বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ | ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান

বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা ছেলে। ছোটবেলা থেকে সে সবার চেয়ে আলাদা মন মানুসিকতা নিয়ে বড় হয়েছে। বাবু ছিল লাজুক স্বভাবের। সবসময় কম কথা বলত। তবে তার মেধা আর দক্ষতা ছিল সবার চেয়ে ভিন্ন। বাবু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনাকালীন তার কোনো বান্ধবী ছিল না। অনেক মেয়ে বাবুকে বন্ধু হিসেবে পেতে চাইলেও বাবু তাদের ফিরিয়ে দিত। সালটা ২০১৫। বাবু সে সময় মাধ্যমিক স্তর পার করে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। সেসময় বাবুর বয়স ১৮ বছর। কলেজে ভর্তি হওয়ার সুবাদে সে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে, পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতে থাকে। ছাত্র রাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে বাবু অল্প সময়ের ভেতরে সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

একটা সময় লাজুক স্বভাবের বাবুর আচার-ব্যবহার, মেধা-দক্ষতা ও দেখতে শুনতে ভালো হওয়ায় কারণে অনেক মেয়ে তাদের জীবনে বাবুকে স্বপ্নের রাজকুমার হিসেবে পেতে চায়। তবে বাবু বরাবরের মতো কলেজ জীবনেও সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।

বাবুর এক বন্ধু ছিল। তার নাম আরিফুল ইসলাম। একই গ্রামে তাদের বাসা। বাবুর চাচাতো বোনের সাথে আরিফুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বাবু সেটা জানত। আরিফুল দেখতে শুনতে অনেক সুন্দর হওয়ায় অনেক মেয়ের সাথে আরিফুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে, বাবু আরিফুলের এসমস্ত কর্মকাণ্ড পছন্দ করত না। একের অধিক সম্পর্কে জড়িয়ে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট না করার জন্য বাবু বহুবার আরিফুলকে অনুরোধ করে। তবে, আরিফুল বাবুর কোনো কোথায় কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে এসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আরিফুল ও বাবুর ভেতরে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এটা নিয়ে বাবু মনে মনে অনেক কষ্ট পায়। ঘটনার একপর্যায়ে বাবু আরিফুলের সাথে তর্কে জড়ায়। বাবু আরিফুলকে বলে 'চাইলে একটা প্রেমকে পূর্ণতা দেওয়া যায়, হাজারটা প্রেম করে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করার মানে হয় না। আর সেটা সে (বাবু) দেখিয়ে দেবে।'

এসবের মধ্যদিয়ে বাবু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে 'সে রিলেশনশিপে জড়াবে এবং রিলেশনশিপকে পূর্ণতা দেবে।' রিলেশনশিপে বিয়ে করবে বলে বাবু তার পরিবারকে জানায়। সালটা তখন ২০১৬। ওই সময়ে বাবুর পরিবার বাবুকে বলে 'বাবুর উপরে তাদের ভরসা আছে, বাবু যাকে পছন্দ করবে তার সাথে তাকে বিয়ে দিতে আপত্তি নেই। তবে কোনো মেয়ের জীবন নিয়ে যেন বাবু খেলা না করে।' পরিবারের এমন কথার পর বাবু মনে মনে মেয়ে খুঁজতে শুরু করে। ২০১৬ সালের ডিসেস্বর মাসে বাবু ইকরামুল নামে একটা ছেলের মাধ্যমে তারই এলাকায় সাবিকুন নাহার নামে একটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ওইসময় সাবিকুন সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সাবিকুনের পিতা ভ্যান চালিয়ে পেঁয়াজের ব্যবসা করত। জায়গা জমি বলতে বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনোকিছু ছিল না। তবে, সাবিকুনের মামারা ছিল অভিজাত।

২০১৭ সাল। জানুয়ারি মাসের কোনো একদিন বাবু সাবিকুনের সাথে দেখা করে। সেইদিন বাবু সাবিকুনকে বলে 'সে ফ্যামিলিগত রিলেশনশিপে আগ্রহী। সাবিকুনের পরিবার তাকে (বাবু) মেনে নিলে সে সাবিকুনকে তার জীবনে গ্রহণ করবে।'

