বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ৬ ফাল্গুন ১৪৩১
Dhaka Prokash

তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান

বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের একটা ছেলে। ছোটবেলা থেকে সে সবার চেয়ে আলাদা মন মানুসিকতা নিয়ে বড় হয়েছে। বাবু ছিল লাজুক স্বভাবের। সবসময় কম কথা বলত। তবে তার মেধা আর দক্ষতা ছিল সবার চেয়ে ভিন্ন। বাবু মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত পড়াশোনাকালীন তার কোনো বান্ধবী ছিল না। অনেক মেয়ে বাবুকে বন্ধু হিসেবে পেতে চাইলেও বাবু তাদের ফিরিয়ে দিত। সালটা ২০১৫। বাবু সে সময় মাধ্যমিক স্তর পার করে সবেমাত্র কলেজে ভর্তি হয়েছে। সেসময় বাবুর বয়স ১৮ বছর। কলেজে ভর্তি হওয়ার সুবাদে সে ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ে, পাশাপাশি বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখালেখি করতে থাকে। ছাত্র রাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে বাবু অল্প সময়ের ভেতরে সবার কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়।

একটা সময় লাজুক স্বভাবের বাবুর আচার-ব্যবহার, মেধা-দক্ষতা ও দেখতে শুনতে ভালো হওয়ায় কারণে অনেক মেয়ে তাদের জীবনে বাবুকে স্বপ্নের রাজকুমার হিসেবে পেতে চায়। তবে বাবু বরাবরের মতো কলেজ জীবনেও সম্পর্ক থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করে।

বাবুর এক বন্ধু ছিল। তার নাম আরিফুল ইসলাম। একই গ্রামে তাদের বাসা। বাবুর চাচাতো বোনের সাথে আরিফুলের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। বাবু সেটা জানত। আরিফুল দেখতে শুনতে অনেক সুন্দর হওয়ায় অনেক মেয়ের সাথে আরিফুলের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তবে, বাবু আরিফুলের এসমস্ত কর্মকাণ্ড পছন্দ করত না। একের অধিক সম্পর্কে জড়িয়ে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট না করার জন্য বাবু বহুবার আরিফুলকে অনুরোধ করে। তবে, আরিফুল বাবুর কোনো কোথায় কর্ণপাত করেনি। একপর্যায়ে এসংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আরিফুল ও বাবুর ভেতরে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। এটা নিয়ে বাবু মনে মনে অনেক কষ্ট পায়। ঘটনার একপর্যায়ে বাবু আরিফুলের সাথে তর্কে জড়ায়। বাবু আরিফুলকে বলে 'চাইলে একটা প্রেমকে পূর্ণতা দেওয়া যায়, হাজারটা প্রেম করে কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করার মানে হয় না। আর সেটা সে (বাবু) দেখিয়ে দেবে।'

এসবের মধ্যদিয়ে বাবু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে 'সে রিলেশনশিপে জড়াবে এবং রিলেশনশিপকে পূর্ণতা দেবে।' রিলেশনশিপে বিয়ে করবে বলে বাবু তার পরিবারকে জানায়। সালটা তখন ২০১৬। ওই সময়ে বাবুর পরিবার বাবুকে বলে 'বাবুর উপরে তাদের ভরসা আছে, বাবু যাকে পছন্দ করবে তার সাথে তাকে বিয়ে দিতে আপত্তি নেই। তবে কোনো মেয়ের জীবন নিয়ে যেন বাবু খেলা না করে।' পরিবারের এমন কথার পর বাবু মনে মনে মেয়ে খুঁজতে শুরু করে। ২০১৬ সালের ডিসেস্বর মাসে বাবু ইকরামুল নামে একটা ছেলের মাধ্যমে তারই এলাকায় সাবিকুন নাহার নামে একটা মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। ওইসময় সাবিকুন সবেমাত্র অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। সাবিকুনের পিতা ভ্যান চালিয়ে পেঁয়াজের ব্যবসা করত। জায়গা জমি বলতে বসতবাড়ি ছাড়া আর কোনোকিছু ছিল না। তবে, সাবিকুনের মামারা ছিল অভিজাত।

২০১৭ সাল। জানুয়ারি মাসের কোনো একদিন বাবু সাবিকুনের সাথে দেখা করে। সেইদিন বাবু সাবিকুনকে বলে 'সে ফ্যামিলিগত রিলেশনশিপে আগ্রহী। সাবিকুনের পরিবার তাকে (বাবু) মেনে নিলে সে সাবিকুনকে তার জীবনে গ্রহণ করবে।'

