সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

এই সিনিয়র!

ভার্সিটির প্রথম দিন ছিল।
সকাল নয়টার মধ্যে ভয়ার্ত মন নিয়ে এক পা দু'পা করে ক্যাম্পাসে ঢুকে নিজেকে ভীষণ অসহায় আবিষ্কার করলাম।

একটু পর খুঁজতে খুঁজতে নিজের ডিপার্টমেন্টে পৌঁছে গেলাম। চোখের সামনে সব অপরিচিত মানুষের ভিড়।
সাহস যুগিয়ে কথা বলে পরিচিত হলাম ক'জন নতুন বন্ধুর সঙ্গে। ডিপার্টমেন্টের ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাই আপুরা সে’দিন আমরা যারা এসেছিলাম সবাইকে ডেকে নিলো পরিচয় পর্বের জন্য।
পরিচয় পর্বটা হচ্ছে সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্কের আনুষ্ঠানিকতা। যদিও অনেক সিনিয়রের কাছে বিষয়টা সম্পর্কে আগাম ধারণা নিয়েছিলাম তবুও বড্ড নার্ভাস এবং ভয় করছিল সেই মুহূর্তে।
পরিচয়ে নেওয়ার মাঝে কেউ ভুল করলে ভাইয়ারা বকা দিচ্ছেন, কারও থেকে গান শুনছেন, কেউ কবিতা আবৃত্তি করছে কেউ বা কৌতুক করছে।

হঠাৎ শায়লা নামের এক ইমিডিয়েট সিনিয়র আপু আমার নাম জেনে নিয়ে আমায় বলল,
-রাফিদ, তুমি একটা গান গেয়ে শুনাও তো।

তার এই যত্ন করে বলা কথাটা শুনে নিমিষেই সব নার্ভাস ও ভয় কীভাবে যেন কেটে গিয়েছিল আমার। খুব স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে গান গেয়ে সে'দিন সবার কাছে বেশ বাহবা পেয়েছিলাম।

রাতে শায়লা আপুর বলা সেই কথা’টা এবং তার মায়াবী চেহারা বারবার আমার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। এভাবে ক’দিন কেটে যায়, এরই মধ্যে সবার সঙ্গে পরিচিত হয়ে উঠি। ইমিডিয়েটসহ অনেক সিনিয়র ভাই আপুর সঙ্গে ফেইসবুকে ফ্রেন্ড হয়ে যাই। ফেইসবুকে আপলোড করা শায়লা আপুর ছবিগুলো মনোযোগ দিয়ে দেখতাম। তাকে দেখলেই একটা ভালোলাগা অনুভব হতো। পৃথিবীর একটা সুন্দর সুখ হচ্ছে কাউকে একটুখানি দেখার সুখ, যার উপলব্ধিটুকু ভীষণ শান্তির। তার ছবিতে প্রতিনিয়ত রিয়্যাক্ট প্রতিনিয়ত, তার ছবিকে কেন্দ্র করে সুন্দর করে গুছিয়ে মন্তব্য করতাম। মাঝে মাঝে ডে স্টোরির রিপ্লে দিতাম। সবকিছুতে শায়লা আপুর মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করতাম। 

ডিপার্টমেন্টের যেকোনো প্রয়োজনে আমি শায়লা আপুকেই নক করতাম।এভাবেই ধীরে ধীরে নিজের অজান্তেই আপুর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ছিলাম। কি করব ঠিক ভেবে পাচ্ছিলাম না। তাকে দেখলেই কেমন যেন অস্বস্তিতে পড়ে যেতাম, সব মিলিয়ে একটা বিব্রতকর পরিস্থিতি। এভাবে শায়লা আপুর খুব কাছের জুনিয়র হয়ে উঠেছিলাম।