একপর্যায়ে সাবিকুন রিলেশনশিপের ব্যাপারে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারকে জানানোর পর বাবু সাবিকুনের বাসায় গিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার সাথে কথা বলে। সাবিকুনরা ছিল দুই বোন। তার কোনো ভাই ছিল না। বোনের ভেতরে সাবিকুন বড়। আর বাবুরা ছিল ৫ ভাইবোন। ভাই হিসেবে বাবু একা এবং সবার ছোট। তবে বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও সমাজে বাবুসহ তার পরিবারকে সবাই সম্মান দিয়ে চলত।

এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস। বাবুর ফোন নম্বরটা সাবিকুনের পিতার ফোনে 'জামাই' হিসেবে সেভ করা ছিল। একই গ্রামে বাসা হওয়ায় সাবিকুনের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাবুর। পুরো গ্রাম তাদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানত। অনেকের ধারণা ছিল 'বাবু-সাবিকুন বিবাহিত।'

এভাবে বাবু-সাবিকুনের প্রেম চলতে থাকে কয়েক বছর। এর ভেতরে সাবিকুনের দাদি মারা যায়। দাদি মারা যাওয়ার পর সাবিকুনের দাদিকে গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। কেননা, সাবিকুনের পরিবারের নিজস্ব কোনো গোরস্থান ছিল না। একপর্যায়ে সাবিকুনের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় 'সাবিকুনের দাদিকে তারা সরকারি গোরস্থান বা সাবিকুনের নানাবাড়ি মাটি দেবে।' তবে এটা ছিল সাবিকুনের পরিবারের জন্য লজ্জার ও আত্মসম্মানের বিষয়। তবে, দীর্ঘ প্রেমের সূত্র ধরে সাবিকুন বাবুকে ঘিরে অনেক ভরসা করত। সর্বমহলে বাবুর গ্রহণযোগ্যতা থাকাই সাবিকুনের বিশ্বাস ছিল 'একমাত্র বাবু পারবে এই বিষয়টি সমাধান করতে।' সাবিকুন একপর্যায়ে বাবুর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। বাবু তার গ্রহণযোগ্যতাকে ব্যবহার করে ওই গোরস্থানে সাবিকুনের দাদির কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর এঘটনায় সাবিকুনের পরিবারের কাছে বাবু ছিল এক নক্ষত্র।

এসবের মধ্যদিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বাবুর ইউনিয়নে জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মার্টকার্ড) বিতরণ শুরু হয়। তবে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করাটা ছিল সব মানুষের জন্য কষ্টের। দীর্ঘ লাইন ও চৈত্রের খরতাপে মানুষের জীবন ছিল দুর্বিষহ। তবে, বাবু তার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার স্মার্টকার্ডগুলো ১০ মিনিটের ভেতরে পাইয়ে দেয়। স্মার্টকার্ড গ্রহণের সময় যখন সাবিকুনের পিতামাতাকে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখন অনেকে এটা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য করতে থাকে। ওইসময় আনসার সদস্যরা উপস্থিত মানুষের উদ্দেশে বলে 'ওনারা বাবুর বাগদত্তার পিতামাতা। আপনারা যদি চান তাহলে ওনারাও লাইনে দাঁড়িয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করবে।' তবে, বাবুকে তার নিজ ইউনিয়নের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ভালোবাসত ও সম্মান করত।

বাবু তাদের কাছে ছিল 'তাদের দুঃসময়ের সঙ্গী, অসহায়দের ভাগ্য পরিবর্তনের কারিগর।' এজন্য ওইসময় উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ সাবিকুনের পিতামাতার যাওয়া নিয়ে দ্বিতীয়ত আর কোনো মন্তব্য করেনি। বরং যারা বিরূপ প্রতিক্রিয়া করেছিল তারাও তাদের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাই সাবিকুনের পিতামাতার কাছে। আর ওইদিনের পর থেকে বাবুর রিলেশনশিপের বিষয়ে তার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জেনে যায়। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েকমাস। উভয়ের সম্পর্ক পারিবারিকভাবে আরও মজবুত হয়। উভয়ের পরিবারের সদস্যরা উভয়ের সাথে নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ রাখতো।