একপর্যায়ে সাবিকুন রিলেশনশিপের ব্যাপারে তার পরিবারকে জানায়। পরিবারকে জানানোর পর বাবু সাবিকুনের বাসায় গিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার সাথে কথা বলে। সাবিকুনরা ছিল দুই বোন। তার কোনো ভাই ছিল না। বোনের ভেতরে সাবিকুন বড়। আর বাবুরা ছিল ৫ ভাইবোন। ভাই হিসেবে বাবু একা এবং সবার ছোট। তবে বাবু মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হলেও সমাজে বাবুসহ তার পরিবারকে সবাই সম্মান দিয়ে চলত।

এভাবে কেটে গেল কয়েক মাস। বাবুর ফোন নম্বরটা সাবিকুনের পিতার ফোনে 'জামাই' হিসেবে সেভ করা ছিল। একই গ্রামে বাসা হওয়ায় সাবিকুনের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাবুর। পুরো গ্রাম তাদের রিলেশনশিপের বিষয়ে জানত। অনেকের ধারণা ছিল 'বাবু-সাবিকুন বিবাহিত।'

এভাবে বাবু-সাবিকুনের প্রেম চলতে থাকে কয়েক বছর। এর ভেতরে সাবিকুনের দাদি মারা যায়। দাদি মারা যাওয়ার পর সাবিকুনের দাদিকে গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়। কেননা, সাবিকুনের পরিবারের নিজস্ব কোনো গোরস্থান ছিল না। একপর্যায়ে সাবিকুনের পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় 'সাবিকুনের দাদিকে তারা সরকারি গোরস্থান বা সাবিকুনের নানাবাড়ি মাটি দেবে।' তবে এটা ছিল সাবিকুনের পরিবারের জন্য লজ্জার ও আত্মসম্মানের বিষয়। তবে, দীর্ঘ প্রেমের সূত্র ধরে সাবিকুন বাবুকে ঘিরে অনেক ভরসা করত। সর্বমহলে বাবুর গ্রহণযোগ্যতা থাকাই সাবিকুনের বিশ্বাস ছিল 'একমাত্র বাবু পারবে এই বিষয়টি সমাধান করতে।' সাবিকুন একপর্যায়ে বাবুর সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। বাবু তার গ্রহণযোগ্যতাকে ব্যবহার করে ওই গোরস্থানে সাবিকুনের দাদির কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করে। আর এঘটনায় সাবিকুনের পরিবারের কাছে বাবু ছিল এক নক্ষত্র।

এসবের মধ্যদিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে বাবুর ইউনিয়নে জাতীয় পরিচয় পত্র (স্মার্টকার্ড) বিতরণ শুরু হয়। তবে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করাটা ছিল সব মানুষের জন্য কষ্টের। দীর্ঘ লাইন ও চৈত্রের খরতাপে মানুষের জীবন ছিল দুর্বিষহ। তবে, বাবু তার যোগাযোগ ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে সাবিকুনের পিতামাতার স্মার্টকার্ডগুলো ১০ মিনিটের ভেতরে পাইয়ে দেয়। স্মার্টকার্ড গ্রহণের সময় যখন সাবিকুনের পিতামাতাকে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল তখন অনেকে এটা নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্য করতে থাকে। ওইসময় আনসার সদস্যরা উপস্থিত মানুষের উদ্দেশে বলে 'ওনারা বাবুর বাগদত্তার পিতামাতা। আপনারা যদি চান তাহলে ওনারাও লাইনে দাঁড়িয়ে স্মার্টকার্ড গ্রহণ করবে।' তবে, বাবুকে তার নিজ ইউনিয়নের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ ভালোবাসত ও সম্মান করত।

বাবু তাদের কাছে ছিল 'তাদের দুঃসময়ের সঙ্গী, অসহায়দের ভাগ্য পরিবর্তনের কারিগর।' এজন্য ওইসময় উপস্থিত হাজার হাজার মানুষ সাবিকুনের পিতামাতার যাওয়া নিয়ে দ্বিতীয়ত আর কোনো মন্তব্য করেনি। বরং যারা বিরূপ প্রতিক্রিয়া করেছিল তারাও তাদের ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাই সাবিকুনের পিতামাতার কাছে। আর ওইদিনের পর থেকে বাবুর রিলেশনশিপের বিষয়ে তার ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ জেনে যায়। এভাবে কেটে যায় আরও কয়েকমাস। উভয়ের সম্পর্ক পারিবারিকভাবে আরও মজবুত হয়। উভয়ের পরিবারের সদস্যরা উভয়ের সাথে নিয়মিত মুঠোফোনে যোগাযোগ রাখতো।

একপর্যায়ে সাবিকুনের মাধ্যমিকের সার্টিফিকেট নিয়ে সমস্যা হয়। যেটা সমাধান না হলে সাবিকুন কলেজে ভর্তি হতে পারবেনা। বাবু, বিষয়টি জানার পর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে অনবরত গিয়ে সাবিকুনের সার্টিফিকেটের সমস্যাটা সমাধান করে।

এ ছাড়াও বাবু নিজ দায়িত্বে সাবিকুনের বিভিন্ন খরচ মেটাতো। বাবুর বাসাতে যেটা উৎপাদন হতো সেটা বাবু সাবিকুনের বাসাতে নিয়ে যেত। আবার সাবিকুনের বাসাতে যেকোনো আয়োজনে বাবুকে দাওয়াত দিতে ভুলত না সাবিকুনের পরিবার।

তবে সাবিকুনের একটা অভ্যাস ছিল। জিন্স প্যান্ট পরা। আর এটা বাবুর পছন্দ ছিল না। বাবু চাইতো সাবিকুন শালীনতা বজায় রেখে চলাফেরা করুক। যেহেতু বাবুর সমাজে ভালো গ্রহণযোগ্যতা ছিল সেকারণে সে সম্মানটাকে সবসময় গুরুত্ব দিত। তবে, বহুবার সাবিকুন জিন্স না পরার প্রতিশ্রুতি দিয়েও সেটা রাখেনি। এনিয়ে বাবুর সাথে ২০১৮ সালে সম্পর্কে অবনতি ঘটে সাবিকুনের। কয়েকমাস বাবু সাবিকুনের সাথে যোগাযোগ রাখেনি। তবে, সাবিকুনের পরিবার নিয়মিত যোগাযোগ রাখতো বাবুর সাথে। যাতে বাবু আগের মতো সাবিকুনকে গ্রহণ করে। তবে বাবু ছিলো একঘেয়েমি ও প্রচুর অভিমানি। তবে বাবুর বড় একটা দুর্বলতা ছিলো সাবিকুনের পরিবারের করে। কেননা, সাবিকুনের পিতামাতার কোন ছেলে সন্তান না থাকাই সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে প্রচুর ভালোবাসতো। এসবের মধ্যে একপর্যায়ে রোজার ঈদে সাবিকুনের পিতা বাবুকে দাওয়াত করে। বাবু যেতে অপারগতা প্রকাশ করলেও একপর্যায়ে বাবু তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। সে ঈদেরদিন সাবিকুনের বাসাতে যায়। এবং ওইদিন সাবিকুন তার পিতামাতার সামনে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বাবুর কাছে ক্ষমা চাই। এবং বাবু সাবিকুনকে ক্ষমা করে দেয়।

এভাবে ভালোই চলছিল তাদের সম্পর্ক। বাবু-সাবিকুনের ভালোবাসা অন্যদের জন্য ছিলো উদাহারণ। কেননা, বন্ধুর সাথে তর্কে জড়িয়ে বাবু দেখিয়েছিল কীভাবে একটা সম্পর্ক করে নিজেকে ঠিক রাখা যায়।

এসবের ভিতরে সাবিকুন যখন মাধ্যমিক পাশ করে তখন সাবিকুনের পরিবার সাবিকুনকে বিয়ের জন্য বাবুকে চাপ দিতে থাকে। তবে বাবু জানাই 'তার দুলাভাই দেশে না ফেরা পর্যন্ত সে বিয়ের পিঁড়িতে বসবেনা। ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরলে সাবিকুনকে বিয়ে করবে সে।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা বাবুকে বলে একটা সরকারি করতে। যাতে তাদের এই সম্পর্ক নিয়ে সাবিকুনের মামারা দ্বিমত পোষণ না করে। কেননা, সাবিকুনের মামারা সবাই সরকারি চাকরিজীবী। তবে, বাবু ছিল চাকরি বিমুখ। সে কোন ধরাবাঁধার ভিতরে থাকতে পছন্দ করতো না। তাছাড়া, বাবু তার পরিবারের একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ার সুবাদে চাকরির চেয়ে বাবু পিতামাতার খেদমত করাকে প্রাধান্য দিতে থাকে।

এসবের মধ্য দিয়ে বাবু ছাত্ররাজনীতি ও লেখালেখির সুবাদে একজন ভালো ছাত্রনেতা ও সাংবাদিক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে। বাবুর নেতৃত্ব ও লেখালেখিতে সবাই ছিল মুগ্ধ। ২০১৯ সালের মার্চ মাসে একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য বাবুকে ইনফরমেশন পাঠাই সাবিকুন। একপর্যায়ে বাবু তার পিতামাতার কথাতে এবং ভালোবাসার মানুষের অনুরোধ রক্ষা করতে সিদ্ধান্ত নেই সে সরকারি চাকরি করবে। তবে চাকরি যদি মনোগত না হয় তাহলে করবেনা। ঢাকাতে যাওয়ার আগে বাবু সাবিকুনের পরিবারের সাথে দেখা করতে যায়। সেদিন সাবিকুনের দাদু সাবিকুনদের বাসাতে ছিল। বছরের কয়েকমাস সাবিকুনদের বাসাতে থাকেন তিনি। দাদার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে যখন বাবু চলে আসবে তখন সাবিকুনের দাদু বাবুর হাত ধরে কান্নাকাটি করতে থাকে। কেননা, তার স্ত্রীর গোরস্থানে কবর দেওয়া নিয়ে বাবুর অবদানটা সবচেয়ে বেশি। ওইসময় সাবিকুনের দাদু সাবিকুনকে ডাকে এবং সাবিকুনের পিতামাতাকেও ডাকে। বাবু আর সাবিকুনের দুইহাত এক করে সাবিকুনের পিতামাতাকে সাবিকুনের দাদু বলে 'বাবু তুমি কখনও সাবিকুনকে ছেড়ে যাবে না, আর সাবিকুন তুমিও কখনও বাবুকে ছেড়ে যাবে না।' ওইসময় সাবিকুনের পিতামাতা সাবিকুনের দাদার উদ্দেশে বলে 'পুরো গ্রামের সবাই জানে সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্কের বিষয়টা। তুমি নিশ্চিত থাকো বাবু আমাদের আরেক সন্তান। সাবিকুনের বিয়ে বাবুর সাথে হবে।'

ওইসময় বাবু অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়ে। মনেমনে মহান আল্লাহ্ তা'য়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করে। যাহোক, বাবুর হাতে সময় ছিলো ৯ মাস। ৯ মাসের ভিতরে তাকে সরকারি চাকরি পেতে হবে। কেননা, দুলাভাই দেশে ফিরবে ২০২০ জানুয়ারিতে। ১৫ দিন ছুটি কাটিয়ে দুলাভাই আবারও চলে যাবেন দেশের বাইরে। একপর্যায়ে সাবিকুনকে বাবুর পছন্দের একটি মহিলা কলেজে ভর্তি করে দিয়ে সাবিকুনের পরিবারের চাওয়া পূরণ করতে বাবু ঢাকাতে যায় একটা ব্যাংকের চাকরির জন্য। তবে বাবু জানতো না সে চাকরিটা ছিল প্রতারকদের প্রতারণার ফাঁদ। ওই চাকরির ফাঁদে পড়ে বাবু ৮ লাখ টাকা হারায়। যেটা নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে বাবু। এবিষয়ে বাবু নিজের পরিবারকেও কোনকিছু বলতে পারছিলো না নাইবা নিজের মাঝে কথাগুলো ধরে রাখতে পারছিলো। একপর্যায়ে ঢাকাতে অবস্থান কালীন সময়ে বাবু সাবিকুনের পিতামাতাকে জানাই চাকরি করা তার পক্ষে সম্ভব না। এনিয়ে বাবু করে মনোক্ষুণ্ন হয় সাবিকুনের পরিবার।

এভাবে বাবুর কয়েকমাস কেটে গেল ঢাকাতে। বাবুর পরিবার জানতো তাদের ছেলে চাকরি সংক্রান্ত কারনে ঢাকাতে আছে। তবে বাস্তবতা যে ভিন্ন সেটা বাবু ছাড়া অন্যকেউ জানতো না। নাইবা কাউকে এ ব্যাপারে শেয়ার করতো বাবু।

এদিকে ৬/৭ মাস বাবু সাবিকুনকে সময় না দিতে পারার কারনে সাবিকুন অন্য একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সে ছেলেটি ছিলো আভিজাত্য পরিবারের। ঢাকাতে থাকলেও বাবু বিষয়গুলো জানতে পারে। কেননা, যারা বাবুকে চেনে তারা সাবিকুনকেও চিনতো। সাবিকুনের নতুন সম্পর্কের ব্যাপারে বাবু বহুবার সাবিকুনকে প্রশ্ন করলেও সাবিকুন অস্বীকার করতো, সে বলতো ও (সাবিকুনের নতুন প্রেমিক) তার কোচিংয়ের ফ্রেন্ড। দীর্ঘ সময় ধরে সাবিকুনের সাথে সম্পর্ক থাকার সুবাদে বাবু সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো। তাছাড়া যেহেতু উভয় পরিবার সম্পর্কের বিষয়ে জানতো একারনে বাবুও সাবিকুনের কথায় বিশ্বাস করতো।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের কথা। চাকরি সংক্রান্ত কারনে বাবু যে প্রতারণা শিকার সেটা সমন্ধে সে সকলকে অবগত করে। আর ২০২০ সালের জানুয়ারীতে দুলাভাই দেশে ফিরবে। একারনে, সাবিকুনের পরিবারের সাথে একটা মারফত সাবিকুনকে বিয়ের প্রস্তাব পাঠাই বাবু। ওইসময় সাবিকুনের পরিবার বাবুকে কিছু কন্ডিশন দেয়। কন্ডিশনের শর্ত ছিল এগনেস্ট-এর দিন সাবিকুনকে কয়েক ভরি স্বর্ণের গহণা দিতে হবে। আর বিয়ের দিন সাবিকুনের পুরো অলংকার বাবুকে বহন করতে হবে। হঠাৎকরে সাবিকুনের পরিবারের এমন কথাতে আকাশভেঙ্গে পড়ে বাবুর মনে। হঠাৎ কী এমন হলো? যার কারনে সাবিকুনের পরিবার এমন কথা বলছে? বাবুর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন জন্মায় আর প্রশ্নের উত্তরগুলো খুঁজতে বাবু সাবিকুনের দুঃসম্পর্কের এক দাদার সাথে কথা বলে। ওইসময় বাবু জানতে পারে 'তার অর্জিত অর্থ গুলো প্রতারণার শিকারে নষ্ট হওয়াতে সাবিকুনকে বাবুর হাতে তুলে দিতে চাচ্ছেনা সাবিকুনের পরিবার। আর সাবিকুন অন্য সম্পর্কে জড়ানোয় সেও চাচ্ছেনা বাবুকে বিয়ে করতে।' তবে, সবকিছু জেনেও না জানার অভিনয় করতো বাবু। এতোকিছুর পরেও বাবুর বিশ্বাস ছিলো সাবিকুনের পরিবার তাকে ফেরাবে না।

ডিসেম্বরের ৩১ তারিখে ছিল সাবিকুনের জন্মদিন। সাবিকুনের জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা থেকে দামি কয়েকটি উপহার ক্রয় করে নিজ বাসাতে ফেরে বাবু। পরে ওই উপহারগুলো নিয়ে সাবিকুনকে সারপ্রাইজ দিতে শহরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে বাবু।

বাবু যখন শহরে পৌঁছায় তখন বাবুর সহকর্মীদের সাথে দেখা হয়। তখন বাবুর সহকর্মীরা জানায় 'সাবিকুনকে একটা ছেলের সাথে দেখেছে তারা।' বাবু বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক ভাবে ওই মেলাতে যায় সাবিকুনের খোঁজে। মেলাতে যেয়ে বাবুর মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। যে সাবিকুনকে দেখে বাবু ঢাকায় গিয়েছিল সেই সাবিকুনের সাথে এই সাবিকুনের কোনো মিল নেই। সব দেখেও বাবু নিরব ছিল। বাবু এমন একটা অবস্থার ভিতরে পড়েছিল যেটা প্রকাশ করা তার জন্য সবচেয়ে কষ্টের ছিল। বাবু মেলাতে সাবিকুনকে কয়েকবার ডাকলেও সাবিকুন বাবুর ডাকে রেন্সপন্স করিনি। বাবু ভাবছিলো 'সাবিকুনের পরনে এমন পোশাক যেটা সে পছন্দ করে না। একারনে হয়তোবা সাবিকুন সামনে আসতে সাহজ পাচ্ছে না।' এই ভেবে বাবু সাবিকুনকে কয়েকটি টেক্স পাঠিয়ে মেলা থেকে চলে যায়।

সকাল গড়িয়ে বিকাল। হঠাৎ বাবুর কাছে তার এক সহকর্মীর ফোন। ফোনে বাবুর সহকর্মী বাবুকে বলছে 'সাবিকুন কান্নাকাটি করছে, আপনি একটু আসুন'। বাবু যখন ঘটনাস্থলে যায় তখন বাবু হতভম্ব হয়ে যায়। সাবিকুন যে শ্লীলতাহানির শিকার সেটার জন্য সাবিকুন নিজে দায়ী। ওইসময় বাবু এতোটা পরিমাণে অপমানবোধ করেছিলো ওইখান থেকে সাবিকুনের পরিবারের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলে। এবং সাবিকুনকে বিয়ে করবে না বলে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেই। ওইদিন সন্ধ্যায় সাবিকুনের পরিবার থেকে দেওয়া উপহার সামগ্রীগুলো বস্তাবন্দি করে সাবিকুনের বাসাতে ফেরত দিয়ে আসে বাবু।

সাবিকুনের বাসা থেকে ফেরার মাসখানেকের ভিতরে সাবিকুনের পিতামাতা তাদের ভুলগুলো বুঝতে পারে। তবে সাবিকুন করে লজ্জিত ছিল তারা। একারণে, সাবিকুনের হয়ে তারা বাবুর কাছে ক্ষমা চান।

এভাবে ৬ মাস কেটে গেল। বাবু মানসিক যন্ত্রণায় মারাত্বকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। বাবু এতোটাই ভেঙে পড়েছিল কয়েকবার সুইসাইড করতে যায়। এসবের মাথায় বাবুর পরিবারও সবকিছু জেনে যায়। এসময় তারা বাবুকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দিতে থাকে।

তারপরেও বাবুর মন মানেনা। বাবুর বিশ্বাস ছিলো তার ভালোবাসার সাবিকুন নিজের ভূলগুলো বুঝতে পেরে হয়তো কোন একদিন ফিরবে তার জীবনে।

সাবিকুনের সাথে বাবুর সম্পর্ক না থাকলেও সাবিকুনের পড়াশোনা কেন্দ্রিক সবখানে বাবুর নাম ও কন্টাক নাম্বার ছিল। একারণে, সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনের পড়াশোনা ও অন্যান্য ক্ষেত্রে বাবুর সহযোগিতা নিয়মিত প্রয়োজন ছিল। বাবু এমন একটা ছেলে ছিল সম্পর্ক বিচ্ছেদের পরেও সাবিকুনকে নিয়ে কোন নেতিবাচক মন্তব্য সে করেনি। বরং, পুরো ঘটনার জন্য বাবু নিজেকে দায়ী করে। সম্পর্কে জড়ানোটা তার জন্য ভূল ছিল।

একটা সময় বাবুর সবচেয়ে কাছের দুলাভাই মারা যায়। বাবুর দুলাভাই করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার কয়েকদিন আগেও সাবিকুনের নাম নিয়ে বলেছিলো 'আমি বাঁচব কিনা জানি না। তবে তুমি সাবিকুনের জন্য যে কষ্ট পেয়েছো সেটা সহ্য করা তোমার জন্য কষ্টের। আমার আক্ষেপ তুমি যদি রিলেশনশিপে না জড়াতে তাহলে হয়তোবা তোমার বিয়ে হতো অন্য কারও সাথে।' বাবুর দুলাভাই মারা যাওয়ার পরে বাবুর আব্বুও মারা যায়। মারা যাওয়ার আগে বাবুকে তার আব্বু বলেছিল 'তোমাকে নিয়ে আমার গর্বের শেষ নেই। যদি বেচেঁ থাকি ওই মেয়ের চেয়ে সুন্দর বৌমা তোমার জন্য আমি নিয়ে আসব।'

বাবুর আব্বু যেদিন মারা গেছিলো সেদিন সাবিকুনসহ তার পিতামাতা এসেছিলো বাবুর বাসায়। তার কিছুদিন পর সাবিকুন বাবুকে নক করে। তাকে বাবুর জীবনে পুনরায় গ্রহণের জন্য বলে। সাবিকুনের কথার পরিপ্রেক্ষিতে বাবু বলে 'সরি সাবিকুন। তোমাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব না। তোমার কারণে আমার জীবন নষ্ট হয়েছে। মৃত্যুর সময়ও দুলাভাই-আব্বু আক্ষেপ করেছে। তুমি আমার জীবন গল্পের অভিশপ্ত এক বেঈমান।' এঘটনার প্রায় এক বছর অতিবাহিত হয়েছে। তবে বাবু আজও নিরবে কাঁদে। কে দেবে তাকে সান্ত্বনা? কে বুঝবে তার কষ্ট? কেনবা এমন ঘটল?

 

Header Ad
Header Ad

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে

অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হক ও মাউশির লোগো। ছবি: সংগৃহীত

শিক্ষক নেতাদের আন্দোলন ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) পদ থেকে অধ্যাপক ড. এহতেসাম উল হককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি শিক্ষা ক্যাডারের ১৪তম বিসিএসের কর্মকর্তা এবং পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অধ্যাপক ছিলেন।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সম্প্রতি তার বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে সংবাদ প্রকাশের পর তাকে ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করে মাউশিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। এদিকে, নতুন মহাপরিচালক হিসেবে অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানকে চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. মাহবুব আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, অধ্যাপক মুহাম্মদ আজাদ খানের এই দায়িত্ব কেবল সাময়িক, যা পদোন্নতি হিসেবে গণ্য হবে না। পরবর্তীতে নিয়মিত নিয়োগের মাধ্যমে মহাপরিচালক নিয়োগ হলে এই চলতি দায়িত্ব বাতিল হয়ে যাবে।

অধ্যাপক এহতেসাম উল হকের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তিনি বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালানোর অভিযোগে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ রয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের তথ্য তিনি পুলিশের কাছে সরবরাহ করেছিলেন।

২০২৩ সালের ৫ আগস্ট তার অপসারণের দাবিতে কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করে। দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার ও অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার অপসারণের দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ২০২১ সালের জুন মাসে বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজে যোগদানের পর থেকে তিনি নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা চালিয়ে যান। তিনি বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের তৎকালীন মেয়র এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আত্মীয় সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর ঘনিষ্ঠ ছিলেন।

অভিযোগ রয়েছে, অধ্যক্ষ থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন এবং আন্দোলনে অসহযোগিতা করতেন। এমনকি কলেজের গাড়ি ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন, যা তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনও ব্যবহার করতেন। তিনি কলেজের বিদ্যুৎ ব্যবহার করে নিজের বাসায় গ্রিল নির্মাণসহ অন্যান্য কাজ করিয়েছেন। কেউ প্রতিবাদ করলে চাকরি খেয়ে ফেলার হুমকি দিতেন এবং বার্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (এসিআর) খারাপ করে দেওয়ার ভয় দেখাতেন। এছাড়া, চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন না দিয়ে বিদায় করে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

ডিজি পদ থেকে এহতেসাম উল হককে অপসারণের খবরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, একজন বিতর্কিত ব্যক্তি শিক্ষাখাতের এত বড় দায়িত্বে থাকতে পারেন না। তার অপসারণের মাধ্যমে প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রতি সরকারের সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটেছে।

Header Ad
Header Ad

২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি

ছবি: সংগৃহীত

২০১৮ সালের বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ জন জেলা প্রশাসককে (ডিসি) বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত ছয়টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালনের কারণে এই কর্মকর্তাদের ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে একই কারণে আরও ১২ জন কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছিল।

ওএসডি হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের পরিচালক (যুগ্মসচিব) কবীর মাহমুদ, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মাহমুদুল আলম, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. আবুল ফজল মীর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের সদস্য-পরিচালক (যুগ্মসচিব) মঈনউল ইসলাম, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য (যুগ্মসচিব) মো. ওয়াহিদুজ্জামান, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) এ কে এম মামুনুর রশিদ এবং বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বাপবিবো) সদস্য (যুগ্মসচিব) ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম।

এছাড়া তালিকায় রয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কাজী আবু তাহের, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সদস্য (যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের যুগ্মসচিব (সংযুক্ত) আনার কলি মাহবুব, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সদস্য (যুগ্মসচিব) সৈয়দা ফারহানা কাউনাইন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মতিউল ইসলাম চৌধুরী, কৃষি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আতাউল গনি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব (সংযুক্ত) আবু আলী মো. সাজ্জাদ হোসেন।

এছাড়া, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব এ জেড এম নুরুল হক, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের পরিচালক (যুগ্ম-সচিব) এস এম আজিয়র রহমান, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সচিব (যুগ্ম-সচিব) মো. মাসুদ আলম সিদ্দিক এবং সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব গোপাল চন্দ্র দাশসহ আরও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা রয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বিতর্কিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই ওই সময়ের রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। এবার সেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা কর্মকর্তাদের পর্যায়ক্রমে ওএসডি করা হচ্ছে বলে মনে করছেন প্রশাসনিক বিশ্লেষকরা।

Header Ad
Header Ad

ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: সংগৃহীত

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য ইউক্রেনকেই দায়ী করে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন রাজনীতিতে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প এবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। তিনি দাবি করেছেন, চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল।

মঙ্গলবার (স্থানীয় সময়) ফ্লোরিডার মার-আ-লাগোতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি কঠোর মনোভাব প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন হওয়া উচিত। বিশ্লেষকদের মতে, এটি জেলেনস্কিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনারই ইঙ্গিত।

ট্রাম্প আরও বলেন, ইউক্রেনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো নির্বাচন হয়নি এবং সেখানে সামরিক আইন চলছে। তার দাবি, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা মাত্র চার শতাংশে নেমে গেছে, আর দেশটি ধ্বংসের পথে। যদিও যুদ্ধকালীন সময়ে নির্ভরযোগ্য জনমত জরিপ পাওয়া কঠিন, তবে বিভিন্ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা ট্রাম্পের দাবির মতো এতটা কমেনি।

এছাড়া, ইউক্রেনের নির্বাচন প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, "তারা কি জনগণের মতামত নিয়েছে? তারা আলোচনার টেবিলে বসতে চায়, কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে সেখানে কোনো নির্বাচন হয়নি।"

প্রসঙ্গত, ইউক্রেনে ২০২৪ সালের এপ্রিলে নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দেশটির সংবিধান অনুযায়ী, যুদ্ধকালীন সময়ে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই মন্তব্য কৌতুকপূর্ণ, কারণ তিনি নিজেই ২০২০ সালের মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন।

ট্রাম্প আরও দাবি করেন, ইউক্রেন চাইলে যুদ্ধ বন্ধ করতে পারতো এবং তাদের উচিত ছিল রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতায় যাওয়া। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এর অর্থ হলো—ইউক্রেনকে হয় রাশিয়ার মিত্র সরকার গঠনের প্রস্তাবে রাজি হতে হতো, নয়তো প্রতিরোধ ছেড়ে দিয়ে আত্মসমর্পণ করতে হতো।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক অবস্থান ইঙ্গিত দেয় যে, তিনি পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ইউক্রেনকে সমর্থন না দিয়ে বরং রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি বিতর্কিত শান্তিচুক্তির দিকে এগোতে পারেন, যা পুতিনের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক জয় হিসেবে বিবেচিত হবে।

সূত্র: সিএনএন

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

অবশেষে সরিয়ে দেওয়া হলো মাউশির বিতর্কিত ডিজিকে
২০১৮ সালের নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ ডিসি ওএসডি
ট্রাম্পের বিস্ফোরক দাবি: চলমান যুদ্ধের সূচনা ইউক্রেনই করেছিল
ডিবির সাবেক প্রধান হারুনের ১০০ বিঘা জমি, ৫ ভবন ও ২ ফ্ল্যাট ক্রোকের নির্দেশ
দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী হচ্ছেন রেখা গুপ্তা, বিজেপির সিদ্ধান্তে চমক
একুশের প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতির শহীদ মিনারে না যাওয়ার আহ্বান
নামাজি জীবনসঙ্গী খুঁজছেন আইশা খান
গাইবান্ধায় গাঁজাসহ আটক এএসআইকে কারাগারে প্রেরণ
উপদেষ্টাদের মিটিংয়ে কোন প্রটোকলে গিয়েছিলেন হাসনাত-পাটোয়ারী: ছাত্রদল সেক্রেটারি
সরকারে থেকে ‘নতুন দল’ গঠন করলে মেনে নেওয়া হবে না: মির্জা ফখরুল
হোস্টিং সামিট ২০২৫ অনুষ্ঠিত
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩২১ রানের বড় লক্ষ্য দিলো নিউজিল্যান্ড
বৈষম্যবিরোধী নামধারী শীর্ষ নেতার নির্দেশে কুয়েটে ছাত্রদলের ওপর হামলা: রাকিব
যান্ত্রিক ত্রুটিতে আবারও বন্ধ বড়পুকুরিয়া তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কুবিতে ছাত্র সংসদের দাবিতে মানববন্ধন ও সন্ত্রাসবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল
২২০ জনকে নিয়োগ দেবে সমরাস্ত্র কারখানা, এসএসসি পাসেও আবেদন
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২ দিনব্যাপি খামারি প্রশিক্ষণ
সবার সাত দিন কারাগারে থাকা উচিত: আদালতে পলক
বিপ্লবী সরকারের ডাক থেকে সরে এলেন কাফি  
নাঈম ভাই হেনা কোথায়?: ‘তুই অনেক দেরি করে ফেলেছিস বাপ্পা’