ক'দিন ধরে সিনিয়র জুনিয়র সম্পর্কে তৈরি হয় নাটক মুভিগুলো দেখছিলাম। মানুষ যখন কোনো কিছু ভেবে ভালোলাগা অনুভব করে তখন সে সব কিছুতেই সেই অনুভূতি টুকু মেলাতে চায়। সিনিয়র জুনিয়র কনসেপ্টের নাটক মুভিগুলোতে দেখতাম কীভাবে তাদের সম্পর্কের শুরু টা হয়, কীভাবে তারা তাদের দূরুত্ব কে পিছনে ঠেলে কাছে আসে। সারাদিন মাথায় এই চিন্তাগুলোই ঘুরপাক খেতো।

একদিন আপুর থেকে আমার কোর্সের একটা বই চেয়ে নেই যেহেতু তিনি ইমিডিয়েট সিনিয়র তাই তাদের গত বছরের বই গুলো আমাদেরও পড়তে হবে। দু'দিন পর সেটা ফেরত দেওয়ার সময় এক বন্ধুর পরামর্শে আর এদিকে নাটক মুভিগুলোর আইডিয়া কাজে লাগিয়ে বইয়ের প্রথম পেজে একটা চিরকুট আর গোলাপ দিয়েছিলাম।
চিরকুটে লিখেছিলাম,

শায়লা আপু, আপনাকে আমি ভীষণ পছন্দ করি। আমি জুনিয়র হিসেবে বলছি না। বর্তমানে তো অনেক জুনিয়র সিনিয়ররা সম্পর্কে জড়াচ্ছে, তাদের সম্পর্কগুলো পূর্ণতাও পাচ্ছে। মনের বোঝাপড়া বড় বিষয়। আপনার সব কথা মেনে চলব, আমাকে একটু সুযোগ দিয়ে দেখুন প্লিজ। আপনাকে ভীষণ ভালোবাসি আপু।

ইতি, আপনার স্নেহের রাফিদ

বইটা ফেরত দেওয়ার পর বার বার মনে হচ্ছিল এতটা কাণ্ডজ্ঞানহীন কাজ আমি কীভাবে করে বসলাম! বইটা জমা দেওয়ার পরদিনই আপু আমাকে ডিপার্টমেন্ট থেকে দূরে ডেকে নিয়ে গিয়ে রাগান্বিতভাবে বলল, এসব করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হইছো? মাথায় সারাদিন এসব ঘুরে। আর কাউকে পেলে না শেষমেশ নিজ ডিপার্টমেন্ট সিনিয়র কে!
লজ্জা করে না তোমার।এত দুঃসাহস কই থেকে আসে? জানাব তোমার ব্যাচমেট দের যে তুমি এসব করে বেড়াও।

কাঁদতে কাঁদতে আপুর কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম সেদিন। বার বার অনুরোধ করেছিলাম কাউকে কিছু না বলতে। মুখের উপর গোলাপ চিরকুটটা ছুড়ে ফেলে তিনি চলে গেলেন।

এভাবে কেটে গেল আরও দুই দিন। আপুর দিকে ভুলেও তাকাতাম না। সবসময় তাকে ইগনোর করে চলতাম। ভুলতে চেষ্টা করতাম বিষয়টাকে। তবে একটা জিনিস বুঝতাম জীবনের প্রথম ভালো লাগা ভুলে যাওয়া কঠিন তবে মনে রেখেই বা কী লাভ!

একদিন হঠাৎ ক্যাম্পাসে এক ইমিডিয়েট সিনিয়র ভাই আমাকে একা ডেকে নিলো ভার্সিটির বাসে। ভয়ে কাঁপতেছিলাম প্রচুর। এরই মাঝে তিনি হঠাৎ গালে থাপ্পর বসিয়ে দিলেন আর একটা চড় মারতে গিয়ে থেমে গেলেন। রাগান্বিত হয়ে বললেন, তোর সাহস হয় কীভাবে! এতটুক ছেলে, ভার্সিটিতে পা দিস নাই এক মাস হলো। তাতেই এতকিছু?

