আমি তোমার অপেক্ষায় আছি
মারিয়ার সাথে আমার প্রথম দেখা বাসস্ট্যান্ডে। হালকা নীল রংয়ের শাড়িতে তাকে ভীষণ সুন্দর লাগছিল। প্রথম দেখায় মনে হলো যেন পৃথিবীর বুকে একটি পরী নেমে এসেছে।
প্রথম দেখায় কাউকে ভালোবাসা যায় এটা অনেকেই বিশ্বাস করতে চাইবে না। এটা এক ধরনের পাগলামি বলবে অনেকেই। প্রথম দেখায় ভালো লাগা হয়, ভালোবাসা হয় না। তবে আমার ভালোবাসা হয়ে গেছে। একই গাড়িতে করে আমরা চট্টগ্রাম আসলাম অথচ আমি খেয়ালই করলাম না।
চট্টগ্রামের জিইসির মোড়ে আমিও দাঁড়িয়ে, মারিয়াও দাঁড়িয়ে। আমি অবশ্য সিএনজির খোঁজ করছি না। দূর থেকে শুধু মারিয়ার দিকে থাকিয়ে আছি। মারিয়া সেটাও লক্ষ্য করেছে।
খানিক সময় পর মারিয়ার সিএনজিতে উঠে চলে গেল। তার গন্তব্য কোথায় সেটাও আমি জানি না। আমার সামান্য মন খারাপ হলো। কি আর করা আমিও সিএনজি একটা ভাড়া করলাম। রওনা দিলাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে।
আমার নাম মানিক। ভালো নাম সাজিদুল ইসলাম ইমন। তবে বাবা-মা থেকে শুরু করে ঢাকা শহরের সবাই আমাকে মানিক নামেই চেনে। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স না পেলেও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেলাম। আজ হলে উঠবো। একবারে ঘুছিয়ে চলে এলাম।
ভার্সিটির জিরো পয়েন্টে নামতেই দেখি সেই মেয়েটাই। যাকে আনমনে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলাম জিইসি মোড়ে। তাকে দেখে আমি অদ্ভুত এক আনন্দ পেলাম। মনে হচ্ছিলো পৃথিবীর সবচাইতে ভাগ্যবান মানুষটি আমি। সিএনজি থেকে নেমে আমি যখন তার পিছু পিছু হাঁটছিলাম তখন সে আমার দিকে পেছন ফিরে তাকালো। আমি তার কাছাকাছি আসা পর্যন্ত সে দাঁড়িয়ে রইলো। আমি বুঝলাম সে আমাকে কিছু একটা বলবে। একপ্রকার প্রস্তুতি নিয়েইয়ে তার সামনে পর্যন্ত গেলাম। তার কাছাকাছি আসা মাত্রই সে আমার দিকে তাকিয়ে বললো, আপনি কি আমাকে ফলো করছেন?
আমার তখন একটু হাসি পেল। আমি বললাম, দুই হাতে ব্যাগ নিয়ে কেউ কি কাউকে ফলো করতে করতে এতা দূর চলে আসে? আমি এই ভার্সিটিতে অ্যাডমিশন নিয়েছি। আজ হলে উঠবো।
মারিয়া খানিকটা অবাক সুরে বললো, ওহহ তাই! আমিও তো এই ভার্সিটিতে পড়ি। আপনি কোন ডিপার্টমেন্টে আছেন?
আমি বিবিএ, আপনি?
আমার প্রশ্নের উত্তরে মারিয়া বললো সে চারুকলায় দ্বিতীয় বর্ষে পড়াশোনা করে। এটা শুনেই আমি ধাক্কা খেলাম। তবে এটাকে তেমন গুরুত্ব সহকারে নিলাম না। আমি যে তাকে পছন্দ করে ফেলছি সেটা বুঝানোর চেষ্টা করতে গিয়ে তাকে বলে ফেললাম, আপনি কিন্তু ভীষণ সুন্দর।
ভর্সিটিতে এসে বড় আপুদের সৌন্দর্য না খুঁজে পড়াশোনায় মনোযোগ দাও।
আমি একটু লজ্জ্বামাখা মুখে বললাম, ঠিক আছে আপু।
আমি আমার হলের দিকে চলে যাচ্ছিলাম। মারিয়াও তার হলে যাচ্ছে নিশ্চয়ই। নাকি ক্লাস করতে এসেছে! বুঝতে পারছি না। পেছন থেকে আবার জিজ্ঞেস করলাম, আপনি কোন হলে থাকেন আপু?
মারিয়া উত্তরে বললো, সেটা এই ভার্সিটিতে যখন আছো জেনে যাবা।
আমি নিশ্চিত হলাম হলে আছে। আর কথা বাড়ালাম না। চলে এলাম।
আমার অবশ্য বেশি দেরি হয়নি মারিয়া কোন হলে থাকে সেটা বের করতে। প্রীতিলতা হলে মারিয়া এ বছরই উঠেছে। ওহহ তার নাম মারিয়া সেটাও জেনে নিলাম। তার বাড়ি কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম। বাবার কর্মস্থল ঢাকায় হওয়া উত্তরায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকে তারা।
আমার ভার্সিটিতে এসে ভালো লাগার পরিমাণ দিগুণ হয়ে গেছে। একেতো পছন্দের একজনকে পেয়ে গেলাম, তার উপর হলের বড় ভাইগুলো আন্তরিক। একটু বোরিং লাগছে না। বড় ভাইগুলো মারিয়ার বিষয়ে অনেক হেল্প করেছে উল্টো। তাদের সাথে সব ধরনের কথাবার্তা শেয়ার করা যায়। একসাথে সিগারেটও খেতে পারি। সুতরাং তেমন ঝামেলা নাই। যদিও এটা সম্ভব হয়েছে আমার আপন বড় ভাই এখানকার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। সে এখান থেকেই মাস্টার্স পাস করেছে। এখন ব্যারিস্টারি করছে।
১৫ দিন পরেই মারিয়ার দেখা পেলাম। আমি যে তার হলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি এটা সে নজরে রেখেছিলো এতোদিন। তাই আমি যাতে না দেখি সেভাবে চলাচল করেছে এতোদিন। আজ আর সেটা পারেনি। ধরা পড়েই গিয়েছে। সাধারণত ভার্সিটির মেয়েদের প্রেম থাকলে তার প্রেমিকের হাতে ধোলাই খেতে হতো এতোদিনে। মারিয়ার যে কারও সাথে লাইন নাই সেটা এই কদিনে আমি নিশ্চিত হয়ে গিয়েছি।
কেমন আছেন মারিয়া আপু?
বাহ! হল কোনটাতে থাকি এটা জেনে যাবে বলেছিলাম। এখন দেখি নামটাও জেনে নিয়েছো।
কোনো কিছু মন থেকে চাইলে সেটা পাওয়া কঠিন না আপু।
পন্ডিতের মতো কথাও বলো দেখি! তো তুমি আমার পেছনে লেগেছো কেন?
কই আপু? আমি তো শুধু আপনার সাথে একটু কথা বলতে চাচ্ছিলাম। ভার্সিটিতে আসলাম একা একা বোরিং লাগছে। কেউ নাই পরিচিত আমার। এজন্যই আসলে আপনার কাছে আসা। আচ্ছা আপনি যদি কিছু মনে করেন তাহলে চলে যাচ্ছি আপু।
আচ্ছা দাঁড়াও। কি কথা বলো।
তেমন কিছু না আপু। আমি ভাবলাম আপনার সাথে আড্ডা দিব। আপনি আমাকে একটু ভার্সিটিটা ঘুরিয়ে দেখাবেন। কেমন যেন বোরিং লাগছে।
মারিয়া হাসছে। মারিয়ার টোল পড়া গালে হাসিটা আমার বুকে গিয়ে লাগছে। আমি বলতে পারছি না। মারিয়া বললো, একটা শর্ত আছে। তাহলে আমার সাথে আড্ডাও দিতে পারবা ঘুরতেও পারবা।
কি শর্ত আপু?
এইযে আপু ডাকতেছো এটা ডাকা যাবে না। তুমি আমার জুনিয়র এটা জানলে আমার বান্ধবীরা হাসাহাসি করবে।
আমি তো চমকে গেলাম। এ যেন মেঘ না চাইতে বৃষ্টি। আমি সাথে সাথে বললাম, ঠিক আছে মারিয়া। আমি তোমার শর্তে রাজি।
মারিয়া হাসছে। আর বলছে, তুমি তো ভারি চালু। চলো, তোমাকে ঘুরিয়া দেখাই ভার্সিটিটা।
এভাবে মারিয়ার সাথে নিয়মিত আড্ডা দেওয়ার পর ভালো বন্ধুত্ব হয়ে গেলো আমাদের। আমি আবিষ্কার করলাম মারিয়ার তেমন কোনো ছেলে বন্ধু নাই। সে ভার্সিটিতে খুব একটা চলাচল করে না। রুমেই থাকে। তার কিছু বান্ধবী আছে। আমি আসার পর সে বাইরে বের হয়। আড্ডা দেয়।
এভাবে আমাদের চার মাস পার হতে না হতে আমি আর অপেক্ষা করলাম না। দেখছি অনেকেই মারিয়ার দিকে নজর দিচ্ছে। পছন্দ করছে। তার এক বান্ধবীর মুখ থেকে শুনলাম, চারুকলার এক ছেলেও নাকি মারিয়াকে পছন্দ করে ফেললো। যেহেতু আসলেই মারিয়ার কোনো বয়ফ্রেন্ড নাই তাই সবাই সুযোগ নিতে পারে। তাই ২৯ মার্চ আমি মারিয়াকে প্রপোজ করে ফেললাম।
মারিয়া আমার প্রপোজ পেয়ে খুব কান্না করেছে। সে বলেছে তারও আমাকে প্রথম দিনেই ভালো লেগেছে। কিন্তু ভালোবাসতে পারবে না। তার কষ্ট হচ্ছে এই প্রপোজের মাধ্যমে আমাদের বন্ধুত্বটাও নষ্ট হয়ে গেলো।
আমি মারিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে ভালো লাগলে ভালোবাসতে সমস্যা কোথায়?
মারিয়া বললো, তোমার পরিবার আমার পরিবার এটা কোনোভাবেই মানবে না। আর আমি আমার পরিবারকে কষ্ট দিতে পারবো না।
আমি মারিয়াকে বুঝালাম। আমাদের ভালোবাসাটাই এখানে মূল বিষয়। আমরা দুজন দুজকে কতটা ভালোবাসি সেটাই আমাদের প্রধান্য দিতে হবে। মারিয়া আমাকে ফেলে হলে চলে গেলো। আমিও রাগ চলে এলাম।
এরপর প্রায় দুমাস মারিয়ার সাথে আর কথা হয়নি আমার। আমি খাওয়া-ধাওয়া ছেড়ে দিলাম। একদিন অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হলাম। মারিয়া জানতে পেরে হাসপাতালে এসেছে। কোনো কথা বলেনি। একটা ফুল আর চিরকুট রেখে চলে গেলো।
চিরকুটে লেখা আছে, সুস্থ হয়ে ফিরে আসো। তোমার অপেক্ষায় তোমার মারিয়া। ভালোবাসি।
আমি বুঝে গেলাম আমার প্রেম গ্রহণ করেছে। এরপর আমরা দু’বছরে নানা ঝড়-বাধা পেরিয়ে এক থেকেছি। সময়ের ব্যবধানে আমাদের বন্ধন আরও দৃঢ় হলো।
একদিন একটা সংবাদ এলো। সংবাদটা মারিয়ার জন্য কষ্টের হলেও আমার জন্য ভালো। মারিয়াদের ব্যাচ এক বছর সেশনজটে পড়েছে। যার কারণে আমরা দুজন একসাথেই হল থেকে বের হচ্ছি। সৌভাগ্যবশত আমাদের কোনো সেশনজট পড়েনি।
অনার্স শেষ করে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম বিয়ে করে ফেলবো। এরপর পরে মাস্টার্স করবো। পাশাপাশি দুজনে পার্ট টাইম চাকরি করবো। এরমধ্যে আমরা আমাদের পরিবারকে জানিয়েছি। মারিয়ার পরিবার সম্মতি দিলেও আমার পরিবার ঝামেলা সৃষ্টি করলো। মারিয়ার বয়স নিয়ে নানা কথা। বড় ভাইয়ের বউ নাকি মারিয়ার ছোট। এক পর্যায়ে আমার বাবা মারিয়ার বাবাকে ফোন দিয়ে অপমান করে।
মারিয়া কান্না গলায় ফোন করে আমাকে সেটা জানায়। সেইসাথে মারিয়া বলে, তার বাবাও এখন আমার সাথে তার বিয়ে দেবে না।
আমার সাথে মারিয়ার যোগাযোগ করতে না পারার জন্য মোবাইলও নিয়ে নিয়েছে তার বাবা। এদিকে আমিও নিরুপায় হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে গেলাম। বন্ধুর বাসায় দু-চারদিন থাকলাম। মারিয়ার সাথে কোনোভাবে যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। তাকে আমার ঠিকানাও জানাতে পারছি না। সে বাড্ডা আমার বাড়িটুকু চেনে। আমিও তারা উত্তরায় কোথায় থাকি সেটা জানি না।
আমি একটা প্রাইভেট কোম্পানিতে ভালো চাকরি পেয়ে গেলাম। আড়াই মাস পর একটা অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন এলো। ওপাশ থেকে মারিয়ার গলা। আমি বেশ উত্তেজিত হয়ে গেলাম। মারিয়া বললো সে বাড্ডায়। ঘর থেকে পালিয়ে চলে এসেছে। আমি অফিস থেকে বেরিয়ে বাড্ডা রিং রোড়ে চলে আসলাম। মারিয়াকে দেখে জড়িয়ে না ধরে পারলাম না। আশেপাশের মানুষগুলো হা করে তাকিয়ে আছে দেখে বেশিক্ষণ এভাবে থাকলাম না। এরপর মারিয়াকে নিয়ে সোজা কাজী অফিসে। দুইমাস চাকরি করে ২২ হাজার টাকা জমিয়েছি। বিয়ে আপাতত এটুকুতেই সারিয়ে ফেলবো। দু-চারটা বন্ধুকে রাতে ডিনার করালাম। এরপর আমরা চট্টগ্রাম চলে এলাম।
পরিবার থেকে দূরে এসে আমাদের চেনা জায়গায় সংসার করতেই চট্টগ্রাম আসা। চট্টগ্রামের পাহাড়তলীতে একটা বাসা নিলাম। পাশাপাশি একটা চাকরিও নিলাম এখানকার এক বন্ধুকে বলে। ১২ হাজার টাকা পাবো। সেইসাথে দুজনে কিছু টিউশনিও পেলাম আশাপাশের বাসার মাধ্যমে। প্রথম কয়েকমাস আমাদের থাকতে এবং খাওয়া ধাওয়া, বাজার সব মিলিয়ে কষ্ট হয়েছে। এরপর আস্তে আস্তে দুজন মানিয়ে নিয়েছি। আর ইনকামও বেড়েছে।
আমাদের সংসার খুব সুখেই কাটছিলো। আমাদের এখন দুটি ফুটফুটে কন্যা আছে। আমাদের প্রথম সন্তান পৃথিবীতে আসার দুই মাসের মাথায় মারিয়ার বাবা-মা মেনে নেয় আমাদের। আর আমার বড় মেয়ে যখন কথা বলা শিখেছে তখন আমার পরিবার মেনে নয়। যদিও আমরা চট্টগ্রামেই বসবাস করছি। বাড়িতে শুধু ঈদে যাওয়া হতো।
আমার জীবনের সবচেয়ে বড় বেদনাময় দিনটা ছিলো আমাদের দ্বিতীয় সন্তানের জন্ম নেওয়ার দিন। সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে মারিয়া আমাকে ছেড়ে চলে যায়। মূলত রক্তের অভাবেই মারা যায় আমার মারিয়া। কত খুঁজেছি এবি নেগেটিভ রক্ত পাইনি। রক্তের অভাবে আমার স্ত্রীর মৃত্যুর পর আমি নিজেই ভেঙে পড়েছিলাম। কিন্তু তার রেখে যাওয়া নবজাতকের জন্য আবারও শক্ত হলাম। তাকে বাঁচাতে হবে।
মারিয়ার দিয়ে যাওয়া উপহারগুলো নিয়েই আমি বেঁচে আছি। এই বাচ্চাগুলোকে নিয়ে আমি চট্টগ্রামেই আছি। ছোট মেয়ের সবকিছু আমিই করেছি—তবুও মারিয়ার কিংবা আমার বাড়িতে যাইনি। চাকরিতে যাওয়ার সময় বন্ধুর বাসায় দিয়ে আসতাম বাচ্ছা দুটো। ফেরার সময় নিয়ে আসতাম। এভাবে মাস ছয়েক পর বন্ধুও বিরক্ত হয়ে গেছে।
এরপর বাধ্য হয়ে বাসায় একটা নারীকে রাখলাম বাচ্চা দুটোকে দেখাশোনার জন্য। মাসে দশ হাজার টাকা বেতন ছিল। বাসায় সিসি ক্যামেরা লাগিয়ে অফিসে বসে সর্বাক্ষণিক নজরে রাখতাম।
আস্তে আস্তে এখন বড় মেয়ে ক্লাস নাইনে আর ছোটটা ক্লাস ফোরে পড়ছে। এখন বড় বোনই ছোট বোনকে দেখে রাখে। এখন আমার দিন কাটে আমার এই সন্তানগুলো নিয়ে।
মারিয়ার চলে যাওয়ার স্মৃতিটা আমি স্মরণ করতে স্বাচ্ছন্দ্য করি না। আমার শুধু আমাদের প্রেমের সময়টুকু স্মরণ হয়। আমি আমার মারিয়ার দেওয়া উপহার আর স্মৃতিটুকু নিয়েই বেঁচে থাকি প্রতিদিন। মাঝে মাঝে স্বপ্নে কিংবা কল্পনায়ও কথা বলি মারিয়ার সাথে। মারিয়ার কথাও আমি শুনি। আমার মেয়েরা আমাকে পাগল বলে। মেয়েরা বলে, আমি নিজের সাথেই কথা বলি। অথচ মারিয়া আমায় রোজ বলে, আমি তোমার অপেক্ষায় আছি।
আরএ/