চারতলার পিংক কালারের শাড়িটা
নজরকাড়া।
শাওলির শাড়িটা ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছিল ড্রেনে। সেটা কুড়িয়ে এনেছে মোশতাক স্যার। চারতলায় ওটা দিয়েও এসেছে।
খবরটা তেমন কিছুনা।
তবু হেভি গরম করে রেখেছে পুরো বিল্ডিং।
এটা নিয়ে মোশতাক স্যারের বৌ ভীষণ খ্যাপা।
কে তোমাকে বলে দিলো যে, শাড়িটা কুড়িয়ে আবার সেটা চারতলায় পৌঁছে দিতে হবে?
সারাদিন সেই একই রকম কথার পিন মারা চলছে তো চলছেই..... ঝুক্কুর ঝুক্কুর মমিসিং,ঢাকা যাইতে কতদিন... এ-র মতোই ছন্দ।
তবুও সহ্য হতো,যদি মোশতাক স্যারের এ-ই ফ্লাটবাসীর কাছে খ্যাতিময় ঘটনাটা আর ডালপালা না ছড়াতো।
রাতে-বিরাতে শাওলির মিসকল,ফোন,অডিও, ভিডিও কলের যন্ত্রণা থেকে মুক্তির উপায় জানা নেই।
স্যারের বৌ এমনিতেই মেন্টাল চাপে আছেন। বাসায় আসা প্রাইভেট পড়ার মেয়েগুলোকেও ভয়। কার চোখের খপ্পরে পড়েন সৌম কান্তিময় মোশতাক স্যার। ড্রেসিং টেবিলে স্যার দাঁড়াতেই স্যারের বৌ গোয়েন্দাদের চোখ নিয়ে তাকান।এ ঘর ও ঘর ফলো করেন। স্যারের মোবাইলটা সুযোগ পেলেই চেক করেন।
স্যারের মোবাইলের লক খোলার পিন মুখস্থ। কিন্তু হঠাৎই দুদিন হলো পিন নাম্বারে মোবাইলটা খুলছেনা।
স্যার বললেন--- নো টেনশন। নতুন পিন খাতায় লিখে রাখো।
তাহলে ঠিকই আছে।অযথাই চাপ নিচ্ছিলাম।
রাতে মোশতাক স্যার সবসময়ই মোবাইল সহ বেরোন।
আজকেও বেরুলেন। কিন্তু সঙ্গে ওটা নেননি।
আজকেই সুবর্ণ সুযোগ। প্রতিদিন ইনবক্সে এত্তগুলা লাভ রিয়েক্ট কে আর দেবে। ও-ই পিংক কালারের শাড়িঅলা নারী শাওলিই তো হবে।
সুযোগ বুঝে শাওলির সাথে ইনবক্সে চলে ভাব বিনিময়ে র নানান ব্যবহার।
এনিয়ে আবার বৌয়ের উস্কানিমূলক কথার চোটে পিঠের চামড়া এমনিতেই উঠে যাচ্ছে।
আজ ভ্যালেন্টাইন্স ডে।
সলাজ হেসে শাওলির হাতের গিফট,মিষ্টির প্যাকেট,এক গোছা গ্লডিওলাস গ্রহন করে।
নিতেই হবে।
সারাদিন প্রাইভেট পড়ুয়া ছাত্রীরা কোলাহল করে। টেবিলের ওপর নানানরকম ফুল,চকলেট, ডায়েরিতে ঠাসা। রাত করে মোশতাক স্যার বাসায় ফিরলেন। সঙ্গে একটা বই।
এবারের বইমেলা থেকে এনেছেন।
কবিতার বই-- ফুলকেশরের পরাগ দেবো। কবি নির্ঝরা শাওলি।
একদম দেশলাইয়ের কাঠির মতো জ্বলে ওঠা বৌকে শান্ত করতে করতে মোশতাক স্যার বইয়ের ভেতর থেকে কতিপয় শব্দ বের করে পড়লেন।
বইটা স্যারের বউ নুরজাহানের নামে উৎসর্গ করেছে কবি নির্ঝরা শাওলি।
ওনার পড়নে আজকেও পিংক কালারের শাড়ি।
দারুণ রং!
ঈর্ষনীয়।
ডিএসএস/