্বেলে কারো জন্য অপেক্ষা করে হাজার বছর পার করে সে আসার আগেই প্রদীপকে নিভিয়ে ফেলা ।

 সময় চলে যেতে থাকে, দিন থেকে মাস । এভাবেই লুকানো কষ্ট আর অমিকে পাওয়ার আশা নিয়েই শেষ হয়ে যায় অপুর বি. এস. সি. ইঞ্জিনিয়ারিং । কিছুদিনের ভেতর ভালো একটা চাকরিও পেয়ে যায় অপু । এখন দিনগুলো ব্যস্ত পার হলেও নিঃশব্দ রজনীতে পুরো মাথাটা দখল করে নেয় অমি । এভাবেই চলে গেছে অনেকগুলো মাস এবং বছর ।

 আজ ১৪-ফেব্রুয়ারি । আজ অপুর বিয়ে । হ্যাঁ, আসল নাম না জানা সেই অমির সাথেই । ভাবছেন কিভাবে এটা সম্ভব তাই না ?

 কয়েকদিন আগে অপুর মোবাইলে একটা এস. এম. এস. এসেছিল যদি সত্যিই আমার জন্য প্রতিক্ষা করে থাকেন আর আমাকে ভালবেসেই থাকেন তাহলে আমার পরিবারের সাথে কথা বলে ২৫ এপ্রিল-ই বিয়ের তারিখ ঠিক করুন । আর একটা অনুরোধ থাকবে আপনার কাছে, আপনি বিগত দিনের কোন কিছু আমার কাছে জানতে চাইবেন না, শুধু এতটুকু জেনে রাখুন সেদিন আমার বিয়ে হয় নাই । অমির সেই আগের নাম্বার থেকেই এস এম এস এসেছিল, ভাষা ছিল পরিচিত, লেখার ধরন ছিল সেই  অপরিচিতার মতই । পিপাসিত অপুর মনে আজ শান্তির ফোয়ারা ছুটছে নাকি কোন প্রভাব পড়ছে না সেটাও বুঝতে পারছে না । শুধু মনে হচ্ছে “সেই অভিমানটাই প্রিয়জনের উপর করা উচিত যার জন্য প্রিয়জন প্রিয় থেকে অধিক অধিক আপন হতে পারে । সামান্য কিছু ভুল যদি কারো চোখের কান্নার জন্য দ্বায়ী হয় তাহলে সেই ভুলগুলো না করলেই তো সুখের ক্ষণস্থায়ী জীবনগুলো তৃপ্তিতে ভরে ওঠে” ।

 

ডিএসএস/ 

 

Header Ad
Header Ad

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঝরে গেল ৪ প্রাণ, আহত ২০

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৪ জন নিহতের পাশাপাশি আহত হয়েছে আরো ২০ জন। শুক্রবার ভোরে এক্সপ্রেসওয়ের হাসাড়া এলাকায় ঢাকামুখী লেনে বাস ও ট্রাকের সাথে সংঘর্ষে নিহত হন দুইজন, অন্যদিকে বৃহস্পতিবার রাতে সিরাজদিখানের নিমতলা এলাকায় মিনিবাসের ধাক্কায় দুজন নিহত হন।

নিহতরা হলেন, আব্দুল্লাহ পরিবহনের হেলপার শ্রীনগর উপজেলার কল্লিগাও গ্রামের বাসিন্দা মো. জীবন (৪৪) ও সিরাজদিখান উপজেলার মালখানগর ইউনিয়নের দেবিপুরা গ্রামের বাসিন্দা বাসযাত্রী মো. রায়হান (২৭)। নিহতদের মরদেহ শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে নিহত দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেলেও শুক্রবার ভোরে নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ঘাতক কাভার্ডভ্যানটিকে আটক করা হয়েছে বলে জানান হাসাড়া হাইওয়ে পুলিশের ওসি আব্দুল কাদের জিলানী। তবে কাভার্ডভ্যানের চালক পালিয়ে গেছেন বলে জানান ওসি।

এর আগে গত শুক্রবার ২৭ ডিসেম্বর এক্সপ্রেসওয়ের ধলেশ্বরী টোল প্লাজায় বাসের চাপায় নারী ও শিশুসহ দুই পরিবারের ৬ জন নিহত ও ৪ জন গুরুতর আহত হন।

Header Ad
Header Ad

মধ্যরাতে ডাকসু নিয়ে উত্তাল ঢাবি, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিন্ডিকেটে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) বিষয়ে আলোচনা না করতে উপাচার্যের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার অভিযোগ উঠে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিক বিক্ষোভের ডাক দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ডাকসুর রূপরেখা প্রণয়নের আল্টিমেটাম দেন তারা।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) রাত পৌনে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তারা এমন আল্টিমেটাম দেন।