কলার চেপে ধরে বললেন, সিনিয়র আপুর সঙ্গে প্রেম করবি তাই না? তোর প্রেম ভরে দিব আমি আজ।

আমার চোখ দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝরছিল। পাশে থাকা আর একটা ভাই কোন মতো তাকে ম্যানেজ করে আমায় চলে যেতে বলল।

ভাবিনি, ভার্সিটি জীবনে এসে কাউকে ভালো লাগাটা এতবড় ভুল হয়ে দাঁড়াবে। শুধু সিনিয়র বলেই কি এমন!

সেদিন রাতে এতসব অপমান বোধ থেকে আত্মহত্যার কথা চিন্তা করছিলাম। বাসার কারও ফোন রিসিভ করতাম না।রাতে ডিপার্টমেন্টের বন্ধু রাকিব ফোন করে। ও আজকের বিষয়টা দেখে ফেলেছে। আমি ওকে জানাতে চাচ্ছিলাম না পরে এক প্রকার জোর করেই রাকিব সব শুনে নেয়। তারপর আমার পরিস্থিতি বিবেচনা করে এক মুহূর্ত দেরি না করে আমার হোস্টেলে এসে আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় মন ভালো করার জন্য।

এভাবে চার দিন কেটে যায়। এসব মানসিক চাপে আমি একদম ভেঙ্গে পড়েছিলাম।

এর ভেতর আপুর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ হয়নি। তার দিকে ভুল করেও তাকাতাম না। সবসময় চেষ্টা করতাম তাকে এড়িয়ে চলার। ফেব্রুয়ারির ৭ তারিখ, ভার্সিটির গেট দিয়ে ঢুকতেছিলাম এমন সময় শায়লা আপুকে দেখি রিকশা থেকে নামতে। আমার সামনে নামছিলেন তাই অনিচ্ছা স্বত্তেও তাকে চোখে পড়ে যায়। রিকশা থেকে নামার সময় হঠাৎ পা ফসকে রিকশা থেকে রাস্তায় পড়ে যান, পাশ থেকে আসা আর একটা গাড়িতে বেশ জোরে ঢাক্কা খান মাথায় আর কাঁধে।

তাৎক্ষণিক ভাবে তার কপাল ফেটে রক্ত পড়তে থাক। কোনোকিছু না ভেবে আমি এক দৌড়ে আপুকে ওই রিকশা তুলে হসপিটালে রওনা দেই। এর ভেতর আপু জ্ঞান হারিয়ে বেহুশ হয়ে যান। ডাক্তার আপুকে চেক করে বলেন ব্লিডিং বেশি হওয়াতে এখনি এ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন দুই ব্যাগ। ভাগ্য ক্রমে আমার ব্লাডও ছিল এ পজিটিভ। ডাক্তারকে বললাম আমার গ্রুপে পজিটিভ, যতটুক রক্ত লাগে আমার থেকে নিন।

এভাবে দুই ব্যাগ রক্ত দেই আপুকে। রক্ত দেওয়া শেষে একটু পর আপুকে জানালা দিয়ে দেখলাম। ততক্ষণে আপুর বন্ধুরা হসপিটালে চলে এসেছেন তাকে দেখার জন্য। আমি হসপিটাল থেকে চুপচাপ চলে আসি। এভাবে কেটে গেল ৭ দিন। এর ভিতর আপুর খোঁজ পেলাম তিনি অনেকটা সুস্থ হয়েছেন এবং গত কাল হসপিটাল থেকে রিলিজ ও হয়েছেন।

১৩ ফেব্রুয়ারি রাতের দিকে ফোনে মেসেজের নোটিফিকেশন বেজে উঠে, চেক করে দেখি শায়লা আপুর টেক্সট। ভাবলাম, হয়তো থ্যাংক্স দেবে। যতই রাগ করুক, দুই ব্যাগ রক্ত দিয়ে যে দায়িত্ব নিভিয়েছি তার জন্য ধন্যবাদ দিতেই পারেন।

ইনবক্সে গিয়ে দেখি আপু লিখেছেন, রাফিদ তোমার প্রিয় রঙ কী? আমি অবাক হয়ে গেলাম, ভুল করে দিয়েছে কি না? অথচ নামতো আমারই লিখেছে, ভুল হয় কীভাবে! জবাব দিলাম, নীল রঙ।

আবার জানতে চাইলেন কাল ভার্সিটি যাব কি না আমি শুধু 'হ্যাঁ' বলে রিপ্লে দিলাম।

১৪ ফেব্রুয়ারির দিন ক্যাম্পাস জুড়ে ছেলে মেয়েদের ছড়াছড়ি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে প্রথম ১৪ ফেব্রুয়ারির আমেজ দেখছি। রঙ বেরঙের শাড়ি, পাণ্জাবিতে সবাই সেজেছে।

নীল পাণ্জাবি পড়ে ক্যাম্পাসে গেলাম। বন্ধুদের সঙ্গে বেঞ্চে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। দূর হতে শায়লা আপুকে দেখলাম। নীল শাড়ি পড়ে এদিকেই আসছেন। আমার কাছাকাছি এসে আপু আমায় ডেকে নিলেন। আমায় দেখেই মুচকি হেসে বললেন বাহ দুজনেই নীল রঙ্গের ড্রেস পরেছি। তা আপুকে ঘুরাবে না আজ? আপুর দিকে একটু তাকালাম, নীল শাড়ি আর নীল চুড়িতে আপুকে অসম্ভব সুন্দর লাগছিল।
পৃথিবীর সৌন্দর্যের প্রতীক বোধহয় নীল, সেই সৌন্দর্যকে দু'ফুটেরও কম দূরুত্ব থেকে দেখছিলাম।

ইতস্তত বোধ হচ্ছিল তবুও রিকশা ডেকে আপুর পাশে বসেছিলাম। একটু পর আপু রিকশা থামিয়ে আমাকে নিয়ে একটা কোলাহলহীন জায়গায় নিয়ে গেলেন। আমাকে অবাক করে দিয়ে মাটিতে বসে তিনি একটা গোলাপ হাতে বললেন,

একবছর তো সমস্যা না। জুনিয়রের সঙ্গে প্রেম হলে শাসনে রাখা যাবে। লাভ আছে। জুনিয়ররা বয়ফ্রেন্ড হিসেবেও কেয়ারিং ও ভীষণ।

আমি ভয় ভয় চেহারায় এসব শুনে আপুর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আপু ধমক দিয়ে বললেন এভাবে কতক্ষণ বসিয়ে রাখবে ফুলটা নাও পড়ে যাবে তো।

ফুলটা নিয়ে আপুকে ধন্যবাদ দিলাম। আপু বললো, গাধা একটা।

এভাবে কেউ ফুল দিয়ে প্রপোজ করলে তাকে ধন্যবাদ দেয়। আর আমাক তুমি কি না ভালোবাসো? আমার সঙ্গে প্রেম করবা? এই তার নমুনা!

তারপর কানে গিয়ে বললেন, আমরা দু'জন যখন একসঙ্গে থাকব তখন শুধু শায়লা বলবে।
শায়লা আপু বলবে না বু্দ্ধ।

শক্ত করে আপুর হাতটা নিজের হাতে টেনে বলেছিলাম, এই সিনিয়র, এই হাতটা সারাজীবন হাতের ভাঁজে থাকুক। থাকবে তো?

আপু তার অন্য হাতটাও উপরে রেখে বললেন, বিশ্বাস রাখো, থাকবে ইনশাআল্লাহ।

এভাবেই চলছে আমাদের পথচলা।
এ বছর ১৪ ফেব্রুয়ারিতে আমাদের সম্পর্কের তিন বছর পূর্ণ হবে।

ডিএসএস/

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু