সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান

বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা ছেলে। ছোটবেলা থেকে সে সবার চেয়ে আলাদা মন মানুসিকতা নিয়ে বড় হয়েছে। বাবু ছিল লাজুক স্বভাবের। সবসময় কম কথা বলত। তবে তার মেধা আর দক্ষতা ছিল সবার চেয়ে ভিন্ন। বাবু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনাকালীন তার কোনো বান্ধবী ছিল না। অনেক মেয়ে বাবুকে বন্ধু হিসেবে পেতে চাইলেও বাবু তাদের ফিরিয়ে দিত। সালটা ২০১৫। বাবু সে সময় মাধ্যমিক স্তর পার করে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। সেসময় বাবুর বয়স ১৮ বছর। কলেজে ভর্তি হওয়ার সুবাদে সে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে, পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতে থাকে। ছাত্র রাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে বাবু অল্প সময়ের ভেতরে সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

একটা সময় লাজুক স্বভাবের বাবুর আচার-ব্যবহার, মেধা-দক্ষতা ও দেখতে শুনতে ভালো হওয়ায় কারণে অনেক মেয়ে তাদের জীবনে বাবুকে স্বপ্নের রাজকুমার হিসেবে পেতে চায়। তবে বাবু বরাবরের মতো কলেজ জীবনেও সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।

বাবুর এক বন্ধু ছিল। তার নাম আরিফুল ইসলাম। একই গ্রামে তাদের বাসা। বাবুর চাচাতো বোনের সাথে আরিফুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বাবু সেটা জানত। আরিফুল দেখতে শুনতে অনেক সুন্দর হওয়ায় অনেক মেয়ের সাথে আরিফুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে, বাবু আরিফুলের এসমস্ত কর্মকাণ্ড পছন্দ করত না। একের অধিক সম্পর্কে জড়িয়ে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট না করার জন্য বাবু বহুবার আরিফুলকে অনুরোধ করে। তবে, আরিফুল বাবুর কোনো কোথায় কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে এসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আরিফুল ও বাবুর ভেতরে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এটা নিয়ে বাবু মনে মনে অনেক কষ্ট পায়। ঘটনার একপর্যায়ে বাবু আরিফুলের সাথে তর্কে জড়ায়। বাবু আরিফুলকে বলে 'চাইলে একটা প্রেমকে পূর্ণতা দেওয়া যায়, হাজারটা প্রেম করে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করার মানে হয় না। আর সেটা সে (বাবু) দেখিয়ে দেবে।'

এসবের মধ্যদিয়ে বাবু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে 'সে রিলেশনশিপে জড়াবে এবং রিলেশনশিপকে পূর্ণতা দেবে।' রিলেশনশিপে বিয়ে করবে বলে বাবু তার পরিবারকে জানায়। সালটা তখন ২০১৬। ওই সময়ে বাবুর পরিবার বাবুকে বলে 'বাবুর উপরে তাদের ভরসা আছে, বাবু যাকে পছন্দ করবে তার সাথে তাকে বিয়ে দিতে আপত্তি নেই। তবে কোনো মেয়ের জীবন নিয়ে যেন বাবু খেলা না করে।' পরিবারের এমন কথার পর বাবু মনে মনে মেয়ে খুঁজতে শুরু করে। ২০১৬ সালের ডিসেস্বর মাসে বাবু ইকরামুল নামে একটা ছেলের মাধ্যমে তারই এলাকায় সাবিকুন নাহার নামে একটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ওইসময় সাবিকুন সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সাবিকুনের পিতা ভ্যান চালিয়ে পেঁয়াজের ব্যবসা করত। জায়গা জমি বলতে বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনোকিছু ছিল না। তবে, সাবিকুনের মামারা ছিল অভিজাত।

২০১৭ সাল। জানুয়ারি মাসের কোনো একদিন বাবু সাবিকুনের সাথে দেখা করে। সেইদিন বাবু সাবিকুনকে বলে 'সে ফ্যামিলিগত রিলেশনশিপে আগ্রহী। সাবিকুনের পরিবার তাকে (বাবু) মেনে নিলে সে সাবিকুনকে তার জীবনে গ্রহণ করবে।'

একপর্যায়ে সাবিকুন রিলেশনশিপের ব্যাপারে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারকে জানানোর পর বাবু সাবিকুনের বাসায় গিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার সাথে কথা বলে। সাবিকুনরা ছিল দুই বোন। তার কোনো ভাই ছিল না। বোনের ভেতরে সাবিকুন বড়। আর বাবুরা ছিল ৫ ভাইবোন। ভাই হিসেবে বাবু একা এবং সবার ছোট। তবে বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও সমাজে বাবুসহ তার পরিবারকে সবাই সম্মান দিয়ে চলত।

এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস। বাবুর ফোন নম্বরটা সাবিকুনের পিতার ফোনে 'জামাই' হিসেবে সেভ করা ছিল। একই গ্রামে বাসা হওয়ায় সাবিকুনের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাবুর। পুরো গ্রাম তাদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানত। অনেকের ধারণা ছিল 'বাবু-সাবিকুন বিবাহিত।'

এভাবে বাবু-সাবিকুনের প্রেম চলতে থাকে কয়েক বছর। এর ভেতরে সাবিকুনের দাদি মারা যায়। দাদি মারা যাওয়ার পর সাবিকুনের দাদিকে গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। কেননা, সাবিকুনের পরিবারের নিজস্ব কোনো গোরস্থান ছিল না। একপর্যায়ে সাবিকুনের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় 'সাবিকুনের দাদিকে তারা সরকারি গোরস্থান বা সাবিকুনের নানাবাড়ি মাটি দেবে।' তবে এটা ছিল সাবিকুনের পরিবারের জন্য লজ্জার ও আত্মসম্মানের বিষয়। তবে, দীর্ঘ প্রেমের সূত্র ধরে সাবিকুন বাবুকে ঘিরে অনেক ভরসা করত। সর্বমহলে বাবুর গ্রহণযোগ্যতা থাকাই সাবিকুনের বিশ্বাস ছিল 'একমাত্র বাবু পারবে এই বিষয়টি সমাধান করতে।' সাবিকুন একপর্যায়ে বাবুর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। বাবু তার গ্রহণযোগ্যতাকে ব্যবহার করে ওই গোরস্থানে সাবিকুনের দাদির কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর এঘটনায় সাবিকুনের পরিবারের কাছে বাবু ছিল এক নক্ষত্র।

এসবের মধ্যদিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বাবুর ইউনিয়নে জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মার্টকার্ড) বিতরণ শুরু হয়। তবে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করাটা ছিল সব মানুষের জন্য কষ্টের। দীর্ঘ লাইন ও চৈত্রের খরতাপে মানুষের জীবন ছিল দুর্বিষহ। তবে, বাবু তার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার স্মার্টকার্ডগুলো ১০ মিনিটের ভেতরে পাইয়ে দেয়। স্মার্টকার্ড গ্রহণের সময় যখন সাবিকুনের পিতামাতাকে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখন অনেকে এটা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য করতে থাকে। ওইসময় আনসার সদস্যরা উপস্থিত মানুষের উদ্দেশে বলে 'ওনারা বাবুর বাগদত্তার পিতামাতা। আপনারা যদি চান তাহলে ওনারাও লাইনে দাঁড়িয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করবে।' তবে, বাবুকে তার নিজ ইউনিয়নের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ভালোবাসত ও সম্মান করত।

বাবু তাদের কাছে ছিল 'তাদের দুঃসময়ের সঙ্গী, অসহায়দের ভাগ্য পরিবর্তনের কারিগর।' এজন্য ওইসময় উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ সাবিকুনের পিতামাতার যাওয়া নিয়ে দ্বিতীয়ত আর কোনো মন্তব্য করেনি। বরং যারা বিরূপ প্রতিক্রিয়া করেছিল তারাও তাদের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাই সাবিকুনের পিতামাতার কাছে। আর ওইদিনের পর থেকে বাবুর রিলেশনশিপের বিষয়ে তার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জেনে যায়। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েকমাস। উভয়ের সম্পর্ক পারিবারিকভাবে আরও মজবুত হয়। উভয়ের পরিবারের সদস্যরা উভয়ের সাথে নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ রাখতো।

একপর্যায়ে সাবিকুনের মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হয়। যেটা সমাধান না হলে সাবিকুন কলেজে ভর্তি হতে পারবেনা। বাবু, বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে অনবরত গিয়ে সাবিকুনের সার্টিফিকেটের সমস্যাটা সমাধান করে।

এ ছাড়াও বাবু নিজ দায়িত্বে সাবিকুনের বিভিন্ন খরচ মেটাতো। বাবুর বাসাতে যেটা উৎপাদন হতো সেটা বাবু সাবিকুনের বাসাতে নিয়ে যেত। আবার সাবিকুনের বাসাতে যেকোনো আয়োজনে বাবুকে দাওয়াত দিতে ভুলত না সাবিকুনের পরিবার।

তবে সাবিকুনের একটা অভ্যাস ছিল। জিন্স প্যান্ট পরা। আর এটা বাবুর পছন্দ ছিল না। বাবু চাইতো সাবিকুন শালীনতা বজায় রেখে চলাফেরা করুক। যেহেতু বাবুর সমাজে ভালো গ্রহণযোগ্যতা ছিল সেকারণে সে সম্মানটাকে সবসময় গুরুত্ব দিত। তবে, বহুবার সাবিকুন জিন্স না পরার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেটা রাখেনি। এনিয়ে বাবুর সাথে ২০১৮ সালে সম্পর্কে অবনতি ঘটে সাবিকুনের। কয়েকমাস বাবু সাবিকুনের সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তবে, সাবিকুনের পরিবার নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো বাবুর সাথে। যাতে বাবু আগের মতো সাবিকুনকে গ্রহণ করে। তবে বাবু ছিলো একঘেয়েমি ও প্রচুর অভিমানি। তবে বাবুর বড় একটা দুর্বলতা ছিলো সাবিকুনের পরিবারের করে। কেননা, সাবিকুনের পিতামাতার কোন ছেলে সন্তান না থাকাই সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে প্রচুর ভালোবাসতো। এসবের মধ্যে একপর্যায়ে রোজার ঈদে সাবিকুনের পিতা বাবুকে দাওয়াত করে। বাবু যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেও একপর্যায়ে বাবু তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সে ঈদেরদিন সাবিকুনের বাসাতে যায়। এবং ওইদিন সাবিকুন তার পিতামাতার সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবুর কাছে ক্ষমা চাই। এবং বাবু সাবিকুনকে ক্ষমা করে দেয়।

এভাবে ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। বাবু-সাবিকুনের ভালোবাসা অন্যদের জন্য ছিলো উদাহারণ। কেননা, বন্ধুর সাথে তর্কে জড়িয়ে বাবু দেখিয়েছিল কীভাবে একটা সম্পর্ক করে নিজেকে ঠিক রাখা যায়।

এসবের ভিতরে সাবিকুন যখন মাধ্যমিক পাশ করে তখন সাবিকুনের পরিবার সাবিকুনকে বিয়ের জন্য বাবুকে চাপ দিতে থাকে। তবে বাবু জানাই 'তার দুলাভাই দেশে না ফেরা পর্যন্ত সে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেনা। ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরলে সাবিকুনকে বিয়ে করবে সে।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে বলে একটা সরকারি করতে। যাতে তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে সাবিকুনের মামারা দ্বিমত পোষণ না করে। কেননা, সাবিকুনের মামারা সবাই সরকারি চাকরিজীবী। তবে, বাবু ছিল চাকরি বিমুখ। সে কোন ধরাবাঁধার ভিতরে থাকতে পছন্দ করতো না। তাছাড়া, বাবু তার পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ার সুবাদে চাকরির চেয়ে বাবু পিতামাতার খেদমত করাকে প্রাধান্য দিতে থাকে।

এসবের মধ্য দিয়ে বাবু ছাত্ররাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে একজন ভালো ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। বাবুর নেতৃত্ব ও লেখালেখিতে সবাই ছিল মুগ্ধ। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য বাবুকে ইনফরমেশন পাঠাই সাবিকুন। একপর্যায়ে বাবু তার পিতামাতার কথাতে এবং ভালোবাসার মানুষের অনুরোধ রক্ষা করতে সিদ্ধান্ত নেই সে সরকারি চাকরি করবে। তবে চাকরি যদি মনোগত না হয় তাহলে করবেনা। ঢাকাতে যাওয়ার আগে বাবু সাবিকুনের পরিবারের সাথে দেখা করতে যায়। সেদিন সাবিকুনের দাদু সাবিকুনদের বাসাতে ছিল। বছরের কয়েকমাস সাবিকুনদের বাসাতে থাকেন তিনি। দাদার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে যখন বাবু চলে আসবে তখন সাবিকুনের দাদু বাবুর হাত ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। কেননা, তার স্ত্রীর গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে বাবুর অবদানটা সবচেয়ে বেশি। ওইসময় সাবিকুনের দাদু সাবিকুনকে ডাকে এবং সাবিকুনের পিতামাতাকেও ডাকে। বাবু আর সাবিকুনের দুইহাত এক করে সাবিকুনের পিতামাতাকে সাবিকুনের দাদু বলে 'বাবু তুমি কখনও সাবিকুনকে ছেড়ে যাবে না, আর সাবিকুন তুমিও কখনও বাবুকে ছেড়ে যাবে না।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা সাবিকুনের দাদার উদ্দেশে বলে 'পুরো গ্রামের সবাই জানে সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্কের বিষয়টা। তুমি নিশ্চিত থাকো বাবু আমাদের আরেক সন্তান। সাবিকুনের বিয়ে বাবুর সাথে হবে।'

ওইসময় বাবু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। মনেমনে মহান আল্লাহ্ তা'য়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে। যাহোক, বাবুর হাতে সময় ছিলো ৯ মাস। ৯ মাসের ভিতরে তাকে সরকারি চাকরি পেতে হবে। কেননা, দুলাভাই দেশে ফিরবে ২০২০ জানুয়ারিতে। ১৫ দিন ছুটি কাটিয়ে দুলাভাই আবারও চলে যাবেন দেশের বাইরে। একপর্যায়ে সাবিকুনকে বাবুর পছন্দের একটি মহিলা কলেজে ভর্তি করে দিয়ে সাবিকুনের পরিবারের চাওয়া পূরণ করতে বাবু ঢাকাতে যায় একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য। তবে বাবু জানতো না সে চাকরিটা ছিল প্রতারকদের প্রতারণার ফাঁদ। ওই চাকরির ফাঁদে পড়ে বাবু ৮ লাখ টাকা হারায়। যেটা নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বাবু। এবিষয়ে বাবু নিজের পরিবারকেও কোনকিছু বলতে পারছিলো না নাইবা নিজের মাঝে কথাগুলো ধরে রাখতে পারছিলো। একপর্যায়ে ঢাকাতে অবস্থান কালীন সময়ে বাবু সাবিকুনের পিতামাতাকে জানাই চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব না। এনিয়ে বাবু করে মনোক্ষুণ্ন হয় সাবিকুনের পরিবার।

এভাবে বাবুর কয়েকমাস কেটে গেল ঢাকাতে। বাবুর পরিবার জানতো তাদের ছেলে চাকরি সংক্রান্ত কারনে ঢাকাতে আছে। তবে বাস্তবতা যে ভিন্ন সেটা বাবু ছাড়া অন্যকেউ জানতো না। নাইবা কাউকে এ ব্যাপারে শেয়ার করতো বাবু।

এদিকে ৬/৭ মাস বাবু সাবিকুনকে সময় না দিতে পারার কারনে সাবিকুন অন্য একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সে ছেলেটি ছিলো আভিজাত্য পরিবারের। ঢাকাতে থাকলেও বাবু বিষয়গুলো জানতে পারে। কেননা, যারা বাবুকে চেনে তারা সাবিকুনকেও চিনতো। সাবিকুনের নতুন সম্পর্কের ব্যাপারে বাবু বহুবার সাবিকুনকে প্রশ্ন করলেও সাবিকুন অস্বীকার করতো, সে বলতো ও (সাবিকুনের নতুন প্রেমিক) তার কোচিংয়ের ফ্রেন্ড। দীর্ঘ সময় ধরে সাবিকুনের সাথে সম্পর্ক থাকার সুবাদে বাবু সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো। তাছাড়া যেহেতু উভয় পরিবার সম্পর্কের বিষয়ে জানতো একারনে বাবুও সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের কথা। চাকরি সংক্রান্ত কারনে বাবু যে প্রতারণা শিকার সেটা সমন্ধে সে সকলকে অবগত করে। আর ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরবে। একারনে, সাবিকুনের পরিবারের সাথে একটা মারফত সাবিকুনকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই বাবু। ওইসময় সাবিকুনের পরিবার বাবুকে কিছু কন্ডিশন দেয়। কন্ডিশনের শর্ত ছিল এগনেস্ট-এর দিন সাবিকুনকে কয়েক ভরি স্বর্ণের গহণা দিতে হবে। আর বিয়ের দিন সাবিকুনের পুরো অলংকার বাবুকে বহন করতে হবে। হঠাৎকরে সাবিকুনের পরিবারের এমন কথাতে আকাশভেঙ্গে পড়ে বাবুর মনে। হঠাৎ কী এমন হলো? যার কারনে সাবিকুনের পরিবার এমন কথা বলছে? বাবুর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জন্মায় আর প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজতে বাবু সাবিকুনের দুঃসম্পর্কের এক দাদার সাথে কথা বলে। ওইসময় বাবু জানতে পারে 'তার অর্জিত অর্থ গুলো প্রতারণার শিকারে নষ্ট হওয়াতে সাবিকুনকে বাবুর হাতে তুলে দিতে চাচ্ছেনা সাবিকুনের পরিবার। আর সাবিকুন অন্য সম্পর্কে জড়ানোয় সেও চাচ্ছেনা বাবুকে বিয়ে করতে।' তবে, সবকিছু জেনেও না জানার অভিনয় করতো বাবু। এতোকিছুর পরেও বাবুর বিশ্বাস ছিলো সাবিকুনের পরিবার তাকে ফেরাবে না।

ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে ছিল সাবিকুনের জন্মদিন। সাবিকুনের জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা থেকে দামি কয়েকটি উপহার ক্রয় করে নিজ বাসাতে ফেরে বাবু। পরে ওই উপহারগুলো নিয়ে সাবিকুনকে সারপ্রাইজ দিতে শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বাবু।

বাবু যখন শহরে পৌঁছায় তখন বাবুর সহকর্মীদের সাথে দেখা হয়। তখন বাবুর সহকর্মীরা জানায় 'সাবিকুনকে একটা ছেলের সাথে দেখেছে তারা।' বাবু বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক ভাবে ওই মেলাতে যায় সাবিকুনের খোঁজে। মেলাতে যেয়ে বাবুর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। যে সাবিকুনকে দেখে বাবু ঢাকায় গিয়েছিল সেই সাবিকুনের সাথে এই সাবিকুনের কোনো মিল নেই। সব দেখেও বাবু নিরব ছিল। বাবু এমন একটা অবস্থার ভিতরে পড়েছিল যেটা প্রকাশ করা তার জন্য সবচেয়ে কষ্টের ছিল। বাবু মেলাতে সাবিকুনকে কয়েকবার ডাকলেও সাবিকুন বাবুর ডাকে রেন্সপন্স করিনি। বাবু ভাবছিলো 'সাবিকুনের পরনে এমন পোশাক যেটা সে পছন্দ করে না। একারনে হয়তোবা সাবিকুন সামনে আসতে সাহজ পাচ্ছে না।' এই ভেবে বাবু সাবিকুনকে কয়েকটি টেক্স পাঠিয়ে মেলা থেকে চলে যায়।

সকাল গড়িয়ে বিকাল। হঠাৎ বাবুর কাছে তার এক সহকর্মীর ফোন। ফোনে বাবুর সহকর্মী বাবুকে বলছে 'সাবিকুন কান্নাকাটি করছে, আপনি একটু আসুন'। বাবু যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন বাবু হতভম্ব হয়ে যায়। সাবিকুন যে শ্লীলতাহানির শিকার সেটার জন্য সাবিকুন নিজে দায়ী। ওইসময় বাবু এতোটা পরিমাণে অপমানবোধ করেছিলো ওইখান থেকে সাবিকুনের পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। এবং সাবিকুনকে বিয়ে করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেই। ওইদিন সন্ধ্যায় সাবিকুনের পরিবার থেকে দেওয়া উপহার সামগ্রীগুলো বস্তাবন্দি করে সাবিকুনের বাসাতে ফেরত দিয়ে আসে বাবু।

সাবিকুনের বাসা থেকে ফেরার মাসখানেকের ভিতরে সাবিকুনের পিতামাতা তাদের ভুলগুলো বুঝতে পারে। তবে সাবিকুন করে লজ্জিত ছিল তারা। একারণে, সাবিকুনের হয়ে তারা বাবুর কাছে ক্ষমা চান।