বিক্ষোভে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‌‌‘যারা ডাকসু বন্ধের চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা রাস্তায় আছি। আমরা লীগকে বিতাড়িত করেছি, কোনো ছাত্রসংগঠনের ভয়ে ডাকসু থেকে পিছু হটব না। যারা ডাকসুর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, কবরস্থান, টেম্পুস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি করে তাদের আমরা ১৭ জুলাই লাল কার্ড দেখিয়েছি। প্রশাসনের কাছে বলব, আপনারা তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবি জোবায়ের বলেন, ‘ঢাবি শিক্ষার্থীরা হাসিনাকে পালাতে বাধ্য করেছে। সুতরাং নতুন করে যদি দানব তৈরি হয় শিক্ষার্থীরা তাদের পালাতে বাধ্য করবে। ঢাবি শিক্ষার্থীরা আর কোনো দানবকে দেখতে চায় না। ছাত্রদল যখন দেখেছে তারা ডাকসুতে জিততে পারবে না, তখন তারা ভিসি স্যারের সঙ্গে উচ্চবাচ্য করার সাহস দেখিয়েছে। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমরা এই প্রশাসনের সঙ্গেই আছি। অনতিবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দিয়ে ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক মাহিন সরকার বক্তব্যের শুরুতেই ছাত্রদল কর্তৃক হেনস্তার প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান। তিনি বলেন, উপাচার্যকে অপমান করার মাধ্যমে ছাত্রদল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়কেই অপমান করেছে। উপাচার্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে। আমরা শিক্ষার্থী নির্যাতনের আর পুনরাবৃত্তি চাই না।

Header Ad
Header Ad

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরিতে অপচয়ের অভিযোগ, দুদকের অনুসন্ধান শুরু

বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরিতে অপচয়ের অভিযোগ, দুদকের অনুসন্ধান শুরু। ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধুর অপ্রয়োজনীয় ম্যুরাল ও ভাস্কর্য নির্মাণে সরকারি অর্থ অপচয়ের অভিযোগ তদন্তে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একইসঙ্গে, সাবেক সরকারের কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং অনুসন্ধান শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) সকালে দুদকের কমিশন বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানান সংস্থার মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন।

তিনি জানান, চুয়াডাঙ্গার সাবেক এমপি সোলায়মান হক জোয়ার্দার ছেলুন এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ ও ৩৭ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএফআইইউ-এর সাবেক প্রধান মাসুদ বিশ্বাসের প্রায় দুই কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে, যার ভিত্তিতে তার বিরুদ্ধেও মামলা করার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে, ডাক বিভাগের সাবেক মহাপরিচালক শুধাংশ শেখর ভদ্রের বিরুদ্ধে ৯২ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে দুদক। এছাড়া বিদেশে পালানোর আশঙ্কায় সাবেক ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুকের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।

ঋণের নামে ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে কেয়া গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক পাঠানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। পাশাপাশি, সাংবাদিক মুন্নি সাহার বিরুদ্ধে ১৩৪ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে ঝরে গেল ৪ প্রাণ, আহত ২০
মধ্যরাতে ডাকসু নিয়ে উত্তাল ঢাবি, শিক্ষার্থীদের আল্টিমেটাম
বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরিতে অপচয়ের অভিযোগ, দুদকের অনুসন্ধান শুরু
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৭১ ফিলিস্তিনি নিহত
বাড়তে পারে ৬৫ পণ্যের দাম, ভ্যাট বৃদ্ধির প্রস্তাব
জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের তথ্য সংরক্ষণের আহ্বান
স্ত্রীসহ খালেদা জিয়ার বাসভবনে সেনাপ্রধান
রংপুরের টানা তৃতীয় জয়, বরিশালের বিপক্ষে সহজ জয়
ভারতে সিগারেট খাওয়া নিষিদ্ধ চান বলিউড কিং
ইসরায়েলি হামলায় গাজার পুলিশ প্রধানসহ নিহত ১১
নওগাঁয় এক বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৬৫
অবশেষে কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি
বাংলাদেশ আমাদের হারানো ভাই: পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৪৩তম বিসিএস: বাদ পড়া ২২৭ প্রার্থীদের পুনর্বিবেচনার সুযোগ
জানুয়ারিতে বোতলজাত এলপিজি’র দাম অপরিবর্তিত, অটো গ্যাসের দাম সামান্য কম
বছরের শুরুতেই বিয়ে করলেন গায়ক আরমান মালিক
টানা দুই ম্যাচে পরাজয়ের স্বাদ পেল ঢাকা, রাজশাহীর প্রথম জয়
গোয়েন্দা সংস্থার সুপারিশে ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ
ভারতে তুলনামূলক হারে কমেছে বাংলাদেশী পর্যটক
ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্তে নিত্যপণ্যে প্রভাব পড়বে না: অর্থ উপদেষ্টা