একপর্যায়ে সাবিকুনের মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হয়। যেটা সমাধান না হলে সাবিকুন কলেজে ভর্তি হতে পারবেনা। বাবু, বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে অনবরত গিয়ে সাবিকুনের সার্টিফিকেটের সমস্যাটা সমাধান করে।

এ ছাড়াও বাবু নিজ দায়িত্বে সাবিকুনের বিভিন্ন খরচ মেটাতো। বাবুর বাসাতে যেটা উৎপাদন হতো সেটা বাবু সাবিকুনের বাসাতে নিয়ে যেত। আবার সাবিকুনের বাসাতে যেকোনো আয়োজনে বাবুকে দাওয়াত দিতে ভুলত না সাবিকুনের পরিবার।

তবে সাবিকুনের একটা অভ্যাস ছিল। জিন্স প্যান্ট পরা। আর এটা বাবুর পছন্দ ছিল না। বাবু চাইতো সাবিকুন শালীনতা বজায় রেখে চলাফেরা করুক। যেহেতু বাবুর সমাজে ভালো গ্রহণযোগ্যতা ছিল সেকারণে সে সম্মানটাকে সবসময় গুরুত্ব দিত। তবে, বহুবার সাবিকুন জিন্স না পরার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেটা রাখেনি। এনিয়ে বাবুর সাথে ২০১৮ সালে সম্পর্কে অবনতি ঘটে সাবিকুনের। কয়েকমাস বাবু সাবিকুনের সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তবে, সাবিকুনের পরিবার নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো বাবুর সাথে। যাতে বাবু আগের মতো সাবিকুনকে গ্রহণ করে। তবে বাবু ছিলো একঘেয়েমি ও প্রচুর অভিমানি। তবে বাবুর বড় একটা দুর্বলতা ছিলো সাবিকুনের পরিবারের করে। কেননা, সাবিকুনের পিতামাতার কোন ছেলে সন্তান না থাকাই সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে প্রচুর ভালোবাসতো। এসবের মধ্যে একপর্যায়ে রোজার ঈদে সাবিকুনের পিতা বাবুকে দাওয়াত করে। বাবু যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেও একপর্যায়ে বাবু তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সে ঈদেরদিন সাবিকুনের বাসাতে যায়। এবং ওইদিন সাবিকুন তার পিতামাতার সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবুর কাছে ক্ষমা চাই। এবং বাবু সাবিকুনকে ক্ষমা করে দেয়।

এভাবে ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। বাবু-সাবিকুনের ভালোবাসা অন্যদের জন্য ছিলো উদাহারণ। কেননা, বন্ধুর সাথে তর্কে জড়িয়ে বাবু দেখিয়েছিল কীভাবে একটা সম্পর্ক করে নিজেকে ঠিক রাখা যায়।

এসবের ভিতরে সাবিকুন যখন মাধ্যমিক পাশ করে তখন সাবিকুনের পরিবার সাবিকুনকে বিয়ের জন্য বাবুকে চাপ দিতে থাকে। তবে বাবু জানাই 'তার দুলাভাই দেশে না ফেরা পর্যন্ত সে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেনা। ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরলে সাবিকুনকে বিয়ে করবে সে।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে বলে একটা সরকারি করতে। যাতে তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে সাবিকুনের মামারা দ্বিমত পোষণ না করে। কেননা, সাবিকুনের মামারা সবাই সরকারি চাকরিজীবী। তবে, বাবু ছিল চাকরি বিমুখ। সে কোন ধরাবাঁধার ভিতরে থাকতে পছন্দ করতো না। তাছাড়া, বাবু তার পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ার সুবাদে চাকরির চেয়ে বাবু পিতামাতার খেদমত করাকে প্রাধান্য দিতে থাকে।

এসবের মধ্য দিয়ে বাবু ছাত্ররাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে একজন ভালো ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। বাবুর নেতৃত্ব ও লেখালেখিতে সবাই ছিল মুগ্ধ। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য বাবুকে ইনফরমেশন পাঠাই সাবিকুন। একপর্যায়ে বাবু তার পিতামাতার কথাতে এবং ভালোবাসার মানুষের অনুরোধ রক্ষা করতে সিদ্ধান্ত নেই সে সরকারি চাকরি করবে। তবে চাকরি যদি মনোগত না হয় তাহলে করবেনা। ঢাকাতে যাওয়ার আগে বাবু সাবিকুনের পরিবারের সাথে দেখা করতে যায়। সেদিন সাবিকুনের দাদু সাবিকুনদের বাসাতে ছিল। বছরের কয়েকমাস সাবিকুনদের বাসাতে থাকেন তিনি। দাদার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে যখন বাবু চলে আসবে তখন সাবিকুনের দাদু বাবুর হাত ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। কেননা, তার স্ত্রীর গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে বাবুর অবদানটা সবচেয়ে বেশি। ওইসময় সাবিকুনের দাদু সাবিকুনকে ডাকে এবং সাবিকুনের পিতামাতাকেও ডাকে। বাবু আর সাবিকুনের দুইহাত এক করে সাবিকুনের পিতামাতাকে সাবিকুনের দাদু বলে 'বাবু তুমি কখনও সাবিকুনকে ছেড়ে যাবে না, আর সাবিকুন তুমিও কখনও বাবুকে ছেড়ে যাবে না।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা সাবিকুনের দাদার উদ্দেশে বলে 'পুরো গ্রামের সবাই জানে সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্কের বিষয়টা। তুমি নিশ্চিত থাকো বাবু আমাদের আরেক সন্তান। সাবিকুনের বিয়ে বাবুর সাথে হবে।'

ওইসময় বাবু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। মনেমনে মহান আল্লাহ্ তা'য়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে। যাহোক, বাবুর হাতে সময় ছিলো ৯ মাস। ৯ মাসের ভিতরে তাকে সরকারি চাকরি পেতে হবে। কেননা, দুলাভাই দেশে ফিরবে ২০২০ জানুয়ারিতে। ১৫ দিন ছুটি কাটিয়ে দুলাভাই আবারও চলে যাবেন দেশের বাইরে। একপর্যায়ে সাবিকুনকে বাবুর পছন্দের একটি মহিলা কলেজে ভর্তি করে দিয়ে সাবিকুনের পরিবারের চাওয়া পূরণ করতে বাবু ঢাকাতে যায় একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য। তবে বাবু জানতো না সে চাকরিটা ছিল প্রতারকদের প্রতারণার ফাঁদ। ওই চাকরির ফাঁদে পড়ে বাবু ৮ লাখ টাকা হারায়। যেটা নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বাবু। এবিষয়ে বাবু নিজের পরিবারকেও কোনকিছু বলতে পারছিলো না নাইবা নিজের মাঝে কথাগুলো ধরে রাখতে পারছিলো। একপর্যায়ে ঢাকাতে অবস্থান কালীন সময়ে বাবু সাবিকুনের পিতামাতাকে জানাই চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব না। এনিয়ে বাবু করে মনোক্ষুণ্ন হয় সাবিকুনের পরিবার।

এভাবে বাবুর কয়েকমাস কেটে গেল ঢাকাতে। বাবুর পরিবার জানতো তাদের ছেলে চাকরি সংক্রান্ত কারনে ঢাকাতে আছে। তবে বাস্তবতা যে ভিন্ন সেটা বাবু ছাড়া অন্যকেউ জানতো না। নাইবা কাউকে এ ব্যাপারে শেয়ার করতো বাবু।

এদিকে ৬/৭ মাস বাবু সাবিকুনকে সময় না দিতে পারার কারনে সাবিকুন অন্য একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সে ছেলেটি ছিলো আভিজাত্য পরিবারের। ঢাকাতে থাকলেও বাবু বিষয়গুলো জানতে পারে। কেননা, যারা বাবুকে চেনে তারা সাবিকুনকেও চিনতো। সাবিকুনের নতুন সম্পর্কের ব্যাপারে বাবু বহুবার সাবিকুনকে প্রশ্ন করলেও সাবিকুন অস্বীকার করতো, সে বলতো ও (সাবিকুনের নতুন প্রেমিক) তার কোচিংয়ের ফ্রেন্ড। দীর্ঘ সময় ধরে সাবিকুনের সাথে সম্পর্ক থাকার সুবাদে বাবু সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো। তাছাড়া যেহেতু উভয় পরিবার সম্পর্কের বিষয়ে জানতো একারনে বাবুও সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের কথা। চাকরি সংক্রান্ত কারনে বাবু যে প্রতারণা শিকার সেটা সমন্ধে সে সকলকে অবগত করে। আর ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরবে। একারনে, সাবিকুনের পরিবারের সাথে একটা মারফত সাবিকুনকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই বাবু। ওইসময় সাবিকুনের পরিবার বাবুকে কিছু কন্ডিশন দেয়। কন্ডিশনের শর্ত ছিল এগনেস্ট-এর দিন সাবিকুনকে কয়েক ভরি স্বর্ণের গহণা দিতে হবে। আর বিয়ের দিন সাবিকুনের পুরো অলংকার বাবুকে বহন করতে হবে। হঠাৎকরে সাবিকুনের পরিবারের এমন কথাতে আকাশভেঙ্গে পড়ে বাবুর মনে। হঠাৎ কী এমন হলো? যার কারনে সাবিকুনের পরিবার এমন কথা বলছে? বাবুর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জন্মায় আর প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজতে বাবু সাবিকুনের দুঃসম্পর্কের এক দাদার সাথে কথা বলে। ওইসময় বাবু জানতে পারে 'তার অর্জিত অর্থ গুলো প্রতারণার শিকারে নষ্ট হওয়াতে সাবিকুনকে বাবুর হাতে তুলে দিতে চাচ্ছেনা সাবিকুনের পরিবার। আর সাবিকুন অন্য সম্পর্কে জড়ানোয় সেও চাচ্ছেনা বাবুকে বিয়ে করতে।' তবে, সবকিছু জেনেও না জানার অভিনয় করতো বাবু। এতোকিছুর পরেও বাবুর বিশ্বাস ছিলো সাবিকুনের পরিবার তাকে ফেরাবে না।

ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে ছিল সাবিকুনের জন্মদিন। সাবিকুনের জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা থেকে দামি কয়েকটি উপহার ক্রয় করে নিজ বাসাতে ফেরে বাবু। পরে ওই উপহারগুলো নিয়ে সাবিকুনকে সারপ্রাইজ দিতে শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বাবু।

বাবু যখন শহরে পৌঁছায় তখন বাবুর সহকর্মীদের সাথে দেখা হয়। তখন বাবুর সহকর্মীরা জানায় 'সাবিকুনকে একটা ছেলের সাথে দেখেছে তারা।' বাবু বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক ভাবে ওই মেলাতে যায় সাবিকুনের খোঁজে। মেলাতে যেয়ে বাবুর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। যে সাবিকুনকে দেখে বাবু ঢাকায় গিয়েছিল সেই সাবিকুনের সাথে এই সাবিকুনের কোনো মিল নেই। সব দেখেও বাবু নিরব ছিল। বাবু এমন একটা অবস্থার ভিতরে পড়েছিল যেটা প্রকাশ করা তার জন্য সবচেয়ে কষ্টের ছিল। বাবু মেলাতে সাবিকুনকে কয়েকবার ডাকলেও সাবিকুন বাবুর ডাকে রেন্সপন্স করিনি। বাবু ভাবছিলো 'সাবিকুনের পরনে এমন পোশাক যেটা সে পছন্দ করে না। একারনে হয়তোবা সাবিকুন সামনে আসতে সাহজ পাচ্ছে না।' এই ভেবে বাবু সাবিকুনকে কয়েকটি টেক্স পাঠিয়ে মেলা থেকে চলে যায়।

সকাল গড়িয়ে বিকাল। হঠাৎ বাবুর কাছে তার এক সহকর্মীর ফোন। ফোনে বাবুর সহকর্মী বাবুকে বলছে 'সাবিকুন কান্নাকাটি করছে, আপনি একটু আসুন'। বাবু যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন বাবু হতভম্ব হয়ে যায়। সাবিকুন যে শ্লীলতাহানির শিকার সেটার জন্য সাবিকুন নিজে দায়ী। ওইসময় বাবু এতোটা পরিমাণে অপমানবোধ করেছিলো ওইখান থেকে সাবিকুনের পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। এবং সাবিকুনকে বিয়ে করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেই। ওইদিন সন্ধ্যায় সাবিকুনের পরিবার থেকে দেওয়া উপহার সামগ্রীগুলো বস্তাবন্দি করে সাবিকুনের বাসাতে ফেরত দিয়ে আসে বাবু।

সাবিকুনের বাসা থেকে ফেরার মাসখানেকের ভিতরে সাবিকুনের পিতামাতা তাদের ভুলগুলো বুঝতে পারে। তবে সাবিকুন করে লজ্জিত ছিল তারা। একারণে, সাবিকুনের হয়ে তারা বাবুর কাছে ক্ষমা চান।

এভাবে ৬ মাস কেটে গেল। বাবু মানসিক যন্ত্রণায় মারাত্বকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবু এতোটাই ভেঙে পড়েছিল কয়েকবার সুইসাইড করতে যায়। এসবের মাথায় বাবুর পরিবারও সবকিছু জেনে যায়। এসময় তারা বাবুকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতে থাকে।

তারপরেও বাবুর মন মানেনা। বাবুর বিশ্বাস ছিলো তার ভালোবাসার সাবিকুন নিজের ভূলগুলো বুঝতে পেরে হয়তো কোন একদিন ফিরবে তার জীবনে।

সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্ক না থাকলেও সাবিকুনের পড়াশোনা কেন্দ্রিক সবখানে বাবুর নাম ও কন্টাক নাম্বার ছিল। একারণে, সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনের পড়াশোনা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বাবুর সহযোগিতা নিয়মিত প্রয়োজন ছিল। বাবু এমন একটা ছেলে ছিল সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনকে নিয়ে কোন নেতিবাচক মন্তব্য সে করেনি। বরং, পুরো ঘটনার জন্য বাবু নিজেকে দায়ী করে। সম্পর্কে জড়ানোটা তার জন্য ভূল ছিল।

একটা সময় বাবুর সবচেয়ে কাছের দুলাভাই মারা যায়। বাবুর দুলাভাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগেও সাবিকুনের নাম নিয়ে বলেছিলো 'আমি বাঁচব কিনা জানি না। তবে তুমি সাবিকুনের জন্য যে কষ্ট পেয়েছো সেটা সহ্য করা তোমার জন্য কষ্টের। আমার আক্ষেপ তুমি যদি রিলেশনশিপে না জড়াতে তাহলে হয়তোবা তোমার বিয়ে হতো অন্য কারও সাথে।' বাবুর দুলাভাই মারা যাওয়ার পরে বাবুর আব্বুও মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে বাবুকে তার আব্বু বলেছিল 'তোমাকে নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। যদি বেচেঁ থাকি ওই মেয়ের চেয়ে সুন্দর বৌমা তোমার জন্য আমি নিয়ে আসব।'

বাবুর আব্বু যেদিন মারা গেছিলো সেদিন সাবিকুনসহ তার পিতামাতা এসেছিলো বাবুর বাসায়। তার কিছুদিন পর সাবিকুন বাবুকে নক করে। তাকে বাবুর জীবনে পুনরায় গ্রহণের জন্য বলে। সাবিকুনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাবু বলে 'সরি সাবিকুন। তোমাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তোমার কারণে আমার জীবন নষ্ট হয়েছে। মৃত্যুর সময়ও দুলাভাই-আব্বু আক্ষেপ করেছে। তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান।' এঘটনার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। তবে বাবু আজও নিরবে কাঁদে। কে দেবে তাকে সান্ত্বনা? কে বুঝবে তার কষ্ট? কেনবা এমন ঘটল?

 

Header Ad

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

ছবি: সংগৃহীত

দেশের জনপ্রিয় নির্মাতা আশফাক নিপুন। কাজের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমেও বেশ সরব তিনি। কথা বলেন নানা ইস্যু নিয়ে। সেই ধারাবাহিকতায় সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনেও বিভিন্ন সময় নিজের আকাঙ্ক্ষা, প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশ্যেও বিভিন্ন বার্তা দিয়েছেন। এবার এমনি একটি বার্তায় দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি জনগনের আস্থার বিষয়ে আক্ষেপ জানালেন এই নির্মাতা।

বুধবার (২০ নভেম্বর) আশফাক নিপুন তার ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে লেখেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সর্বস্তরের ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছিল, বাসায় বসে বসে দোয়া করেছিল, যার যা সামর্থ্য দিয়ে সহায়তা করেছিল। কারণ, তারা দেখেছিল লড়াইটা আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক বনাম সাধারণ ছাত্র-জনতার। এটাও অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই যে এই আন্দোলন বেগবান করতে বিরোধী সকল দলের কর্মীদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তাদের সংগ্রামও গত দেড় দশকের। কিন্তু এটা যদি শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার লড়াই হতো তাহলে সাধারণ মানুষ এই লড়াই থেকে দূরে থাকত। সেই প্রমাণ বিগত ১৫ বছরে আছে।

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’

কারণ হিসেবে তিনি বলেন, দেশের সাধারণ মানুষ এখনো দেশের কোনো রাজনৈতিক দলকেই পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারে না। এটাই বাস্তবতা। এই বাস্তবতা মেনে সকল রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত কীভাবে সাধারণ জনগণের ভেতর নিজের দলের প্রতি আস্থা তৈরি করা যায় সেই বিষয়ে নিরলস কাজ করা। এই আস্থা ক্ষমতায় গিয়ে অর্জন করা সম্ভব না। কারণ, সাধারণ মানুষ আজীবন এস্টাবলিশমেন্টের বিপক্ষে। এই আস্থা অর্জন করতে হয় ক্ষমতা বলয়ের বাইরে থেকেই।

নিপুন আরও লিখেন, অরাজনৈতিক সরকার দিয়ে দীর্ঘদিন দেশ চালানো যেমন কাজের কথা না ঠিক তেমনি রাজনৈতিক সরকার হতে চাওয়া সকল রাজনৈতিক দলগুলোর বোঝা উচিত মুক্তিযুদ্ধের পরে বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গণঅভ্যুত্থান সংগঠিত হয়েছে সকল প্রকার পূর্বানুমান (যেমন- বর্ষাকালে আন্দোলন হয় না, নির্বাচনের আগেই কেবল জোরেশোরে আন্দোলন হয়, ঘোষণা দিয়ে বিরোধী সকল পক্ষ আন্দোলনে শামিল না হলে সফল হয় না) অগ্রাহ্য করেই। সেটা সম্ভব হয়েছে সাধারণ মানুষের ন্যায্যতার আকাঙ্ক্ষা থেকেই।

সবশেষ এই নির্মাতা লিখেছেন, ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষার দুই পয়সার দাম দেন নাই। সাধারণ মানুষের এই আকাঙ্ক্ষা, ইচ্ছা আর দেশপ্রেমকে পুঁজি করে অরাজনৈতিক এবং রাজনৈতিক যারাই রাজনীতি রাজনীতি খেলতে চাইবে, তাদের দশাও কোন একসময় যেন পলাতক শেখ হাসিনার মতো না হয়, সেই বিষয় নিশ্চিত করতে হবে তাদেরকেই।

Header Ad

‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) বিকেলে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, জুলাই-আগস্ট ছাত্র জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা নতুন বাংলাদেশের সূচনা করেছি। এ নতুন দেশে আমাদের দায়িত্ব সকল মানুষকে এক বৃহত্তর পরিবারের বন্ধনে আবদ্ধ করা। কেউ কারো উপরে না, আবার কেউ কারো নিচেও না, এই ধারণা আমরা আমাদের জাতীয় জীবনে প্রতিষ্ঠিত করতে চাই।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার যে সুযোগ ছাত্র-জনতার সাহস ও আত্মত্যাগের বিনিময়ে সম্প্রতি আমরা অর্জন করেছি, সেটাকে কাজে লাগিয়ে আমাদের সুন্দর ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যৎ গড়তে হবে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ, আহত এবং জীবিত ছাত্র-জনতার কাছে আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে চাই। যে সুযোগ তারা আমাদের দিয়েছে, তার মাধ্যমে আমাদের দেশকে পৃথিবীর সামনে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী দেশে পরিণত করতে আমরা শপথ নিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করে যারা দেশ গঠনের সুযোগ করে দিয়েছে জাতি তাদের সারা জীবন শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।

বক্তব্য শেষে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন প্রধান উপদেষ্টা। পরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

Header Ad

নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু

ছবি: সংগৃহীত

নওগাঁ শহরে যানযট নিরসন ও শৃঙ্খলা ফেরাতে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক-শ্রমিকদের যৌথ উদ্যোগে বিশেষ অভিযান শুরু হয়েছে। এতে শহরে শৃঙ্খলা ফিরবে বলে আশাবাদ ব্যাক্ত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) অভিযানের উদ্বোধন করেন নওগাঁ পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক টি.এম.এ মমিন। এ সময় নওগাঁ জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জিয়া উদ্দিন, নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন, নওগাঁ জেলা ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক আফজাল হোসেন ও অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

অভিযান শুরুর পর থেকেই শহরের বরুনকান্দি, মশরপুর, তাজের মোড় ও কালীতলাসহ মোট ৮ টি প্রবেশদ্বারে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। চেক পোষ্টগুলোতে ২ জন পুলিশ সদস্য, ২ জন ছাত্র সমন্বয়ক, ৪ জন রোভার স্কাউট সদস্য ও ২ জন রিকশা মালিক শ্রমিক প্রতিনিধিসহ মোট ১২ জন করে কাজ করছেন।

পৌর প্রশাসক জানান, নওগাঁ শহরে বৈধ যানবাহনের সংখ্যা ৪ হাজার। কিন্তু প্রতিদিন পার্শবতী বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১০ হাজার রিকশা, ব্যাটারী চালিত অটো রিকশা ও ইজিবাইক শহরে প্রবেশ করে। এতে তীব্র যানযট ও জন মানুষের ভোগান্তি তৈরী হয়। এই দূর্ভোগ লাঘোবে জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল ও পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিনের দিক নির্দেশনায় যানবাহন নিয়ন্ত্রনসহ বিশেষ অভিযানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হয়। বৈধ চালকদের চিহ্নিত করতে তাদের মাঝে পরিধেয় বিশেষ ধরনের জ্যাকেট প্রদান করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

নওগাঁর পুলিশ সুপার কুতুব উদ্দিন বলেন, নওগাঁ শহরের যানযট দীর্ঘদিনের সমস্যা। পরিকল্পিত ভাবে এই সমস্যা দূর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের উদ্যোগে পৌর কর্তৃপক্ষ ও রিকশা মালিক শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের সমন্বয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন ষ্টেক হোল্ডারদের পরামর্শ নিয়ে একটি কর্ম পরিকল্পনা গ্রহক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, অভিযান সফল ভাবে বাস্তবায়ন হলে শহরে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। জনগন এর সুফল পাবেন। সকলকে এই কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদানের আহবান জানান তিনি।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না
নির্বাচন কমিশন গঠন, সিইসি হলেন অবসরপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দীন
ডিএনএ টেস্টের ফলাফল: ভিনিসিয়ুসের পূর্বপুরুষ ছিলেন ক্যামেরুনের
জামিন পেলেন সাংবাদিক শফিক রেহমান
বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগে আসা সেই শাহজাহান ওমর গ্রেপ্তার
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের সেনাবাহিনীর ধাওয়া
‘শেখ হাসিনা এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’, এমন কথা বলেননি ট্রাম্প
লেবাননে ৮ শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত
ভারতে সাজাভোগ শেষে দেশে ফিরল ২৪ বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরী
ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবরোধ করে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের বিক্ষোভ
গাজায় ইসরায়েলের হামলায় আরও ৮৮ ফিলিস্তিনি নিহত
সাবেক এমপি শাহজাহান ওমরের বাড়িতে হামলা-ভাঙচুর
১২ বছর পর সেনাকুঞ্জে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া