এভাবে ৬ মাস কেটে গেল। বাবু মানসিক যন্ত্রণায় মারাত্বকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবু এতোটাই ভেঙে পড়েছিল কয়েকবার সুইসাইড করতে যায়। এসবের মাথায় বাবুর পরিবারও সবকিছু জেনে যায়। এসময় তারা বাবুকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতে থাকে।

তারপরেও বাবুর মন মানেনা। বাবুর বিশ্বাস ছিলো তার ভালোবাসার সাবিকুন নিজের ভূলগুলো বুঝতে পেরে হয়তো কোন একদিন ফিরবে তার জীবনে।

সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্ক না থাকলেও সাবিকুনের পড়াশোনা কেন্দ্রিক সবখানে বাবুর নাম ও কন্টাক নাম্বার ছিল। একারণে, সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনের পড়াশোনা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বাবুর সহযোগিতা নিয়মিত প্রয়োজন ছিল। বাবু এমন একটা ছেলে ছিল সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনকে নিয়ে কোন নেতিবাচক মন্তব্য সে করেনি। বরং, পুরো ঘটনার জন্য বাবু নিজেকে দায়ী করে। সম্পর্কে জড়ানোটা তার জন্য ভূল ছিল।

একটা সময় বাবুর সবচেয়ে কাছের দুলাভাই মারা যায়। বাবুর দুলাভাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগেও সাবিকুনের নাম নিয়ে বলেছিলো 'আমি বাঁচব কিনা জানি না। তবে তুমি সাবিকুনের জন্য যে কষ্ট পেয়েছো সেটা সহ্য করা তোমার জন্য কষ্টের। আমার আক্ষেপ তুমি যদি রিলেশনশিপে না জড়াতে তাহলে হয়তোবা তোমার বিয়ে হতো অন্য কারও সাথে।' বাবুর দুলাভাই মারা যাওয়ার পরে বাবুর আব্বুও মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে বাবুকে তার আব্বু বলেছিল 'তোমাকে নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। যদি বেচেঁ থাকি ওই মেয়ের চেয়ে সুন্দর বৌমা তোমার জন্য আমি নিয়ে আসব।'

বাবুর আব্বু যেদিন মারা গেছিলো সেদিন সাবিকুনসহ তার পিতামাতা এসেছিলো বাবুর বাসায়। তার কিছুদিন পর সাবিকুন বাবুকে নক করে। তাকে বাবুর জীবনে পুনরায় গ্রহণের জন্য বলে। সাবিকুনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাবু বলে 'সরি সাবিকুন। তোমাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তোমার কারণে আমার জীবন নষ্ট হয়েছে। মৃত্যুর সময়ও দুলাভাই-আব্বু আক্ষেপ করেছে। তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান।' এঘটনার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। তবে বাবু আজও নিরবে কাঁদে। কে দেবে তাকে সান্ত্বনা? কে বুঝবে তার কষ্ট? কেনবা এমন ঘটল?

 

Header Ad
Header Ad

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত

জুলাই-আগস্ট গণঅভুত্থানে গণহত্যার মামলায় আগামী মাসের শুরুতেই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে-আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

কাতারভিত্তিক সম্প্রচারমাধ্যম আলজাজিরার বৈশ্বিক নেতাদের সাক্ষাৎকারমূলক অনুষ্ঠান ‘টক টু আল–জাজিরা’য় এ কথা বলেন তিনি।
আগামী ডিসেম্বর থেকে আগামী বছর জুনের মধ্যেই নির্বাচন হবে বলে ফের জানিয়েছেন তিনি

এ সময় তিনি আরও বলেন, শুধু মানবিক সহায়তা নয়, নিরাপদ প্রত্যাবাসনই রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধান।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন তিনি।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, মধুচন্দ্রিমা শেষ হোক বা না হোক, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে। জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা এখনও বলছে না।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে?

জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন,
এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে–তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এ আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান,
তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তার জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

Header Ad
Header Ad

ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

রাজধানী ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় অস্থায়ীভাবে বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। এর পাশাপাশি কমতে পারে দিনের তাপমাত্রা। এছাড়া আকাশ আংশিক মেঘলা থেকে মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এ সময় দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বইতে পারে।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) রাজধানীসহ পার্শ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

সোমবার সকাল ৬টায় ঢাকার তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮২ শতাংশ।

সারাদেশের সকাল ৬ টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো অথবা বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারাদেশে দিনের তাপামাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

আরও বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে পশ্চিমবঙ্গ থেকে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় রংপুরের ডিমলাতে সর্বোচ্চ ৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়।

Header Ad
Header Ad

সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। ছবি: সংগৃহীত

ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার অংশ হিসেবে আলোচনা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের এলডি হলে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে সংলাপের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

আলী রীয়াজ বলেন, চর্চা, ঐক্যে এবং সম্মিলিতভাবে জাতীয় সনদ তৈরি করতে সবার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। ঐকমত্য কমিশনের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সনদ তৈরি করা। যাতে করে ক্ষমতার বিন্যাসে পরিবর্তন ঘটে। বাংলাদেশ যাতে সমস্ত সম্ভাবনা নিয়ে জাগ্রত হতে পারে। গত ৫৩ বছর মানুষ যে গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করছে, সেই আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়ন করা যায়, পথ উন্মুক্ত করা যায়, যেন সবাই মিলে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারি। তারাই অংশ হিসেবে এ আলোচনা।

তিনি আরও বলেন, শুধুমাত্র সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন, মতামত ও সুপারিশই যথেষ্ট নয়। সব রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর জনমানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশকে নতুন বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর করতে পারব। কাজে কি লিখছি তা নয়, চর্চার মধ্য দিয়ে, অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে, প্রতিশ্রুতির মধ্য দিয়ে আমাদের এ কাজে অগ্রসর হতে হবে। আমরা সেই প্রচেষ্টায় আছি।

ঐকমত্য কমিশনের সহ সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ তরুণদের নেতৃত্বে প্রাণ দিয়ে যে সম্ভাবনা তৈরি করেছে, সবাই মিলে সে সম্ভাবনাকে বাস্তবায়নের পথে অগ্রসর হতে হবে। সেই পথ ও প্রচেষ্টায় সবাই একত্রিত আছি, থাকব। একত্রিত থাকার তাগিদ জারি রাখব।

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি দলের কাছে মতামত চেয়েছিল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ৩৫টি দল মতামত জমা দিয়েছে বলে জানান আলী রীয়াজ। রোববার পর্যন্ত কমিশন ১৯টি দলের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ২০তম দল হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে কমিশন সংলাপ করছে বলে জানান আলী রীয়াজ।

২০১৮ সালে বর্তমান গণঅধিকার পরিষদের নেতাদের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কোটা সংস্কার আন্দোলনের কথা তুলে ধরে আলী রীয়াজ বলেন, তাদের অকুতোভয় সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনের নতুন পর্যায় সূচনা হয়েছিল। যার ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী পর্যায়ে একটি অভূতপূর্ব ও অভাবনীয় গণঅভ্যুত্থান হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ
ইশরাককে মেয়র ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ
কাশ্মীর সীমান্তে ভারত-পাকিস্তানের ফের গোলাগুলি
টস হেরে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ, একাদশে ৩ পরিবর্তন
দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
টটেনহামকে উড়িয়ে প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল
শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে পারবেন না মোদি
রেফারির কাছে ক্ষমা চাইলেন মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তনিও রুদিগার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা উপহার দিলেন ছাত্রদল নেতা
দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দুই উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
নওগাঁয় গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত না দেওয়ায় জাতীয় পার্টি’র নেতাকে গণধোলাই
পাকিস্তানের পাশাপাশি বাংলাদেশকেও পানি না দেওয়ার আহ্বান বিজেপি এমপির
এসআই নিয়োগের ফলাফল প্রকাশ, ৫৯৯ জনকে প্রাথমিক সুপারিশ
হাকিমপুরে গরীবের চাল ছাত্রলীগ নেতার গুদামে
চুরির অভিযোগে কুবির দুই শিক্ষার্থী বহিষ্কার
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে আগবাড়িয়ে কিছু করার পক্ষে নয় ঢাকা
সাব-ইন্সপেক্টর পদে প্রাথমিক সুপারিশ পেল ৫৯৯ জন
দুই উপদেষ্টার এপিএস-পিও’র দুর্নীতির খোঁজে গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু